পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে সই করবে না সুইডেন

জাতিসংঘের পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ বিষয়ক একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকার কথা জানিয়েছে সুইডেন। গত শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গট ওয়ালস্ট্রম জানিয়েছেন, বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী চুক্তিটি প্রস্তুত নয়।

সুইডেনের ক্ষমতায় রয়েছে সামাজিক-গণতান্ত্রিক নেতৃত্বাধীন সরকার। জাতিসংঘের পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর ইস্যুতে অভ্যন্তরীণভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে দেশটির সরকার। কেউ কেউ বলছেন জাতিসংঘের চুক্তি অনুমোদন করলে সরকারি জোটের সম্পর্কে ফাটল দেখা দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের পরিকল্পনায় সমর্থন জানিয়েছে। তবে এ সুইডিশ জোটের বিশ্বাস, জাতিসংঘের চুক্তির মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা যাবে না। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, পর্যবেক্ষক হিসেবে তাদের সরকার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ পদক্ষেপ এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধ করার কাজ অব্যাহত রাখবে। তবে তিনি বলেন, চুক্তিতে এখনও পরমাণু অস্ত্রের পরিষ্কার কোনও সংজ্ঞা নেই। এছাড়া আরও কয়েকটি ইস্যু রয়েছে যেগুলোর জবাব অবশ্যই পেতে হবে। ওই সম্মেলনে মার্গট বলেন, এ চুক্তিতে সই করার জন্য দেশের পার্লামেন্টে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতাও নেই তাদের। এতে স্বাক্ষর করতে হলে আরও দুটি দলের সমর্থন পেতে হবে। পররষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারের কাজের লক্ষ্য পরিষ্কার : পরমাণু-মুক্ত বিশ্বের জন্য বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হবে সুইডেন। এর আগে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ বিষয়ক জাতিসংঘের চুক্তি পর্যালোচনা করতে আগামী ২০২০ সালে একটি সম্মেলনের প্রয়োজন। যেখানে পরমাণু অস্ত্রধারী দেশগুলো নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে পরিষ্কার প্রতিশ্রুতি দেবে। আর তা যদি না হয় তাহলে নিরাপত্তানীতি বিষয়ক পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করছে সুইডেন। আর গত কয়েক দশকের মধ্যে বিশ্বে বর্তমানে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করার হুমকি সবচেয়ে মারাত্মক। বেশ কয়েকটি দেশ তাদের অস্ত্রের আধুনিকায়ন ঘটিয়েছে। ধারণা করা হয়, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ১৫ হাজার পরমাণু অস্ত্র রয়েছে।

এদিকে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ জানিয়েছে, স্নায়ুযুদ্ধ অবসানের পর সম্প্রতি পরমাণু হামলার আশঙ্কা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রধান পরমাণু শক্তিধর পাঁচটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও চীন ধাপে ধাপে নিরস্ত্রীকরণের প্রতিশ্রুতি দেবে। অন্য দেশগুলোও পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা চালাবে না। তবে জ্বালানি তৈরির কাজে পারমাণবিক প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের নিশ্চয়তা পাবে দেশগুলো।

রবিবার, ১৪ জুলাই ২০১৯ , ৩০ আষাঢ় ১৪২৫, ১০ জিলকদ ১৪৪০

পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে সই করবে না সুইডেন

সংবাদ ডেস্ক

image

মার্গট ওয়ালস্ট্রম

জাতিসংঘের পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ বিষয়ক একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকার কথা জানিয়েছে সুইডেন। গত শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গট ওয়ালস্ট্রম জানিয়েছেন, বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী চুক্তিটি প্রস্তুত নয়।

সুইডেনের ক্ষমতায় রয়েছে সামাজিক-গণতান্ত্রিক নেতৃত্বাধীন সরকার। জাতিসংঘের পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর ইস্যুতে অভ্যন্তরীণভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে দেশটির সরকার। কেউ কেউ বলছেন জাতিসংঘের চুক্তি অনুমোদন করলে সরকারি জোটের সম্পর্কে ফাটল দেখা দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের পরিকল্পনায় সমর্থন জানিয়েছে। তবে এ সুইডিশ জোটের বিশ্বাস, জাতিসংঘের চুক্তির মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা যাবে না। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, পর্যবেক্ষক হিসেবে তাদের সরকার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ পদক্ষেপ এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধ করার কাজ অব্যাহত রাখবে। তবে তিনি বলেন, চুক্তিতে এখনও পরমাণু অস্ত্রের পরিষ্কার কোনও সংজ্ঞা নেই। এছাড়া আরও কয়েকটি ইস্যু রয়েছে যেগুলোর জবাব অবশ্যই পেতে হবে। ওই সম্মেলনে মার্গট বলেন, এ চুক্তিতে সই করার জন্য দেশের পার্লামেন্টে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতাও নেই তাদের। এতে স্বাক্ষর করতে হলে আরও দুটি দলের সমর্থন পেতে হবে। পররষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারের কাজের লক্ষ্য পরিষ্কার : পরমাণু-মুক্ত বিশ্বের জন্য বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হবে সুইডেন। এর আগে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ বিষয়ক জাতিসংঘের চুক্তি পর্যালোচনা করতে আগামী ২০২০ সালে একটি সম্মেলনের প্রয়োজন। যেখানে পরমাণু অস্ত্রধারী দেশগুলো নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে পরিষ্কার প্রতিশ্রুতি দেবে। আর তা যদি না হয় তাহলে নিরাপত্তানীতি বিষয়ক পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করছে সুইডেন। আর গত কয়েক দশকের মধ্যে বিশ্বে বর্তমানে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করার হুমকি সবচেয়ে মারাত্মক। বেশ কয়েকটি দেশ তাদের অস্ত্রের আধুনিকায়ন ঘটিয়েছে। ধারণা করা হয়, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ১৫ হাজার পরমাণু অস্ত্র রয়েছে।

এদিকে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ জানিয়েছে, স্নায়ুযুদ্ধ অবসানের পর সম্প্রতি পরমাণু হামলার আশঙ্কা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রধান পরমাণু শক্তিধর পাঁচটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও চীন ধাপে ধাপে নিরস্ত্রীকরণের প্রতিশ্রুতি দেবে। অন্য দেশগুলোও পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা চালাবে না। তবে জ্বালানি তৈরির কাজে পারমাণবিক প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের নিশ্চয়তা পাবে দেশগুলো।