পদোন্নতি পেয়ে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন ইমরান আহমদ। আর প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন সরকারি দলের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা; তবে এখনো তাদের দফতর ঘোষণা কর হয়নি। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শনিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনের দরবার হলে এই দুজনকে শপথ পড়ান।
এর আগে ইমরান আহমেদ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
দরবার হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, মন্ত্রিসভার সদস্য, সামরিক ও বেসামরিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেনও শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আলাদাভাবে শপথ নেয়ার পর পৃথকভাবে গোপনীয়তার শপথও নেন ইমরান আহমদ ও ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। ইমরানকে মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ইন্দিরাকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে আনুষ্ঠানিক আদেশ শুক্রবারই জারি করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর গত ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে (মোট চার বার) শপথ নেন শেখ হাসিনা। ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রীকে নিয়ে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা সাজান তিনি। পাঁচ মাসের মাথায় মন্ত্রিসভায় প্রথম পরিবর্তন এলেও নতুন কাউকে নেয়া হয়নি। প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তথ্যে বদলি করা হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বরত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়।
গতকাল প্রতিমন্ত্রী থেকে একজনের পদোন্নতি এবং একজনকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে অন্তর্ভুক্তিতে মন্ত্রিসভায় এখন মন্ত্রীর সংখ্যা বেড়ে হলো ২৫ জন। প্রতিমন্ত্রীর সংখ্যাও একজন বেড়ে হলো ২০ জন। উপমন্ত্রীর সংখ্যা তিনজনই থাকল।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এতদিন কোন মন্ত্রী ছিলেন না। সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী ইমরান ১৯৮৬ সাল থেকে ছয় বার সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। তার স্ত্রী অধ্যাপক নাসরিন আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য। মন্ত্রীর দায়িত্বে ইমরান একই মন্ত্রণালয়ে থাকবেন, না প্রধানমন্ত্রী তার দফতর বদলে দেবেন, সে বিষয়ে কোন ঘোষণা এখনও আসেনি।
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরাকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দেয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। এই মন্ত্রণালয় বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছে। ইন্দিরা মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শহীদ পরিবারের সন্তান। তার ভাই মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন। ইন্দিরা ইডেন কলেজ থেকে অর্থনীতিতে (বিএসএস) অনার্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে (এমএসএস) ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের জন্য তিনি যুক্তরাজ্য গমন করেন ও যুক্তরাজ্যের লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিকেল ডেমোগ্রাফি বিষয়ে (এমএসসি) ডিগ্রি অর্জন করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পপুলেশন স্টাটিসটিকস বিষয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে রাজনীতির প্রয়োজনে দেশে ফিরে আসেন।
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ছাত্র জীবন থকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইডেন কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক দুই বার ও সভাপতি হিসেবেও দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। ইডেন কলেজের ছাত্রী সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হিসেবে ১৯৭৩-১৯৭৪ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি তৃতীয় বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মহিলা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা তিন বার সংক্ষরিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য। এছাড়া সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা একজন গবেষক। তার গবেষণার অগ্রাধিকার ক্ষেত্র জেন্ডার ইস্যু, নারী নেতৃত্ব ও জনস্বাস্থ্য। তিনি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রজনন স্বাস্থ্য, কিশোর-কিশোরী বিষয়, বাল্যবিবাহ, পুষ্টি সচেতনতা, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৫৫টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখেছেন। এ সব বৈজ্ঞানিক গবেষণামূলক প্রবন্ধ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে ও সমাদৃত হয়েছে।
রবিবার, ১৪ জুলাই ২০১৯ , ৩০ আষাঢ় ১৪২৫, ১০ জিলকদ ১৪৪০
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
পদোন্নতি পেয়ে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন ইমরান আহমদ। আর প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন সরকারি দলের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা; তবে এখনো তাদের দফতর ঘোষণা কর হয়নি। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শনিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনের দরবার হলে এই দুজনকে শপথ পড়ান।
এর আগে ইমরান আহমেদ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
দরবার হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, মন্ত্রিসভার সদস্য, সামরিক ও বেসামরিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেনও শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আলাদাভাবে শপথ নেয়ার পর পৃথকভাবে গোপনীয়তার শপথও নেন ইমরান আহমদ ও ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। ইমরানকে মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ইন্দিরাকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে আনুষ্ঠানিক আদেশ শুক্রবারই জারি করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর গত ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে (মোট চার বার) শপথ নেন শেখ হাসিনা। ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রীকে নিয়ে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা সাজান তিনি। পাঁচ মাসের মাথায় মন্ত্রিসভায় প্রথম পরিবর্তন এলেও নতুন কাউকে নেয়া হয়নি। প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তথ্যে বদলি করা হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বরত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়।
গতকাল প্রতিমন্ত্রী থেকে একজনের পদোন্নতি এবং একজনকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে অন্তর্ভুক্তিতে মন্ত্রিসভায় এখন মন্ত্রীর সংখ্যা বেড়ে হলো ২৫ জন। প্রতিমন্ত্রীর সংখ্যাও একজন বেড়ে হলো ২০ জন। উপমন্ত্রীর সংখ্যা তিনজনই থাকল।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এতদিন কোন মন্ত্রী ছিলেন না। সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী ইমরান ১৯৮৬ সাল থেকে ছয় বার সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। তার স্ত্রী অধ্যাপক নাসরিন আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য। মন্ত্রীর দায়িত্বে ইমরান একই মন্ত্রণালয়ে থাকবেন, না প্রধানমন্ত্রী তার দফতর বদলে দেবেন, সে বিষয়ে কোন ঘোষণা এখনও আসেনি।
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরাকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দেয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। এই মন্ত্রণালয় বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছে। ইন্দিরা মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শহীদ পরিবারের সন্তান। তার ভাই মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন। ইন্দিরা ইডেন কলেজ থেকে অর্থনীতিতে (বিএসএস) অনার্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে (এমএসএস) ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের জন্য তিনি যুক্তরাজ্য গমন করেন ও যুক্তরাজ্যের লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিকেল ডেমোগ্রাফি বিষয়ে (এমএসসি) ডিগ্রি অর্জন করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পপুলেশন স্টাটিসটিকস বিষয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে রাজনীতির প্রয়োজনে দেশে ফিরে আসেন।
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ছাত্র জীবন থকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইডেন কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক দুই বার ও সভাপতি হিসেবেও দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। ইডেন কলেজের ছাত্রী সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হিসেবে ১৯৭৩-১৯৭৪ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি তৃতীয় বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মহিলা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা তিন বার সংক্ষরিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য। এছাড়া সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা একজন গবেষক। তার গবেষণার অগ্রাধিকার ক্ষেত্র জেন্ডার ইস্যু, নারী নেতৃত্ব ও জনস্বাস্থ্য। তিনি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রজনন স্বাস্থ্য, কিশোর-কিশোরী বিষয়, বাল্যবিবাহ, পুষ্টি সচেতনতা, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৫৫টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখেছেন। এ সব বৈজ্ঞানিক গবেষণামূলক প্রবন্ধ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে ও সমাদৃত হয়েছে।