বামজোটের ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

পুলিশি বাধায় গ্যাসের দাম কমানোর দাবিতে পূর্বঘোষিত জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে পারেনি বামপন্থি দলগুলো। পরে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে গ্যাসের দাম না কমালে কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দিয়েছেন বাম নেতারা।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রাস্তা অবরোধ করে ৫টি বাম দল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন শেষে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়। এ সময় সচিবালয়ের পশ্চিম পাশে প্রেসক্লাব সংলগ্ন রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। পরে সেখানে অবস্থান নিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক মোশাররফ হোসেন নান্নু বলেন, সরকার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করে জনজীবনকে অস্থির করে তুলেছে। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশে দ্রব্যের দাম বেড়ে যাবে। কারখানার উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। এর প্রভাব পড়বে সাধারণ জনগণের ওপর। আমরা সরকারের এ সিদ্ধান্ত থেকে আবারও সরে আসার আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, সরকার অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার ও গ্যাসের অপচয় রোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। গ্যাসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সব পণ্যের দাম বাড়বে। এরপরও সরকার নিজের অবস্থান পরিবর্তন না করলে ১৯ জুলাই ঢাকায় প্রতিনিধি সম্মেলন করে সারাদেশ অচল করে দেয়া হবে। কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সরকার সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা লুটপাটের মহোৎসব করতে চান। আমরা এটি হতে দেব না। আমরা জনগণের দাবি আদায়ে সব সময় রাজপথে থাকব, গণমানুষের দাবি আদায় করব। সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ, আপনাদের অবস্থান পরিবর্তন করুন। না হলে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়ানোর কথা বলছে। বাসা-বাড়িতে কোন সময়ই ৪৫ থেকে ৫০ ইউনিটের বেশি গ্যাস খরচ হয় না। বিদ্যুতে সিস্টেম লসের আশঙ্কা না থাকলেও ক্ষমতাবান ও আমলারা ১২ শতাংশ পর্যন্ত সিস্টেম লস দেখান। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হলো। আমরা সরকারকে আবারও তাদের অবস্থান থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই।

কর্মসূচিতে বাসদ নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাফি রতন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পুলিশি বাধা ও নেতাকর্মীদের আহত করার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা : বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এক বিবৃতিতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে জ¦ালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের বাধাদান ও হামলার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানান। পুলিশি হামলায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নাসির উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম অভি, আরিফুল ইসলামসহ জোটের প্রায় ২৫ জনের অধিক আহত হওয়ার ঘটনায় দায়ী পুলিশের শাস্তি দাবি এবং এ ধরনের ঘটনায় সরকারকেই দায়ী করেন। তিনি সরকারের অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে জনগণের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান। তা না হলে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি হাতে নিয়ে সরকারের হঠকারী এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হবে।

সোমবার, ১৫ জুলাই ২০১৯ , ১ শ্রাবন ১৪২৫, ১১ জিলকদ ১৪৪০

গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে

বামজোটের ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

পুলিশি বাধায় গ্যাসের দাম কমানোর দাবিতে পূর্বঘোষিত জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে পারেনি বামপন্থি দলগুলো। পরে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে গ্যাসের দাম না কমালে কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দিয়েছেন বাম নেতারা।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রাস্তা অবরোধ করে ৫টি বাম দল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন শেষে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়। এ সময় সচিবালয়ের পশ্চিম পাশে প্রেসক্লাব সংলগ্ন রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। পরে সেখানে অবস্থান নিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক মোশাররফ হোসেন নান্নু বলেন, সরকার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করে জনজীবনকে অস্থির করে তুলেছে। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশে দ্রব্যের দাম বেড়ে যাবে। কারখানার উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। এর প্রভাব পড়বে সাধারণ জনগণের ওপর। আমরা সরকারের এ সিদ্ধান্ত থেকে আবারও সরে আসার আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, সরকার অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার ও গ্যাসের অপচয় রোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। গ্যাসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সব পণ্যের দাম বাড়বে। এরপরও সরকার নিজের অবস্থান পরিবর্তন না করলে ১৯ জুলাই ঢাকায় প্রতিনিধি সম্মেলন করে সারাদেশ অচল করে দেয়া হবে। কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সরকার সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা লুটপাটের মহোৎসব করতে চান। আমরা এটি হতে দেব না। আমরা জনগণের দাবি আদায়ে সব সময় রাজপথে থাকব, গণমানুষের দাবি আদায় করব। সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ, আপনাদের অবস্থান পরিবর্তন করুন। না হলে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়ানোর কথা বলছে। বাসা-বাড়িতে কোন সময়ই ৪৫ থেকে ৫০ ইউনিটের বেশি গ্যাস খরচ হয় না। বিদ্যুতে সিস্টেম লসের আশঙ্কা না থাকলেও ক্ষমতাবান ও আমলারা ১২ শতাংশ পর্যন্ত সিস্টেম লস দেখান। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হলো। আমরা সরকারকে আবারও তাদের অবস্থান থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই।

কর্মসূচিতে বাসদ নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাফি রতন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পুলিশি বাধা ও নেতাকর্মীদের আহত করার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা : বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এক বিবৃতিতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে জ¦ালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের বাধাদান ও হামলার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানান। পুলিশি হামলায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নাসির উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম অভি, আরিফুল ইসলামসহ জোটের প্রায় ২৫ জনের অধিক আহত হওয়ার ঘটনায় দায়ী পুলিশের শাস্তি দাবি এবং এ ধরনের ঘটনায় সরকারকেই দায়ী করেন। তিনি সরকারের অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে জনগণের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান। তা না হলে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি হাতে নিয়ে সরকারের হঠকারী এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হবে।