পাঁচ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সালাম ও তার স্ত্রী চিকিৎসক রেশমা মজুমদারের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের সভায় ওই মামলার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. মুজিবুর রহমান দ্রুত মামলাটি দায়ের করবেন বলে জানান। এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সিবিএ সভাপতি জহিরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে কর্মকর্তাদের গাড়ি ব্যবহার করে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, অনুসন্ধান প্রতিবেদনে প্রকৌশলী মো. আবদুস সালামের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৭০ লাখ ৪৯ হাজার টাকার সম্পদ অজানা উৎস থেকে আয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। যেখানে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারাসহ দন্ডবিধির ১০৯ ধারা অনুযায়ী মামলা রুজুর অনুমোদনের কথা বলা হয়েছে। চিকিৎসক রেশমা মজুমদার শম্পা ওরফে রেশমা সালামের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তিনি তার স্বামী আবদুস সালামের অবৈধ উপায়ে অর্জিত ১ কোটি ৩৪ লাখ ৪৮ হাজার ৫৮৫ টাকা নিজের নামে দেখিয়ে স্বামীকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহযোগিতা করেছেন। ওই সম্পদ তিনি (শম্পা) তার নিজের আয়কর নথিতেও দেখিয়েছেন।
এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য জরুরি প্রয়োজনে রাখা দুটি গাড়ি ক্ষমতার অপব্যবহার করে পদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য রাখা নিজেরা ব্যবহার করে জ্বালানি, মেরামত ও সরংক্ষণের নামে ১ কোটি ১৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে অডিট বিভাগের সাবেক সহকারী হিসাবরক্ষক জহিরুল ইসলাম (বর্তমানে অবসরে) এবং সাবেক স্টেনো টাইপিস্ট কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আলাউদ্দিন মিয়ার নামে মামলার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক খলিলুর রহমান বাদী হয়ে যেকোন দিন মামলা করবেন।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাজের স্বার্থে জরুরি প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জন্য ‘স্ট্যান্ডবাই’ (ভিআইপি) হিসেবে দুটি গড়ি রাখার দফতরাদেশ প্রদান করা হয়। বোর্ডের কাজের স্বার্থে জরুরি প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জন্য ‘স্ট্যান্ডবাই’ (ভিআইপি) হিসেবে রাখার দফতরাদেশ থাকলেও গাড়ি ২টির একটি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী ও মো. আলাউদ্দিন মিয়া নিজেকে ‘ভিআইপি’ হিসেবে দাবি করে ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ব্যবহার করেন। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের গাড়ি ব্যবহারের নীতিমালায় প্রাধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তিকে গাড়ি প্রদান করা যাবে না মর্মে স্পষ্টভাবে নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে একটি সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাদের নামে পাজেরো গাড়ি ২টি সরাসরি বরাদ্দ-সংক্রান্ত কোন পত্র পাওয়া যায়নি। শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তারা প্রভাব খাটিয়ে গাড়ি দুটি ব্যবহার শুরু করেন এবং প্রায় ১০ বছর পর্যন্ত গাড়ি দুটি ব্যবহার করেন। ২০১৭ সালে শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মিয়া এবং ২০১৮ সালে সংগঠনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী অবসরে যান। তারপরও তারা গাড়ি ২টি পুলে জমা প্রদান করেননি। এ-সংক্রান্ত দুদক হটলাইন-১০৬ এ একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক টিম গত ১২ ফেব্রুয়ারি মো. আলাউদ্দিন মিয়া ব্যবহৃত গাড়ি নম্বর ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-২৮২৭ এবং জহিরুল ইসলাম চৌধুরী ব্যবহৃত পাজেরো গাড়ি নম্বর সিলেট-ঘ-০২-০০৩৩ উদ্ধার করে নিয়ে আসে এবং গাড়ি দুটি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে বুঝিয়ে দেয়া হয়।
সোমবার, ১৫ জুলাই ২০১৯ , ১ শ্রাবন ১৪২৫, ১১ জিলকদ ১৪৪০
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
পাঁচ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সালাম ও তার স্ত্রী চিকিৎসক রেশমা মজুমদারের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের সভায় ওই মামলার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. মুজিবুর রহমান দ্রুত মামলাটি দায়ের করবেন বলে জানান। এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সিবিএ সভাপতি জহিরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে কর্মকর্তাদের গাড়ি ব্যবহার করে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, অনুসন্ধান প্রতিবেদনে প্রকৌশলী মো. আবদুস সালামের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৭০ লাখ ৪৯ হাজার টাকার সম্পদ অজানা উৎস থেকে আয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। যেখানে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারাসহ দন্ডবিধির ১০৯ ধারা অনুযায়ী মামলা রুজুর অনুমোদনের কথা বলা হয়েছে। চিকিৎসক রেশমা মজুমদার শম্পা ওরফে রেশমা সালামের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তিনি তার স্বামী আবদুস সালামের অবৈধ উপায়ে অর্জিত ১ কোটি ৩৪ লাখ ৪৮ হাজার ৫৮৫ টাকা নিজের নামে দেখিয়ে স্বামীকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহযোগিতা করেছেন। ওই সম্পদ তিনি (শম্পা) তার নিজের আয়কর নথিতেও দেখিয়েছেন।
এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য জরুরি প্রয়োজনে রাখা দুটি গাড়ি ক্ষমতার অপব্যবহার করে পদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য রাখা নিজেরা ব্যবহার করে জ্বালানি, মেরামত ও সরংক্ষণের নামে ১ কোটি ১৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে অডিট বিভাগের সাবেক সহকারী হিসাবরক্ষক জহিরুল ইসলাম (বর্তমানে অবসরে) এবং সাবেক স্টেনো টাইপিস্ট কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আলাউদ্দিন মিয়ার নামে মামলার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক খলিলুর রহমান বাদী হয়ে যেকোন দিন মামলা করবেন।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাজের স্বার্থে জরুরি প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জন্য ‘স্ট্যান্ডবাই’ (ভিআইপি) হিসেবে দুটি গড়ি রাখার দফতরাদেশ প্রদান করা হয়। বোর্ডের কাজের স্বার্থে জরুরি প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জন্য ‘স্ট্যান্ডবাই’ (ভিআইপি) হিসেবে রাখার দফতরাদেশ থাকলেও গাড়ি ২টির একটি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী ও মো. আলাউদ্দিন মিয়া নিজেকে ‘ভিআইপি’ হিসেবে দাবি করে ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ব্যবহার করেন। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের গাড়ি ব্যবহারের নীতিমালায় প্রাধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তিকে গাড়ি প্রদান করা যাবে না মর্মে স্পষ্টভাবে নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে একটি সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাদের নামে পাজেরো গাড়ি ২টি সরাসরি বরাদ্দ-সংক্রান্ত কোন পত্র পাওয়া যায়নি। শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তারা প্রভাব খাটিয়ে গাড়ি দুটি ব্যবহার শুরু করেন এবং প্রায় ১০ বছর পর্যন্ত গাড়ি দুটি ব্যবহার করেন। ২০১৭ সালে শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মিয়া এবং ২০১৮ সালে সংগঠনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী অবসরে যান। তারপরও তারা গাড়ি ২টি পুলে জমা প্রদান করেননি। এ-সংক্রান্ত দুদক হটলাইন-১০৬ এ একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক টিম গত ১২ ফেব্রুয়ারি মো. আলাউদ্দিন মিয়া ব্যবহৃত গাড়ি নম্বর ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-২৮২৭ এবং জহিরুল ইসলাম চৌধুরী ব্যবহৃত পাজেরো গাড়ি নম্বর সিলেট-ঘ-০২-০০৩৩ উদ্ধার করে নিয়ে আসে এবং গাড়ি দুটি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে বুঝিয়ে দেয়া হয়।