বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণের নিয়ম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

এবারই প্রথম বিশ্বকাপ বিজয়ী নির্ধারিত হলো বাউন্ডারি নিয়মে। টাই হওয়ার পরেও যৌথভাবে বিজয়ী নির্ধারণের পথ না মাড়িয়ে কেন এমন নিয়ম? প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। বিশেষ করে সুপার ওভারে টাই হওয়ার পরেও কীভাবে বেশি বাউন্ডারি বিবেচনায় আনা হলো? তবে একথা সবাই মানছেন এমন শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনাল দেখা যায়নি কখনো।

গাপটিলের থ্রোতে ৬ রান পেয়েছে ইংল্যান্ড। তাও আবার বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে। অনফিল্ড আম্পায়ারদের এমন সিদ্ধান্তে মারাত্মক ভুল দেখছেন সাবেক আম্পায়ার ও এমসিসির সাব কমিটির সদস্য সাইমন টফেল।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে শেষ তিন বলে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৯ রানের। তখন দুই রান নিতে গেলে মার্টিন গাপটিলের করা ওভারথ্রো ডাইভ দেয়া বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে চলে যায় বাউন্ডারিতে। তাতে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে ৬ রান জমা হয় ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে। ৪টি রান বাউন্ডারি থেকে আর ব্যাটসম্যানরা নেন দুই রান। আর এই দুই রান নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক।

কারণ আইন বলছে ওভারথ্রো অথবা ফিল্ডারের ইচ্ছাকৃত ঘটনায় বাউন্ডারি হলে রান যুক্ত হতে পারে পেনাল্টি থেকে, বাউন্ডারি থেকে এবং দুই ব্যাটসম্যান দৌড়ে যত রান নিয়েছেন সেখান থেকে।

আর এই দৌড়ে রান নেয়ার প্রসঙ্গ নিয়েই বিতর্কটা জমে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আইন বলছে থ্রোয়ের সময় যদি দুই ব্যাটসম্যান পরস্পরকে পার হয়ে যান তখনই কেবল সেই রানটি যুক্ত হবে স্কোরবোর্ডে। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেছে দ্বিতীয় রানের সময় গাপটিলের থ্রোয়ের মুহূর্তে দুই ব্যাটসম্যান পরস্পরকে অতিক্রম করেননি!

আবার স্টোকসের বেলায় যা ঘটেছে তার লিখিত কোন ব্যাখ্যাও নেই এই আইনে। কারণ ওভার থ্রোতে বাউন্ডারি স্টোকসের ব্যাটে লেগেই হয়েছে। আবার ব্যাটে না লাগলে তা হয়ত আঘাত করতে পারত স্ট্যাম্পেই! তখনো পুরোপুরি ক্রিজে পৌঁছাননি স্টোকস। তাই বিতর্ক থাকলেও আইনে একরকম অস্পষ্টতা রয়েই গেছে।

অবশ্য টফেল মনে করছেন, ‘হিট অব দ্য মোমেন্টে তারা হয়ত ভেবেছে ব্যাটসম্যান পৌঁছে গেছে। কিন্তু রিপ্লেতে কিন্তু আমরা দেখেছি বিষয়টা ভিন্ন।’ টফেলের কথায় মুহূর্তটি যথেষ্টভাবে ধরা গেলে সেখানে ৬ রান হত না, হতো ৫টি রান। তাহলে শেষ বলে নন স্ট্রাইকে থাকতেন আদিল রশিদ!

নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল এ প্রসঙ্গে। তখন তিনি বললেন, ‘আপনি কিন্তু শুধু একটি বিষয়েই নজর দিতে পারেন না। যাতে মনে হচ্ছে এটাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছে। এখানে আরও অনেক খন্ড খন্ড বিষয় আছে, যা ছিল অতি গুরুত্বপূর্ণ।’

সাবেক কিউই অলরাউন্ডার স্কট স্টাইরিসই যেমন ফাইনালের সুপার ওভারের সমালোচনায় টুইটারে সরব ছিলেন সবচেয়ে বেশি। আইসিসিকে তামাশা উল্লেখ করে টুইট যুদ্ধে জড়িয়েছেন। টাই হওয়াতে তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন যৌথ চ্যাম্পিয়নের পক্ষে, ‘অবশ্য ভাগাভাগি করে নেয়া উচিত। এটা ফ্র্যাঞ্চাইজ ক্রিকেট নয়, এমনকি এমন ম্যাচও নয় যার মাধ্যমে পরবর্তী ধাপের জন্য বিজয়ী নির্ধারণ করতে হবে। এটা হচ্ছে চমৎকার দুটি দলের মাঝে ১০০ ওভারের দুর্দান্ত এক লড়াই। যা টাই হয়েছে।’

সুপার ওভারে টাই হওয়ার পরেও বাউন্ডারি বেশি হওয়াতে চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। এমন নিয়মকে মেনে নিতে পারছেন না অনেকে। বলছেন তা পক্ষে গেছে স্বাগতিকদেরই। আবার অস্ট্রেলিয়ান সাবেক ক্রিকেটার, কোচ টম মুডি বলেছেন, ‘বুঝতে পারছি অনেকে হতাশা প্রকাশ করছে, বাউন্ডারি বিবেচনায় বিজয়ী নির্ধারণটা বিতর্কিত হিসেবে দেখছে। তবে আমি কিন্তু একটি বিষয়ে দ্বিধান্বিত। যারা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করছে তারা সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করবে, এটা কীভাবে লেভেল প্লেইং ফিল্ড হয়।?’

সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীরও যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণার পক্ষে, ‘বুঝলাম না কীভাবে ফাইনাল বিজয়ী ঘোষণা করা হলো বাউন্ডারি বিবেচনায়। হাস্যকর নিয়ম আইসিসি, এটা হতে পারত টাই। এমন শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচের জন্য আমি দুই দলকেই অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমার বিবেচনায় দুই দলই বিজয়ী।’ ওয়েবসাইট।

আরও খবর
কুমিল্লায় বিচারকের কক্ষে হত্যাকান্ড
মায়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
আইসিসির বিশ্বকাপ একাদশে সাকিব
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ
এইচএসসির ফল প্রকাশ কাল
ট্রেন-মাইক্রো সংঘর্ষে বর-কনেসহ নিহত ১০
নতুন এলাকা প্লাবিত
অধ্যাপক ফারুকের পক্ষে ৬৬ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বিবৃতি
ডেঙ্গু আক্রান্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার ঘোষণা মেয়র খোকনের
অনুমোদন ছাড়া স্কুল-কলেজ মাদ্রাসা চালু করলে ব্যবস্থা
ভুয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে স্বামী-স্ত্রীর কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য
সাভারে ময়লার স্তুপে তরুণীর ৬ টুকরা লাশ
রাজধানীতে নিউ নাইন স্টার গ্যাং গ্রুপের ১১ সদস্য অস্ত্রসহ আটক
ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ

মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০১৯ , ২ শ্রাবন ১৪২৫, ১২ জিলকদ ১৪৪০

বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণের নিয়ম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

সংবাদ স্পোর্টস ডেস্ক

এবারই প্রথম বিশ্বকাপ বিজয়ী নির্ধারিত হলো বাউন্ডারি নিয়মে। টাই হওয়ার পরেও যৌথভাবে বিজয়ী নির্ধারণের পথ না মাড়িয়ে কেন এমন নিয়ম? প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। বিশেষ করে সুপার ওভারে টাই হওয়ার পরেও কীভাবে বেশি বাউন্ডারি বিবেচনায় আনা হলো? তবে একথা সবাই মানছেন এমন শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনাল দেখা যায়নি কখনো।

গাপটিলের থ্রোতে ৬ রান পেয়েছে ইংল্যান্ড। তাও আবার বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে। অনফিল্ড আম্পায়ারদের এমন সিদ্ধান্তে মারাত্মক ভুল দেখছেন সাবেক আম্পায়ার ও এমসিসির সাব কমিটির সদস্য সাইমন টফেল।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে শেষ তিন বলে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৯ রানের। তখন দুই রান নিতে গেলে মার্টিন গাপটিলের করা ওভারথ্রো ডাইভ দেয়া বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে চলে যায় বাউন্ডারিতে। তাতে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে ৬ রান জমা হয় ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে। ৪টি রান বাউন্ডারি থেকে আর ব্যাটসম্যানরা নেন দুই রান। আর এই দুই রান নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক।

কারণ আইন বলছে ওভারথ্রো অথবা ফিল্ডারের ইচ্ছাকৃত ঘটনায় বাউন্ডারি হলে রান যুক্ত হতে পারে পেনাল্টি থেকে, বাউন্ডারি থেকে এবং দুই ব্যাটসম্যান দৌড়ে যত রান নিয়েছেন সেখান থেকে।

আর এই দৌড়ে রান নেয়ার প্রসঙ্গ নিয়েই বিতর্কটা জমে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আইন বলছে থ্রোয়ের সময় যদি দুই ব্যাটসম্যান পরস্পরকে পার হয়ে যান তখনই কেবল সেই রানটি যুক্ত হবে স্কোরবোর্ডে। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেছে দ্বিতীয় রানের সময় গাপটিলের থ্রোয়ের মুহূর্তে দুই ব্যাটসম্যান পরস্পরকে অতিক্রম করেননি!

আবার স্টোকসের বেলায় যা ঘটেছে তার লিখিত কোন ব্যাখ্যাও নেই এই আইনে। কারণ ওভার থ্রোতে বাউন্ডারি স্টোকসের ব্যাটে লেগেই হয়েছে। আবার ব্যাটে না লাগলে তা হয়ত আঘাত করতে পারত স্ট্যাম্পেই! তখনো পুরোপুরি ক্রিজে পৌঁছাননি স্টোকস। তাই বিতর্ক থাকলেও আইনে একরকম অস্পষ্টতা রয়েই গেছে।

অবশ্য টফেল মনে করছেন, ‘হিট অব দ্য মোমেন্টে তারা হয়ত ভেবেছে ব্যাটসম্যান পৌঁছে গেছে। কিন্তু রিপ্লেতে কিন্তু আমরা দেখেছি বিষয়টা ভিন্ন।’ টফেলের কথায় মুহূর্তটি যথেষ্টভাবে ধরা গেলে সেখানে ৬ রান হত না, হতো ৫টি রান। তাহলে শেষ বলে নন স্ট্রাইকে থাকতেন আদিল রশিদ!

নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল এ প্রসঙ্গে। তখন তিনি বললেন, ‘আপনি কিন্তু শুধু একটি বিষয়েই নজর দিতে পারেন না। যাতে মনে হচ্ছে এটাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছে। এখানে আরও অনেক খন্ড খন্ড বিষয় আছে, যা ছিল অতি গুরুত্বপূর্ণ।’

সাবেক কিউই অলরাউন্ডার স্কট স্টাইরিসই যেমন ফাইনালের সুপার ওভারের সমালোচনায় টুইটারে সরব ছিলেন সবচেয়ে বেশি। আইসিসিকে তামাশা উল্লেখ করে টুইট যুদ্ধে জড়িয়েছেন। টাই হওয়াতে তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন যৌথ চ্যাম্পিয়নের পক্ষে, ‘অবশ্য ভাগাভাগি করে নেয়া উচিত। এটা ফ্র্যাঞ্চাইজ ক্রিকেট নয়, এমনকি এমন ম্যাচও নয় যার মাধ্যমে পরবর্তী ধাপের জন্য বিজয়ী নির্ধারণ করতে হবে। এটা হচ্ছে চমৎকার দুটি দলের মাঝে ১০০ ওভারের দুর্দান্ত এক লড়াই। যা টাই হয়েছে।’

সুপার ওভারে টাই হওয়ার পরেও বাউন্ডারি বেশি হওয়াতে চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। এমন নিয়মকে মেনে নিতে পারছেন না অনেকে। বলছেন তা পক্ষে গেছে স্বাগতিকদেরই। আবার অস্ট্রেলিয়ান সাবেক ক্রিকেটার, কোচ টম মুডি বলেছেন, ‘বুঝতে পারছি অনেকে হতাশা প্রকাশ করছে, বাউন্ডারি বিবেচনায় বিজয়ী নির্ধারণটা বিতর্কিত হিসেবে দেখছে। তবে আমি কিন্তু একটি বিষয়ে দ্বিধান্বিত। যারা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করছে তারা সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করবে, এটা কীভাবে লেভেল প্লেইং ফিল্ড হয়।?’

সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীরও যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণার পক্ষে, ‘বুঝলাম না কীভাবে ফাইনাল বিজয়ী ঘোষণা করা হলো বাউন্ডারি বিবেচনায়। হাস্যকর নিয়ম আইসিসি, এটা হতে পারত টাই। এমন শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচের জন্য আমি দুই দলকেই অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমার বিবেচনায় দুই দলই বিজয়ী।’ ওয়েবসাইট।