ফের হংকংয়ে সহিংস বিক্ষোভ

বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিলটি পুরোপুরি বাতিলের দাবিতে হংকংয়ের বাসিন্দাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ আবারও সহিংসতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। গত রোববার চীন সীমান্তের কাছে সা তিন শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। এতে দুই পক্ষে মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ। দ্য গার্ডিয়ান।

রোববার স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে পিপার স্প্রে এবং লাঠিচার্জ করলে বিক্ষোভকারীরা একটি শপিং সেন্টারে ঢুকে পড়ে। কেউ কেউ পুলিশকে লক্ষ্য করে ছাতা ও প্লাস্টিকের বোতল ছুড়ে মারে। কয়েক জন বিক্ষোভকারীকে পুলিশের ওপর চড়াও হতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে। পিপার স্প্রে থেকে বাঁচতে মুখোশ ও বিশেষ চশমা পরে বিক্ষোভে অংশ নেন অনেকেই। কথিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল নিয়ে চলতি বছরের ৯ জুন চীনবিরোধী এ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। আন্দোলনকারীদের আশঙ্কা এ বিল অনুমোদন করা হলে ভিন্নমতাবলম্বীদের চীনের কাছে প্রত্যর্পণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। লাখো মানুষের উত্তাল গণবিক্ষোভের মুখে বিলটি থেকে পিছু হটতে বাধ্য হন হংকং-এর চীনপন্থি শাসক ক্যারি ল্যাম। প্রথমে বিলের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিতের ঘোষণা দিলেও পরে আন্দোলনের তীব্রতায় এটি বাতিলের ঘোষণা দেন তিনি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এক বিবৃতিতে ক্ষমা চান হংকং-এর বাসিন্দাদের কাছে। তবে এতে আশ্বস্ত হতে না পেরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে সেখানকার নাগরিকেরা।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় দিনের বেলায় বিক্ষোভের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে হংকং কর্তৃপক্ষ। রোববার সন্ধ্যায় সা তিন শহরের রাস্তায় জড়ো হয় কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হলে সহিংসতা শুরু হয়। রোববার রাতে এক বিবৃতিতে হংকং সরকার রাস্তা বন্ধ করে দেয়া বিক্ষোভকারীদের কঠোর নিন্দা জানিয়েছে। এতে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধেপুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা ও শান্তি নষ্টের অভিযোগ করা হয়।

শনিবার চীন সীমান্তবর্তী আরেক শহর শিয়াং সুই-এ একই ধরণের আরেকটি বিক্ষোভে পিপার স্প্রে ও লাঠি ব্যবহার করে পুলিশ। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিক্ষোভ মিছিল চালানোর অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়। রোববার রাতের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে সোমবার ভোরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার স্টিফেন লো জানান, অন্তত ৪০ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। অন্তত দশ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি। স্থানীয় সম্প্রচারমাধ্যম আরটিএইচকে জানিয়েছে, সংঘর্ষের পর অন্তত ২২ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সাল অবধি অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দিয়েছে দেশটি। ১৫০ বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনে থাকার পর লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষে ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই অঞ্চলটি চীনের কাছে ফেরত দেয়া হয়েছিল। হংকংয়ের জনসংখ্যা প্রায় ৭৪ লাখ হলেও, ১২শ’ জনের একটি বিশেষ কমিটি নেতা বাছাইয়ে ভোট দেয়ার সুযোগ পান।

মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০১৯ , ২ শ্রাবন ১৪২৫, ১২ জিলকদ ১৪৪০

ফের হংকংয়ে সহিংস বিক্ষোভ

সংবাদ ডেস্ক

image

বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিলটি বাতিলের দাবিতে হংকংয়ে বিক্ষোভের একাংশ

বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিলটি পুরোপুরি বাতিলের দাবিতে হংকংয়ের বাসিন্দাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ আবারও সহিংসতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। গত রোববার চীন সীমান্তের কাছে সা তিন শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। এতে দুই পক্ষে মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ। দ্য গার্ডিয়ান।

রোববার স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে পিপার স্প্রে এবং লাঠিচার্জ করলে বিক্ষোভকারীরা একটি শপিং সেন্টারে ঢুকে পড়ে। কেউ কেউ পুলিশকে লক্ষ্য করে ছাতা ও প্লাস্টিকের বোতল ছুড়ে মারে। কয়েক জন বিক্ষোভকারীকে পুলিশের ওপর চড়াও হতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে। পিপার স্প্রে থেকে বাঁচতে মুখোশ ও বিশেষ চশমা পরে বিক্ষোভে অংশ নেন অনেকেই। কথিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল নিয়ে চলতি বছরের ৯ জুন চীনবিরোধী এ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। আন্দোলনকারীদের আশঙ্কা এ বিল অনুমোদন করা হলে ভিন্নমতাবলম্বীদের চীনের কাছে প্রত্যর্পণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। লাখো মানুষের উত্তাল গণবিক্ষোভের মুখে বিলটি থেকে পিছু হটতে বাধ্য হন হংকং-এর চীনপন্থি শাসক ক্যারি ল্যাম। প্রথমে বিলের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিতের ঘোষণা দিলেও পরে আন্দোলনের তীব্রতায় এটি বাতিলের ঘোষণা দেন তিনি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এক বিবৃতিতে ক্ষমা চান হংকং-এর বাসিন্দাদের কাছে। তবে এতে আশ্বস্ত হতে না পেরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে সেখানকার নাগরিকেরা।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় দিনের বেলায় বিক্ষোভের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে হংকং কর্তৃপক্ষ। রোববার সন্ধ্যায় সা তিন শহরের রাস্তায় জড়ো হয় কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হলে সহিংসতা শুরু হয়। রোববার রাতে এক বিবৃতিতে হংকং সরকার রাস্তা বন্ধ করে দেয়া বিক্ষোভকারীদের কঠোর নিন্দা জানিয়েছে। এতে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধেপুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা ও শান্তি নষ্টের অভিযোগ করা হয়।

শনিবার চীন সীমান্তবর্তী আরেক শহর শিয়াং সুই-এ একই ধরণের আরেকটি বিক্ষোভে পিপার স্প্রে ও লাঠি ব্যবহার করে পুলিশ। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিক্ষোভ মিছিল চালানোর অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়। রোববার রাতের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে সোমবার ভোরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার স্টিফেন লো জানান, অন্তত ৪০ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। অন্তত দশ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি। স্থানীয় সম্প্রচারমাধ্যম আরটিএইচকে জানিয়েছে, সংঘর্ষের পর অন্তত ২২ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সাল অবধি অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দিয়েছে দেশটি। ১৫০ বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনে থাকার পর লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষে ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই অঞ্চলটি চীনের কাছে ফেরত দেয়া হয়েছিল। হংকংয়ের জনসংখ্যা প্রায় ৭৪ লাখ হলেও, ১২শ’ জনের একটি বিশেষ কমিটি নেতা বাছাইয়ে ভোট দেয়ার সুযোগ পান।