বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কিত আদেশে ফেঁসে যাচ্ছেন অসাধু কর্মকর্তারা

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগসহ বিভিন্ন ইস্যুতে জারি করা বিতর্কিত আদেশে ফেঁসে যাচ্ছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অসাধু কর্মকর্তারা। ওই আদেশ জারির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির নির্দেশে ভিকারুননিসায় নিয়োগ ও ভর্তি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটকেও চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি ও শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দেয়া বিতর্কিত নিষেধাজ্ঞার নেপথ্যের কারণ জানতে চেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। একই সঙ্গে মন্ত্রী এ ধরনের আদেশ কীভাবে হয়েছে, তা সাত দিনের মধ্যে জানাতে শিক্ষা সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন।

গতকাল শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনা পাঠানো হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে। সিনিয়র সচিবের দফতর সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষামন্ত্রী ঐতিহ্যবাহী ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ নিয়ে সম্প্রতি জারি করা আলোচিত ও বিকর্তিক আদেশ ছাড়াও বেশ কয়েকটি ইস্যুতে চরম ক্ষুদ্ধ। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘জরুরি ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তার একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পাঠানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো’। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ শাখার এক কর্মকর্তা এ আদেশের বিষয়ে বলেন, ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ নিয়োগ বন্ধের আদেশ জারি সঙ্গে ৫ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা যুক্ত করার ঘটনায় চরম ক্ষুদ্ধ মন্ত্রী এর নেপথ্যের কারণ ও ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে চান। এর অংশ হিসেবেই মন্ত্রী সিনিয়র সচিবকে চিঠি দিয়েছেন।

জানা গেছে, নিয়োগ নিয়ে ভিকারুননিসায় চলা ব্যাপক বিতর্কের মধ্যেই চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে হঠাৎ করেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়, ‘এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য ইতিপূর্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের নিয়োগ কমিটির সদস্যদের ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠানের মতো কোন স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগ কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করার অনুরোধ করা হলো।’ অধ্যক্ষ নিয়োগ কমিটিতে ছিলেন ওই প্রতিষ্ঠানটির সেই সময়ের পরিচালনা পর্যদের সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার, সদস্য আতাউর রহমান ও সদস্য ডা. মজিবুর রহামান। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব অধ্যাপক শাহেদুল খবীর চৌধুরী এবং ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌস আরা। পরে বিতর্কের মুখে নতুন আদেশ জারি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে জারি করা বিতর্কিত আদেশের পুরো অংশই বাদ দেয়া হয়।

গোলাম আশরাফ তালুকদার এ বিষয়ে সংবাদকে বলেছেন, নামী প্রতিষ্ঠান ও সরকারি বেসরকারি গণমান্য ব্যক্তিদের সম্মানহানিকর বিতর্কিত আদেশের পেছনে বিএনপি-জামায়াতপন্থী সংঘবদ্ধ একটি চক্র জড়িত। এরা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য কাজ করছে।

জানা গেছে, মূলত প্রতিষ্ঠানটিতে সক্রিয় একটি বিশেষ সিন্ডিকেটের জোগসাজশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা আগের আদেশটি জারি করেছিলেন। মূলত অনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে সরকারি ও বেসরকারি কয়েকজনের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন সেই কর্মকর্তারা।

বিষয়টিকে অত্যন্ত দুঃখজনরক ও বিশেষ গোষ্ঠীর ষড়যত্রের অংশ উল্লেখ করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ৯ জুলাই শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দেন গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি ও মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার। এমন এক অবস্থার মধ্যেই সোমবার এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশ এলো।

আরও খবর
বাংলাদেশ ভারত অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে আলোচনা
উন্নয়নের জন্য মাস্টার প্ল্যান প্রস্তুতের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
এরশাদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদন
শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস আজ
বাংলাদেশ থেকে চাল নিতে আগ্রহী ফিলিপাইন
নিবন্ধন চায় ৮ হাজার অনলাইন
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরও আজমত আলী কারাগারে মুক্তির নির্দেশ
১৯ বছরেও সম্পন্ন হলো না বিচার
কাজী ওয়াছি উদ্দিনের বহিষ্কার দাবিতে ঢাবিতে মানববন্ধন
দুটি হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন
শিল্পাঞ্চলের বাইরে কারখানায় গ্যাস বিদ্যুৎ সংযোগ নয় : প্রতিমন্ত্রী
দুই ধর্ষক গ্রেফতার
বিচার প্রক্রিয়া ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা
মাহিনুর হকের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী

মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০১৯ , ২ শ্রাবন ১৪২৫, ১২ জিলকদ ১৪৪০

ভিকারুননিসায় অধ্যক্ষ নিয়োগসহ

বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কিত আদেশে ফেঁসে যাচ্ছেন অসাধু কর্মকর্তারা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগসহ বিভিন্ন ইস্যুতে জারি করা বিতর্কিত আদেশে ফেঁসে যাচ্ছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অসাধু কর্মকর্তারা। ওই আদেশ জারির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির নির্দেশে ভিকারুননিসায় নিয়োগ ও ভর্তি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটকেও চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি ও শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দেয়া বিতর্কিত নিষেধাজ্ঞার নেপথ্যের কারণ জানতে চেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। একই সঙ্গে মন্ত্রী এ ধরনের আদেশ কীভাবে হয়েছে, তা সাত দিনের মধ্যে জানাতে শিক্ষা সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন।

গতকাল শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনা পাঠানো হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে। সিনিয়র সচিবের দফতর সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষামন্ত্রী ঐতিহ্যবাহী ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ নিয়ে সম্প্রতি জারি করা আলোচিত ও বিকর্তিক আদেশ ছাড়াও বেশ কয়েকটি ইস্যুতে চরম ক্ষুদ্ধ। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘জরুরি ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তার একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পাঠানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো’। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ শাখার এক কর্মকর্তা এ আদেশের বিষয়ে বলেন, ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ নিয়োগ বন্ধের আদেশ জারি সঙ্গে ৫ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা যুক্ত করার ঘটনায় চরম ক্ষুদ্ধ মন্ত্রী এর নেপথ্যের কারণ ও ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে চান। এর অংশ হিসেবেই মন্ত্রী সিনিয়র সচিবকে চিঠি দিয়েছেন।

জানা গেছে, নিয়োগ নিয়ে ভিকারুননিসায় চলা ব্যাপক বিতর্কের মধ্যেই চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে হঠাৎ করেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়, ‘এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য ইতিপূর্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের নিয়োগ কমিটির সদস্যদের ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠানের মতো কোন স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগ কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করার অনুরোধ করা হলো।’ অধ্যক্ষ নিয়োগ কমিটিতে ছিলেন ওই প্রতিষ্ঠানটির সেই সময়ের পরিচালনা পর্যদের সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার, সদস্য আতাউর রহমান ও সদস্য ডা. মজিবুর রহামান। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব অধ্যাপক শাহেদুল খবীর চৌধুরী এবং ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌস আরা। পরে বিতর্কের মুখে নতুন আদেশ জারি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে জারি করা বিতর্কিত আদেশের পুরো অংশই বাদ দেয়া হয়।

গোলাম আশরাফ তালুকদার এ বিষয়ে সংবাদকে বলেছেন, নামী প্রতিষ্ঠান ও সরকারি বেসরকারি গণমান্য ব্যক্তিদের সম্মানহানিকর বিতর্কিত আদেশের পেছনে বিএনপি-জামায়াতপন্থী সংঘবদ্ধ একটি চক্র জড়িত। এরা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য কাজ করছে।

জানা গেছে, মূলত প্রতিষ্ঠানটিতে সক্রিয় একটি বিশেষ সিন্ডিকেটের জোগসাজশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা আগের আদেশটি জারি করেছিলেন। মূলত অনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে সরকারি ও বেসরকারি কয়েকজনের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন সেই কর্মকর্তারা।

বিষয়টিকে অত্যন্ত দুঃখজনরক ও বিশেষ গোষ্ঠীর ষড়যত্রের অংশ উল্লেখ করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ৯ জুলাই শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দেন গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি ও মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার। এমন এক অবস্থার মধ্যেই সোমবার এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশ এলো।