এইচএসসির ফল প্রকাশ

বেড়েছে পাসের হার, জিপিএ-৫

উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বেড়েছে। এ পরীক্ষায় ১০টি শিক্ষা বোর্ডে এবার গড় পাসের হার ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। গত বছর এ পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এ হিসাবে এবার পাসের হার বেড়েছে ৭ দশমিক ২৯ শতাংশ পয়েন্ট। সারাদেশে এবার জিপিএ-৫ (গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ) পেয়েছে ৪৭ হাজার ২৮৬ জন শিক্ষার্থী, যা ২০১৮ সালে পেয়েছিল ২৯ হাজার ২৬২ জন। এ হিসাবে এবার পূর্ণাঙ্গ জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ১৮ হাজার ২৪ জন। শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের চেয়ে এবার ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ভালো ফল অর্জন করেছে। এই দুই বিষয়ে এবার প্রায় আড়াই শতাংশ শিক্ষার্থী বেশি উত্তীর্ণ হয়েছে। এটি পাসের হার বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গতকাল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন। শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরীসহ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এরপর দুপুর সোয়া ১টায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। এ সময় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন উপস্থিত ছিলেন। এর আগেই সারাদেশের শিক্ষার্থী নিজ নিজ কলেজ ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এইচএসসি পরীক্ষার ফল জানতে পায়। এছাড়া শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট (www.educationboardresults.gov.bd) থেকে ফল জানা যাচ্ছে।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটি জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ইমেইলে কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানের ফলাফলের সফটকপি পাওয়া যাচ্ছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দফতর থেকে ফলের হার্ডকপি সংগ্রহ করা যাবে। বোর্ড থেকে ফলাফলের কপি সরবরাহ করা হবে না।

এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৪১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৫৫টি। আর এবার ৯০৯টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৪০০টি।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, ১০ শিক্ষা বোর্ডে এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৯ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৯ লাখ ৮৮ হাজার ১৭২ জন। আর আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে ৭১ দশমিক ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী, গত বছর যা ছিল ৬৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আট বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১ হাজার ৮০৭ জন। আর গত বছর তা পেয়েছিল ২৫ হাজার ৫৬২ জন।

এছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের আলিম পরীক্ষায় এবার অংশ নিয়েছিল ৮৬ হাজার ১৩৮ জন, গত বছর এ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৯৭ হাজার ৭৯৩ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে এবার আলিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৬ হাজার ২৮১ জন, গত বছর উত্তীর্ণ হয়েছিল ৭৬ হাজার ৯৩২ জন।

আলিম পরীক্ষায় এবার পাস করেছে ৮৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী, গত বছর যা ছিল ৭৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এবার আলিমে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ২৪৩ জন, গত বছর তা ছিল এক হাজার ২৪৪ জন।

এবার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (ভোকেশনাল/বিএম/ডিপ্লোমা ইন কমার্স) ও ডিআইবিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল এক লাখ ২৪ হাজার ৩২০ জন, গত বছর এ সংখ্যা ছিল এক লাখ ১৮ হাজার। তাদের মধ্যে এবার মোট পাস করেছে এক লাখ দুই হাজার ৭১৫ জন, গত বছর যা ছিল ৮৯ হাজার ৮৯ জন। এবার গড় পাসের হার ৮২ দশমিক ৬২ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৭৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। কারিগরিতে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে তিন হাজার ২৩৬ জন, গত বছর যা পেয়েছিল দুই হাজার ৪৫৬ জন।

গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠেনি। এবারও প্রশ্নফাঁসের কোন ধরনের অভিযোগ ছাড়াই উচ্চ মাধ্যমিকের সব পরীক্ষা শেষ হয়।

এ জন্য পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার পরীক্ষা হয়েছে সুন্দর পরিবেশে। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং নকল সর্বোতভাবে বন্ধ হয়েছে। পরীক্ষা নিয়ে কোন বিভ্রান্তি প্রতারণা কিংবা গুজবের সৃষ্টি হয়নি।

গত ১ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত এবারের এইচএসসি ও সমমানের লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের দুই হাজার ৫৬০টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা নেয়া হয়।

বিদেশ কেন্দ্র :

এইচএসসি পরীক্ষায় এবার বিদেশের আটটি কেন্দ্রে অংশ নিয়েছিল ২৭০ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২৫৪ জন। পাসের হার ৯৪ দশমিক ০৭ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৬ জন।

বোর্ডভিত্তিক ফল :

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল তিন লাখ ৯৩ হাজার ৮৩৫ জন ছাত্রছাত্রী। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে দুই লাখ ৭৯ হাজার ৯৭৯ জন। গড় পাসের হার ৭১ দশমিক ০৯ শতাংশ, গত বছর তা ছিল ৬৬ দশমিক ১৩ শতাংশ। এবার ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ১৮৭ জন, গত বছর তা পেয়েছিল ১২ হাজার ৯৩৮ জন।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল এক লাখ ৪৮ হাজার ৬৭২ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৫০ জন। গড় পাসের হার ৭৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৬৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। রাজশাহীতে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ছয় হাজার ৭২৯ জন, গত বছর যা পেয়েছিল চার হাজার ১৩৮ জন।

কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৯৪ হাজার ৩৬০ জন ছাত্রছাত্রী। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৩ হাজার ৩৫৮ জন। গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৬৫ দশমিক ৪২ শতাংশ। কুমিল্লায় এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে দুই হাজার ৩৭৫ জন শিক্ষার্থী, গত বছর তা পেয়েছিল ৯৪৪ জন।

যশোর শিক্ষা বোর্ডে এবার এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল এক লাখ ২৬ হাজার ২২৯ জন ছাত্রছাত্রী। এর মধ্যে পাস করেছে ৯৫ হাজার ৪৯৫ জন শিক্ষার্থী। এবার গড় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৬০ দশমিক ৪০ শতাংশ। যশোরে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে পাঁচ হাজার ৩১২ জন, গত বছর তা পেয়েছিল দুই হাজার ৮৯ জন।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৯৮ হাজার ৯২৬ জন। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৬১ হাজার ৫২৩ জন ছাত্রছাত্রী। এবার গড় পাসের হার ৬২ দশমিক ১৯ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৬২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে দুই হাজার ৮৬০ জন শিক্ষার্থী, গত বছর তা ছিল এক হাজার ৬১৩ জন।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৬৩ হাজার ৫৩৮ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৪৪ হাজার ৮৮৭ জন। গড় পাসের হার ৭০ দশমিক ৬৫ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৭০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। বরিশালে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ২০১ জন, গত বছর যা পেয়েছিল ৬৭০ জন শিক্ষার্থী।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৭৬ হাজার ২৫১ জন ছাত্রছাত্রী। এদের মধ্যে পাস করেছে ৫১ হাজার ১২৪ জন। গড় পাসের হার ৬৭ দশমিক ০৫ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৬২ দশমিক ১১ শতাংশ। সিলেটে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ৯৪ জন শিক্ষার্থী, গত বছর যা পেয়েছিল ৮৭৩ জন।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল এক লাখ ২৪ হাজার ৩১৫ জন ছাত্রছাত্রী। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৮৯ হাজার ২৩৩ জন শিক্ষার্থী। গড় পাসের হার ৭১ দশমিক ৭৮ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৬০ দশমিক ২১ শতাংশ। দিনাজপুরে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে চার হাজার ৪৯ জন, গত বছর যা পেয়েছিল দুই হাজার ২৯৭ জন শিক্ষার্থী।

২০০১ সাল থেকে জিপিএ পদ্ধতিতে এসএসসি ও ২০০৩ সাল থেকে এইচএসসির ফল প্রকাশ হয়ে আসছে। এর আগে এ দুটি পরীক্ষার ফলে নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ পেতেন শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই ২০১৯ , ৪ শ্রাবন ১৪২৫, ১৪ জিলকদ ১৪৪০

এইচএসসির ফল প্রকাশ

বেড়েছে পাসের হার, জিপিএ-৫

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

এইচএসসি পরীক্ষায় সাফল্যে রাজধানীর একটি কলেজের শিক্ষার্থীদের উল্লাস -সংবাদ

উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বেড়েছে। এ পরীক্ষায় ১০টি শিক্ষা বোর্ডে এবার গড় পাসের হার ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। গত বছর এ পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এ হিসাবে এবার পাসের হার বেড়েছে ৭ দশমিক ২৯ শতাংশ পয়েন্ট। সারাদেশে এবার জিপিএ-৫ (গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ) পেয়েছে ৪৭ হাজার ২৮৬ জন শিক্ষার্থী, যা ২০১৮ সালে পেয়েছিল ২৯ হাজার ২৬২ জন। এ হিসাবে এবার পূর্ণাঙ্গ জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ১৮ হাজার ২৪ জন। শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের চেয়ে এবার ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ভালো ফল অর্জন করেছে। এই দুই বিষয়ে এবার প্রায় আড়াই শতাংশ শিক্ষার্থী বেশি উত্তীর্ণ হয়েছে। এটি পাসের হার বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গতকাল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন। শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরীসহ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এরপর দুপুর সোয়া ১টায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। এ সময় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন উপস্থিত ছিলেন। এর আগেই সারাদেশের শিক্ষার্থী নিজ নিজ কলেজ ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এইচএসসি পরীক্ষার ফল জানতে পায়। এছাড়া শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট (www.educationboardresults.gov.bd) থেকে ফল জানা যাচ্ছে।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটি জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ইমেইলে কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানের ফলাফলের সফটকপি পাওয়া যাচ্ছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দফতর থেকে ফলের হার্ডকপি সংগ্রহ করা যাবে। বোর্ড থেকে ফলাফলের কপি সরবরাহ করা হবে না।

এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৪১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৫৫টি। আর এবার ৯০৯টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৪০০টি।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, ১০ শিক্ষা বোর্ডে এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৯ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৯ লাখ ৮৮ হাজার ১৭২ জন। আর আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে ৭১ দশমিক ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী, গত বছর যা ছিল ৬৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আট বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১ হাজার ৮০৭ জন। আর গত বছর তা পেয়েছিল ২৫ হাজার ৫৬২ জন।

এছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের আলিম পরীক্ষায় এবার অংশ নিয়েছিল ৮৬ হাজার ১৩৮ জন, গত বছর এ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৯৭ হাজার ৭৯৩ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে এবার আলিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৬ হাজার ২৮১ জন, গত বছর উত্তীর্ণ হয়েছিল ৭৬ হাজার ৯৩২ জন।

আলিম পরীক্ষায় এবার পাস করেছে ৮৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী, গত বছর যা ছিল ৭৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এবার আলিমে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ২৪৩ জন, গত বছর তা ছিল এক হাজার ২৪৪ জন।

এবার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (ভোকেশনাল/বিএম/ডিপ্লোমা ইন কমার্স) ও ডিআইবিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল এক লাখ ২৪ হাজার ৩২০ জন, গত বছর এ সংখ্যা ছিল এক লাখ ১৮ হাজার। তাদের মধ্যে এবার মোট পাস করেছে এক লাখ দুই হাজার ৭১৫ জন, গত বছর যা ছিল ৮৯ হাজার ৮৯ জন। এবার গড় পাসের হার ৮২ দশমিক ৬২ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৭৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। কারিগরিতে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে তিন হাজার ২৩৬ জন, গত বছর যা পেয়েছিল দুই হাজার ৪৫৬ জন।

গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠেনি। এবারও প্রশ্নফাঁসের কোন ধরনের অভিযোগ ছাড়াই উচ্চ মাধ্যমিকের সব পরীক্ষা শেষ হয়।

এ জন্য পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার পরীক্ষা হয়েছে সুন্দর পরিবেশে। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং নকল সর্বোতভাবে বন্ধ হয়েছে। পরীক্ষা নিয়ে কোন বিভ্রান্তি প্রতারণা কিংবা গুজবের সৃষ্টি হয়নি।

গত ১ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত এবারের এইচএসসি ও সমমানের লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের দুই হাজার ৫৬০টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা নেয়া হয়।

বিদেশ কেন্দ্র :

এইচএসসি পরীক্ষায় এবার বিদেশের আটটি কেন্দ্রে অংশ নিয়েছিল ২৭০ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২৫৪ জন। পাসের হার ৯৪ দশমিক ০৭ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৬ জন।

বোর্ডভিত্তিক ফল :

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল তিন লাখ ৯৩ হাজার ৮৩৫ জন ছাত্রছাত্রী। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে দুই লাখ ৭৯ হাজার ৯৭৯ জন। গড় পাসের হার ৭১ দশমিক ০৯ শতাংশ, গত বছর তা ছিল ৬৬ দশমিক ১৩ শতাংশ। এবার ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ১৮৭ জন, গত বছর তা পেয়েছিল ১২ হাজার ৯৩৮ জন।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল এক লাখ ৪৮ হাজার ৬৭২ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৫০ জন। গড় পাসের হার ৭৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৬৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। রাজশাহীতে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ছয় হাজার ৭২৯ জন, গত বছর যা পেয়েছিল চার হাজার ১৩৮ জন।

কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৯৪ হাজার ৩৬০ জন ছাত্রছাত্রী। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৩ হাজার ৩৫৮ জন। গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৬৫ দশমিক ৪২ শতাংশ। কুমিল্লায় এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে দুই হাজার ৩৭৫ জন শিক্ষার্থী, গত বছর তা পেয়েছিল ৯৪৪ জন।

যশোর শিক্ষা বোর্ডে এবার এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল এক লাখ ২৬ হাজার ২২৯ জন ছাত্রছাত্রী। এর মধ্যে পাস করেছে ৯৫ হাজার ৪৯৫ জন শিক্ষার্থী। এবার গড় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৬০ দশমিক ৪০ শতাংশ। যশোরে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে পাঁচ হাজার ৩১২ জন, গত বছর তা পেয়েছিল দুই হাজার ৮৯ জন।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৯৮ হাজার ৯২৬ জন। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৬১ হাজার ৫২৩ জন ছাত্রছাত্রী। এবার গড় পাসের হার ৬২ দশমিক ১৯ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৬২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে দুই হাজার ৮৬০ জন শিক্ষার্থী, গত বছর তা ছিল এক হাজার ৬১৩ জন।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৬৩ হাজার ৫৩৮ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৪৪ হাজার ৮৮৭ জন। গড় পাসের হার ৭০ দশমিক ৬৫ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৭০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। বরিশালে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ২০১ জন, গত বছর যা পেয়েছিল ৬৭০ জন শিক্ষার্থী।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৭৬ হাজার ২৫১ জন ছাত্রছাত্রী। এদের মধ্যে পাস করেছে ৫১ হাজার ১২৪ জন। গড় পাসের হার ৬৭ দশমিক ০৫ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৬২ দশমিক ১১ শতাংশ। সিলেটে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ৯৪ জন শিক্ষার্থী, গত বছর যা পেয়েছিল ৮৭৩ জন।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল এক লাখ ২৪ হাজার ৩১৫ জন ছাত্রছাত্রী। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৮৯ হাজার ২৩৩ জন শিক্ষার্থী। গড় পাসের হার ৭১ দশমিক ৭৮ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৬০ দশমিক ২১ শতাংশ। দিনাজপুরে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে চার হাজার ৪৯ জন, গত বছর যা পেয়েছিল দুই হাজার ২৯৭ জন শিক্ষার্থী।

২০০১ সাল থেকে জিপিএ পদ্ধতিতে এসএসসি ও ২০০৩ সাল থেকে এইচএসসির ফল প্রকাশ হয়ে আসছে। এর আগে এ দুটি পরীক্ষার ফলে নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ পেতেন শিক্ষার্থী।