দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ভালোবাসার পাশাপাশি দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশকে সবসময় ভালোবাসবে। দেশের মানুষকে ভালোবাসবে এবং দেশকে গড়ে তোলার জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করবে। শেখ হাসিনা বলেন, নিজের জীবনকে যেমন সুন্দরভাবে গড়ে তুলবে, পাশাপাশি এই দেশকেও গড়ে তুলবে। এই চিন্তাচেতনা যেন সবসময় তোমাদের মাঝে থাকে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল গণভবনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘দেশব্যাপী সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০১৯’র জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচিত ১২ জন সেরা মেধাবীকে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সোহরাব হোসেইন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। পুরস্কার বিজয়ী মেধাবী শিক্ষার্থীদের পক্ষে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী পারশিয়া নাওয়ার অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনভূত ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা হচ্ছে একধরনের আলো; যা মানুষকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেয়। সে আলো থেকে যেন এ দেশের কোন ছেলেমেয়ে বঞ্চিত না হয়। সেটাই আমাদের লক্ষ্য এবং এই লক্ষ্যপূরণে নানা নীতিমালাও আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

বর্তমান যুগকে বিজ্ঞানের যুগ ও বিজ্ঞানচর্চা এবং গবেষণা ছাড়া কোনকিছুই অর্জন করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ খাদ্যে যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে সেটা আমাদের গবেষণার ফসল। যে কারণে গণিত ও কম্পিউটার শিক্ষার ওপর আমরা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছি।

আমাদের বিজয়ের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগের ইতিহাস থেকে একসময় বাঙালি জাতি সম্পূর্ণ বঞ্চিত ছিল উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, সে সময় একটা বিকৃত ইতিহাস শেখানো হতো।

তিনি বলেন, বিকৃত বা মিথ্যা ইতিহাস দিয়ে যার শিক্ষাজীবন শুরু হয় তার জীনটাও মিথ্যা হয়ে যায়, সেভাবে উৎকর্ষ সাধন বা বিকাশ লাভ করতে পারে না। সে জন্য এই বিষয়গুলোকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে আমরা মেধা অন্বেষণের একটা উদ্যোগ নিয়ে পুরস্কারের ব্যবস্থা করলাম।

অনন্য সাধারণ মেধা অন্বেষণের লক্ষ্যে ও শিক্ষাক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের বৈষম্য নিরসনে ও শিক্ষার্থীদের মাঝে দৃঢ় আস্থা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০১৩ সাল থেকে প্রতিবছর সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।

দেশের সব সরকারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিম্নমাধ্যমিক পর্যায় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে মোট ১২ জনকে বছরের সেরা মেধাবী নির্বাচন করা হয়।

ভাষা ও সাহিত্য, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, গণিত ও কম্পিউটার এবং বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ-এই ৪টি ক্যাটাগরিতে এবং তিনটি গ্রুপে ১২ জন মেধাবীকে অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করেন প্রধানমন্ত্রী।

২০১৯ সালের সেরা মেধাবী ১২ জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেককে পুরস্কারস্বরূপ সনদপত্র, মেডেল এবং এক লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।

পুরস্কার বিজয়ীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, তোমরা আজকে যারা পুরস্কার পেয়েছ তোমরাই আমাদের ভবিষ্যৎ, তোমরাই এ দেশকে একদিন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন একটা স্বাধীন জাতি হিসেবে নিজেদের মর্যাদা নিয়ে চলার মানসিক শক্তি পায় এবং তাদের মেধা বিকাশের সুযোগ হয়। সৃজনশীলতা যেন তাদের মাঝে আরও গড়ে ওঠে, সেদিকে দৃষ্টি রেখেই আমাদের সব কার্যক্রম।

‘আমরা বিজয়ী জাতি’ এই বিষয়টি মাথায় রাখার জন্য শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই সেই বিজয়ী জাতি হিসেকে বিশ্বদরবারে আমরা সবসময় মাথা উঁচু করেই চলব।

একসময় বিশ্বে বাংলাদেশকে নানা বিষয়ে হেয়প্রতিপন্ন করা হলেও আজকে আর সেই দিন নেই উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এখন বাংলাদেশকে সবাই বলে, বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের বিস্ময়কর মডেল। বাংলাদেশ হচ্ছে উন্নয়নের রোল মডেল।

তিনি আরও বলেন, এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। আর সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য যে সোনার ছেলেমেয়ে দরকার, তোমরাই হবে আগামীর দিনের সোনার ছেলেমেয়ে।

বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই ২০১৯ , ৪ শ্রাবন ১৪২৫, ১৪ জিলকদ ১৪৪০

দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ভালোবাসার পাশাপাশি দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশকে সবসময় ভালোবাসবে। দেশের মানুষকে ভালোবাসবে এবং দেশকে গড়ে তোলার জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করবে। শেখ হাসিনা বলেন, নিজের জীবনকে যেমন সুন্দরভাবে গড়ে তুলবে, পাশাপাশি এই দেশকেও গড়ে তুলবে। এই চিন্তাচেতনা যেন সবসময় তোমাদের মাঝে থাকে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল গণভবনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘দেশব্যাপী সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০১৯’র জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচিত ১২ জন সেরা মেধাবীকে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সোহরাব হোসেইন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। পুরস্কার বিজয়ী মেধাবী শিক্ষার্থীদের পক্ষে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী পারশিয়া নাওয়ার অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনভূত ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা হচ্ছে একধরনের আলো; যা মানুষকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেয়। সে আলো থেকে যেন এ দেশের কোন ছেলেমেয়ে বঞ্চিত না হয়। সেটাই আমাদের লক্ষ্য এবং এই লক্ষ্যপূরণে নানা নীতিমালাও আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

বর্তমান যুগকে বিজ্ঞানের যুগ ও বিজ্ঞানচর্চা এবং গবেষণা ছাড়া কোনকিছুই অর্জন করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ খাদ্যে যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে সেটা আমাদের গবেষণার ফসল। যে কারণে গণিত ও কম্পিউটার শিক্ষার ওপর আমরা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছি।

আমাদের বিজয়ের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগের ইতিহাস থেকে একসময় বাঙালি জাতি সম্পূর্ণ বঞ্চিত ছিল উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, সে সময় একটা বিকৃত ইতিহাস শেখানো হতো।

তিনি বলেন, বিকৃত বা মিথ্যা ইতিহাস দিয়ে যার শিক্ষাজীবন শুরু হয় তার জীনটাও মিথ্যা হয়ে যায়, সেভাবে উৎকর্ষ সাধন বা বিকাশ লাভ করতে পারে না। সে জন্য এই বিষয়গুলোকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে আমরা মেধা অন্বেষণের একটা উদ্যোগ নিয়ে পুরস্কারের ব্যবস্থা করলাম।

অনন্য সাধারণ মেধা অন্বেষণের লক্ষ্যে ও শিক্ষাক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের বৈষম্য নিরসনে ও শিক্ষার্থীদের মাঝে দৃঢ় আস্থা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০১৩ সাল থেকে প্রতিবছর সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।

দেশের সব সরকারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিম্নমাধ্যমিক পর্যায় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে মোট ১২ জনকে বছরের সেরা মেধাবী নির্বাচন করা হয়।

ভাষা ও সাহিত্য, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, গণিত ও কম্পিউটার এবং বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ-এই ৪টি ক্যাটাগরিতে এবং তিনটি গ্রুপে ১২ জন মেধাবীকে অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করেন প্রধানমন্ত্রী।

২০১৯ সালের সেরা মেধাবী ১২ জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেককে পুরস্কারস্বরূপ সনদপত্র, মেডেল এবং এক লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।

পুরস্কার বিজয়ীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, তোমরা আজকে যারা পুরস্কার পেয়েছ তোমরাই আমাদের ভবিষ্যৎ, তোমরাই এ দেশকে একদিন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন একটা স্বাধীন জাতি হিসেবে নিজেদের মর্যাদা নিয়ে চলার মানসিক শক্তি পায় এবং তাদের মেধা বিকাশের সুযোগ হয়। সৃজনশীলতা যেন তাদের মাঝে আরও গড়ে ওঠে, সেদিকে দৃষ্টি রেখেই আমাদের সব কার্যক্রম।

‘আমরা বিজয়ী জাতি’ এই বিষয়টি মাথায় রাখার জন্য শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই সেই বিজয়ী জাতি হিসেকে বিশ্বদরবারে আমরা সবসময় মাথা উঁচু করেই চলব।

একসময় বিশ্বে বাংলাদেশকে নানা বিষয়ে হেয়প্রতিপন্ন করা হলেও আজকে আর সেই দিন নেই উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এখন বাংলাদেশকে সবাই বলে, বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের বিস্ময়কর মডেল। বাংলাদেশ হচ্ছে উন্নয়নের রোল মডেল।

তিনি আরও বলেন, এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। আর সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য যে সোনার ছেলেমেয়ে দরকার, তোমরাই হবে আগামীর দিনের সোনার ছেলেমেয়ে।