আফ্রিকার পশ্চিশ-মধ্যঞ্চীয় দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআর কঙ্গো) ইবোলা প্রাদুর্ভাবকে ‘বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সংকট’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) হু। এ সংকটের জেরে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি। গত বুধবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও’র প্রধান টেড্রোস আধানম গিব্রায়াসুস এ ঘোষণা দেন।
এদিন হু’র প্রধান টেড্রোস বলেন, ইবোলার প্রাদুর্ভাবের প্রতি বিশ্ববাসীর নজর দেয়ার সময় হয়েছে এখন। এ জনস্বাস্থ্য সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটির পক্ষ থেকে বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার ফলে সম্পদশালী দাতাদেশগুলো ইবোলায় আক্রান্ত দেশগুলোকে আরও অর্থ সহায়তা দেয়ার বিষয়ে সচেতন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি জানান, কঙ্গোর প্রতিবেশী দেশগুলোয় ইবোলা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা খুবই বেশি। উগান্ডায় ইতোমধ্যেই রোগটি কয়েকজনের মধ্যে শনাক্ত হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে রুয়ান্ডা কারণ দেশটির সঙ্গে কঙ্গোর সীমান্তবর্তী অঞ্চল গোমাতে ইবোলা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
সংস্থাটি জানায়, রোগটির প্রতিষেধক রয়েছে এবং সেটি ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর। দেড় লাখেরও বেশি মানুষকে ওই প্রতিষেধক দেয়া হয়েছে। শুধু যারা কোন ইবোলা রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন অথবা তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন, তাদের ওই প্রতিষেধক দেয়া হয়েছে। পশ্চিম আফ্রিকায় এর আগেরবারের মহামারী যখন চলছিল, তখন এ রোগের প্রতিষেধক প্রস্তুত হয়েছে। এবারের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর সবার জন্য সেটি সহজলভ্য করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে কঙ্গোর ১০ লাখেরও বেশি বাসিন্দার শহর গোমায় প্রথমবারের মতো একজনের শরীরে ইবোলার ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশটির আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ ইবোলায় আক্রান্ত হয়েছে এবং এর মধ্যে ১ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মারা গেছে। দেশটিতে ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম এ প্রাদুর্ভাব গত বছরের অগাস্টে শুরু হয়। ইবোলার প্রার্দুভাব সম্প্রতি কঙ্গোর উত্তর কিভু ও ইতুরি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ওই অঞ্চলগুলোর ২২৪ দিনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজারে দাঁড়ায়। কিন্তু পরবর্তী মাত্র ৭১ দিনের মধ্যে সংখ্যাটি ২ হাজারে গিয়ে ঠেকে। দেশটিতে প্রতিদিন নতুন করে প্রায় ১২ জন এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ওই অঞ্চলের বাইরে রোগটি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি না হওয়ায় এখনই সীমান্ত বন্ধ করার বিষয়ে কিছু বলেনি ডব্লিউএইচও। সর্বোচ্চ পর্যায়ের এ জরুরি পরিস্থিতির ঘোষণা এর আগে মাত্র চারবার দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাটি। এর মধ্যে একটি পশ্চিম আফ্রিকায় মহামারী আকারে ইবোলার ছড়িয়ে পড়া নিয়েই ছিল। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের ওই সময়টিতে পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা সংক্রমণে ১১ হাজারের বেশি লোকের মৃত্যু হয়।
প্রবাহিত ইবোলা নদী থেকে ইবোলা ভাইরাসের নামকরণ। সর্বপ্রথম ১৯৭৬ সালে এ ভাইরাসের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হয়। ২০১৪-১৫ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণে ১১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তখন বেশি আক্রান্ত হয়েছিল গিনি, সিয়েরা লিওন ও লাইবেরিয়া।
শুক্রবার, ১৯ জুলাই ২০১৯ , ৪ শ্রাবন ১৪২৫, ১৫ জিলকদ ১৪৪০
সংবাদ ডেস্ক |
আফ্রিকার পশ্চিশ-মধ্যঞ্চীয় দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআর কঙ্গো) ইবোলা প্রাদুর্ভাবকে ‘বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সংকট’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) হু। এ সংকটের জেরে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি। গত বুধবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও’র প্রধান টেড্রোস আধানম গিব্রায়াসুস এ ঘোষণা দেন।
এদিন হু’র প্রধান টেড্রোস বলেন, ইবোলার প্রাদুর্ভাবের প্রতি বিশ্ববাসীর নজর দেয়ার সময় হয়েছে এখন। এ জনস্বাস্থ্য সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটির পক্ষ থেকে বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার ফলে সম্পদশালী দাতাদেশগুলো ইবোলায় আক্রান্ত দেশগুলোকে আরও অর্থ সহায়তা দেয়ার বিষয়ে সচেতন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি জানান, কঙ্গোর প্রতিবেশী দেশগুলোয় ইবোলা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা খুবই বেশি। উগান্ডায় ইতোমধ্যেই রোগটি কয়েকজনের মধ্যে শনাক্ত হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে রুয়ান্ডা কারণ দেশটির সঙ্গে কঙ্গোর সীমান্তবর্তী অঞ্চল গোমাতে ইবোলা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
সংস্থাটি জানায়, রোগটির প্রতিষেধক রয়েছে এবং সেটি ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর। দেড় লাখেরও বেশি মানুষকে ওই প্রতিষেধক দেয়া হয়েছে। শুধু যারা কোন ইবোলা রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন অথবা তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন, তাদের ওই প্রতিষেধক দেয়া হয়েছে। পশ্চিম আফ্রিকায় এর আগেরবারের মহামারী যখন চলছিল, তখন এ রোগের প্রতিষেধক প্রস্তুত হয়েছে। এবারের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর সবার জন্য সেটি সহজলভ্য করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে কঙ্গোর ১০ লাখেরও বেশি বাসিন্দার শহর গোমায় প্রথমবারের মতো একজনের শরীরে ইবোলার ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশটির আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ ইবোলায় আক্রান্ত হয়েছে এবং এর মধ্যে ১ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মারা গেছে। দেশটিতে ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম এ প্রাদুর্ভাব গত বছরের অগাস্টে শুরু হয়। ইবোলার প্রার্দুভাব সম্প্রতি কঙ্গোর উত্তর কিভু ও ইতুরি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ওই অঞ্চলগুলোর ২২৪ দিনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজারে দাঁড়ায়। কিন্তু পরবর্তী মাত্র ৭১ দিনের মধ্যে সংখ্যাটি ২ হাজারে গিয়ে ঠেকে। দেশটিতে প্রতিদিন নতুন করে প্রায় ১২ জন এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ওই অঞ্চলের বাইরে রোগটি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি না হওয়ায় এখনই সীমান্ত বন্ধ করার বিষয়ে কিছু বলেনি ডব্লিউএইচও। সর্বোচ্চ পর্যায়ের এ জরুরি পরিস্থিতির ঘোষণা এর আগে মাত্র চারবার দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাটি। এর মধ্যে একটি পশ্চিম আফ্রিকায় মহামারী আকারে ইবোলার ছড়িয়ে পড়া নিয়েই ছিল। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের ওই সময়টিতে পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা সংক্রমণে ১১ হাজারের বেশি লোকের মৃত্যু হয়।
প্রবাহিত ইবোলা নদী থেকে ইবোলা ভাইরাসের নামকরণ। সর্বপ্রথম ১৯৭৬ সালে এ ভাইরাসের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হয়। ২০১৪-১৫ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণে ১১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তখন বেশি আক্রান্ত হয়েছিল গিনি, সিয়েরা লিওন ও লাইবেরিয়া।