‘বর্ণবাদী’ মন্তব্যর পর রিপাবলিকানদের মধ্যে বেড়েছে ট্রাম্পের সমর্থন

মার্কিন কংগ্রেসের বিরোধীদলীয় (ডেমোক্র্যাটিক পার্টি) চার নারী আইন প্রণেতাকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘বর্ণবাদী মন্তব্য’ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠার পর নিজ দলের রিপাবলিকান সদস্যদের মধ্যে তার প্রতি সমর্থন কিছুটা বেড়েছে। রয়টার্স/ইপসোস পরিচালতি এক জনমত জরিপের ফল এমন তথ্যই জানচ্ছে।

জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের পর নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা গত সপ্তাহের ততুলনায় ৫ শতাংশ বেড়েছে। গত রোববার এক টুইটে ট্রাম্প ‘প্রগতিশীল’ ডেমোক্র্যাট হিসেবে পরিচিত চার নারী প্রতিনিধির নাম উল্লেখ না করে ‘যেসব ব্যর্থ ও অপরাধপ্রবণ দেশ থেকে তারা এসেছেন, সেখানে চলে গিয়ে সমস্যার সমাধান করে ফিরে এসে পরে যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যা সমাধানে সহায়তা করার’ পরামর্শ দেন। যে চারজনকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প ওই টুইট করেন তারা হলেন, নিউইয়র্কের আলেকজান্ড্রিয়া ওকাসিও-কোর্তেজ, মিনেসোটার ইলহান ওমর, ম্যাসাচুসেটসের আইয়ানা প্রেসলি ও মিশিগানের রাশিদা তালিব- এরা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাদের মধ্যে তিন জনের জন্মই যুক্তরাষ্ট্রে। ট্রাম্পের ?ওই টুইট দেশে-বিদেশে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদও ট্রাম্পের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে। ঘটনাটির প্রেক্ষাপটে রয়টার্স গত সোম ও মঙ্গলবার জাতীয় পর্যায়ে জরিপ চালায়।

এ জরিপে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকানদের মধ্যে ট্রাম্পের সমর্থন বাড়াতে দেখা গেলেও ডেমোক্র্যাট ও স্বতন্ত্র সদস্যদের মধ্যে তার সমর্থন কমতে দেখা গেছে। জরিপ অনুযায়ী, এখন স্বতন্ত্র আইন প্রণেতাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৩ জন ট্রাম্পকে সমর্থন করেন। যেখানে এক সপ্তাহ আগে এ অনুপাত ছিল ১০ জনে ৪ জন। আর ডেমোক্র্যাট দলের সমর্থকদের মধ্যে ট্রাম্পের সমর্থন গত সপ্তাহের তুলনায় ২ শতাংশ পড়ে গেছে। নিজ দলে সমর্থন বেড়ে যাওয়া এবং বিরোধী ও স্বতন্ত্র দের মধ্যে সমর্থন কমার কারণে ট্রাম্পের সমর্থন সপ্তাহজুড়ে প্রায় একইরকম রয়েছে। আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। জরিপ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ৪১ শতাংশ মানুষ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উপর খুশি। আর ৫৫ শতাংশ মানুষ তাকে পছন্দ করে না। রোববার ট্রাম্পের ‘বর্ণবাদী মন্তব্যের’ কারণে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি নিন্দা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি করেছে। এতে প্রস্তাবের পক্ষে ২৪০ ও বিপক্ষে ১৮৭ ভোট পড়ে। প্রস্তাবে বলা হয়, “প্রতিনিধি পরিষদ জোরালোভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যের নিন্দা করছে। তার এসব মন্তব্য নতুন আমেরিকান ও ভিন্ন বর্ণের মানুষদের প্রতি ভয় ও ঘৃণাকে বৈধতা দিয়ে তা বাড়িয়ে তুলবে।’ ভোটাভুটিতে চার রিপাবলিকান দলীয় সদস্য ও একজন স্বতন্ত্র সদস্য ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে মিলে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। তবে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ যতই নিন্দা জানাক রিপাবলিকান সমর্থকদের কাছে ট্রাম্পের মন্তব্য ভিন্ন অর্থে ধরা দিয়েছে বলে মনে করেন ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের পলিটিক্যাল সায়েন্স এবং আফ্রিকান-আমেরিকান স্টাডিজের অধ্যাপক ভিনসেন্ট হ্যাচিংস।

তিনি বলেন, ‘রিপাবলিকানদের কাছে ট্রাম্পের মন্তব্য খুবই সাধারণ লেগেছে : ‘হেই, যদি আপনার আমেরিকা পছন্দ না হয়, তবে চলে যেতে পারেন। যে কারণে তাদের কাছে ওটা মোটেই বিতর্কিত মন্তব্য মনে হয়নি। যদি আপনি ট্রাম্পের সমর্থক হয়ে থাকেন তবে আপনার জন্য তার মন্তব্য এভাবে ব্যাখ্যা করা খুব সহজ।’ প্রতিনিধি পরিষদে উদারপন্থিদের সমালোচনা করে ট্রাম্প তার সমর্থকদের মনমত কাজ করছেন বলেও মনে করেন হ্যাচিংস। তিনি বলেন, ‘রিপাবলিকানরা তার কাছ থেকে যা চায় তিনি ঠিক সেটিই করছেন। তিনি ওই দলের বিরুদ্ধে কথা বলছেন যাদের তারা (রিপাবলিকান) বিরোধিতা করে।’

image

আগামী ২০২০ সালে অনুষ্ঠেয় ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় ডোনাল্ড ট্রাম্প-রয়টার্স

আরও খবর
বৈশ্বিক জরুরি অবস্থার ঘোষণা হু’র
জাপানে একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ড নিহত ২৩

শুক্রবার, ১৯ জুলাই ২০১৯ , ৪ শ্রাবন ১৪২৫, ১৫ জিলকদ ১৪৪০

‘বর্ণবাদী’ মন্তব্যর পর রিপাবলিকানদের মধ্যে বেড়েছে ট্রাম্পের সমর্থন

সংবাদ ডেস্ক |

image

আগামী ২০২০ সালে অনুষ্ঠেয় ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় ডোনাল্ড ট্রাম্প-রয়টার্স

মার্কিন কংগ্রেসের বিরোধীদলীয় (ডেমোক্র্যাটিক পার্টি) চার নারী আইন প্রণেতাকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘বর্ণবাদী মন্তব্য’ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠার পর নিজ দলের রিপাবলিকান সদস্যদের মধ্যে তার প্রতি সমর্থন কিছুটা বেড়েছে। রয়টার্স/ইপসোস পরিচালতি এক জনমত জরিপের ফল এমন তথ্যই জানচ্ছে।

জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের পর নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা গত সপ্তাহের ততুলনায় ৫ শতাংশ বেড়েছে। গত রোববার এক টুইটে ট্রাম্প ‘প্রগতিশীল’ ডেমোক্র্যাট হিসেবে পরিচিত চার নারী প্রতিনিধির নাম উল্লেখ না করে ‘যেসব ব্যর্থ ও অপরাধপ্রবণ দেশ থেকে তারা এসেছেন, সেখানে চলে গিয়ে সমস্যার সমাধান করে ফিরে এসে পরে যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যা সমাধানে সহায়তা করার’ পরামর্শ দেন। যে চারজনকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প ওই টুইট করেন তারা হলেন, নিউইয়র্কের আলেকজান্ড্রিয়া ওকাসিও-কোর্তেজ, মিনেসোটার ইলহান ওমর, ম্যাসাচুসেটসের আইয়ানা প্রেসলি ও মিশিগানের রাশিদা তালিব- এরা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাদের মধ্যে তিন জনের জন্মই যুক্তরাষ্ট্রে। ট্রাম্পের ?ওই টুইট দেশে-বিদেশে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদও ট্রাম্পের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে। ঘটনাটির প্রেক্ষাপটে রয়টার্স গত সোম ও মঙ্গলবার জাতীয় পর্যায়ে জরিপ চালায়।

এ জরিপে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকানদের মধ্যে ট্রাম্পের সমর্থন বাড়াতে দেখা গেলেও ডেমোক্র্যাট ও স্বতন্ত্র সদস্যদের মধ্যে তার সমর্থন কমতে দেখা গেছে। জরিপ অনুযায়ী, এখন স্বতন্ত্র আইন প্রণেতাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৩ জন ট্রাম্পকে সমর্থন করেন। যেখানে এক সপ্তাহ আগে এ অনুপাত ছিল ১০ জনে ৪ জন। আর ডেমোক্র্যাট দলের সমর্থকদের মধ্যে ট্রাম্পের সমর্থন গত সপ্তাহের তুলনায় ২ শতাংশ পড়ে গেছে। নিজ দলে সমর্থন বেড়ে যাওয়া এবং বিরোধী ও স্বতন্ত্র দের মধ্যে সমর্থন কমার কারণে ট্রাম্পের সমর্থন সপ্তাহজুড়ে প্রায় একইরকম রয়েছে। আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। জরিপ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ৪১ শতাংশ মানুষ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উপর খুশি। আর ৫৫ শতাংশ মানুষ তাকে পছন্দ করে না। রোববার ট্রাম্পের ‘বর্ণবাদী মন্তব্যের’ কারণে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি নিন্দা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি করেছে। এতে প্রস্তাবের পক্ষে ২৪০ ও বিপক্ষে ১৮৭ ভোট পড়ে। প্রস্তাবে বলা হয়, “প্রতিনিধি পরিষদ জোরালোভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যের নিন্দা করছে। তার এসব মন্তব্য নতুন আমেরিকান ও ভিন্ন বর্ণের মানুষদের প্রতি ভয় ও ঘৃণাকে বৈধতা দিয়ে তা বাড়িয়ে তুলবে।’ ভোটাভুটিতে চার রিপাবলিকান দলীয় সদস্য ও একজন স্বতন্ত্র সদস্য ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে মিলে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। তবে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ যতই নিন্দা জানাক রিপাবলিকান সমর্থকদের কাছে ট্রাম্পের মন্তব্য ভিন্ন অর্থে ধরা দিয়েছে বলে মনে করেন ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের পলিটিক্যাল সায়েন্স এবং আফ্রিকান-আমেরিকান স্টাডিজের অধ্যাপক ভিনসেন্ট হ্যাচিংস।

তিনি বলেন, ‘রিপাবলিকানদের কাছে ট্রাম্পের মন্তব্য খুবই সাধারণ লেগেছে : ‘হেই, যদি আপনার আমেরিকা পছন্দ না হয়, তবে চলে যেতে পারেন। যে কারণে তাদের কাছে ওটা মোটেই বিতর্কিত মন্তব্য মনে হয়নি। যদি আপনি ট্রাম্পের সমর্থক হয়ে থাকেন তবে আপনার জন্য তার মন্তব্য এভাবে ব্যাখ্যা করা খুব সহজ।’ প্রতিনিধি পরিষদে উদারপন্থিদের সমালোচনা করে ট্রাম্প তার সমর্থকদের মনমত কাজ করছেন বলেও মনে করেন হ্যাচিংস। তিনি বলেন, ‘রিপাবলিকানরা তার কাছ থেকে যা চায় তিনি ঠিক সেটিই করছেন। তিনি ওই দলের বিরুদ্ধে কথা বলছেন যাদের তারা (রিপাবলিকান) বিরোধিতা করে।’