হত্যার দায় স্বীকার করে মিন্নির জবানবন্দি

পুলিশ রাজনৈতিক প্রভাবে ন্যুব্জ : মিন্নির বাবা

চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী কাম একই মামলার আসামি নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি রিফাত শরীফ হত্যার দায় স্বীকার করে শুক্রবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তবে জবানবন্দি নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর।

শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে ৭টা পর্যন্ত বরগুনার সি. জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জবানবন্দি দেয়। সাপ্তাহিক ছুটির পরও শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে রিফাত হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কাঠোর নিরাপত্তায় আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে জবানবন্দি প্রদানের পর ৭টার দিকে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ নিয়ে মোট ১৩ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিযেছে বলে জানা গেছে।

এ দিকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে ২ দিন না যেতেই তড়িঘড়ি করে ছুটির দিনে মিন্নির জবানবন্দি নেয়ার সমালোচনা করেছেন মিন্নির বাবা মো. মোজাম্মেল হক কিশোর। বরগুনার আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের কাছে দেয়া এক বক্তব্যে তিনি জানান, মামলাটি এখন সম্পূর্ণ রাজনৈতিক চাপের কাছে ন্যুব্জ। রাজনৈতিক ইশারায়ই পুলিশ কাজ করছে বলে তার অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা থেকে ৪০ জনের একদল আইনজীবী, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী আয়শা দিদ্দিকা মিন্নিকে সহায়তা দেবার কথা শুনে পুলিশ তাড়াহুড়া করে ভয় দেখিয়ে মিন্নির স্বীকারোক্তি আদায় করে নিয়েছে। এটা অন্যায়। মিন্নি ছোট মানুষ এতবড় মানসিক নির্যাতন সহ্য করার মতো সামর্থ্য তার নেই।

গত ১৬ জুলাই আসামি শনাক্তকরণের কথা বলে বরগুনা পুলিশের একটি দল আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে আসে। প্রায় ১৩ ঘণ্টা জিঞ্জাসাবাদের পর এদিন রাত সাড়ে ৯টায় বরগুনার পুলিশ সুপার মিন্নিকে গ্রেফতারের ঘোষণা দেয়। পরের দিন তাকে রিমান্ডের জন্য বরগুনার সি. জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করলে আদালত পুলিশকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। তবে ২ দিনের মাথায়ই মিন্নিকে ছুটির দিনে স্বকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে হাজির করা হয়। রিফাত

হত্যা মামলায় রিশান ফরাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

এদিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ৩নং প্রধান আসামি রিশান ফরাজীকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে রিশানকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করার জন্য আবেদন করেন, মামলা তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবির। বিচারক তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। রিশান ফরাজীকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জানিয়েছেন, রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তারা ১৫ জনকে জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার করেছেন। মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন। গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৩ জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। গ্রেফতারকৃত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জবানবন্দির পর বর্তমানে ২ জন এখনো পুলিশের রিমান্ডে রয়েছে।

শনিবার, ২০ জুলাই ২০১৯ , ৫ শ্রাবন ১৪২৫, ১৬ জিলকদ ১৪৪০

হত্যার দায় স্বীকার করে মিন্নির জবানবন্দি

পুলিশ রাজনৈতিক প্রভাবে ন্যুব্জ : মিন্নির বাবা

প্রতিনিধি, বরগুনা

image

চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী কাম একই মামলার আসামি নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি রিফাত শরীফ হত্যার দায় স্বীকার করে শুক্রবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তবে জবানবন্দি নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর।

শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে ৭টা পর্যন্ত বরগুনার সি. জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জবানবন্দি দেয়। সাপ্তাহিক ছুটির পরও শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে রিফাত হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কাঠোর নিরাপত্তায় আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে জবানবন্দি প্রদানের পর ৭টার দিকে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ নিয়ে মোট ১৩ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিযেছে বলে জানা গেছে।

এ দিকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে ২ দিন না যেতেই তড়িঘড়ি করে ছুটির দিনে মিন্নির জবানবন্দি নেয়ার সমালোচনা করেছেন মিন্নির বাবা মো. মোজাম্মেল হক কিশোর। বরগুনার আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের কাছে দেয়া এক বক্তব্যে তিনি জানান, মামলাটি এখন সম্পূর্ণ রাজনৈতিক চাপের কাছে ন্যুব্জ। রাজনৈতিক ইশারায়ই পুলিশ কাজ করছে বলে তার অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা থেকে ৪০ জনের একদল আইনজীবী, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী আয়শা দিদ্দিকা মিন্নিকে সহায়তা দেবার কথা শুনে পুলিশ তাড়াহুড়া করে ভয় দেখিয়ে মিন্নির স্বীকারোক্তি আদায় করে নিয়েছে। এটা অন্যায়। মিন্নি ছোট মানুষ এতবড় মানসিক নির্যাতন সহ্য করার মতো সামর্থ্য তার নেই।

গত ১৬ জুলাই আসামি শনাক্তকরণের কথা বলে বরগুনা পুলিশের একটি দল আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে আসে। প্রায় ১৩ ঘণ্টা জিঞ্জাসাবাদের পর এদিন রাত সাড়ে ৯টায় বরগুনার পুলিশ সুপার মিন্নিকে গ্রেফতারের ঘোষণা দেয়। পরের দিন তাকে রিমান্ডের জন্য বরগুনার সি. জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করলে আদালত পুলিশকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। তবে ২ দিনের মাথায়ই মিন্নিকে ছুটির দিনে স্বকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে হাজির করা হয়। রিফাত

হত্যা মামলায় রিশান ফরাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

এদিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ৩নং প্রধান আসামি রিশান ফরাজীকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে রিশানকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করার জন্য আবেদন করেন, মামলা তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবির। বিচারক তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। রিশান ফরাজীকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জানিয়েছেন, রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তারা ১৫ জনকে জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার করেছেন। মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন। গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৩ জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। গ্রেফতারকৃত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জবানবন্দির পর বর্তমানে ২ জন এখনো পুলিশের রিমান্ডে রয়েছে।