পানি বাড়ছে মধ্যাঞ্চলে

  • নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
  • শুরু হয়েছে ত্রাণ তৎপরতা

দেশের উত্তরাঞ্চলে নদীর পানি কমলেও বাড়ছে মধ্যাঞ্চলে। বাঁধ ভেঙে নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বগুড়ায় যমুনার পানি কমলেও বাঙালি নদীর পানি বাড়ছে। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়কের ডাইভারশন ভেঙে ৩৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফরিদপুরে পদ্মার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মাদারীপুরের শিবচরে পানিবন্দী লাখো মানুষ। এদিকে দুর্গত এলাকায় শুরু হয়েছে ত্রাণ তৎপরতা। তবে তা অপ্রতুল।

বগুড়া : বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনার পানি কমলেও বাঙালি নদীর পানি বাড়ছে ব্যাপক হারে। পৌর এলাকা সারিয়াকান্দি সদর, নারচী, ফুলবাড়ী, কুতুবপুর এবং ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যাকবলিত এলাকায় ১ লাখ ২৫ হাজার গরু, মহিষ, লক্ষাধিক ছাগল, ১০ হাজার ভেড়া পানিবন্দী রয়েছে। হাওড়াখালি গ্রামের মজিদ ফকির, আমজাদ হোসেন, পাইকপাড়ার জহুরুল মন্ডল জানান, তাদের বাড়িঘরে বন্যার পানি ওঠায় গরু-ছাগল নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি কমে রোববার বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার এবং বাঙালি নদীর পানি ৪০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার যমুনা ও বাঙালি নদীবেষ্টিত সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় ২০টি ইউনিয়নের ১৩৮টি গ্রামের ১লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন পানিবন্দী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি কমলেও ধলেশ্বরী, ঝিনাই ও লৌহজং নদীর পানি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এদিকে পৌলী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়কের শ্যামপুর ডাইভারশন ভেঙে গেছে। এতে করে বাংড়া, সহদেবপুর ইউনিয়ন ও এলেঙ্গা পৌরসভার অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত দেবনাথ জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বাংড়া ইউপি চেয়ারম্যান হাসমত আলী জানান, এ ঘটনায় বেশকিছু গ্রাম পুরোটা ও আংশিকভাবে নতুন করে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে জেলার দক্ষিণের উপজেলা নাগরপুর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে উপজেলা সদরের বিভিন্ন পয়েন্টে পানি ঢুকে পড়েছে। উপজেলা ত্রাণ ও দূর্যোগ অফিসের তথ্য মতে, বন্যায় নাগরপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

এদিকে উপজেলার সলিমাবাদ-ধুবড়িয়া সড়কের তেবাড়িয়া কালীবাড়ি বেইলী ব্রিজ পানির স্রোতে ভেঙে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

ফরিদপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি দুই সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত হচ্ছে ফরিদপুর সদর উপজেলার বন্যাকবলিত পাঁচটি ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা। বর্তমানে সদর উপজেলার অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।

শিবচর (মাদারীপুর) : পানি বৃদ্ধি পেয়ে মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা নদীর পর এবার আড়িয়ালখাঁ নদেও ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। আড়িয়ালখাঁ নদের ভাঙনে শিবচরের সন্ন্যাসীরচরে অন্তত ২০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংলগ্ন এলাকার উজানে ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার চরমানাইর এলাকায় ভাঙনের ব্যাপকতা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। সেখানে চরমানাইর চরবন্দরখোলা চন্দ্রখোলা ফাজিল মাদ্রাসার একটি ভবন আড়িয়ালখাঁয় বিলীন হয়েছে।

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) : যমুনার পানি কমতে শুরু করলেও সিরাজগঞ্জের চৌহালী ও এনায়েতপুর থানাজুড়ে বেড়েছে বন্যা দুর্ভোগে আক্রান্ত মানুষের হতাশা। গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানি ২৫ সেন্টিমিটার কমে তা বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় এ দুটি থানার ১০টি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধীক গ্রাম তলিয়ে যাওয়ায় লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। শতভাগ মানুষ পানিবন্দী হওয়ায় বানভাসিদের আশ্রয় মিলছে না বাঁধেও। অনেকেই খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে বুরুজের পাড়, রাজারঘাট সড়ক, রমনা রেল স্টেশনের উত্তরে রেল সড়ক ও ভরট্টপাড়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

চিলমারী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় বন্যার্তরা উপায়ান্তর না পেয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। বাড়ির আসবাবপত্র প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে বাঁধেও জায়গা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে দুর্গতরা। উপজেলার প্রায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : গাইবান্ধা জেলার বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষদের সহায়তা দিতে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বেসরকারি সংগঠন এগিয়ে এসেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরকারি ত্রাণ সহায়তা বাবদ এপর্যন্ত জেলার সাতটি উপজেলার বন্যাদুর্গত এলাকায় ৯শ’ ৫০ মে. টন চাল এবং ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

ফরিদপুরে বন্যার পানিতে শিশুর মৃত্যু

ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফরিদপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। বন্যার পানিতে মারা গেছে একটি শিশু। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

পদ্মা নদীর পানি গোয়ালন্দ পয়েন্টে বর্তমানে বিপদসীমার ৬৮ সে. মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে বন্যার পানিতে মারা গেছে দুই বছরের শিশু তাকিয়া আক্তার। গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় তার মৃতদেহ বাড়ির উঠানে বন্যার পানিতে ভাসতে দেখা যায়। তাকিয়া উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের ছমির ব্যাপারীর ডাঙ্গী গ্রামের কামাল খানের মেয়ে। দুই ভাইবোনের মধ্যে তাকিয়া ছোট।

সোমবার, ২২ জুলাই ২০১৯ , ৭ শ্রাবন ১৪২৫, ১৮ জিলকদ ১৪৪০

পানি বাড়ছে মধ্যাঞ্চলে

সংবাদ ডেস্ক

image

ফরিদপুর : ত্রাণের জন্য ভিড় করেন বন্যার্তরা -সংবাদ

  • নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
  • শুরু হয়েছে ত্রাণ তৎপরতা

দেশের উত্তরাঞ্চলে নদীর পানি কমলেও বাড়ছে মধ্যাঞ্চলে। বাঁধ ভেঙে নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বগুড়ায় যমুনার পানি কমলেও বাঙালি নদীর পানি বাড়ছে। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়কের ডাইভারশন ভেঙে ৩৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফরিদপুরে পদ্মার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মাদারীপুরের শিবচরে পানিবন্দী লাখো মানুষ। এদিকে দুর্গত এলাকায় শুরু হয়েছে ত্রাণ তৎপরতা। তবে তা অপ্রতুল।

বগুড়া : বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনার পানি কমলেও বাঙালি নদীর পানি বাড়ছে ব্যাপক হারে। পৌর এলাকা সারিয়াকান্দি সদর, নারচী, ফুলবাড়ী, কুতুবপুর এবং ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যাকবলিত এলাকায় ১ লাখ ২৫ হাজার গরু, মহিষ, লক্ষাধিক ছাগল, ১০ হাজার ভেড়া পানিবন্দী রয়েছে। হাওড়াখালি গ্রামের মজিদ ফকির, আমজাদ হোসেন, পাইকপাড়ার জহুরুল মন্ডল জানান, তাদের বাড়িঘরে বন্যার পানি ওঠায় গরু-ছাগল নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি কমে রোববার বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার এবং বাঙালি নদীর পানি ৪০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার যমুনা ও বাঙালি নদীবেষ্টিত সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় ২০টি ইউনিয়নের ১৩৮টি গ্রামের ১লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন পানিবন্দী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি কমলেও ধলেশ্বরী, ঝিনাই ও লৌহজং নদীর পানি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এদিকে পৌলী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়কের শ্যামপুর ডাইভারশন ভেঙে গেছে। এতে করে বাংড়া, সহদেবপুর ইউনিয়ন ও এলেঙ্গা পৌরসভার অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত দেবনাথ জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বাংড়া ইউপি চেয়ারম্যান হাসমত আলী জানান, এ ঘটনায় বেশকিছু গ্রাম পুরোটা ও আংশিকভাবে নতুন করে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে জেলার দক্ষিণের উপজেলা নাগরপুর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে উপজেলা সদরের বিভিন্ন পয়েন্টে পানি ঢুকে পড়েছে। উপজেলা ত্রাণ ও দূর্যোগ অফিসের তথ্য মতে, বন্যায় নাগরপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

এদিকে উপজেলার সলিমাবাদ-ধুবড়িয়া সড়কের তেবাড়িয়া কালীবাড়ি বেইলী ব্রিজ পানির স্রোতে ভেঙে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

ফরিদপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি দুই সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত হচ্ছে ফরিদপুর সদর উপজেলার বন্যাকবলিত পাঁচটি ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা। বর্তমানে সদর উপজেলার অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।

শিবচর (মাদারীপুর) : পানি বৃদ্ধি পেয়ে মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা নদীর পর এবার আড়িয়ালখাঁ নদেও ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। আড়িয়ালখাঁ নদের ভাঙনে শিবচরের সন্ন্যাসীরচরে অন্তত ২০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংলগ্ন এলাকার উজানে ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার চরমানাইর এলাকায় ভাঙনের ব্যাপকতা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। সেখানে চরমানাইর চরবন্দরখোলা চন্দ্রখোলা ফাজিল মাদ্রাসার একটি ভবন আড়িয়ালখাঁয় বিলীন হয়েছে।

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) : যমুনার পানি কমতে শুরু করলেও সিরাজগঞ্জের চৌহালী ও এনায়েতপুর থানাজুড়ে বেড়েছে বন্যা দুর্ভোগে আক্রান্ত মানুষের হতাশা। গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানি ২৫ সেন্টিমিটার কমে তা বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় এ দুটি থানার ১০টি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধীক গ্রাম তলিয়ে যাওয়ায় লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। শতভাগ মানুষ পানিবন্দী হওয়ায় বানভাসিদের আশ্রয় মিলছে না বাঁধেও। অনেকেই খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে বুরুজের পাড়, রাজারঘাট সড়ক, রমনা রেল স্টেশনের উত্তরে রেল সড়ক ও ভরট্টপাড়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

চিলমারী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় বন্যার্তরা উপায়ান্তর না পেয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। বাড়ির আসবাবপত্র প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে বাঁধেও জায়গা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে দুর্গতরা। উপজেলার প্রায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : গাইবান্ধা জেলার বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষদের সহায়তা দিতে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বেসরকারি সংগঠন এগিয়ে এসেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরকারি ত্রাণ সহায়তা বাবদ এপর্যন্ত জেলার সাতটি উপজেলার বন্যাদুর্গত এলাকায় ৯শ’ ৫০ মে. টন চাল এবং ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

ফরিদপুরে বন্যার পানিতে শিশুর মৃত্যু

ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফরিদপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। বন্যার পানিতে মারা গেছে একটি শিশু। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

পদ্মা নদীর পানি গোয়ালন্দ পয়েন্টে বর্তমানে বিপদসীমার ৬৮ সে. মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে বন্যার পানিতে মারা গেছে দুই বছরের শিশু তাকিয়া আক্তার। গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় তার মৃতদেহ বাড়ির উঠানে বন্যার পানিতে ভাসতে দেখা যায়। তাকিয়া উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের ছমির ব্যাপারীর ডাঙ্গী গ্রামের কামাল খানের মেয়ে। দুই ভাইবোনের মধ্যে তাকিয়া ছোট।