বন্যার কারণে সদস্য সংগ্রহ অভিযান পেছাল আ’লীগ

দেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে সদস্য নবায়ন এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান আপাতত স্থগিত করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল সারাদেশে একযোগে এই অভিযান শুরু হওয়ার কথা ছিল। আগস্টে মাসব্যাপী শোক কর্মসূচি শেষে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে এই অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক সূত্র।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী এবং আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া গতকাল সংবাদকে বলেন, সদস্য সংগ্রহ অভিযান আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। কবে নাগাদ এই কার্যক্রম শুরু হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেপ্টেম্বরের দিকে হতে পারে, তবে শীঘ্রই জানিয়ে দেয়া হবে।

আগামী অক্টোবরে দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ১১ মে থেকে বিভিন্ন জেলায় সাংগঠনিক সফরে বের হয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের আটটি টিম। অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন, মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলা কমিটির সম্মেলন আয়োজন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন, নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অভিযান জোরদার করা এবং ‘মুজিব বর্ষ’ উপলক্ষে দেশজুড়ে দলীয় কর্মসূচি আয়োজনসহ কয়েকটি লক্ষ্য সামনে নিয়ে এ সাংগঠনিক সফর শুরু হয়।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সূত্র বলছে, সম্প্রতি দেশের অনেক জেলা বন্যাকবলিত হওয়ায় আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় নেতা (যারা বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণে গঠিত পৃথক ৬টি কমিটির সদস্য) বন্যাকবলিত এলাকার স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ত্রাণ বিতরণ কাজে ব্যস্ত। সামনে শোকের মাস আগস্টে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত থাকবে আওয়ামী লীগ। তাই নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান সেপ্টেম্বরে শুরু হবে।

সূত্রমতে, আওয়ামী লীগ এবার প্রায় ২ কোটি নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অভিযানে নতুন ভোটারদের সদস্য করার বিষয়টি প্রাধান্য দিবে। স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী পরিবারের কেউ যাতে সদস্য হতে না পারে, সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সে বিষয়ে সর্বোচ্চ নজর রাখা হবে। পাশাপাশি ইতোপূর্বে অনুপ্রবেশকারীদের বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়েও কাজ চলবে। সূত্র বলছে, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে পদ-পদবি পাওয়া স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সদস্যদের এবং ‘ডিগবাজি’ দিয়ে অন্য দল থেকে আসা সুবিধাভোগীদের সদস্যপদ নবায়ন না করা এবং দল থেকে বাদ দেয়ার বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার। এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া নেতাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেয়া হবে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সূত্র।

২০১৭ সালের ২০ মে গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংগঠনের সদস্যপদ সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধন করার পর থেকে সারাদেশে আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সংগঠনের প্রতিটি শাখায় নতুন ভোটারদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। গত জুনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ১ জুলাই থেকে সারাদেশে এই কার্যক্রম শুরু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে সে তারিখ পেছানো হয়। ৩০ জুন সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২১ জুলাই থেকে সারাদেশে নতুন ভোটারদের আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম শুরু হবে। বন্যার কারণে এ তারিখও পেছাল।

সোমবার, ২২ জুলাই ২০১৯ , ৭ শ্রাবন ১৪২৫, ১৮ জিলকদ ১৪৪০

বন্যার কারণে সদস্য সংগ্রহ অভিযান পেছাল আ’লীগ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে সদস্য নবায়ন এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান আপাতত স্থগিত করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল সারাদেশে একযোগে এই অভিযান শুরু হওয়ার কথা ছিল। আগস্টে মাসব্যাপী শোক কর্মসূচি শেষে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে এই অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক সূত্র।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী এবং আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া গতকাল সংবাদকে বলেন, সদস্য সংগ্রহ অভিযান আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। কবে নাগাদ এই কার্যক্রম শুরু হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেপ্টেম্বরের দিকে হতে পারে, তবে শীঘ্রই জানিয়ে দেয়া হবে।

আগামী অক্টোবরে দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ১১ মে থেকে বিভিন্ন জেলায় সাংগঠনিক সফরে বের হয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের আটটি টিম। অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন, মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলা কমিটির সম্মেলন আয়োজন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন, নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অভিযান জোরদার করা এবং ‘মুজিব বর্ষ’ উপলক্ষে দেশজুড়ে দলীয় কর্মসূচি আয়োজনসহ কয়েকটি লক্ষ্য সামনে নিয়ে এ সাংগঠনিক সফর শুরু হয়।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সূত্র বলছে, সম্প্রতি দেশের অনেক জেলা বন্যাকবলিত হওয়ায় আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় নেতা (যারা বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণে গঠিত পৃথক ৬টি কমিটির সদস্য) বন্যাকবলিত এলাকার স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ত্রাণ বিতরণ কাজে ব্যস্ত। সামনে শোকের মাস আগস্টে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত থাকবে আওয়ামী লীগ। তাই নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান সেপ্টেম্বরে শুরু হবে।

সূত্রমতে, আওয়ামী লীগ এবার প্রায় ২ কোটি নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অভিযানে নতুন ভোটারদের সদস্য করার বিষয়টি প্রাধান্য দিবে। স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী পরিবারের কেউ যাতে সদস্য হতে না পারে, সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সে বিষয়ে সর্বোচ্চ নজর রাখা হবে। পাশাপাশি ইতোপূর্বে অনুপ্রবেশকারীদের বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়েও কাজ চলবে। সূত্র বলছে, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে পদ-পদবি পাওয়া স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সদস্যদের এবং ‘ডিগবাজি’ দিয়ে অন্য দল থেকে আসা সুবিধাভোগীদের সদস্যপদ নবায়ন না করা এবং দল থেকে বাদ দেয়ার বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার। এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া নেতাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেয়া হবে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সূত্র।

২০১৭ সালের ২০ মে গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংগঠনের সদস্যপদ সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধন করার পর থেকে সারাদেশে আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সংগঠনের প্রতিটি শাখায় নতুন ভোটারদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। গত জুনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ১ জুলাই থেকে সারাদেশে এই কার্যক্রম শুরু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে সে তারিখ পেছানো হয়। ৩০ জুন সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২১ জুলাই থেকে সারাদেশে নতুন ভোটারদের আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম শুরু হবে। বন্যার কারণে এ তারিখও পেছাল।