ছেলেধরা সন্দেহে থামছে না গণপিটুনি

একদিনে ৯ জন আহত, মাদারীপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

কথিত ছেলেধরা সন্দেহে চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ ও মাদারীপুরে ৯ জনকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ৫ জন। হবিগঞ্জে ৩ জন ও মাদারীপুরে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা করা হয়।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ছেলেধরা সন্দেহে ৫ জনকে গণপিটুনি দিয়ে থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের বশির উল্লাহ মিয়াজীর বাজার ও সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রাম এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘুরাফেরা করতে দেখে তাদের গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। পরবর্তীতে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে বাহারছড়া ইউনিয়নের বশির উল্লাহ মিয়াজীর বাজার এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘুরাফেরা করতে দেখা যায় ৩ যুবককে। এ সময় স্থানীয়রা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ কালে তাদের কথাবার্তায় ছেলেধরা সন্দেহ হলে উত্তেজিত জনতা তাদের গণপিটুনি দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল হতে আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে। অপরদিকে অল্প সময়ের ব্যবধানে উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রাম এলাকায়ও ছেলেধরা সন্দেহে ২ জনকে গণপিটুনি দেয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে এবং গণপিটুনির শিকার আহত সবাইকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের বশির উল্লাহ মিয়াজীর বাজার এলাকায় গণপিটুনির শিকার পটিয়া উপজেলার বরনিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের শফিক আহমদের পুত্র মো. হৃদয় (১৮), একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ওখাইন নারা এলাকার নবাব মিয়ার পুত্র মো. সোহাইল (২৫) ও বোয়ালখালী উপজেলার শাকপুরা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের চেরাংবাড়ী এলাকার শাহাব মিয়ার পুত্র মো. জনি (২৮)। অপরদিকে সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রাম এলাকায় গণপিটুনির শিকার সাতকানিয়া কালিআইশ ইউনিয়নের কালিআইশ এলাকার তপন বিশ্বাসের পুত্র শান্ত বিশ্বাস (৩২) ও চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার বলিরহাট এলাকার নুরুল আজিমের পুত্র আবদুর রহিম (৩৯)। বর্তমানে তারা থানা হেফাজতে রয়েছে।

বাহারছড়া ইউনিয়নের বশির উল্লাহ মিয়াজীর বাজারে গণপিটুনির শিকার আহতরা জানান, আমরা ছাগল কিনতে আসছিলাম। স্থানীয়রা আমাদের ছেলেধরা মনে করে আমাদের কোন কথা না শুনে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।

বাঁশখালী হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মনিরা ইয়াছমিন জানান, গণপিটুনির শিকার ৫ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার ওসি মো. রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, বাহারছড়া ও সাধনপুর ইউনিয়ন থেকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার ৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের ছাগল ব্যবসায়ী বলে দাবি করছেন। তদন্তক্রমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ অলিপুরে ছেলেধরা সন্দেহে ৩ জনকে গণপিটুনি দেয়া হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গণপিটুনিতে আহতরা হলো জেলার মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া কাশিপুর গ্রামের তোরাব আলীর পুত্র মোখলেছ মিয়া (৩২), একই এলাকার রতনপুর গ্রামের আবদুর রহিমের পুত্র গিয়াস উদ্দিন (৩২) ও বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার হাতিপুর গ্রামের শাহেদ মোল্লার পুত্র সিরাজুল ইসলাম (৩০)। শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি আনিছুজ্জামান জানান, অলিপুর এলাকায় ওই তিন ব্যক্তি একটি সিএনজিতে ঘুরাফেরা করছিল। এ সময় তাদের ঘোরাফেরা দেখে স্থানীয় জনগণের মধ্যে ‘ছেলেধরা সন্দেহ’ সৃষ্টি হয়। আর এতে করে স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া করলে তারা সিএনজি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় স্থানীয় জনসাধারণ তাদের আটকিয়ে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৩ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। ওসি আরও জানান, সন্দেহজনকভাবে তাদের গণপিটুনি দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তাদের হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গণপিটুনির শিকার ওই ৩ ব্যক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে দুলাল আহমেদ নামে এক কনস্টেবল আহত হয়েছে। তাকেও হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হায়দার আলী জানান, ৩ জনের মধ্যে এক ১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে সিলেটেও প্রেরণ করা হতে পারে। এদিকে, ছেলেধরা আতঙ্ক জেলার সর্বত্র বিরাজ করছে। তবে পুলিশ বলছে, এগুলো গুজব। সন্দেহজনকভাবে এলাকায় কাউকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে তাকে গণপিটুনি না দিয়ে পুলিশে খবর দিন।

মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, মাদারীপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে ছেলেধরা সন্দেহে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গতকাল সকাল ১১টার দিকে জেলার সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের বৈরাগীর বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, বৈরাগীর বাজারে সকালে এক নারীকে ঘুরতে দেখে ছেলেধরা সন্দেহে আটক করে স্থানীয়রা। পরে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করেছে। ওই নারী মূলত মানসিক ভারসাম্যহীন। তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আগামীতে যাতে কেউ ছেলেধরা সন্দেহে নির্যাতন করতে না পারে সেই বিষয়ে আমাদের জোর মনিটরিং ব্যবস্থা আছে।

image

মাদারীপুরের ধুড়াইলে ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন (উপরে) বাঁশখালীর বাহারছড়া ও সাধনপুর ইউনিয়নে গণপিটুনির শিকার কয়েকজন (নিচে) -সংবাদ

আরও খবর
ডেঙ্গুজ্বর ছড়াচ্ছে ব্যাপক আকারে
দুই সিটির প্রতিবেদনে হাইকোর্টের অসন্তোষ
চারজন গ্রেফতার একজনের স্বীকারোক্তি
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ থেকে প্রিয়া সাহাকে বহিষ্কার
মিন্নির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহার ও হাসপাতালে নেয়ার আবেদন ফেরত
জিনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ : ইমাম গ্রেফতার
গণপিটুনির হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন ইমরান
গুজব গণপিটুনি হত্যা রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ
ছেলেধরা গুজব কুচক্রী মহলের চক্রান্ত
সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা

মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০১৯ , ৮ শ্রাবন ১৪২৫, ১৯ জিলকদ ১৪৪০

ছেলেধরা সন্দেহে থামছে না গণপিটুনি

একদিনে ৯ জন আহত, মাদারীপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

সংবাদ ডেস্ক

image

মাদারীপুরের ধুড়াইলে ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন (উপরে) বাঁশখালীর বাহারছড়া ও সাধনপুর ইউনিয়নে গণপিটুনির শিকার কয়েকজন (নিচে) -সংবাদ

কথিত ছেলেধরা সন্দেহে চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ ও মাদারীপুরে ৯ জনকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ৫ জন। হবিগঞ্জে ৩ জন ও মাদারীপুরে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা করা হয়।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ছেলেধরা সন্দেহে ৫ জনকে গণপিটুনি দিয়ে থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের বশির উল্লাহ মিয়াজীর বাজার ও সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রাম এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘুরাফেরা করতে দেখে তাদের গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। পরবর্তীতে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে বাহারছড়া ইউনিয়নের বশির উল্লাহ মিয়াজীর বাজার এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘুরাফেরা করতে দেখা যায় ৩ যুবককে। এ সময় স্থানীয়রা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ কালে তাদের কথাবার্তায় ছেলেধরা সন্দেহ হলে উত্তেজিত জনতা তাদের গণপিটুনি দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল হতে আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে। অপরদিকে অল্প সময়ের ব্যবধানে উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রাম এলাকায়ও ছেলেধরা সন্দেহে ২ জনকে গণপিটুনি দেয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে এবং গণপিটুনির শিকার আহত সবাইকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের বশির উল্লাহ মিয়াজীর বাজার এলাকায় গণপিটুনির শিকার পটিয়া উপজেলার বরনিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের শফিক আহমদের পুত্র মো. হৃদয় (১৮), একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ওখাইন নারা এলাকার নবাব মিয়ার পুত্র মো. সোহাইল (২৫) ও বোয়ালখালী উপজেলার শাকপুরা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের চেরাংবাড়ী এলাকার শাহাব মিয়ার পুত্র মো. জনি (২৮)। অপরদিকে সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রাম এলাকায় গণপিটুনির শিকার সাতকানিয়া কালিআইশ ইউনিয়নের কালিআইশ এলাকার তপন বিশ্বাসের পুত্র শান্ত বিশ্বাস (৩২) ও চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার বলিরহাট এলাকার নুরুল আজিমের পুত্র আবদুর রহিম (৩৯)। বর্তমানে তারা থানা হেফাজতে রয়েছে।

বাহারছড়া ইউনিয়নের বশির উল্লাহ মিয়াজীর বাজারে গণপিটুনির শিকার আহতরা জানান, আমরা ছাগল কিনতে আসছিলাম। স্থানীয়রা আমাদের ছেলেধরা মনে করে আমাদের কোন কথা না শুনে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।

বাঁশখালী হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মনিরা ইয়াছমিন জানান, গণপিটুনির শিকার ৫ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার ওসি মো. রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, বাহারছড়া ও সাধনপুর ইউনিয়ন থেকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার ৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের ছাগল ব্যবসায়ী বলে দাবি করছেন। তদন্তক্রমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ অলিপুরে ছেলেধরা সন্দেহে ৩ জনকে গণপিটুনি দেয়া হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গণপিটুনিতে আহতরা হলো জেলার মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া কাশিপুর গ্রামের তোরাব আলীর পুত্র মোখলেছ মিয়া (৩২), একই এলাকার রতনপুর গ্রামের আবদুর রহিমের পুত্র গিয়াস উদ্দিন (৩২) ও বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার হাতিপুর গ্রামের শাহেদ মোল্লার পুত্র সিরাজুল ইসলাম (৩০)। শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি আনিছুজ্জামান জানান, অলিপুর এলাকায় ওই তিন ব্যক্তি একটি সিএনজিতে ঘুরাফেরা করছিল। এ সময় তাদের ঘোরাফেরা দেখে স্থানীয় জনগণের মধ্যে ‘ছেলেধরা সন্দেহ’ সৃষ্টি হয়। আর এতে করে স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া করলে তারা সিএনজি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় স্থানীয় জনসাধারণ তাদের আটকিয়ে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৩ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। ওসি আরও জানান, সন্দেহজনকভাবে তাদের গণপিটুনি দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তাদের হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গণপিটুনির শিকার ওই ৩ ব্যক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে দুলাল আহমেদ নামে এক কনস্টেবল আহত হয়েছে। তাকেও হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হায়দার আলী জানান, ৩ জনের মধ্যে এক ১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে সিলেটেও প্রেরণ করা হতে পারে। এদিকে, ছেলেধরা আতঙ্ক জেলার সর্বত্র বিরাজ করছে। তবে পুলিশ বলছে, এগুলো গুজব। সন্দেহজনকভাবে এলাকায় কাউকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে তাকে গণপিটুনি না দিয়ে পুলিশে খবর দিন।

মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, মাদারীপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে ছেলেধরা সন্দেহে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গতকাল সকাল ১১টার দিকে জেলার সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের বৈরাগীর বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, বৈরাগীর বাজারে সকালে এক নারীকে ঘুরতে দেখে ছেলেধরা সন্দেহে আটক করে স্থানীয়রা। পরে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করেছে। ওই নারী মূলত মানসিক ভারসাম্যহীন। তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আগামীতে যাতে কেউ ছেলেধরা সন্দেহে নির্যাতন করতে না পারে সেই বিষয়ে আমাদের জোর মনিটরিং ব্যবস্থা আছে।