চারজন গ্রেফতার একজনের স্বীকারোক্তি

বাকি তিনজন রিমান্ডে

রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনু নামের গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় গ্রেফতার চার আসামির একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের হেফাজতে নেয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। এদের মধ্যে গত রোববার মধ্যরাতে গ্রেফতার জাফর বিচারকের কাছে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন বলে বাড্ডা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।

বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতের আবেদন করা হলে ঢাকার মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল ৪ দিনের হেফাজতে নেয়ার আদেশ দেন বলে পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই লিয়াকত আলী জানিয়েছেন। এরা হলো-বরগুনার তালতলী উপজেলার গাবতলীর হাওলাদার বাড়ির বাসিন্দা শাহীন (৩১), ময়মনসিংহের ধোবাউরা উপজেলার দরশা গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (২৮) ও উত্তর বাড্ডা কাঁচা বাজারের ফারুকের মুদি দোকানের কর্মী বাপ্পী (২১)।

গত কয়েকদিনে কয়েকটি পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর শনিবার সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তসলিমাকে (৪২) পিটিয়ে মারা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় রোববার রাতে ওই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রাজ্জাক জানান, তসলিমা বেগম রেনুকে পেটানোর ঘটনায় মূল আসামি হিসেবে হৃদয় নামে একজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা লাগবে বলে সম্প্রতি ফেইসবুকে গুজব ছড়ানো হয়, যাতে বিভ্রান্ত না হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল সরকার। গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার নেত্রকোনা শহরে এক যুবকের ব্যাগ তল্লাশি করে শিশুর মাথা পাওয়ার পর তাকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। এই ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। এর মধ্যেই শনিবার লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা তসলিমাকে পিটিয়ে মারা হয়। এ ঘটনায় তার বোনের ছেলে নাসির উদ্দিন টিটো বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

রাজধানীর বাড্ডায় তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী দুই সন্তানের জননী চলিশোর্ধ্ব তসলিমার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন তারা। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর ওয়্যারলেস গেইটের কাছে কলেজের প্রধান ফটকে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফ হোসেন বলেন, যারা সরকারের সাফল্য ও উন্নয়ন কর্মকান্ড সহ্য করতে পারছে না তারাই এমন গুজব ছড়িয়ে দেশটাকে অস্থিতিশীল করছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের শুরু থেকেই নানা ষড়যন্ত্র চলছিল, এখনও তা চলমান আছে। দেশের সহজ সরল মানুষকে অবৈজ্ঞানিক কথাবার্তায় উত্তেজিত করা হচ্ছে। এর খেসারত দিতে হচ্ছে নিরীহ মানুষকে। একদিকে জনজীবন অতীষ্ঠ করার চেষ্টা চলছে, অন্যদিকে উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চক্রান্ত চলছে।

মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০১৯ , ৮ শ্রাবন ১৪২৫, ১৯ জিলকদ ১৪৪০

বাড্ডায় গৃহবধূ হত্যা

চারজন গ্রেফতার একজনের স্বীকারোক্তি

বাকি তিনজন রিমান্ডে

আদালত বার্তা পরিবেশক

রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনু নামের গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় গ্রেফতার চার আসামির একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের হেফাজতে নেয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। এদের মধ্যে গত রোববার মধ্যরাতে গ্রেফতার জাফর বিচারকের কাছে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন বলে বাড্ডা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।

বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতের আবেদন করা হলে ঢাকার মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল ৪ দিনের হেফাজতে নেয়ার আদেশ দেন বলে পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই লিয়াকত আলী জানিয়েছেন। এরা হলো-বরগুনার তালতলী উপজেলার গাবতলীর হাওলাদার বাড়ির বাসিন্দা শাহীন (৩১), ময়মনসিংহের ধোবাউরা উপজেলার দরশা গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (২৮) ও উত্তর বাড্ডা কাঁচা বাজারের ফারুকের মুদি দোকানের কর্মী বাপ্পী (২১)।

গত কয়েকদিনে কয়েকটি পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর শনিবার সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তসলিমাকে (৪২) পিটিয়ে মারা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় রোববার রাতে ওই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রাজ্জাক জানান, তসলিমা বেগম রেনুকে পেটানোর ঘটনায় মূল আসামি হিসেবে হৃদয় নামে একজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা লাগবে বলে সম্প্রতি ফেইসবুকে গুজব ছড়ানো হয়, যাতে বিভ্রান্ত না হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল সরকার। গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার নেত্রকোনা শহরে এক যুবকের ব্যাগ তল্লাশি করে শিশুর মাথা পাওয়ার পর তাকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। এই ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। এর মধ্যেই শনিবার লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা তসলিমাকে পিটিয়ে মারা হয়। এ ঘটনায় তার বোনের ছেলে নাসির উদ্দিন টিটো বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

রাজধানীর বাড্ডায় তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী দুই সন্তানের জননী চলিশোর্ধ্ব তসলিমার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন তারা। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর ওয়্যারলেস গেইটের কাছে কলেজের প্রধান ফটকে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফ হোসেন বলেন, যারা সরকারের সাফল্য ও উন্নয়ন কর্মকান্ড সহ্য করতে পারছে না তারাই এমন গুজব ছড়িয়ে দেশটাকে অস্থিতিশীল করছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের শুরু থেকেই নানা ষড়যন্ত্র চলছিল, এখনও তা চলমান আছে। দেশের সহজ সরল মানুষকে অবৈজ্ঞানিক কথাবার্তায় উত্তেজিত করা হচ্ছে। এর খেসারত দিতে হচ্ছে নিরীহ মানুষকে। একদিকে জনজীবন অতীষ্ঠ করার চেষ্টা চলছে, অন্যদিকে উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চক্রান্ত চলছে।