সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা

দ্বিতীয় দিনও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। উপাচার্য দেশের বাইরে থাকায় আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন ডাকসু নেতারা। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসনের কাছ থেকে সাত কলেজ বাতিলের লিখিত সিদ্ধান্ত পাওয়ার আগে আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না তারা।

গতকাল সকাল ৬টার দিকে ঢাবির প্রশাসনিক ভবন, কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, মোকাররম ভবন, মোতাহার হোসেন ভবনসহ অন্যান্য একাডেমিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। তালাবদ্ধ এসব ভবনে লাগানো হয় ফেস্টুন। এতে লেখা ছিল- ‘লাগাও তালা, বাঁচাও ঢাবি’, ‘ঝুলবে তালা ঝুলবে, আন্দোলন চলবে’ ইত্যাদি। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে অধিভুক্তি বাতিলসহ আন্দোলনকারীদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা, দুই মাসের মধ্যে সব পরীক্ষার ফল দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব বহিরাগত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও রিকশা ভাড়া নির্ধারণ।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কর্মীদের বাকবিত-ার খবর পাওয়া গেছে। সকাল ১০টার দিকে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহ্বায়ক অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন ও ঢাবি শাখা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল কয়েক নেতাকর্মীসহ এসে সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকবিত-ায় জড়ান।

টানা আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ডাকসু নেতারা। ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ও জিএস গোলাম রাব্বানী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বর্তমানে দেশের বাইরে থাকায় এখন কোন সমাধান দেয়া সম্ভব হবে না। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত। ঢাবি উপাচার্যের আগামীকাল (আজ) ফেরার কথা আছে। তিনি দেশে ফিরে আসার পর আমরা তার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কথা বলব।

নুর বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। সাত কলেজ বিষয়টির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জড়িত। ঢাবি উপাচার্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে আমরা একটা সমাধান বের করার চেষ্টা করব। তবে আন্দোলনে অটল শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাকিল মিয়া বলেন, যতদিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধিভুক্তি বাতিলের লিখিত সিদ্ধান্ত না জানানো হবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। দাবি আদায় হওয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন থেকে সরে আসার কোন যৌক্তিকতা নেই।

২০১৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন থাকা রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ ঢাবির অধিভুক্ত হয়। ফলে এসব কলেজে ভর্তি পরীক্ষা, পাঠ্যসূচি ও পরীক্ষা ঢাবি থেকেই পরিচালিত হচ্ছে। কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি কাজী নজরুল ইসলাম কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।

মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০১৯ , ৮ শ্রাবন ১৪২৫, ১৯ জিলকদ ১৪৪০

সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা

দ্বিতীয় দিনও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

প্রতিনিধি, ঢাবি

image

সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল দাবিতে ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ -সংবাদ

সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। উপাচার্য দেশের বাইরে থাকায় আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন ডাকসু নেতারা। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসনের কাছ থেকে সাত কলেজ বাতিলের লিখিত সিদ্ধান্ত পাওয়ার আগে আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না তারা।

গতকাল সকাল ৬টার দিকে ঢাবির প্রশাসনিক ভবন, কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, মোকাররম ভবন, মোতাহার হোসেন ভবনসহ অন্যান্য একাডেমিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। তালাবদ্ধ এসব ভবনে লাগানো হয় ফেস্টুন। এতে লেখা ছিল- ‘লাগাও তালা, বাঁচাও ঢাবি’, ‘ঝুলবে তালা ঝুলবে, আন্দোলন চলবে’ ইত্যাদি। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে অধিভুক্তি বাতিলসহ আন্দোলনকারীদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা, দুই মাসের মধ্যে সব পরীক্ষার ফল দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব বহিরাগত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও রিকশা ভাড়া নির্ধারণ।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কর্মীদের বাকবিত-ার খবর পাওয়া গেছে। সকাল ১০টার দিকে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহ্বায়ক অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন ও ঢাবি শাখা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল কয়েক নেতাকর্মীসহ এসে সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকবিত-ায় জড়ান।

টানা আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ডাকসু নেতারা। ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ও জিএস গোলাম রাব্বানী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বর্তমানে দেশের বাইরে থাকায় এখন কোন সমাধান দেয়া সম্ভব হবে না। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত। ঢাবি উপাচার্যের আগামীকাল (আজ) ফেরার কথা আছে। তিনি দেশে ফিরে আসার পর আমরা তার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কথা বলব।

নুর বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। সাত কলেজ বিষয়টির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জড়িত। ঢাবি উপাচার্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে আমরা একটা সমাধান বের করার চেষ্টা করব। তবে আন্দোলনে অটল শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাকিল মিয়া বলেন, যতদিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধিভুক্তি বাতিলের লিখিত সিদ্ধান্ত না জানানো হবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। দাবি আদায় হওয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন থেকে সরে আসার কোন যৌক্তিকতা নেই।

২০১৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন থাকা রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ ঢাবির অধিভুক্ত হয়। ফলে এসব কলেজে ভর্তি পরীক্ষা, পাঠ্যসূচি ও পরীক্ষা ঢাবি থেকেই পরিচালিত হচ্ছে। কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি কাজী নজরুল ইসলাম কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।