ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি

কথিত ছেলেধরা সন্দেহে মাদারীপুর ও বগুড়ায় ২ জনকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে মাদারীপুরের শিবচরে এক মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধ ও বগুড়ার নন্দীগ্রামে এক যুবক এই পিটুনির শিকার হন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।

শিবচর (মাদারীপুর) : মাদারীপুরের শিবচরে এক মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধকে গণধোলাই দিয়েছে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ

ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করেছে।

পুলিশ জানায়, গত দুই দিন আগে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার দুরুমখালী গ্রামের রশিদ বেপারীর ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন আবু বেপারী (৫০) বাড়ি থেকে কাউকে কিছু না বলে নিরুদ্দেশ হয়। সোমবার রাতে শিবচর উপজেলার ভদ্রাসন ব্রিজঘাট এলাকায় এক বাড়ির সামনে ঘোরাফেরা করছিল সে। স্থানীয়দের অপরিচিত হওয়ায় ও তার চলাফেরা সন্দেহজনক হওয়ায় এলাকাবাসী ওই মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধের কাছে নাম পরিচয় জানতে চায়। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় সে এলাকাবাসীর কোন প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে না পারেনি, এতে ছেলেধরা সন্দেহে এলাকাবাসী ওই বৃদ্ধকে গণধোলাই দিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে ভদ্রাসন পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই কাজল কুমার সূত্রধর ও এসআই নূরে আলমসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের হাত থেকে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করে নিজেদের হেফাজতে রাখে। পরে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলে পুলিশ তার পরিচয় জানতে পারে। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের দুরুমখালী গ্রাম থেকে তার পরিবারের লোকজন শিবচর আসে। বিকেলেই পুলিশ পরিবারের লোকদের হাতে মানসিক ভারসাম্যহীন আবু বেপারীকে হস্তান্তর করে।

শিবচর থানার ওসি জাকির হোসেন বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধ লোকটি অপরিচিত হওয়ায় স্থানীয়রা তাকে সন্দেহবশত মারধর করেছে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে তার পরিবারের লোকজনের হাতে হস্তান্তর করেছে।

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) : বগুড়ার নন্দীগ্রামে ছেলেধরা সন্দেহে জনি মিয়া (২৫) নামে এক যুবককে গণপিটুনি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। সে একজন ট্রাকের হেলপার। ২৩ জুলাই বেলা ২টার দিকে সে রণবাঘা বাজারে ঘোরাফেরা করছিল। এমন সময় স্থানীয়রা তাকে ছেলেধরা সন্দেহ করে গণপিটুনি দেয়। এ বিষয়টি নন্দীগ্রাম থানার এসআই মনোয়ারুল ইসলাম জানতে পেরে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দ্রুত রণবাঘা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, তাকে ছেলেধরা সন্দেহ করে গণপিটুনি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। আসলে সে ছেলেধরা কিনা তা নিশ্চিত নয়। থানার ডিউটি অফিসার এএসআই আতিকুর রহমান জানিয়েছে, সে ট্রাকের হেলপার। রণবাঘায় তার এক বন্ধুর খোঁজে এসে এ পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। এদিকে কাউকে ছেলেধরা সন্দেহ করে মারপিট বা গণপিটুনি না দিয়ে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করার জন্য থানা পুলিশের পক্ষ হতে মাইকিং করা হচ্ছে। আর এ ধরনের গুজবে কান না দেয়ার জন্য জনসাধারণকে অনুরোধ করা হয় ।

বুধবার, ২৪ জুলাই ২০১৯ , ৯ শ্রাবন ১৪২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪০

শিবচর-বগুড়ায়

ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি

সংবাদ ডেস্ক

কথিত ছেলেধরা সন্দেহে মাদারীপুর ও বগুড়ায় ২ জনকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে মাদারীপুরের শিবচরে এক মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধ ও বগুড়ার নন্দীগ্রামে এক যুবক এই পিটুনির শিকার হন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।

শিবচর (মাদারীপুর) : মাদারীপুরের শিবচরে এক মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধকে গণধোলাই দিয়েছে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ

ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করেছে।

পুলিশ জানায়, গত দুই দিন আগে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার দুরুমখালী গ্রামের রশিদ বেপারীর ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন আবু বেপারী (৫০) বাড়ি থেকে কাউকে কিছু না বলে নিরুদ্দেশ হয়। সোমবার রাতে শিবচর উপজেলার ভদ্রাসন ব্রিজঘাট এলাকায় এক বাড়ির সামনে ঘোরাফেরা করছিল সে। স্থানীয়দের অপরিচিত হওয়ায় ও তার চলাফেরা সন্দেহজনক হওয়ায় এলাকাবাসী ওই মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধের কাছে নাম পরিচয় জানতে চায়। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় সে এলাকাবাসীর কোন প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে না পারেনি, এতে ছেলেধরা সন্দেহে এলাকাবাসী ওই বৃদ্ধকে গণধোলাই দিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে ভদ্রাসন পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই কাজল কুমার সূত্রধর ও এসআই নূরে আলমসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের হাত থেকে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করে নিজেদের হেফাজতে রাখে। পরে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলে পুলিশ তার পরিচয় জানতে পারে। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের দুরুমখালী গ্রাম থেকে তার পরিবারের লোকজন শিবচর আসে। বিকেলেই পুলিশ পরিবারের লোকদের হাতে মানসিক ভারসাম্যহীন আবু বেপারীকে হস্তান্তর করে।

শিবচর থানার ওসি জাকির হোসেন বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধ লোকটি অপরিচিত হওয়ায় স্থানীয়রা তাকে সন্দেহবশত মারধর করেছে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে তার পরিবারের লোকজনের হাতে হস্তান্তর করেছে।

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) : বগুড়ার নন্দীগ্রামে ছেলেধরা সন্দেহে জনি মিয়া (২৫) নামে এক যুবককে গণপিটুনি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। সে একজন ট্রাকের হেলপার। ২৩ জুলাই বেলা ২টার দিকে সে রণবাঘা বাজারে ঘোরাফেরা করছিল। এমন সময় স্থানীয়রা তাকে ছেলেধরা সন্দেহ করে গণপিটুনি দেয়। এ বিষয়টি নন্দীগ্রাম থানার এসআই মনোয়ারুল ইসলাম জানতে পেরে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দ্রুত রণবাঘা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, তাকে ছেলেধরা সন্দেহ করে গণপিটুনি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। আসলে সে ছেলেধরা কিনা তা নিশ্চিত নয়। থানার ডিউটি অফিসার এএসআই আতিকুর রহমান জানিয়েছে, সে ট্রাকের হেলপার। রণবাঘায় তার এক বন্ধুর খোঁজে এসে এ পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। এদিকে কাউকে ছেলেধরা সন্দেহ করে মারপিট বা গণপিটুনি না দিয়ে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করার জন্য থানা পুলিশের পক্ষ হতে মাইকিং করা হচ্ছে। আর এ ধরনের গুজবে কান না দেয়ার জন্য জনসাধারণকে অনুরোধ করা হয় ।