দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ওষুধ প্রতিরোধী ম্যালেরিয়ার বিস্তার

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভয়ানক হারে ছড়িয়ে পড়ছে ওষুধ প্রতিরোধী ম্যালেরিয়া পরজীবী। এতে ব্যর্থ হচ্ছে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা পদ্ধতি। দুটি গবেষণায় এমন সতর্কতার কথা জানিয়েছেন গবেষকরা। চিকিৎসাবিষয়ক জার্নাল ল্যানসেটে সংক্রমণ রোগবিষয়ক জার্নালে এ দুটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার কয়েকটি এলাকায় প্রায় ৮০ শতাংশ ম্যালেরিয়া পরজীবী ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে পড়েছে। ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত দুটি ওষুধ আর কাজ করছে না। গবেষকদের দাবি, ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় সবচেয়ে নতুন ও সবচেয়ে শক্তিশালী ওষুধের সমন্বয় অর্ধেক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে। প্লাসমোডিয়াম ফলসিপ্যারাম পরজীবী ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠার কারণে এটা হচ্ছে।

ওয়েলকাম সাংগার ইনস্টিটিউট ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অলিভো মিয়োতো গবেষকদের একজন। তিনি বলেন, গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যে আশঙ্কাজনক হলো, ২০১৫ সাল থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পি ফলসিপ্যারাম ম্যালেরিয়া ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। উচ্চ প্রতিরোধী ক্ষমতার পরজীবী নতুন অংশে আক্রমণ ও নতুন জেনেটিক বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে সক্ষম। আরেক গবেষক রবার্তো আমাতো বলেন, আমাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে এটা ভয়ানক হারে ছড়িয়ে পড়ছে, স্থানীয় ম্যালেরিয়া পরজীবীকে সরিয়ে এটা স্থান দখল করছে। ভিয়েতনাম, লাওস ও উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডে এটাই এখন সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।

মিয়োতো আফ্রিকায় এ পরজীবী বিস্তারের ভয়ঙ্কর আশঙ্কার বিষয়ে সতর্ক করছেন। এর আগে ১৯৮০-এর দশকে আফ্রিকায় ম্যালেরিয়ার একটি ওষুধ ক্লোরোকুইন প্রতিরোধী হয়ে পড়লে কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। ম্যালেরিয়ায় প্রতি বছর ৪ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এদের বেশিরভাগই আফ্রিকার শিশু। বিশ্বের ২০০ মিলিয়ন মানুষ পি ফলসিপ্যারাম পরজীবীতে আক্রান্ত। ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু হওয়া ১০ জনের মধ্যে ৯ জনের ক্ষেত্রে এ পরজীবী দায়ী। ডিএইচএ-পিপিকিউ নামে পরিচিত ওষুধের একটি মিশ্রণ এই পরজীবীর বিরুদ্ধে কার্যকর ছিল। কিন্তু ২০১৩ সাল থেকেই চিকিৎসকরা এটা প্রতিরোধী হয়ে ওঠা লক্ষ্য করেন। সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, পশ্চিম ভিয়েতনামে এই ওষুধের ব্যর্থতার হার ৫৩ শতাংশ এবং উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডে ৮৭ শতাংশতে পৌঁছে গেছে।

বুধবার, ২৪ জুলাই ২০১৯ , ৯ শ্রাবন ১৪২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪০

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ওষুধ প্রতিরোধী ম্যালেরিয়ার বিস্তার

সংবাদ ডেস্ক

image

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভয়ানক হারে ছড়িয়ে পড়ছে ওষুধ প্রতিরোধী ম্যালেরিয়া পরজীবী। এতে ব্যর্থ হচ্ছে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা পদ্ধতি। দুটি গবেষণায় এমন সতর্কতার কথা জানিয়েছেন গবেষকরা। চিকিৎসাবিষয়ক জার্নাল ল্যানসেটে সংক্রমণ রোগবিষয়ক জার্নালে এ দুটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার কয়েকটি এলাকায় প্রায় ৮০ শতাংশ ম্যালেরিয়া পরজীবী ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে পড়েছে। ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত দুটি ওষুধ আর কাজ করছে না। গবেষকদের দাবি, ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় সবচেয়ে নতুন ও সবচেয়ে শক্তিশালী ওষুধের সমন্বয় অর্ধেক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে। প্লাসমোডিয়াম ফলসিপ্যারাম পরজীবী ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠার কারণে এটা হচ্ছে।

ওয়েলকাম সাংগার ইনস্টিটিউট ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অলিভো মিয়োতো গবেষকদের একজন। তিনি বলেন, গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যে আশঙ্কাজনক হলো, ২০১৫ সাল থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পি ফলসিপ্যারাম ম্যালেরিয়া ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। উচ্চ প্রতিরোধী ক্ষমতার পরজীবী নতুন অংশে আক্রমণ ও নতুন জেনেটিক বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে সক্ষম। আরেক গবেষক রবার্তো আমাতো বলেন, আমাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে এটা ভয়ানক হারে ছড়িয়ে পড়ছে, স্থানীয় ম্যালেরিয়া পরজীবীকে সরিয়ে এটা স্থান দখল করছে। ভিয়েতনাম, লাওস ও উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডে এটাই এখন সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।

মিয়োতো আফ্রিকায় এ পরজীবী বিস্তারের ভয়ঙ্কর আশঙ্কার বিষয়ে সতর্ক করছেন। এর আগে ১৯৮০-এর দশকে আফ্রিকায় ম্যালেরিয়ার একটি ওষুধ ক্লোরোকুইন প্রতিরোধী হয়ে পড়লে কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। ম্যালেরিয়ায় প্রতি বছর ৪ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এদের বেশিরভাগই আফ্রিকার শিশু। বিশ্বের ২০০ মিলিয়ন মানুষ পি ফলসিপ্যারাম পরজীবীতে আক্রান্ত। ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু হওয়া ১০ জনের মধ্যে ৯ জনের ক্ষেত্রে এ পরজীবী দায়ী। ডিএইচএ-পিপিকিউ নামে পরিচিত ওষুধের একটি মিশ্রণ এই পরজীবীর বিরুদ্ধে কার্যকর ছিল। কিন্তু ২০১৩ সাল থেকেই চিকিৎসকরা এটা প্রতিরোধী হয়ে ওঠা লক্ষ্য করেন। সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, পশ্চিম ভিয়েতনামে এই ওষুধের ব্যর্থতার হার ৫৩ শতাংশ এবং উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডে ৮৭ শতাংশতে পৌঁছে গেছে।