সব আসামি গ্রেফতার হয়নি

সাক্ষী প্রধান আসামি তদন্ত নিয়ে অভিযোগ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক/প্রতিনিধি, বরগুনা

বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তদন্তে পুলিশ কোন পথে এগোচ্ছে, এ নিয়ে রীতিমতো জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এখনও এ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ৪ আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। নৃশংসভাবে খুন হওয়া রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী খুন হওয়া রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে পুলিশ নানাভাবে প্রশ্ন তৈরি করেছে। এ অবস্থায় হত্যা মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। নৃশংস এ হত্যাকা-ের পর জড়িত সব আসামি গ্রেফতার না হওয়া, হত্যার নেতৃত্ব দেয়া প্রধান আসামি নয়ন বন্ডকে আশ্রয় ও প্রশ্রয়কারীদের শনাক্ত না করে বন্দুকযুদ্ধে ফেলা, ২১ দিনের মাথায় মামলার প্রধান সাক্ষী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেফতার করে ‘শারীরিক নির্যাতন ও রিমান্ডে নিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করতে বাধ্য করা’ ঘটনায় হত্যার নেপথ্যে থাকা গডফাদারদের আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে কি নাÑ এসব নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। পুলিশ ‘কাকে রক্ষা’য় নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী ও হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী মিন্নিকে আলোচনার কেন্দুবিন্দুতে নিয়ে এসেছে, এটি নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন চলছে। শঙ্কা তৈরি হয়েছে বরগুনা থানার পুলিশ নিরপেক্ষভাবে রিফাত হত্যার মামলা তদন্ত কবরে কি না এবং হত্যার নেপথ্যের নির্দেশদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না?

পুলিশ সদর দফতরের মুখপাত্র এআইজি (মিডিয়া) মীর সোহেল রানা সংবাদকে জানান, বরগুনার রিফাত হত্যা মামলায় বরগুনা জেলা পুলিশ যেভাবে তদন্ত করছে, তা ঠিকভাবেই চলছে বলে মনে করছে পুলিশ সদর দফতর। এ মামলায় রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নিকে গ্রেফতার করা হয়েছে উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে। এখানে পুলিশ কাউকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে না। তবে স্থানীয় পুলিশের তদন্তে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বা সংস্থা যদি পরিবর্তন করার কোন দাবি ওঠে, তাহলে পুলিশ সদর দফতর তা উপযুক্ত মনে করলে ব্যবস্থা নিতে পারবে। তিনি বলেন আদালতের পর্যবেক্ষণেও রিফাত হত্যা মামলার তদন্তে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।

গত ২৬ জুন প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে ফিল্মি কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার সময় রিফাতের স্ত্রী খুনিদের কাছ থেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। ঘটনাস্থলেই মারা যান রিফাত। তাকে যখন একদল যুবক কুপিয়ে হত্যা করছিলÑ তখন ওই দৃশ্য কেউ মোবাইল ফোনে ধারণ করছিল, কেউ নিজ চোখে অবলোকন করছিল। কিন্তুতাকে রক্ষায় স্ত্রী মিন্নি ছাড়া কেউ এগিয়ে আসেননি। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা হলো সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী, চন্দন, মুছা রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রায়হান, হাসান, রিফাত, অলি ও টিকটক হৃয়দ। মামলার পর পুলিশের সঙ্গে প্রধান আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। এরপর একে একে মোট ১৫ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। সবশেষ গ্রেফতার হন রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। তাকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার ঘটনায় মামলা ভিন্ন খাতে মোড় নেয়। পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে উপযুক্ত প্রমাণে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও এ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। তাকে আদালতে হাজির করা হলে তার পক্ষে কোন আইনজীীব আদালতে দাঁড়াতে রাজি হননি। পরে এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা থেকে শতাধিক আইনজীবী বরগুনায় যান মিন্নির পক্ষে আইনি লড়াই করতে। এমন পরিস্থিতি গত বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে মিন্নির বাবা দাবি করেন, মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হোক। অন্যদিকে মিন্নির আইনজীবী জানান, গ্রেফতার করে রিমান্ড হেফাজতে মিন্নিকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের মাধ্যমে তাকে দিয়ে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়ানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রিফাতকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনা শুরু হয় ভয়ঙ্কর বর্বরতা নিয়ে। প্রশ্ন তৈরি হয় বরগুনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা স্থীতিশীল। পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়। হত্যার পর পরই বরগুনার রাজনীতি, হত্যায় নেতৃত্ব দেয়া নয়ন বন্ডসহ সন্ত্রাসীদের মদদদাতা কারা, কাদের শেল্টারে নয়ন বন্ডদের মতো সন্ত্রাসীদের জন্মÑ এসব নিয়ে রীতিমতো নানা তথ্য বেরিয়ে আসে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতর থেকে রিফাত হত্যা মামলার তদন্ত পর্যবেক্ষণ করে হত্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। রিফাত হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে যখন পুলিশ হত্যাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে, তখন হঠাৎ করেই স্থানীয় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান হত্যাকারীদের নিয়ে ভিন্ন রাজনীতি শুরু করেন। হত্যাকারীরা কার লোকÑ এ নিয়ে দু’পক্ষ দু’পক্ষের বিরুদ্ধে দোষারোপ করার চেষ্টা করে। এ পরিস্থিতিতে বন্দুকযুদ্ধে প্রধান আসামি নয়ন বন্ড মারা যায়। তাকে গ্রেফতার করে জ্ঞিাসাবাদ করে হত্যার রহস্য বের না করেই তাকে বন্দুকযুদ্ধে দেয়া নিয়ে নানা সমালোচনায় পড়ে বরগুনার পুলিশ। রিফাত হত্যায় পর্যায়ক্রমে ১৫ জনকে গ্রেফতার করার পর হত্যকা-ের ২১তম দিনে এসে পুলিশ জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধান সাক্ষী তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে। তাকে থানায় না রেখে পুলিশ লাইনসে ১৬ ঘণ্টা পুরুষ পুলিশের হেফাজতে আটকে রাখার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে পাঠানো হয়। পরে জবানবন্দি দিয়ে জেলে গেলেও তা প্রত্যাহার করার আবেদন করেন মিন্নি। অন্যদিকে তাকে গ্রেফতার করার পর তার পক্ষে কোন আইনজীবী না দাঁড়ানোয় নানা প্রশ্ন তৈরি হয়। এতে তাকে আইনি সাপোর্ট দিতে ঢাকা থেকে শতাধিক আইনজীবী বরগুনায় যায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ন কবির সংবাদকে জানান, রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত এজাহারনামীয় ৮ আসামিসহ মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সবাই হত্যাকা-ে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। মামলায় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, এখনও এজাহারনামীয় ৪ আসামিকে ভিডিও ফুটেজ থেকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। পুলিশ হত্যা মামলার বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করেছে। কিছু আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ফরেনসিক পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়া গেলে এবং সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে চার্জশিট আদালতে উপস্থাপন করা হবে। মিন্নিকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উপযুক্ত প্রমাণ ও হত্যায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত সঠিকভাবে করা হচ্ছে। মামলার তদন্ত নিয়ে মিন্নির বাবার যে বক্তব্য, তা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ তিনি আমাদের কাছে একজন আসামির বাবা হিসেবে পরিচিত।

ঘটনার সূত্রপাত : গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে নয়ন বন্ড তার সহযোগীদের নিয়ে রিফাত শরীফকে প্রকাশে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। ঘটনার সময় স্ত্রী মিন্নি তাকে বাঁচাতে বারবার চেষ্টা করেছেন। এরপরও আসামিরা তাকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। তার হত্যাকা-ের খবর ছড়িয়ে পড়লে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার দৃশ্য প্রকাশের পর দেশজুড়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় রিফাত শরীফের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় এ পর্যন্ত যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা হলো বরগুনা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের অরুণ চন্দ্র সরকারের ছেলে ৪নং আসামি চন্দন (২১), ৯নং আসামি বরগুনা কলেজ রোডের আয়নাল হকের ছেলে হাসান (১৯), ১১নং আসামি অলি ১২নং আসামি টিকটক হৃদয় এজাহারভুক্ত আসামি। সন্দেহজনক গ্রেফতারকৃত আসামিরা হচ্ছে বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান (১৮), বরগুনা পৌরসভার ধানসিঁড়ি সড়কের নয়া মিয়ার ছেলে তানভীর (২২), সদর উপজেলার নলী মাইঠা গ্রামের আ. লতিফ খানের ছেলে সাগর (১৯) ও হাজারবিঘা গ্রামের কায়সার মিয়ার ছেলে কামরুল হাসান সাইমুন (২১)।

আমাদের প্রতিনিধি, বরগুনা জানান, রিফাত হত্যা মামলার বাদী আ. হালিম দুলাল শরীফ তদন্তে সরকারের ওপর খুশি থাকলেও মামলার প্রধান সাক্ষী কাম আসামি মিন্নির বাবা পুলিশ, রাজনীতিবিদ তথা বরগুনার এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ভূমিকায় ক্ষেভ প্রকাশ করেন। তার অভিযোগ, আসল খুনিদের বাঁচাতে পুলিশ থেকে শুরু করে প্রভাবশালী মহল মিন্নিকে ফাঁসাতে চেষ্টা করছে।

রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার নেপথ্যে মাদকের বিষয়টি আলোচনা হলেও আরও ২টি কারণ বেরিয়ে আসছে। রিফাত চলতি বছরের ১১ মে রাত ২টার দিকে ১০০ পিস ইয়াবাসহ বরগুনা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক সোহেল খানের হাতে গ্রেফতার হয়। তাকে আটকের দৃশ্য বন্দুকযুদ্ধে নিহত এবং হত্যার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড মোবাইল ফোনে ভিডিও করে ওইদিনই ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে। নয়নবন্ডদের তৎপরতায় ওই মামলায় আটকের পে রিফাত শরীফ ১৯ দিনের মতো কারাগারে ছিল। এই ঘটনার পর নয়ন বন্ড ও রিফাত শরীফদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে এবং তারা প্রতিপক্ষ হয়ে যায়। রিফাত শরীফ কারাগার থেকে বের হয়ে তার প্রতিপক্ষ রিফাত ফরাজী ও নয়ন বন্ডের কাছে কেন তারা ইয়াবা দিয়ে রিফাত শরীফকে ধরিয়ে দিয়েছে, তা জানতে চায়। একই সঙ্গে তাকে পুলিশে আটকের পর ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে হেয় করা হয়েছে। এ নিয়ে পারস্পরিক দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে রিফাত ফরাজীকে আটক করে হাতুড়ি দিয়ে মারাত্মকভাবে পেটায় রিফাত শরীফ ও তার সহযোগীরা। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যার পেছনে এটিও একটি কারণ। চলতি বছরের ৫ মে সন্ধ্যায় এর আগের ঘটনাটি ঘটেছিল দোয়েল চত্বরের মাটিয়াল ক্যাফে। ক্যাফের পরিচালক মুশফিক আরিফ জানান, এদিন মিন্নিকে সঙ্গে নিয়ে তার স্বামী রিফাত শরীফ মাটিয়াল ক্যাফে এসেছিলেন সন্ধ্যায়। তার সঙ্গে থাকা মোটরসাইকেলটি রেখেছিল মাটিয়াল ক্যাফের পাশে বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেনের বাসার গেটের আগে। গেটের সামনে মোটরসাইকেল রাখায় রিফাত শরীফের সঙ্গে দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী শামসুন্নাহার খুকীর প্রচ- বাকবিত-া হয়, সেটি আরিফ দেখেছে। এ ঘটনা শোধ নেয়ার জন্য পর খুকী ছোট বোনের ছেলে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীকে ডেকে ঘটনাটি বলেন। এ ঘটনার ৫ দিন পরই রহস্যজনকভাবে রিফাত শরীফ ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। অনেকেই ধারণা করছেন, ওই ঘটনার কারণেই রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী ০০৭ বন্ডের সদস্যদের নিয়ে ২৬ জুন রিফাত শরীফকে হামলা করেছিল। হামলার আগে রিফাত ফরাজীকে অটকানোর সময় রিফাত ও রিশান ফরাজী বলেছিল, খালাম্মাকে তুই গালি দিয়েছিলি কেন? দুই গ্রুপ মিলে রিফাতকে হত্যা করে।

শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০১৯ , ১১ শ্রাবন ১৪২৫, ২২ জিলকদ ১৪৪০

সব আসামি গ্রেফতার হয়নি

সাক্ষী প্রধান আসামি তদন্ত নিয়ে অভিযোগ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক/প্রতিনিধি, বরগুনা

image

বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তদন্তে পুলিশ কোন পথে এগোচ্ছে, এ নিয়ে রীতিমতো জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এখনও এ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ৪ আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। নৃশংসভাবে খুন হওয়া রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী খুন হওয়া রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে পুলিশ নানাভাবে প্রশ্ন তৈরি করেছে। এ অবস্থায় হত্যা মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। নৃশংস এ হত্যাকা-ের পর জড়িত সব আসামি গ্রেফতার না হওয়া, হত্যার নেতৃত্ব দেয়া প্রধান আসামি নয়ন বন্ডকে আশ্রয় ও প্রশ্রয়কারীদের শনাক্ত না করে বন্দুকযুদ্ধে ফেলা, ২১ দিনের মাথায় মামলার প্রধান সাক্ষী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেফতার করে ‘শারীরিক নির্যাতন ও রিমান্ডে নিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করতে বাধ্য করা’ ঘটনায় হত্যার নেপথ্যে থাকা গডফাদারদের আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে কি নাÑ এসব নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। পুলিশ ‘কাকে রক্ষা’য় নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী ও হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী মিন্নিকে আলোচনার কেন্দুবিন্দুতে নিয়ে এসেছে, এটি নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন চলছে। শঙ্কা তৈরি হয়েছে বরগুনা থানার পুলিশ নিরপেক্ষভাবে রিফাত হত্যার মামলা তদন্ত কবরে কি না এবং হত্যার নেপথ্যের নির্দেশদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না?

পুলিশ সদর দফতরের মুখপাত্র এআইজি (মিডিয়া) মীর সোহেল রানা সংবাদকে জানান, বরগুনার রিফাত হত্যা মামলায় বরগুনা জেলা পুলিশ যেভাবে তদন্ত করছে, তা ঠিকভাবেই চলছে বলে মনে করছে পুলিশ সদর দফতর। এ মামলায় রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নিকে গ্রেফতার করা হয়েছে উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে। এখানে পুলিশ কাউকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে না। তবে স্থানীয় পুলিশের তদন্তে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বা সংস্থা যদি পরিবর্তন করার কোন দাবি ওঠে, তাহলে পুলিশ সদর দফতর তা উপযুক্ত মনে করলে ব্যবস্থা নিতে পারবে। তিনি বলেন আদালতের পর্যবেক্ষণেও রিফাত হত্যা মামলার তদন্তে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।

গত ২৬ জুন প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে ফিল্মি কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার সময় রিফাতের স্ত্রী খুনিদের কাছ থেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। ঘটনাস্থলেই মারা যান রিফাত। তাকে যখন একদল যুবক কুপিয়ে হত্যা করছিলÑ তখন ওই দৃশ্য কেউ মোবাইল ফোনে ধারণ করছিল, কেউ নিজ চোখে অবলোকন করছিল। কিন্তুতাকে রক্ষায় স্ত্রী মিন্নি ছাড়া কেউ এগিয়ে আসেননি। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা হলো সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী, চন্দন, মুছা রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রায়হান, হাসান, রিফাত, অলি ও টিকটক হৃয়দ। মামলার পর পুলিশের সঙ্গে প্রধান আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। এরপর একে একে মোট ১৫ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। সবশেষ গ্রেফতার হন রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। তাকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার ঘটনায় মামলা ভিন্ন খাতে মোড় নেয়। পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে উপযুক্ত প্রমাণে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও এ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। তাকে আদালতে হাজির করা হলে তার পক্ষে কোন আইনজীীব আদালতে দাঁড়াতে রাজি হননি। পরে এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা থেকে শতাধিক আইনজীবী বরগুনায় যান মিন্নির পক্ষে আইনি লড়াই করতে। এমন পরিস্থিতি গত বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে মিন্নির বাবা দাবি করেন, মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হোক। অন্যদিকে মিন্নির আইনজীবী জানান, গ্রেফতার করে রিমান্ড হেফাজতে মিন্নিকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের মাধ্যমে তাকে দিয়ে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়ানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রিফাতকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনা শুরু হয় ভয়ঙ্কর বর্বরতা নিয়ে। প্রশ্ন তৈরি হয় বরগুনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা স্থীতিশীল। পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়। হত্যার পর পরই বরগুনার রাজনীতি, হত্যায় নেতৃত্ব দেয়া নয়ন বন্ডসহ সন্ত্রাসীদের মদদদাতা কারা, কাদের শেল্টারে নয়ন বন্ডদের মতো সন্ত্রাসীদের জন্মÑ এসব নিয়ে রীতিমতো নানা তথ্য বেরিয়ে আসে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতর থেকে রিফাত হত্যা মামলার তদন্ত পর্যবেক্ষণ করে হত্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। রিফাত হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে যখন পুলিশ হত্যাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে, তখন হঠাৎ করেই স্থানীয় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান হত্যাকারীদের নিয়ে ভিন্ন রাজনীতি শুরু করেন। হত্যাকারীরা কার লোকÑ এ নিয়ে দু’পক্ষ দু’পক্ষের বিরুদ্ধে দোষারোপ করার চেষ্টা করে। এ পরিস্থিতিতে বন্দুকযুদ্ধে প্রধান আসামি নয়ন বন্ড মারা যায়। তাকে গ্রেফতার করে জ্ঞিাসাবাদ করে হত্যার রহস্য বের না করেই তাকে বন্দুকযুদ্ধে দেয়া নিয়ে নানা সমালোচনায় পড়ে বরগুনার পুলিশ। রিফাত হত্যায় পর্যায়ক্রমে ১৫ জনকে গ্রেফতার করার পর হত্যকা-ের ২১তম দিনে এসে পুলিশ জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধান সাক্ষী তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে। তাকে থানায় না রেখে পুলিশ লাইনসে ১৬ ঘণ্টা পুরুষ পুলিশের হেফাজতে আটকে রাখার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে পাঠানো হয়। পরে জবানবন্দি দিয়ে জেলে গেলেও তা প্রত্যাহার করার আবেদন করেন মিন্নি। অন্যদিকে তাকে গ্রেফতার করার পর তার পক্ষে কোন আইনজীবী না দাঁড়ানোয় নানা প্রশ্ন তৈরি হয়। এতে তাকে আইনি সাপোর্ট দিতে ঢাকা থেকে শতাধিক আইনজীবী বরগুনায় যায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ন কবির সংবাদকে জানান, রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত এজাহারনামীয় ৮ আসামিসহ মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সবাই হত্যাকা-ে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। মামলায় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, এখনও এজাহারনামীয় ৪ আসামিকে ভিডিও ফুটেজ থেকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। পুলিশ হত্যা মামলার বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করেছে। কিছু আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ফরেনসিক পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়া গেলে এবং সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে চার্জশিট আদালতে উপস্থাপন করা হবে। মিন্নিকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উপযুক্ত প্রমাণ ও হত্যায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত সঠিকভাবে করা হচ্ছে। মামলার তদন্ত নিয়ে মিন্নির বাবার যে বক্তব্য, তা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ তিনি আমাদের কাছে একজন আসামির বাবা হিসেবে পরিচিত।

ঘটনার সূত্রপাত : গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে নয়ন বন্ড তার সহযোগীদের নিয়ে রিফাত শরীফকে প্রকাশে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। ঘটনার সময় স্ত্রী মিন্নি তাকে বাঁচাতে বারবার চেষ্টা করেছেন। এরপরও আসামিরা তাকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। তার হত্যাকা-ের খবর ছড়িয়ে পড়লে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার দৃশ্য প্রকাশের পর দেশজুড়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় রিফাত শরীফের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় এ পর্যন্ত যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা হলো বরগুনা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের অরুণ চন্দ্র সরকারের ছেলে ৪নং আসামি চন্দন (২১), ৯নং আসামি বরগুনা কলেজ রোডের আয়নাল হকের ছেলে হাসান (১৯), ১১নং আসামি অলি ১২নং আসামি টিকটক হৃদয় এজাহারভুক্ত আসামি। সন্দেহজনক গ্রেফতারকৃত আসামিরা হচ্ছে বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান (১৮), বরগুনা পৌরসভার ধানসিঁড়ি সড়কের নয়া মিয়ার ছেলে তানভীর (২২), সদর উপজেলার নলী মাইঠা গ্রামের আ. লতিফ খানের ছেলে সাগর (১৯) ও হাজারবিঘা গ্রামের কায়সার মিয়ার ছেলে কামরুল হাসান সাইমুন (২১)।

আমাদের প্রতিনিধি, বরগুনা জানান, রিফাত হত্যা মামলার বাদী আ. হালিম দুলাল শরীফ তদন্তে সরকারের ওপর খুশি থাকলেও মামলার প্রধান সাক্ষী কাম আসামি মিন্নির বাবা পুলিশ, রাজনীতিবিদ তথা বরগুনার এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ভূমিকায় ক্ষেভ প্রকাশ করেন। তার অভিযোগ, আসল খুনিদের বাঁচাতে পুলিশ থেকে শুরু করে প্রভাবশালী মহল মিন্নিকে ফাঁসাতে চেষ্টা করছে।

রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার নেপথ্যে মাদকের বিষয়টি আলোচনা হলেও আরও ২টি কারণ বেরিয়ে আসছে। রিফাত চলতি বছরের ১১ মে রাত ২টার দিকে ১০০ পিস ইয়াবাসহ বরগুনা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক সোহেল খানের হাতে গ্রেফতার হয়। তাকে আটকের দৃশ্য বন্দুকযুদ্ধে নিহত এবং হত্যার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড মোবাইল ফোনে ভিডিও করে ওইদিনই ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে। নয়নবন্ডদের তৎপরতায় ওই মামলায় আটকের পে রিফাত শরীফ ১৯ দিনের মতো কারাগারে ছিল। এই ঘটনার পর নয়ন বন্ড ও রিফাত শরীফদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে এবং তারা প্রতিপক্ষ হয়ে যায়। রিফাত শরীফ কারাগার থেকে বের হয়ে তার প্রতিপক্ষ রিফাত ফরাজী ও নয়ন বন্ডের কাছে কেন তারা ইয়াবা দিয়ে রিফাত শরীফকে ধরিয়ে দিয়েছে, তা জানতে চায়। একই সঙ্গে তাকে পুলিশে আটকের পর ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে হেয় করা হয়েছে। এ নিয়ে পারস্পরিক দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে রিফাত ফরাজীকে আটক করে হাতুড়ি দিয়ে মারাত্মকভাবে পেটায় রিফাত শরীফ ও তার সহযোগীরা। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যার পেছনে এটিও একটি কারণ। চলতি বছরের ৫ মে সন্ধ্যায় এর আগের ঘটনাটি ঘটেছিল দোয়েল চত্বরের মাটিয়াল ক্যাফে। ক্যাফের পরিচালক মুশফিক আরিফ জানান, এদিন মিন্নিকে সঙ্গে নিয়ে তার স্বামী রিফাত শরীফ মাটিয়াল ক্যাফে এসেছিলেন সন্ধ্যায়। তার সঙ্গে থাকা মোটরসাইকেলটি রেখেছিল মাটিয়াল ক্যাফের পাশে বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেনের বাসার গেটের আগে। গেটের সামনে মোটরসাইকেল রাখায় রিফাত শরীফের সঙ্গে দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী শামসুন্নাহার খুকীর প্রচ- বাকবিত-া হয়, সেটি আরিফ দেখেছে। এ ঘটনা শোধ নেয়ার জন্য পর খুকী ছোট বোনের ছেলে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীকে ডেকে ঘটনাটি বলেন। এ ঘটনার ৫ দিন পরই রহস্যজনকভাবে রিফাত শরীফ ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। অনেকেই ধারণা করছেন, ওই ঘটনার কারণেই রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী ০০৭ বন্ডের সদস্যদের নিয়ে ২৬ জুন রিফাত শরীফকে হামলা করেছিল। হামলার আগে রিফাত ফরাজীকে অটকানোর সময় রিফাত ও রিশান ফরাজী বলেছিল, খালাম্মাকে তুই গালি দিয়েছিলি কেন? দুই গ্রুপ মিলে রিফাতকে হত্যা করে।