শ্রমিকদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ
রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় ইজি ফ্যাশনস গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিক দেলোয়ার হোসেনকে (২৫) পোশাক চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ওই কারখানায় কাটিং সহকারী ছিলেন। গত বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এতে তার সহকর্মী ও ওই কারখানার শ্রমিকরা গতকাল রাস্তায় নেমে বিক্ষোভসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পুলিশ হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, গত বুধবার কারখানা ছুটি হওয়ার পরও দেলোয়ার বের না হয়ে লুকিয়ে ছিলেন। মাঝরাতে তিনি ছয়তলা থেকে কিছু গেঞ্জি জানালা দিয়ে বাইরে ফেললে বাইরে থেকে একজন তা দেখে নিরাপত্তা কর্মীদের খবর দেন। পরে দারোয়ান কারখানার ম্যানেজারকে খবর দেন। তিন-চার সিকিউরিটি গার্ডকে নিয়ে অফিস সহকারী ইয়াসিন ষষ্ঠতলায় গিয়ে লুকিয়ে থাকা দেলোয়ারকে খুঁজে বের করেন। তারা দেলোয়ারকে ধরার পর বেদম পিটুনি দিয়ে রাতে কারখানার ভেতরেই আটকে রাখেন। গতকাল সকাল ১১টার দিকে শ্রমিকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ দেলোয়ারকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীনে দুপুর ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে দেলোয়ারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেলা পৌনে ৩টার দিকে রামপুরার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। তারা কিছু যানবাহনও ভাঙচুর করেন। এতে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টিসহ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, সড়ক অবরোধের একপর্যায়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শ্রমিকরা এক হয়ে ইজি গার্মেন্ট কারখানায় হামলার প্রস্তুতি নেয়। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে হাতিরঝিল থানার ওসি ও তেজগাঁও বিভাগের এক সহকারী কমিশনার (এসি) আহত হন। পরে পুলিশ শ্রমিকদের লাঠিচার্জ ও গুলি ছুড়লে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
বিক্ষুব্ধ পোশাক শ্রমিকরা দাবি করেন, নিহত দেলোয়ার তাদের কারখানায় কাটিং সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। তারা তাকে ভালো করেই চেনেন। তিনি শার্ট কিংবা গেঞ্জি চুরি করার মতো ব্যক্তি নন। আর চুরি করলেও দেশে পুলিশ আছে, আইন আছে। কিন্তু তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো কেন? তাদের অভিযোগ, চুরি নয়, অন্য কোন উদ্দেশ্যে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ বিচার দাবি করেন তারা।
ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার (রামপুরা) হুমায়ুন কবীর বলেন, শ্রমিকদের বিক্ষোভে রামপুরা সড়কের দু’দিকেই যানবাহন চলাচল হয়ে যায়। ফলে আশপাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যার আগমুহূর্তে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে যানজট স্বাভাবিক হয়।
হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন জানান, ওই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সবাই ওই কারখানার সঙ্গে জড়িত নয়। তবে দেলোয়ারকে পিটিয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িত। পুলিশ তাদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি।
শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০১৯ , ১১ শ্রাবন ১৪২৫, ২২ জিলকদ ১৪৪০
শ্রমিকদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় ইজি ফ্যাশনস গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিক দেলোয়ার হোসেনকে (২৫) পোশাক চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ওই কারখানায় কাটিং সহকারী ছিলেন। গত বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এতে তার সহকর্মী ও ওই কারখানার শ্রমিকরা গতকাল রাস্তায় নেমে বিক্ষোভসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পুলিশ হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, গত বুধবার কারখানা ছুটি হওয়ার পরও দেলোয়ার বের না হয়ে লুকিয়ে ছিলেন। মাঝরাতে তিনি ছয়তলা থেকে কিছু গেঞ্জি জানালা দিয়ে বাইরে ফেললে বাইরে থেকে একজন তা দেখে নিরাপত্তা কর্মীদের খবর দেন। পরে দারোয়ান কারখানার ম্যানেজারকে খবর দেন। তিন-চার সিকিউরিটি গার্ডকে নিয়ে অফিস সহকারী ইয়াসিন ষষ্ঠতলায় গিয়ে লুকিয়ে থাকা দেলোয়ারকে খুঁজে বের করেন। তারা দেলোয়ারকে ধরার পর বেদম পিটুনি দিয়ে রাতে কারখানার ভেতরেই আটকে রাখেন। গতকাল সকাল ১১টার দিকে শ্রমিকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ দেলোয়ারকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীনে দুপুর ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে দেলোয়ারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেলা পৌনে ৩টার দিকে রামপুরার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। তারা কিছু যানবাহনও ভাঙচুর করেন। এতে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টিসহ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, সড়ক অবরোধের একপর্যায়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শ্রমিকরা এক হয়ে ইজি গার্মেন্ট কারখানায় হামলার প্রস্তুতি নেয়। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে হাতিরঝিল থানার ওসি ও তেজগাঁও বিভাগের এক সহকারী কমিশনার (এসি) আহত হন। পরে পুলিশ শ্রমিকদের লাঠিচার্জ ও গুলি ছুড়লে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
বিক্ষুব্ধ পোশাক শ্রমিকরা দাবি করেন, নিহত দেলোয়ার তাদের কারখানায় কাটিং সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। তারা তাকে ভালো করেই চেনেন। তিনি শার্ট কিংবা গেঞ্জি চুরি করার মতো ব্যক্তি নন। আর চুরি করলেও দেশে পুলিশ আছে, আইন আছে। কিন্তু তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো কেন? তাদের অভিযোগ, চুরি নয়, অন্য কোন উদ্দেশ্যে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ বিচার দাবি করেন তারা।
ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার (রামপুরা) হুমায়ুন কবীর বলেন, শ্রমিকদের বিক্ষোভে রামপুরা সড়কের দু’দিকেই যানবাহন চলাচল হয়ে যায়। ফলে আশপাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যার আগমুহূর্তে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে যানজট স্বাভাবিক হয়।
হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন জানান, ওই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সবাই ওই কারখানার সঙ্গে জড়িত নয়। তবে দেলোয়ারকে পিটিয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িত। পুলিশ তাদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি।