বেগম পত্রিকার ৭৩ বছর

মহিলাদের সচিত্র সাপ্তাহিক পত্রিকা বেগম’র ৭৩ বছরে পদার্পণ করেছে। ১৯৪৭ সালের ২০ জুলাই কলকাতা থেকে এই পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। সংবাদপত্রের প্রবাদপুরুষ ‘সওগাত’ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন এর প্রতিষ্ঠাতা প্রকাশক। নারী জাগরণে সাহস সঞ্চার এবং নারী সমাজের সৃজন-স্পৃহা বিকাশের লক্ষ্যে তিনি এই পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করেন। নিজ কন্যা নূরজাহান বেগমকে পত্রিকা সম্পাদনায় নিয়ে আসেন। ‘বেগম’ প্রতিষ্ঠার পেছনে নারী-পুরুষ উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা রয়েছে।

নারী সমাজের প্রিয় এই পত্রিকাটি ৭২ বছরপূর্তি উপলক্ষে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে। ১৯৪৭-২০১৯ পর্যন্ত দীর্ঘ পথ চলায় বেগম শুধু সাহিত্য-সংস্কৃতি ক্ষেত্রেই নারীদের উজ্জীবিত করেনি, নারী মুক্তি আন্দোলনেও ভূমিকা রেখেছে। ১৯৫০ সালে কলকাতা থেকে ঢাকায় স্থানান্তর হলে ‘বেগম’ এর শুরু হয় নতুন পথচলা। পুরান ঢাকার ৩৮ নম্বর শরৎগুপ্ত রোডে মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনের বাসভবন থেকে এর সম্পাদকীয় কার্যক্রম শুরু হয়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে নারীদের সার্বিক অগ্রযাত্রার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে কাজ শুরু করে পত্রিকাটি। এ দেশের শিক্ষিত পরিবারের ঘরে ঘরে তখন ‘বেগম’ এর অবস্থান স্বাভাবিক ঘটনা। কালের যাত্রাপথে ‘বেগম’কে ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু দমে না গিয়ে নিজ আদর্শে অবিচল থেকে বেগম এখনও সমস্যার মোকাবিলা করছে। তাই ‘বেগম’ এখন দেশের মানুষের গড় আয়ুর কাছাকাছি।

‘বেগম’ সম্পর্কে এই প্রতিষ্ঠাতা প্রকাশক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন বলেছেন, ‘সেই কুসংস্কার ও গোঁড়ামির যুগে বাংলার মুসলিম মহিলাদের সচিত্র সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করা দুঃসাধ্য কাজ ছিল। যা হোক, সওগাতের মাধ্যমে যখন বেশ কিছুসংখ্যক মহিলা সাহিত্যচর্চায় যখন এগিয়ে এলেন তখন পরিকল্পনা করলাম মহিলা সওগাতের স্থলে সচিত্র সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘বেগম’ প্রকাশ করব। প্রথম দিকে এ কাজ কষ্টসাধ্য হলেও ক্রমে এই প্রকাশনার মাধ্যমে হয়তো অনেক লেখিকা ও সমাজকর্মীর আর্বিভাব হবে- এই আশা নিয়ে ১৯৪৭ সালের ২০ জুলাই ‘বেগম’ প্রতিষ্ঠা করি। মো. নাসিরউদ্দীনের রচিত ‘বাংলা সাহিত্যে সওগাত যুগ’ গ্রন্থ থেকে নেয়া।

রবিবার, ২৮ জুলাই ২০১৯ , ১৩ শ্রাবন ১৪২৫, ২৪ জিলকদ ১৪৪০

বেগম পত্রিকার ৭৩ বছর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

মহিলাদের সচিত্র সাপ্তাহিক পত্রিকা বেগম’র ৭৩ বছরে পদার্পণ করেছে। ১৯৪৭ সালের ২০ জুলাই কলকাতা থেকে এই পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। সংবাদপত্রের প্রবাদপুরুষ ‘সওগাত’ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন এর প্রতিষ্ঠাতা প্রকাশক। নারী জাগরণে সাহস সঞ্চার এবং নারী সমাজের সৃজন-স্পৃহা বিকাশের লক্ষ্যে তিনি এই পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করেন। নিজ কন্যা নূরজাহান বেগমকে পত্রিকা সম্পাদনায় নিয়ে আসেন। ‘বেগম’ প্রতিষ্ঠার পেছনে নারী-পুরুষ উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা রয়েছে।

নারী সমাজের প্রিয় এই পত্রিকাটি ৭২ বছরপূর্তি উপলক্ষে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে। ১৯৪৭-২০১৯ পর্যন্ত দীর্ঘ পথ চলায় বেগম শুধু সাহিত্য-সংস্কৃতি ক্ষেত্রেই নারীদের উজ্জীবিত করেনি, নারী মুক্তি আন্দোলনেও ভূমিকা রেখেছে। ১৯৫০ সালে কলকাতা থেকে ঢাকায় স্থানান্তর হলে ‘বেগম’ এর শুরু হয় নতুন পথচলা। পুরান ঢাকার ৩৮ নম্বর শরৎগুপ্ত রোডে মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনের বাসভবন থেকে এর সম্পাদকীয় কার্যক্রম শুরু হয়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে নারীদের সার্বিক অগ্রযাত্রার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে কাজ শুরু করে পত্রিকাটি। এ দেশের শিক্ষিত পরিবারের ঘরে ঘরে তখন ‘বেগম’ এর অবস্থান স্বাভাবিক ঘটনা। কালের যাত্রাপথে ‘বেগম’কে ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু দমে না গিয়ে নিজ আদর্শে অবিচল থেকে বেগম এখনও সমস্যার মোকাবিলা করছে। তাই ‘বেগম’ এখন দেশের মানুষের গড় আয়ুর কাছাকাছি।

‘বেগম’ সম্পর্কে এই প্রতিষ্ঠাতা প্রকাশক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন বলেছেন, ‘সেই কুসংস্কার ও গোঁড়ামির যুগে বাংলার মুসলিম মহিলাদের সচিত্র সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করা দুঃসাধ্য কাজ ছিল। যা হোক, সওগাতের মাধ্যমে যখন বেশ কিছুসংখ্যক মহিলা সাহিত্যচর্চায় যখন এগিয়ে এলেন তখন পরিকল্পনা করলাম মহিলা সওগাতের স্থলে সচিত্র সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘বেগম’ প্রকাশ করব। প্রথম দিকে এ কাজ কষ্টসাধ্য হলেও ক্রমে এই প্রকাশনার মাধ্যমে হয়তো অনেক লেখিকা ও সমাজকর্মীর আর্বিভাব হবে- এই আশা নিয়ে ১৯৪৭ সালের ২০ জুলাই ‘বেগম’ প্রতিষ্ঠা করি। মো. নাসিরউদ্দীনের রচিত ‘বাংলা সাহিত্যে সওগাত যুগ’ গ্রন্থ থেকে নেয়া।