পানি নামছে দুর্দশা কমেনি বানভাসিদের

কুড়িগ্রামে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র এবং বগুড়ায় যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে দুর্দশা কমেনি বানভাসিদের।

বগুড়া : বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি শুক্রবার থেকে কমতে শুরু করেছে। যদিও যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবুও মানুষের মধ্যে আবার স্বস্তি ফিরে আসতে শুরু করেছে।

বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি সারিয়াকান্দি পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাঙ্গালী নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বাঙ্গালী নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে সারিয়াকান্দি, গাবতলী, শেরপুর, ধুনট ও সোনাতলা অধিকাংশ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। সরকারি হিসেবে বগুড়ার সারিয়াকান্দী, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা এখন পানির নিচে ডুবে আছে। ২৯টি ইউনিয়নের ৫৬৯টি গ্রামের ২ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ২ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলাগুলোর বিভিন্ন গ্রামের নিচু রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে শুরু করেছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন বন্যা কবলিতরা। দু’সপ্তাহ ধরে বসতবাড়ি ডুবে থাকায় বেহাল অবস্থা হয়েছে বাড়িঘরের। বন্যার প্রবল স্রোতে ঘরের বেড়া, ল্যাট্রিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরের ভিতর এক হাঁটু কাদা। নষ্ট হয়ে গেছে রান্না করার চুলা। ফলে বন্যা পরবর্তী দুর্দশার মধ্যে পড়েছে তারা।

সরকারি হিসেবে বন্যায় ২ লাখ ৩৯ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নলকূপের ক্ষতি হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার।

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) : ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি আবারও বাড়ছে। গত ৩৬ ঘণ্টায় বহ্মপুত্রের পানি ১৪ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৭ সে.মি. এবং ঘাঘট নদীর পানি ৭ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ইতোপূর্বে বন্যা কবলিত যেসব এলাকা থেকে পানি সরে গিয়েছিল সেসব এলাকাসহ নতুন নতুন এলাকায় আবারও বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার দেবীনগরে মহানন্দার অব্যাহত ভাঙনে প্রায় ১শ’ বিঘার ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে ১টি মাদ্রাসা, ২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ তরফা ফেরিঘাট। এমতবস্থায়, ভাঙন প্রতিরোধে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যবস্থা না নেয়ায় স্থানীয় এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নের ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের তরফা ফেরিঘাট এলাকাজুড়ে গত ২ সপ্তাহ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটারব্যাপী মহানন্দায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ভাঙনের কবলে পড়ে প্রায় ১শ’ বিঘা ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে দেবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবীনগর নতুন গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবীনগর নতুন গ্রাম দাখিল মাদ্রাসাসহ ৩টি গ্রামের প্রায় ৪ হাজার মানুষ।

রবিবার, ২৮ জুলাই ২০১৯ , ১৩ শ্রাবন ১৪২৫, ২৪ জিলকদ ১৪৪০

পানি নামছে দুর্দশা কমেনি বানভাসিদের

সংবাদ ডেস্ক

কুড়িগ্রামে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র এবং বগুড়ায় যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে দুর্দশা কমেনি বানভাসিদের।

বগুড়া : বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি শুক্রবার থেকে কমতে শুরু করেছে। যদিও যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবুও মানুষের মধ্যে আবার স্বস্তি ফিরে আসতে শুরু করেছে।

বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি সারিয়াকান্দি পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাঙ্গালী নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বাঙ্গালী নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে সারিয়াকান্দি, গাবতলী, শেরপুর, ধুনট ও সোনাতলা অধিকাংশ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। সরকারি হিসেবে বগুড়ার সারিয়াকান্দী, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা এখন পানির নিচে ডুবে আছে। ২৯টি ইউনিয়নের ৫৬৯টি গ্রামের ২ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ২ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলাগুলোর বিভিন্ন গ্রামের নিচু রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে শুরু করেছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন বন্যা কবলিতরা। দু’সপ্তাহ ধরে বসতবাড়ি ডুবে থাকায় বেহাল অবস্থা হয়েছে বাড়িঘরের। বন্যার প্রবল স্রোতে ঘরের বেড়া, ল্যাট্রিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরের ভিতর এক হাঁটু কাদা। নষ্ট হয়ে গেছে রান্না করার চুলা। ফলে বন্যা পরবর্তী দুর্দশার মধ্যে পড়েছে তারা।

সরকারি হিসেবে বন্যায় ২ লাখ ৩৯ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নলকূপের ক্ষতি হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার।

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) : ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি আবারও বাড়ছে। গত ৩৬ ঘণ্টায় বহ্মপুত্রের পানি ১৪ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৭ সে.মি. এবং ঘাঘট নদীর পানি ৭ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ইতোপূর্বে বন্যা কবলিত যেসব এলাকা থেকে পানি সরে গিয়েছিল সেসব এলাকাসহ নতুন নতুন এলাকায় আবারও বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার দেবীনগরে মহানন্দার অব্যাহত ভাঙনে প্রায় ১শ’ বিঘার ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে ১টি মাদ্রাসা, ২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ তরফা ফেরিঘাট। এমতবস্থায়, ভাঙন প্রতিরোধে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যবস্থা না নেয়ায় স্থানীয় এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নের ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের তরফা ফেরিঘাট এলাকাজুড়ে গত ২ সপ্তাহ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটারব্যাপী মহানন্দায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ভাঙনের কবলে পড়ে প্রায় ১শ’ বিঘা ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে দেবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবীনগর নতুন গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবীনগর নতুন গ্রাম দাখিল মাদ্রাসাসহ ৩টি গ্রামের প্রায় ৪ হাজার মানুষ।