দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে

সিলেটের কারা উপমহাপরিদর্শক পার্থ গোপাল গ্রেফতার

তার বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা জব্দ

দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সিলেটের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস) পার্থ গোপাল বণিককে গ্রেফতার করা হয় এবং তার বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঘুষ নেয়া ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সম্পদ গড়ার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পার্থ গোপাল বণিকের রাজধানীর ধানমন্ডির ভূতের গলির বাসায় অভিযান চালানো হয় দুদকের পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফের নেতৃত্বে একটি দল। তল্লাশি চালিয়ে বাসা থেকে অবৈধ অর্জনের ৮০ লাখ টাকা জব্দ করার পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। দুদক জানায়, জব্দ হওয়া টাকার উৎস সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে পারেননি পার্থ গোপাল বণিক।

ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিক বর্তমানে সিলেট রেঞ্জের দায়িত্বে আছেন। জেল সুপার প্রশান্ত কুমারও সিলেটে কেন্দ্রীয় কারাগারের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে পার্থ গোপাল বণিক চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আর প্রশান্ত কুমার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপারের দায়িত্বে ছিলেন। সেখানে দায়িত্বে থাকাকালীন ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকার মালিক হন তারা। প্রতিদিন চট্টগ্রাম রেঞ্জের বিভিন্ন কারাগার থেকে পার্থ বণিক টাকা নিতেন। এসব কাজে তাকে জেলা সুপার সহযোগিতা করত। তাদের একজন ছিল প্রশান্ত কুমার।

দুদক সূত্র আরও জানায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ডিআইজি থাকাকালীন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয় ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিক। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের তৎকালীন জেল সুপার প্রশান্ত কুমারও একইভাবে অবৈধ অর্থ ও সম্পদ গড়ে তোলে। তাদের দুজনের বিরুদ্ধে কারাগারে ঘুষ বাণিজ্য, বন্দীদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নেয়া, কারাগারে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ অর্থের মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠে। ঘুষের বিনিময়ে দাগি সন্ত্রাসীদের কারাগারে সুবিধা দেয়া, সুস্থ কারাবন্দীদের টাকার বিনিময়ে হাসপাতালে রাখা, দর্শনার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়াসহ নানাভাবে অর্থ অর্জনের অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে। এসব অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ ও সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠলে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

দুদক টিমের সদস্যরা গতকাল সকালে ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিক ও জেলা সুপার প্রশান্ত কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিককে সঙ্গে নিয়ে তার ধানমন্ডির ভূতের গলির বাসায় যায় দুদক। দুদক টিমের সদস্যরা তল্লাশি চালিয়ে সেখান থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করে। ওই টাকার উৎস সম্পর্কে পার্থ গোপাল বণিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেনি। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

দুদক সূত্র জানায়, ধারণা করা হচ্ছে বিভিন্ন সময়ে বন্দী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়াসহ অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ব্যাংকে না রেখে বাসায় রেখেছেন ডিআইজি প্রিজন্স। ধরা পড়ার ভয়ে বা সন্দেহে পড়বেন এ জন্য তিনি টাকা ব্যাংক না রেখে বাসায় রেখেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সোমবার, ২৯ জুলাই ২০১৯ , ১৪ শ্রাবন ১৪২৫, ২৫ জিলকদ ১৪৪০

দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে

সিলেটের কারা উপমহাপরিদর্শক পার্থ গোপাল গ্রেফতার

তার বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা জব্দ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সিলেটের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস) পার্থ গোপাল বণিককে গ্রেফতার করা হয় এবং তার বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঘুষ নেয়া ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সম্পদ গড়ার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পার্থ গোপাল বণিকের রাজধানীর ধানমন্ডির ভূতের গলির বাসায় অভিযান চালানো হয় দুদকের পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফের নেতৃত্বে একটি দল। তল্লাশি চালিয়ে বাসা থেকে অবৈধ অর্জনের ৮০ লাখ টাকা জব্দ করার পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। দুদক জানায়, জব্দ হওয়া টাকার উৎস সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে পারেননি পার্থ গোপাল বণিক।

ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিক বর্তমানে সিলেট রেঞ্জের দায়িত্বে আছেন। জেল সুপার প্রশান্ত কুমারও সিলেটে কেন্দ্রীয় কারাগারের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে পার্থ গোপাল বণিক চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আর প্রশান্ত কুমার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপারের দায়িত্বে ছিলেন। সেখানে দায়িত্বে থাকাকালীন ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকার মালিক হন তারা। প্রতিদিন চট্টগ্রাম রেঞ্জের বিভিন্ন কারাগার থেকে পার্থ বণিক টাকা নিতেন। এসব কাজে তাকে জেলা সুপার সহযোগিতা করত। তাদের একজন ছিল প্রশান্ত কুমার।

দুদক সূত্র আরও জানায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ডিআইজি থাকাকালীন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয় ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিক। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের তৎকালীন জেল সুপার প্রশান্ত কুমারও একইভাবে অবৈধ অর্থ ও সম্পদ গড়ে তোলে। তাদের দুজনের বিরুদ্ধে কারাগারে ঘুষ বাণিজ্য, বন্দীদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নেয়া, কারাগারে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ অর্থের মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠে। ঘুষের বিনিময়ে দাগি সন্ত্রাসীদের কারাগারে সুবিধা দেয়া, সুস্থ কারাবন্দীদের টাকার বিনিময়ে হাসপাতালে রাখা, দর্শনার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়াসহ নানাভাবে অর্থ অর্জনের অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে। এসব অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ ও সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠলে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

দুদক টিমের সদস্যরা গতকাল সকালে ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিক ও জেলা সুপার প্রশান্ত কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিককে সঙ্গে নিয়ে তার ধানমন্ডির ভূতের গলির বাসায় যায় দুদক। দুদক টিমের সদস্যরা তল্লাশি চালিয়ে সেখান থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করে। ওই টাকার উৎস সম্পর্কে পার্থ গোপাল বণিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেনি। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

দুদক সূত্র জানায়, ধারণা করা হচ্ছে বিভিন্ন সময়ে বন্দী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়াসহ অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ব্যাংকে না রেখে বাসায় রেখেছেন ডিআইজি প্রিজন্স। ধরা পড়ার ভয়ে বা সন্দেহে পড়বেন এ জন্য তিনি টাকা ব্যাংক না রেখে বাসায় রেখেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।