চ্যালেঞ্জের মুখে আওয়ামী লীগ

সম্প্রতি ‘বন্যা’, ‘ডেঙ্গুজ্বর’, ‘গুজব’, ‘গণপিটুনি’সহ প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট নানা প্রতিকূলতায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় পেয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের শুরুতেই (ছয় মাসের মাথায়) এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে। বিদ্রোহীদের বিষয়ে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত, নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানসহ পূর্ব নির্ধারিত সাংগঠনিক নানা কার্যক্রম, এমনকি জাতীয় সম্মেলনও পিছিয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক বন্যায় জনদুর্ভোগ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশপাশি মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এদিকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অ্যাডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুজ্বরের প্রদুর্ভাব মাত্রা অতিরিক্ত বেড়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অযাচিত বক্তব্য দিয়ে ক্ষমতাসীনদের বিব্রত করছে। এরই মধ্যে আবার ‘পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে’Ñ এমন গুজব ছড়িয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে একটি চক্র। আবার ছেলেধরা সন্দেহে কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গণপিটুনি দিয়ে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে। অতিসম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতে প্রিয়া সাহার মিথ্যা অভিযোগের নেপথ্য সূত্র খুঁজতেও সরকারের ব্যস্ততা বেড়েছে।

আসছে অক্টোবরে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন (কাউন্সিল) অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নানা প্রস্তুতি শুরু হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্মেলন পেছানোর বিষয়ে ভাবছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। গত মার্চে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে অনুষ্ঠিত দলের সভাপতিম-লীর সভায় অক্টোবরে সম্মেলন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। ওই অনুযায়ী দেশব্যাপী সাংগঠনিক সফর শুরু করে কেন্দ্রীয় ৮টি টিম। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই টিমগুলোর কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারা এখন পৃথক ৬টি টিমের সদস্য হয়ে বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণে ব্যস্ত। এদিকে জুনে পাঁচ ধাপে শেষ হওয়া উপজেলা নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও কেন্দ্রের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া নেতাদের বিরুদ্ধে এখনও সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি আওয়ামী লীগ। এদিকে কয়েকবার তারিখ দিয়েও নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করতে পারেনি দলটি। এই অভিযানে নতুন ভোটারদের দলে নেয়াসহ ২ কোটি নতুন সদস্য করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শোকের মাস আগস্ট শুরু। রীতি অনুযায়ী শোকের মাসে এ সংক্রান্ত অনুষ্ঠান ছাড়া অন্যসব সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবে আওয়ামী লীগ। এরপর সেপ্টেম্বরে যাবতীয় প্রক্রিয় শেষ করে অক্টোবরে নিয়মমাফিক সম্মেলন করা দলটির জন্য জটিল হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি ও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবটিকে ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে দেখছেন। সম্প্রতি রাজধানীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, এখন বন্যা আর ডেঙ্গু মোকাবিলা আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ডেঙ্গুজ্বর মোকাবিলায় সংশ্লিষ্টদের নানা নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি অ্যাডিস মশা ধ্বংসের জন্য কার্যকর ওষুধ আনতে বলেছেন। ডেঙ্গু নিয়ে অতিসম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘অযাচিত’ বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তিনি দায়িত্বশীলদের দায়িত্বহীন কথাবার্তা পরিহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। একই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেছেন, সবার দায়িত্বশীল কথাবার্তা বলা উচিত। কথা বেশি না বলে সবাই কাজে মনোনিবেশ করবেনÑ এটাই নেতাকর্মীকে আহ্বান জানাচ্ছি।

এদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম গত শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানের বক্তব্যে ঢাকার দুই মেয়র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সভা-সমাবেশ পরিহার করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সভা করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। মাঠে নেমে অ্যাডিস মশার উৎসস্থল ধ্বংস করতে হবে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা সংবাদকে বলেন, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, রাজধানীজুড়ে ডেঙ্গুজ্বরের প্রভাব, গুজব রটিয়ে মানুষ হত্যাসহ সাম্প্রতিক বেশকিছু সমস্যা দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে। এক নেতা বলেন, কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনগুলোরও সম্মেলন করা হয়। অথচ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন শ্রমিক লীগের মধ্যেও কোন সম্মেলন প্রস্তুতি নেই। তিনি বলেন, সম্মেলন করার আগে সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহও জরুরি। এই কার্যক্রমও সেভাবে শুরু হয়নি। প্রতি সম্মেলনের আগে গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র হালনাগাদ করা হয়। এবার এ সংক্রান্ত কোন আলোচনা বা উদ্যোগ দেখা যায়নি।

কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেন, সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম অনেক আগেই শুরু হয়েছে ও ধীরগতিতে চলছে। অক্টোবরে সম্মেলন করার মতো এখনও সময় আছে। তাই এই মুহূর্তে সম্মেলন পেছানোর সিদ্ধান্ত আসবে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘প্রিয়া সাহা’, ‘গুজব ছড়িয়ে মানুষ হত্যা’ বিদ্রোহীদের বিষয়ে সিদ্ধান্তসহ নানা বিষয়ে সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রিয়া সাহার মিথ্যা অভিযোগের সঙ্গে দেশি এবং আন্তর্জাতিক যোগসূত্র খুঁজে দেখা হচ্ছে। গুজব ছড়িয়ে মানুষ হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এখন গুজব তৈরির কারখানা। তারা নির্বাচন, আন্দোলন সবকিছুতে পরাজিত হয়ে, জনগণের আস্থা হারিয়ে এখন দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে গুজবের আশ্রয় নিচ্ছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এনজিও কর্মী প্রিয়া সাহার বক্তব্য, গণপিটুনি বিষয়গুলোর মধ্যে কোন যোগসূত্র আছে কি না- এ বিষয়গুলো আমরা গভীরভাবে খতিয়ে দেখছি। তিনি বলেন, কোনো যোগসূত্র থেকে থাকলে তা অবশ্যই সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ মনে করা হবে। তখন যা যা করা দরকার, সব প্রস্তুতি সরকারের আছে।

সোমবার, ২৯ জুলাই ২০১৯ , ১৪ শ্রাবন ১৪২৫, ২৫ জিলকদ ১৪৪০

বন্যা-ডেঙ্গু-গুজব

চ্যালেঞ্জের মুখে আওয়ামী লীগ

ফয়েজ আহমেদ তুষার

সম্প্রতি ‘বন্যা’, ‘ডেঙ্গুজ্বর’, ‘গুজব’, ‘গণপিটুনি’সহ প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট নানা প্রতিকূলতায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় পেয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের শুরুতেই (ছয় মাসের মাথায়) এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে। বিদ্রোহীদের বিষয়ে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত, নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানসহ পূর্ব নির্ধারিত সাংগঠনিক নানা কার্যক্রম, এমনকি জাতীয় সম্মেলনও পিছিয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক বন্যায় জনদুর্ভোগ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশপাশি মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এদিকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অ্যাডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুজ্বরের প্রদুর্ভাব মাত্রা অতিরিক্ত বেড়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অযাচিত বক্তব্য দিয়ে ক্ষমতাসীনদের বিব্রত করছে। এরই মধ্যে আবার ‘পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে’Ñ এমন গুজব ছড়িয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে একটি চক্র। আবার ছেলেধরা সন্দেহে কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গণপিটুনি দিয়ে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে। অতিসম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতে প্রিয়া সাহার মিথ্যা অভিযোগের নেপথ্য সূত্র খুঁজতেও সরকারের ব্যস্ততা বেড়েছে।

আসছে অক্টোবরে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন (কাউন্সিল) অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নানা প্রস্তুতি শুরু হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্মেলন পেছানোর বিষয়ে ভাবছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। গত মার্চে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে অনুষ্ঠিত দলের সভাপতিম-লীর সভায় অক্টোবরে সম্মেলন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। ওই অনুযায়ী দেশব্যাপী সাংগঠনিক সফর শুরু করে কেন্দ্রীয় ৮টি টিম। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই টিমগুলোর কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারা এখন পৃথক ৬টি টিমের সদস্য হয়ে বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণে ব্যস্ত। এদিকে জুনে পাঁচ ধাপে শেষ হওয়া উপজেলা নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও কেন্দ্রের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া নেতাদের বিরুদ্ধে এখনও সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি আওয়ামী লীগ। এদিকে কয়েকবার তারিখ দিয়েও নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করতে পারেনি দলটি। এই অভিযানে নতুন ভোটারদের দলে নেয়াসহ ২ কোটি নতুন সদস্য করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শোকের মাস আগস্ট শুরু। রীতি অনুযায়ী শোকের মাসে এ সংক্রান্ত অনুষ্ঠান ছাড়া অন্যসব সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবে আওয়ামী লীগ। এরপর সেপ্টেম্বরে যাবতীয় প্রক্রিয় শেষ করে অক্টোবরে নিয়মমাফিক সম্মেলন করা দলটির জন্য জটিল হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি ও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবটিকে ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে দেখছেন। সম্প্রতি রাজধানীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, এখন বন্যা আর ডেঙ্গু মোকাবিলা আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ডেঙ্গুজ্বর মোকাবিলায় সংশ্লিষ্টদের নানা নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি অ্যাডিস মশা ধ্বংসের জন্য কার্যকর ওষুধ আনতে বলেছেন। ডেঙ্গু নিয়ে অতিসম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘অযাচিত’ বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তিনি দায়িত্বশীলদের দায়িত্বহীন কথাবার্তা পরিহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। একই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেছেন, সবার দায়িত্বশীল কথাবার্তা বলা উচিত। কথা বেশি না বলে সবাই কাজে মনোনিবেশ করবেনÑ এটাই নেতাকর্মীকে আহ্বান জানাচ্ছি।

এদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম গত শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানের বক্তব্যে ঢাকার দুই মেয়র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সভা-সমাবেশ পরিহার করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সভা করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। মাঠে নেমে অ্যাডিস মশার উৎসস্থল ধ্বংস করতে হবে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা সংবাদকে বলেন, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, রাজধানীজুড়ে ডেঙ্গুজ্বরের প্রভাব, গুজব রটিয়ে মানুষ হত্যাসহ সাম্প্রতিক বেশকিছু সমস্যা দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে। এক নেতা বলেন, কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনগুলোরও সম্মেলন করা হয়। অথচ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন শ্রমিক লীগের মধ্যেও কোন সম্মেলন প্রস্তুতি নেই। তিনি বলেন, সম্মেলন করার আগে সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহও জরুরি। এই কার্যক্রমও সেভাবে শুরু হয়নি। প্রতি সম্মেলনের আগে গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র হালনাগাদ করা হয়। এবার এ সংক্রান্ত কোন আলোচনা বা উদ্যোগ দেখা যায়নি।

কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেন, সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম অনেক আগেই শুরু হয়েছে ও ধীরগতিতে চলছে। অক্টোবরে সম্মেলন করার মতো এখনও সময় আছে। তাই এই মুহূর্তে সম্মেলন পেছানোর সিদ্ধান্ত আসবে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘প্রিয়া সাহা’, ‘গুজব ছড়িয়ে মানুষ হত্যা’ বিদ্রোহীদের বিষয়ে সিদ্ধান্তসহ নানা বিষয়ে সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রিয়া সাহার মিথ্যা অভিযোগের সঙ্গে দেশি এবং আন্তর্জাতিক যোগসূত্র খুঁজে দেখা হচ্ছে। গুজব ছড়িয়ে মানুষ হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এখন গুজব তৈরির কারখানা। তারা নির্বাচন, আন্দোলন সবকিছুতে পরাজিত হয়ে, জনগণের আস্থা হারিয়ে এখন দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে গুজবের আশ্রয় নিচ্ছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এনজিও কর্মী প্রিয়া সাহার বক্তব্য, গণপিটুনি বিষয়গুলোর মধ্যে কোন যোগসূত্র আছে কি না- এ বিষয়গুলো আমরা গভীরভাবে খতিয়ে দেখছি। তিনি বলেন, কোনো যোগসূত্র থেকে থাকলে তা অবশ্যই সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ মনে করা হবে। তখন যা যা করা দরকার, সব প্রস্তুতি সরকারের আছে।