২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ৮২৪ জন

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮২৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৬৫৪-তে। এদিকে কর্মক্ষেত্র ঢাকায় আক্রান্তরা এ রোগের জীবাণু বহন করে নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে যাওয়ায় এর জীবাণু সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে।

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা আরও বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত ৮২৪ জন গত ২৪ ঘণ্টায় শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগের শনিবার ২৪ ঘণ্টায় ৬৮৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে রোববার পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১১ হাজার ৬৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী। এ সময়ের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮ হাজার ৭২৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু ঢাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেই ভর্তি হয়েছে ৬৮৩ জন ডেঙ্গু রোগী। সবচেয়ে বেশি ১৯৬ জন ভর্তি হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এছাড়া রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে আরও ২০০ জন ডেঙ্গু রোগী গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ২০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে এলেও সরকারি হিসাবে এখনও মৃতের সংখ্যা ৮ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে মিটফোর্ডে ৭২, শিশু হাসপাতালে ২৬, সোহরাওয়ার্দীতে ৩২, হলি ফ্যামিলিতে ৩৭, বারডেমে ১৭, পুলিশ হাসপাতালে ২১, মুগদা মেডিকেলে ৬৭, বিজিবি হাসপাতালে ৬ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ জন ডেঙ্গু রোগী গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে। একই সময়ে রাজধানীর বাইরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৬১১ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্য হাসপাতালে ভর্তি আছে ২৮২ জন।

আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।

ফেনী : রাজধানীসহ দেশজুড়ে মারণঘাতী ডেঙ্গুজ্বরের আতঙ্ক ফেনীতেও ছড়িয়ে পড়েছে। রোববার সকাল পর্যন্ত ফেনীর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল ও ফেনী ডায়বেটিস হাসপাতালে ২৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। তারা বলছেন, ফেনীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি বেশিরভাগ রোগীই ঢাকায় আক্রান্ত হন। ফেনী জেনারেল হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগীর চাপে করিডোর, বারান্দা ও বিছানায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

গত কয়েকদিনে সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৫৮ রোগী। এর মধ্যে ২২ জন এখনও চিকিৎসা নিচ্ছেন, ৬ জনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকিরা চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন। অন্যদিকে ফেনী ডায়াবেটিস হাসপাতালে ৫ রোগী ভর্তি হলে ৪ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জে ৪০ জন ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা চলছে। এরা সবাই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। এর মধ্যে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ২১ জন এবং প্রাইভেট চিকিৎসা চলছে অন্যদের। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া জানিয়েছেন, তার হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৯ জন পুরুষ ও দু’জন মহিলা গতকাল পর্যন্ত ভর্তি আছেন। এরা কেউ স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হননি। সবাই ঢাকা থেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখানে ভর্তি হয়েছেন। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, জেনারেল হাসপাতালসহ সারা জেলায় মোট ৪০ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে। সবাই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন।

বগুড়া : বগুড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। এসব রোগী ঢাকায় আক্রান্ত হওয়ার পর বগুড়ায় ফিরে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এডিস মশার কামড়ে বগুড়ায় কেউ আক্রান্ত হয়নি। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবী। চিকিৎসাধীন রোগীর মধ্যে একজন চিকিৎসক রয়েছেন। তার নাম ডা. আল মামুন। তিনি বগুড়ার পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসক।

বগুড়ার সিভিল সার্জন ডা. গউসুল আজীম জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত বগুড়ায় ৬০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। রোববার নতুন ১৯ রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৫ জন এবং একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ৪ জন। সব মিলিয়ে বগুড়া মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৩৬ জন। এর মধ্যে ৩০ জন পুরুষ ও ৬ জন মহিলা।

পাবনা : পাবনায়ও ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু রোগী। গেল ৪ দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৫ জন পাবনা জেনারেল ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়াও প্রায় ১১ জন ডেঙ্গু রোগী বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। বিষয়টি নিয়ে শহরের মানুষ উদ্বেগ ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, পাবনা শহরের মশা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রঞ্জন কুমার দত্ত জানান, যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা পাবনার বাসিন্দা হলেও তাদের কেস স্টাডি করে দেখা গেছে, তাদের ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে। ঢাকা থেকে ফেরার পরপরই অনেকে জ্বরে আক্রান্ত হন এবং পরীক্ষা করে দেখা গেছে তাদের শরীরে ডেঙ্গু সংক্রমন ঘটেছে। গেল ৪ দিনে হাসপাতালে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। তবে বাইরে থেকে ডেঙ্গু রোগীদের পরীক্ষা করার সুযোগ রয়েছে।

টাঙ্গাইল : শরীরে জ্বর নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ২২ জন রোগী টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত ১১ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সফিকুল ইসলাম সজিব। তবে রোববার বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ৭ জন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। অপর চারজন বিভিন্ন ক্লিনিক অথবা অন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গেছে।

হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্তরা হলেন- গোপালপুর উপজেলার মুকিন্দবাড়ী গ্রামের রাসেল, নাগরপুর উপজেলার ঘুনিপাড়া গ্রামের আশিক, সদর উপজেলার বেলতা গ্রামের তানভির হাসান, বিশ্বাস বেতকা গ্রামের আব্দুস সালাম খান, মির্জাপুর উপজেলার গুল্লি গ্রামের জোবায়ের, দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন গ্রামের শুভ সাহা, বাসাইল উপজেলার বাথুলী সাদী গ্রামের মিজান খান। এরা সবাই ঢাকায় বিভিন্ন কাজ করতে গিয়েছিল। বাড়িতে এসে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পরে।

সিলেট : সিলেট নগরের মেন্দিবাগ এলাকার রুবেল রায় চাকরির ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য ঢাকা গিয়েছিলেন গত সপ্তাহে। সিলেট আসার পর থেকেই জ্বর, বমি ও মাথাব্যথা শুরু হয় তার। চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হন রুবেল। ডেঙ্গু পরীক্ষাও করান। টেস্ট পজিটিভ আসার পর শনিবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।

কেবল রুবলই নন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও অন্তত ৭ জন। ফলে এ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য খোলা হয়েছে আলাদা কর্নার। তবে সেখানে সরকারি খরচে টেস্ট করানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও বেশির ভাগ টেস্ট বাইরে থেকে করাতে হচ্ছে।

বরগুনা : বরগুনায় ১৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাদের ডেঙ্গু আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করেছেন।

ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৬ জন বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তারা হচ্ছেন- বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাওলকর গ্রামের আছিয়া বেগম, গৌরীচন্না ইউনিয়নের দক্ষিণ মনসাতলী গ্রামের নাঈম ও সবুজ, আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের হালিমা বেগম, আমড়াঝুড়ি গ্রামের আবুল কাশেম এবং বরগুনার মনসাতলী গ্রামের ইসরাত জাহান।

বাগেরহাট : বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪ রোগী ভর্তি হয়েছেন। গতকাল দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বাগেরহাট শহরের নাগের বাজার এলাকার নুরুজ্জামানের ছেলে শিপন (২৫), সদর উপজেলার দেপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আল ইমরান (২১), বাদোখালি এলাকার আবু বকরের ছেলে কায়কোবাদ (২৩) এবং সায়েড়া এলাকার শেখ মোস্তাফার ছেলে ইব্রাহিম (২৪) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়। বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. জি কে সামসুজ্জামান বলেন। এদের মধ্যে তিনজন চিকিৎসা শেষে বাড়িতে গেছে। শিপন নামের এক রোগী পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।

নীলফামারী : ডেঙ্গুতে আক্রান্ত দুই যুবক নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নিবিড় পর্যবেক্ষনে মশারীর নীচে সার্বক্ষনিক তদারকীর মধ্যে চলছে তাদের চিকিৎসা। তবে ঢাকায় এডিস মশার কামড়ে অসুস্থ হয়ে তারা নীলফামারী নিজ বাড়িতে আসার পরে হাসপাতালে ভর্তি হয় জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, নীলফামারী সদর উপজেলার রামনগর দোলাপাড়া এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে আব্দুর রহিম (২২) ঢাকায় মুদি দোকান করে। সেখানে সে এডিস মশার দ্বারা আক্রান্ত হয়। ঢাকায় সারা শরীরে ব্যাথা ও জ¦র অনুভব করে। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হয়। নিবিড় পর্যবেক্ষনে চিকিৎসা দেয়ায় সে অনেকটাই সুস্থ্য হয়ে উঠেছে।

অপর রোগী একই উপজেলার চড়াইখোলা পশ্চিম কুচিয়ামোড় এলাকার ভূষণ রায়ের ছেলে পরিতোষ রায়(২৪) চাকুরীর ইন্টারভিউ দিতে ঢাকায় অবস্থান করছিল। সেখানে এডিস মশার দ্বারা আক্রান্ত হয়। শরীরে ব্যাথা ও জ¦র শুরু হলে ওষুধ খেয়েও রোগ নিরাময় হয়নি। এ অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসে। সুস্থ না হওয়ায় গত রোববার হাসপাতালে ভর্তি হয়।

গাজীপুর : গাজীপুরে গত কয়েকদিনে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দুইদিনেই শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২১জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৯জন পুরুষ ও দুইজন মহিলা রয়েছেন।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ দাস জানান, গত ১ জুলাই থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত ৭২জন ডেঙ্গু রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ২১ জন ডেঙ্গু রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এবং ৪৯ জন চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে গেছেন। তাদের মধ্যে দুইজনকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বছরের শুরুতে এ রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও জুলাই মাস থেকে এ রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকে। হাসপাতালে রোগীদের বিনামূল্যে পরীক্ষা ও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। সেখানে রোগীদের মাঝে ফ্রি মশারীও সরবরাহ করা হয়েছে।

সোমবার, ২৯ জুলাই ২০১৯ , ১৪ শ্রাবন ১৪২৫, ২৫ জিলকদ ১৪৪০

সারাদেশে ডেঙ্গু

২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ৮২৪ জন

সংবাদ ডেস্ক

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮২৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৬৫৪-তে। এদিকে কর্মক্ষেত্র ঢাকায় আক্রান্তরা এ রোগের জীবাণু বহন করে নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে যাওয়ায় এর জীবাণু সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে।

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা আরও বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত ৮২৪ জন গত ২৪ ঘণ্টায় শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগের শনিবার ২৪ ঘণ্টায় ৬৮৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে রোববার পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১১ হাজার ৬৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী। এ সময়ের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮ হাজার ৭২৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু ঢাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেই ভর্তি হয়েছে ৬৮৩ জন ডেঙ্গু রোগী। সবচেয়ে বেশি ১৯৬ জন ভর্তি হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এছাড়া রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে আরও ২০০ জন ডেঙ্গু রোগী গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ২০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে এলেও সরকারি হিসাবে এখনও মৃতের সংখ্যা ৮ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে মিটফোর্ডে ৭২, শিশু হাসপাতালে ২৬, সোহরাওয়ার্দীতে ৩২, হলি ফ্যামিলিতে ৩৭, বারডেমে ১৭, পুলিশ হাসপাতালে ২১, মুগদা মেডিকেলে ৬৭, বিজিবি হাসপাতালে ৬ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ জন ডেঙ্গু রোগী গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে। একই সময়ে রাজধানীর বাইরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৬১১ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্য হাসপাতালে ভর্তি আছে ২৮২ জন।

আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।

ফেনী : রাজধানীসহ দেশজুড়ে মারণঘাতী ডেঙ্গুজ্বরের আতঙ্ক ফেনীতেও ছড়িয়ে পড়েছে। রোববার সকাল পর্যন্ত ফেনীর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল ও ফেনী ডায়বেটিস হাসপাতালে ২৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। তারা বলছেন, ফেনীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি বেশিরভাগ রোগীই ঢাকায় আক্রান্ত হন। ফেনী জেনারেল হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগীর চাপে করিডোর, বারান্দা ও বিছানায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

গত কয়েকদিনে সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৫৮ রোগী। এর মধ্যে ২২ জন এখনও চিকিৎসা নিচ্ছেন, ৬ জনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকিরা চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন। অন্যদিকে ফেনী ডায়াবেটিস হাসপাতালে ৫ রোগী ভর্তি হলে ৪ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জে ৪০ জন ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা চলছে। এরা সবাই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। এর মধ্যে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ২১ জন এবং প্রাইভেট চিকিৎসা চলছে অন্যদের। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া জানিয়েছেন, তার হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৯ জন পুরুষ ও দু’জন মহিলা গতকাল পর্যন্ত ভর্তি আছেন। এরা কেউ স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হননি। সবাই ঢাকা থেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখানে ভর্তি হয়েছেন। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, জেনারেল হাসপাতালসহ সারা জেলায় মোট ৪০ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে। সবাই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন।

বগুড়া : বগুড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। এসব রোগী ঢাকায় আক্রান্ত হওয়ার পর বগুড়ায় ফিরে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এডিস মশার কামড়ে বগুড়ায় কেউ আক্রান্ত হয়নি। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবী। চিকিৎসাধীন রোগীর মধ্যে একজন চিকিৎসক রয়েছেন। তার নাম ডা. আল মামুন। তিনি বগুড়ার পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসক।

বগুড়ার সিভিল সার্জন ডা. গউসুল আজীম জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত বগুড়ায় ৬০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। রোববার নতুন ১৯ রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৫ জন এবং একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ৪ জন। সব মিলিয়ে বগুড়া মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৩৬ জন। এর মধ্যে ৩০ জন পুরুষ ও ৬ জন মহিলা।

পাবনা : পাবনায়ও ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু রোগী। গেল ৪ দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৫ জন পাবনা জেনারেল ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়াও প্রায় ১১ জন ডেঙ্গু রোগী বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। বিষয়টি নিয়ে শহরের মানুষ উদ্বেগ ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, পাবনা শহরের মশা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রঞ্জন কুমার দত্ত জানান, যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা পাবনার বাসিন্দা হলেও তাদের কেস স্টাডি করে দেখা গেছে, তাদের ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে। ঢাকা থেকে ফেরার পরপরই অনেকে জ্বরে আক্রান্ত হন এবং পরীক্ষা করে দেখা গেছে তাদের শরীরে ডেঙ্গু সংক্রমন ঘটেছে। গেল ৪ দিনে হাসপাতালে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। তবে বাইরে থেকে ডেঙ্গু রোগীদের পরীক্ষা করার সুযোগ রয়েছে।

টাঙ্গাইল : শরীরে জ্বর নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ২২ জন রোগী টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত ১১ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সফিকুল ইসলাম সজিব। তবে রোববার বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ৭ জন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। অপর চারজন বিভিন্ন ক্লিনিক অথবা অন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গেছে।

হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্তরা হলেন- গোপালপুর উপজেলার মুকিন্দবাড়ী গ্রামের রাসেল, নাগরপুর উপজেলার ঘুনিপাড়া গ্রামের আশিক, সদর উপজেলার বেলতা গ্রামের তানভির হাসান, বিশ্বাস বেতকা গ্রামের আব্দুস সালাম খান, মির্জাপুর উপজেলার গুল্লি গ্রামের জোবায়ের, দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন গ্রামের শুভ সাহা, বাসাইল উপজেলার বাথুলী সাদী গ্রামের মিজান খান। এরা সবাই ঢাকায় বিভিন্ন কাজ করতে গিয়েছিল। বাড়িতে এসে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পরে।

সিলেট : সিলেট নগরের মেন্দিবাগ এলাকার রুবেল রায় চাকরির ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য ঢাকা গিয়েছিলেন গত সপ্তাহে। সিলেট আসার পর থেকেই জ্বর, বমি ও মাথাব্যথা শুরু হয় তার। চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হন রুবেল। ডেঙ্গু পরীক্ষাও করান। টেস্ট পজিটিভ আসার পর শনিবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।

কেবল রুবলই নন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও অন্তত ৭ জন। ফলে এ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য খোলা হয়েছে আলাদা কর্নার। তবে সেখানে সরকারি খরচে টেস্ট করানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও বেশির ভাগ টেস্ট বাইরে থেকে করাতে হচ্ছে।

বরগুনা : বরগুনায় ১৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাদের ডেঙ্গু আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করেছেন।

ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৬ জন বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তারা হচ্ছেন- বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাওলকর গ্রামের আছিয়া বেগম, গৌরীচন্না ইউনিয়নের দক্ষিণ মনসাতলী গ্রামের নাঈম ও সবুজ, আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের হালিমা বেগম, আমড়াঝুড়ি গ্রামের আবুল কাশেম এবং বরগুনার মনসাতলী গ্রামের ইসরাত জাহান।

বাগেরহাট : বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪ রোগী ভর্তি হয়েছেন। গতকাল দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বাগেরহাট শহরের নাগের বাজার এলাকার নুরুজ্জামানের ছেলে শিপন (২৫), সদর উপজেলার দেপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আল ইমরান (২১), বাদোখালি এলাকার আবু বকরের ছেলে কায়কোবাদ (২৩) এবং সায়েড়া এলাকার শেখ মোস্তাফার ছেলে ইব্রাহিম (২৪) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়। বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. জি কে সামসুজ্জামান বলেন। এদের মধ্যে তিনজন চিকিৎসা শেষে বাড়িতে গেছে। শিপন নামের এক রোগী পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।

নীলফামারী : ডেঙ্গুতে আক্রান্ত দুই যুবক নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নিবিড় পর্যবেক্ষনে মশারীর নীচে সার্বক্ষনিক তদারকীর মধ্যে চলছে তাদের চিকিৎসা। তবে ঢাকায় এডিস মশার কামড়ে অসুস্থ হয়ে তারা নীলফামারী নিজ বাড়িতে আসার পরে হাসপাতালে ভর্তি হয় জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, নীলফামারী সদর উপজেলার রামনগর দোলাপাড়া এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে আব্দুর রহিম (২২) ঢাকায় মুদি দোকান করে। সেখানে সে এডিস মশার দ্বারা আক্রান্ত হয়। ঢাকায় সারা শরীরে ব্যাথা ও জ¦র অনুভব করে। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হয়। নিবিড় পর্যবেক্ষনে চিকিৎসা দেয়ায় সে অনেকটাই সুস্থ্য হয়ে উঠেছে।

অপর রোগী একই উপজেলার চড়াইখোলা পশ্চিম কুচিয়ামোড় এলাকার ভূষণ রায়ের ছেলে পরিতোষ রায়(২৪) চাকুরীর ইন্টারভিউ দিতে ঢাকায় অবস্থান করছিল। সেখানে এডিস মশার দ্বারা আক্রান্ত হয়। শরীরে ব্যাথা ও জ¦র শুরু হলে ওষুধ খেয়েও রোগ নিরাময় হয়নি। এ অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসে। সুস্থ না হওয়ায় গত রোববার হাসপাতালে ভর্তি হয়।

গাজীপুর : গাজীপুরে গত কয়েকদিনে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দুইদিনেই শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২১জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৯জন পুরুষ ও দুইজন মহিলা রয়েছেন।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ দাস জানান, গত ১ জুলাই থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত ৭২জন ডেঙ্গু রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ২১ জন ডেঙ্গু রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এবং ৪৯ জন চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে গেছেন। তাদের মধ্যে দুইজনকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বছরের শুরুতে এ রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও জুলাই মাস থেকে এ রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকে। হাসপাতালে রোগীদের বিনামূল্যে পরীক্ষা ও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। সেখানে রোগীদের মাঝে ফ্রি মশারীও সরবরাহ করা হয়েছে।