কার্যকর ভূমিকা পালনের অঙ্গীকার পাঁচ পরাশক্তির

ব্রিটিশ সরকার তেহরানের তেল ট্যাংকার জব্দ করে পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ ইরানের

ইরানের পরমাণু চুক্তি রক্ষায় প্রচেষ্টা জোরদারে একমত হয়েছে বিশ্বের পাঁচ ক্ষমতাধর রাষ্ট্র। গত রোববার অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় এ চুক্তির বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া এবং জার্মানি ঐকমত্যে পৌঁছায়। এদিকে, পরমাণু সমঝোতা রক্ষায় পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ভিয়েনায় গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি। পার্স টুডে।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপ-প্রধান হেলগা শ্মিড। বৈঠক শেষে তিনি সমাপনী ঘোষণা পড়ে শোনান। এতে বলা হয়, পরমাণু কর্মসূচি পরিচালনায় ইরানের প্রতিশ্রুতি এবং দেশটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের যে প্রতিশ্রুতি পাশ্চাত্যের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিল তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঘোষণায় আরও বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় পরমাণু সমঝোতা রক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে। ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ইরানও অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারী অন্য দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন ও রাশিয়া। বৈঠকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে তেহরানের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা-ইনসটেক্স নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ সম্পর্কে শ্মিড জানান, বর্তমানে ইইউ-র সবগুলো দেশের জন্য ইনসটেক্সের সদস্য হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। ভিয়েনা বৈঠক থেকে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর নজরদারি করার জন্য আগের মতো আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএকে একমাত্র বৈধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া, পরমাণু সমঝোতা নিয়ে শিগগিরই সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভিয়েনায় এ বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেন, বৈঠকে গঠনমূলক হলেও এ কথা বলার সুযোগ নেই যে, সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। ব্রিটিশ সরকার জিব্রাল্টার প্রণালিতে ইরানের তেল ট্যাংকার আটক করে পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘন করেছে। বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এতে সব সমস্যার সমাধান না হলেও তেহরানকে অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে বলে জানান আরাকচি। পরমাণু সমঝোতায় দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইরান যতদিন আর্থিক সুবিধা না পাবে ততদিন এ সমঝোতায় দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার নীতিতে অটল থাকার কথা জানায় তেহরান। ২০১৫ সালে ছয় বিশ্ব শক্তিধর দেশের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতায় বলা হয়েছে, কোনও এক পক্ষ সমঝোতা লঙ্ঘন করলে প্রতিপক্ষের আহ্বানে সংশ্লিষ্ট সবগুলো দেশ বৈঠকে বসে উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান করবে। ইরান সম্প্রতি পরমাণু সমঝোতার কিছু ধারার বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার পর ইউরোপের একাধিক দেশ এ বৈঠকে বসার দাবি জানিয়েছিল।

মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০১৯ , ১৫ শ্রাবন ১৪২৫, ২৬ জিলকদ ১৪৪০

ইরানের পরমাণু চুক্তি রক্ষা

কার্যকর ভূমিকা পালনের অঙ্গীকার পাঁচ পরাশক্তির

ব্রিটিশ সরকার তেহরানের তেল ট্যাংকার জব্দ করে পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ ইরানের

সংবাদ ডেস্ক

ইরানের পরমাণু চুক্তি রক্ষায় প্রচেষ্টা জোরদারে একমত হয়েছে বিশ্বের পাঁচ ক্ষমতাধর রাষ্ট্র। গত রোববার অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় এ চুক্তির বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া এবং জার্মানি ঐকমত্যে পৌঁছায়। এদিকে, পরমাণু সমঝোতা রক্ষায় পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ভিয়েনায় গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি। পার্স টুডে।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপ-প্রধান হেলগা শ্মিড। বৈঠক শেষে তিনি সমাপনী ঘোষণা পড়ে শোনান। এতে বলা হয়, পরমাণু কর্মসূচি পরিচালনায় ইরানের প্রতিশ্রুতি এবং দেশটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের যে প্রতিশ্রুতি পাশ্চাত্যের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিল তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঘোষণায় আরও বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় পরমাণু সমঝোতা রক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে। ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ইরানও অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারী অন্য দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন ও রাশিয়া। বৈঠকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে তেহরানের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা-ইনসটেক্স নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ সম্পর্কে শ্মিড জানান, বর্তমানে ইইউ-র সবগুলো দেশের জন্য ইনসটেক্সের সদস্য হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। ভিয়েনা বৈঠক থেকে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর নজরদারি করার জন্য আগের মতো আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএকে একমাত্র বৈধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া, পরমাণু সমঝোতা নিয়ে শিগগিরই সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভিয়েনায় এ বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেন, বৈঠকে গঠনমূলক হলেও এ কথা বলার সুযোগ নেই যে, সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। ব্রিটিশ সরকার জিব্রাল্টার প্রণালিতে ইরানের তেল ট্যাংকার আটক করে পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘন করেছে। বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এতে সব সমস্যার সমাধান না হলেও তেহরানকে অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে বলে জানান আরাকচি। পরমাণু সমঝোতায় দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইরান যতদিন আর্থিক সুবিধা না পাবে ততদিন এ সমঝোতায় দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার নীতিতে অটল থাকার কথা জানায় তেহরান। ২০১৫ সালে ছয় বিশ্ব শক্তিধর দেশের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতায় বলা হয়েছে, কোনও এক পক্ষ সমঝোতা লঙ্ঘন করলে প্রতিপক্ষের আহ্বানে সংশ্লিষ্ট সবগুলো দেশ বৈঠকে বসে উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান করবে। ইরান সম্প্রতি পরমাণু সমঝোতার কিছু ধারার বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার পর ইউরোপের একাধিক দেশ এ বৈঠকে বসার দাবি জানিয়েছিল।