ফিলিপাইনে জরুরি অবস্থা জারি

এশিয়ার কয়েকটি দেশে ডেঙ্গুর বিস্তার

বাংলাদেশের পাশাপাশি এশিয়ার কয়েকটি দেশে ডেঙ্গুর বিস্তার উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । ডেঙ্গুর বিস্তার ঠেকাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে ফিলিপাইন। ইতোমধ্যেই দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ফিলিপাইনজুড়ে শনাক্ত হয়েছে ১ লাখেরও বেশি ডেঙ্গু রোগী। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কায় ২৯ হাজার, মালয়েশিয়ায় চল্লিশ হাজার, সিঙ্গাপুরে আট হাজারের বেশি বেশি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

ফিলিপাইনের মিমারোপা, ওয়েস্টার্ন ভিসায়াস, সেন্ট্রাল ভিসায়াস ও নর্দার্ন মিন্দানাও-সহ চারটি অঞ্চলে মহামারী ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকায় ২ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস, যা ফিলিপাইনের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ। পাশাপাশি আরও ৯টি অঞ্চলের পরিস্থিতিও নজরে রেখেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে। সেসময় গ্রাম থেকে শহরে আসা মানুষদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে নগরায়ণ হয় অতি দ্রুত গতিতে । কিন্তু সেখানে পরিকল্পনার ছাপ ছিল না। ড্রেনেজ তৈরিতে সঠিক পরিকল্পনা না থাকা ভুগাচ্ছে মানুষকে। চলতি বছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফিলিপাইন। এক লাখ ১৫ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ। তাদের সিংহভাগই শিশু। ডেঙ্গু ফিলিপাইনকে আগেও কাঁপিয়েছে। ১৯৫৩ ও ১৯৫৪ সালে প্রথম মহামারী আকারে এ রোগ ছড়ায় সেখানে। ১৯৫৬ সালে মহামারী আকার ধারণ করে। ১৯৫০ এর দিকে থাইল্যান্ডে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পরলেও ১৯৫৮ সালে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তখন অনেক মানুষের প্রাণহানি হয়। চলতি বছর শ্রীলঙ্কায় ২৯ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৮ তে পৌঁছেছে। গত বছর সেখানে ডেঙ্গুতে ৫০ জনের বেশি মানুষ মারা যায় এবং ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়। চীনের সর্বত্র ডেঙ্গু রোগ প্রসার লাভ করেনি। শুধু কয়েকটি প্রদেশে ডেঙ্গুর রোগে দেশের জনগণ আক্রান্ত হয়েছে। তিব্বতের লাওসে ডেঙ্গুর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ‘টাইপ-টু’ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। মালয়েশিয়ায় গত ৪০ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে ডেঙ্গু। আক্রান্ত হয়েছে চল্লিশ হাজারের বেশি। দুই বছরে এই সংখ্যাটি ৮০ হাজার। চলতি বছর সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তকারীর সংখ্যা অতীতের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। প্রায় আট হাজারের মতো মানুষ এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে পাঁচজন। সে দেশে ডেঙ্গু দমনের জন্য সরকার তিনটি আইন পাস করেছে। এ আইনের অধীনে ডেঙ্গু বিস্তারের মতো পরিবেশের কারণ তৈরি করলে নাগরিকদের শাস্তি ভোগ করতে হয়। ডেঙ্গু নির্মূলে ভারত এগিয়ে রয়েছে। কারণ দেশের জনগণের মধ্যে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে প্রতি বছর ১৬ মে তারিখে জাতীয় ডেঙ্গু দিবস পালন করা হয়। এ দিবসের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় তা প্রচার করা হয়।

মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০১৯ , ১৫ শ্রাবন ১৪২৫, ২৬ জিলকদ ১৪৪০

ফিলিপাইনে জরুরি অবস্থা জারি

এশিয়ার কয়েকটি দেশে ডেঙ্গুর বিস্তার

সংবাদ ডেস্ক

বাংলাদেশের পাশাপাশি এশিয়ার কয়েকটি দেশে ডেঙ্গুর বিস্তার উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । ডেঙ্গুর বিস্তার ঠেকাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে ফিলিপাইন। ইতোমধ্যেই দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ফিলিপাইনজুড়ে শনাক্ত হয়েছে ১ লাখেরও বেশি ডেঙ্গু রোগী। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কায় ২৯ হাজার, মালয়েশিয়ায় চল্লিশ হাজার, সিঙ্গাপুরে আট হাজারের বেশি বেশি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

ফিলিপাইনের মিমারোপা, ওয়েস্টার্ন ভিসায়াস, সেন্ট্রাল ভিসায়াস ও নর্দার্ন মিন্দানাও-সহ চারটি অঞ্চলে মহামারী ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকায় ২ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস, যা ফিলিপাইনের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ। পাশাপাশি আরও ৯টি অঞ্চলের পরিস্থিতিও নজরে রেখেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে। সেসময় গ্রাম থেকে শহরে আসা মানুষদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে নগরায়ণ হয় অতি দ্রুত গতিতে । কিন্তু সেখানে পরিকল্পনার ছাপ ছিল না। ড্রেনেজ তৈরিতে সঠিক পরিকল্পনা না থাকা ভুগাচ্ছে মানুষকে। চলতি বছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফিলিপাইন। এক লাখ ১৫ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ। তাদের সিংহভাগই শিশু। ডেঙ্গু ফিলিপাইনকে আগেও কাঁপিয়েছে। ১৯৫৩ ও ১৯৫৪ সালে প্রথম মহামারী আকারে এ রোগ ছড়ায় সেখানে। ১৯৫৬ সালে মহামারী আকার ধারণ করে। ১৯৫০ এর দিকে থাইল্যান্ডে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পরলেও ১৯৫৮ সালে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তখন অনেক মানুষের প্রাণহানি হয়। চলতি বছর শ্রীলঙ্কায় ২৯ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৮ তে পৌঁছেছে। গত বছর সেখানে ডেঙ্গুতে ৫০ জনের বেশি মানুষ মারা যায় এবং ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়। চীনের সর্বত্র ডেঙ্গু রোগ প্রসার লাভ করেনি। শুধু কয়েকটি প্রদেশে ডেঙ্গুর রোগে দেশের জনগণ আক্রান্ত হয়েছে। তিব্বতের লাওসে ডেঙ্গুর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ‘টাইপ-টু’ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। মালয়েশিয়ায় গত ৪০ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে ডেঙ্গু। আক্রান্ত হয়েছে চল্লিশ হাজারের বেশি। দুই বছরে এই সংখ্যাটি ৮০ হাজার। চলতি বছর সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তকারীর সংখ্যা অতীতের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। প্রায় আট হাজারের মতো মানুষ এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে পাঁচজন। সে দেশে ডেঙ্গু দমনের জন্য সরকার তিনটি আইন পাস করেছে। এ আইনের অধীনে ডেঙ্গু বিস্তারের মতো পরিবেশের কারণ তৈরি করলে নাগরিকদের শাস্তি ভোগ করতে হয়। ডেঙ্গু নির্মূলে ভারত এগিয়ে রয়েছে। কারণ দেশের জনগণের মধ্যে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে প্রতি বছর ১৬ মে তারিখে জাতীয় ডেঙ্গু দিবস পালন করা হয়। এ দিবসের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় তা প্রচার করা হয়।