ক্যাপিটাল ওয়ানের ১০ কোটি ৬০ লাখ গ্রাহকের তথ্য চুরি

ক্যাপিটাল ওয়ানের ১০ কোটি মার্কিন ও ৬০ লাখ কানাডীয় গ্রাহকের তথ্য চুরি হয়েছে

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে ১০ কোটি ৬০ লাখ গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি গেছে বলে জানিয়েছে আর্থিক সেবাদানকারী কোম্পানি ক্যাপিটাল ওয়ান। তবে গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ডের অ্যাকাউন্ট নম্বর বেহাত হয়নি বলে দাবি করেছে মার্কিন এ কোম্পানিটি। এদিকে এ হ্যাকিংয়ের সঙ্গে জাড়িত থাকার অভিযোগে গত সোমবার সিয়াটলের এক প্রযুক্তি কোম্পানির সাবেক নারী এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় পুলিশ। ওই হ্যাকার তার চুরি করা কিছু তথ্য প্রোগ্রামিং প্ল্যাটফর্ম গিটহাবে পোস্ট করায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে যেসব কোম্পানির ক্রেডিট কার্ড বেশি চলে তার মধ্যে ক্যাপিটাল ওয়ান একটি। পাশাপাশি তারা নিয়মিত ব্যাংকিং সেবাও দিয়ে থাকে। সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাপিটাল ওয়ান হ্যাকিংয়ের ওই ঘটনা জানতে পাওে ১৯ জুলাই। তবে সন্দেহভাজন ওই হ্যাকারকে পুলিশ গ্রেফতার করার পর গত সোমবার ক্যাপিটাল ওয়ানের পক্ষ থেকে তথ্য চুরির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। গত সোমবার এক বিবৃতিতে ক্যাপিটাল ওয়ানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যাদের তথ্য চুরি হয়েছে, তাদের মধ্যে ১০ কোটি মার্কিন ও ৬০ লাখ কানাডীয় নাগরিক রয়েছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে এক লাখ ৪০ হাজার গ্রাহকের সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর এবং ৮০ হাজার মানুষের অন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বরও হ্যাকারের হাতে গেছে। আর কানাডায় প্রায় দশ লাখ মানুষের সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বরও বেহাত হয়েছে বলে স্বীকার করেছে ক্যাপিটাল ওয়ান। তারা বলছে, কোম্পানির ডিজিটাল অবকাঠামোর একটি নিরাপত্তা ত্রুটি ব্যবহার করেই তথ্য চুরি করেছে হ্যাকার। ক্যাপিটাল ওয়ানের বিবৃতিতে বলা হয়, চুরি হওয়া তথ্য কোন ধরনের জালিয়াতিতে ব্যবহার হয়েছে বলে তারা মনে করছে না। তবে এ ঘটনায় তাদের তদন্ত অব্যাহত থাকবে এবং যাদের তথ্য বেহাত হয়েছে, তাদের অ্যাকাউন্টের লেনদেনের ওপর নজর রাখার পাশাপাশি তথ্যের সুরক্ষায় বিনামূল্যে সেবা দেবে কোম্পানি। এদিকে অপর সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ক্যাপিটাল ওয়ানের ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন এমন ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, জন্ম তারিখসহ আরও কিছু ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকার চুরি করেছে। এ হ্যাকিংয়ের ঘটনায় সিয়াটলের একটি প্রযুক্তি কোম্পানির পেইজ থমসন নামের সাবেক এক নারী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করে সোমবার মার্কিন ফেডারেল আদালতে হাজির করা হয়। ৩৩ বছর বয়সী ওই নারীর বিরুদ্ধে কম্পিউটার জালিয়াতি এবং প্রযুক্তির অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে,। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদন্ড এবং আড়াই লাখ ডলার জরিমানা হতে পারে। সিয়াটলের ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে দায়ের করা মামলার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, পেইজ থমসন তার চুরি করা কিছু তথ্য প্রোগ্রামিং প্ল্যাটফর্ম গিটহাবে পোস্ট করেছিলেন। গিটহাবের আরেক ব্যবহারকারী সেটা দেখে ক্যাপিটাল ওয়ানে খবর দেন। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গিটহাবের ওই পোস্ট ধরে তদন্ত চালিয়ে থমসনকে গ্রেফতার করে। তবে ক্যাপিটাল ওয়ানের গ্রাহকদের তথ্য চুরির পেছনে তার আসল উদ্দেশ্য কি ছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়।

ক্যাপিটাল ওয়ানের চেয়ারম্যান রিচার্ড ফেয়ারব্যাংক এক বিবৃতিতে বলেন, অপরাধী ধরা পড়েছে, কমপক্ষে এই কারণে আমি স্বস্তি পাচ্ছি। যা ঘটেছে সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। এ ঘটনায় যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সেজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী এবং এর সমাধানের বিষয়ে আমি অঙ্গীকারাবদ্ধ।’

বুধবার, ৩১ জুলাই ২০১৯ , ১৬ শ্রাবন ১৪২৫, ২৭ জিলকদ ১৪৪০

ক্যাপিটাল ওয়ানের ১০ কোটি ৬০ লাখ গ্রাহকের তথ্য চুরি

ক্যাপিটাল ওয়ানের ১০ কোটি মার্কিন ও ৬০ লাখ কানাডীয় গ্রাহকের তথ্য চুরি হয়েছে

সংবাদ ডেস্ক

image

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে ১০ কোটি ৬০ লাখ গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি গেছে বলে জানিয়েছে আর্থিক সেবাদানকারী কোম্পানি ক্যাপিটাল ওয়ান। তবে গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ডের অ্যাকাউন্ট নম্বর বেহাত হয়নি বলে দাবি করেছে মার্কিন এ কোম্পানিটি। এদিকে এ হ্যাকিংয়ের সঙ্গে জাড়িত থাকার অভিযোগে গত সোমবার সিয়াটলের এক প্রযুক্তি কোম্পানির সাবেক নারী এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় পুলিশ। ওই হ্যাকার তার চুরি করা কিছু তথ্য প্রোগ্রামিং প্ল্যাটফর্ম গিটহাবে পোস্ট করায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে যেসব কোম্পানির ক্রেডিট কার্ড বেশি চলে তার মধ্যে ক্যাপিটাল ওয়ান একটি। পাশাপাশি তারা নিয়মিত ব্যাংকিং সেবাও দিয়ে থাকে। সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাপিটাল ওয়ান হ্যাকিংয়ের ওই ঘটনা জানতে পাওে ১৯ জুলাই। তবে সন্দেহভাজন ওই হ্যাকারকে পুলিশ গ্রেফতার করার পর গত সোমবার ক্যাপিটাল ওয়ানের পক্ষ থেকে তথ্য চুরির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। গত সোমবার এক বিবৃতিতে ক্যাপিটাল ওয়ানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যাদের তথ্য চুরি হয়েছে, তাদের মধ্যে ১০ কোটি মার্কিন ও ৬০ লাখ কানাডীয় নাগরিক রয়েছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে এক লাখ ৪০ হাজার গ্রাহকের সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর এবং ৮০ হাজার মানুষের অন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বরও হ্যাকারের হাতে গেছে। আর কানাডায় প্রায় দশ লাখ মানুষের সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বরও বেহাত হয়েছে বলে স্বীকার করেছে ক্যাপিটাল ওয়ান। তারা বলছে, কোম্পানির ডিজিটাল অবকাঠামোর একটি নিরাপত্তা ত্রুটি ব্যবহার করেই তথ্য চুরি করেছে হ্যাকার। ক্যাপিটাল ওয়ানের বিবৃতিতে বলা হয়, চুরি হওয়া তথ্য কোন ধরনের জালিয়াতিতে ব্যবহার হয়েছে বলে তারা মনে করছে না। তবে এ ঘটনায় তাদের তদন্ত অব্যাহত থাকবে এবং যাদের তথ্য বেহাত হয়েছে, তাদের অ্যাকাউন্টের লেনদেনের ওপর নজর রাখার পাশাপাশি তথ্যের সুরক্ষায় বিনামূল্যে সেবা দেবে কোম্পানি। এদিকে অপর সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ক্যাপিটাল ওয়ানের ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন এমন ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, জন্ম তারিখসহ আরও কিছু ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকার চুরি করেছে। এ হ্যাকিংয়ের ঘটনায় সিয়াটলের একটি প্রযুক্তি কোম্পানির পেইজ থমসন নামের সাবেক এক নারী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করে সোমবার মার্কিন ফেডারেল আদালতে হাজির করা হয়। ৩৩ বছর বয়সী ওই নারীর বিরুদ্ধে কম্পিউটার জালিয়াতি এবং প্রযুক্তির অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে,। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদন্ড এবং আড়াই লাখ ডলার জরিমানা হতে পারে। সিয়াটলের ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে দায়ের করা মামলার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, পেইজ থমসন তার চুরি করা কিছু তথ্য প্রোগ্রামিং প্ল্যাটফর্ম গিটহাবে পোস্ট করেছিলেন। গিটহাবের আরেক ব্যবহারকারী সেটা দেখে ক্যাপিটাল ওয়ানে খবর দেন। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গিটহাবের ওই পোস্ট ধরে তদন্ত চালিয়ে থমসনকে গ্রেফতার করে। তবে ক্যাপিটাল ওয়ানের গ্রাহকদের তথ্য চুরির পেছনে তার আসল উদ্দেশ্য কি ছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়।

ক্যাপিটাল ওয়ানের চেয়ারম্যান রিচার্ড ফেয়ারব্যাংক এক বিবৃতিতে বলেন, অপরাধী ধরা পড়েছে, কমপক্ষে এই কারণে আমি স্বস্তি পাচ্ছি। যা ঘটেছে সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। এ ঘটনায় যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সেজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী এবং এর সমাধানের বিষয়ে আমি অঙ্গীকারাবদ্ধ।’