ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে হুমকির মুখে মা

১০ মাসেও মামলার অগ্রগতি নেই

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মুড়াকরি গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম (২৬) হত্যা মামলার ১০ মাসেও কোন অগ্রগতি হয়নি। উল্টো আসামিদের হুমকি-ধামকি আর অব্যাহত হামলায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নিহতের মা ও মামলার বাদী মোছা. আছমা বেগম।

বাদীপক্ষের ওপর আসামিপক্ষের হামলার ব্যাপারে লাখাই থানায় নিরাপত্তা ও হামলার প্রতিকার চেয়ে চার দফায় পৃথক চারটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন মামলার বাদী আছমা বেগম। এরপরও পুলিশের কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ করছেন আছমা বেগম।

মামলা সূত্রে জানা যায়, লাখাই উপজেলার মুড়াকরি গ্রামের মৃত লাল মিয়ার নামীয় জমি নিয়ে তার ছেলে আলমগীর মিয়ার সঙ্গে বিরোধ চলছিল একই গ্রামের আশ্বব আলীর পুত্র তৌহিদ মিয়া ও তার ছেলে ইসমাইল গংদের। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে একাধিকবার বাক-বিত-া হয়। পরে স্থানীয় মাতবররা বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হন।

২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর সকালে আলমগীর মিয়ার ভাতিজা আবদুল হাকিমকে রাস্তায় একা পেয়ে তৌহিদসহ কয়েকজন অতর্কিত হামলা চালান। প্রতিপক্ষের লোকজন আবদুুল হাকিমের পেটে টেঁটাবিদ্ধ করে গুরুতর জখম করেন। পরে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর নিহতের মা মোছা. আছমা বেগম বাদী হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে লাখাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আছমা বেগমের অভিযোগ, মামলা দায়েরের পর আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেনি।

এদিকে, চলতি বছরের ১৯ মে মামলার আসামিরা হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। বর্তমানে সব আসামিই জামিনে রয়েছেন।

সূত্র জানায়, আসামিরা প্রথম থকেই বাদী পক্ষকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। এমনকি একাধিকবার বাদীপক্ষের ওপর হামলাও চালিয়েছে আসামিপক্ষের লোকজন। এ ব্যাপারে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লাখাই থানায় পৃথক তিনটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন বাদী আছমা বেগম। এর মধ্যে প্রথম জিডি করেন ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর, দ্বিতীয় জিডি করেন চলতি বছরের ২ মার্চ ও তৃতীয় জিডিটি করেন চলতি বছরের ৫ জুন।

এদিকে, এখনো বাদীপক্ষের আফরোজ, সুমন, রাজন লেমনকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে আসামিপক্ষের লোকজন। এ ব্যপারে নিরাপত্তা চেয়ে লাখাই থানায় গত ২২ জুলাই আরও একটি ডায়েরি করেন নিহতের ছেলে আওয়াল মিয়া।

আছমা বেগম জানান, জিডি করে জীবনের নিরাপত্তা চেয়েও পাচ্ছেন না। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কোন ধরনের কাজ করছে না। এমনকি থানায় গিয়ে অভিযোগ দিতে চাইলে উল্টো পুলিশ তাদেরকে গালিগালাজ করছে।’

তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন লাখাই থানার ওসি মো. এমরান হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাদীপক্ষের লোকজন নিরাপত্তা চেয়ে চারটি জিডি করেছে। পুলিশ জিডিগুলো তদন্ত করে দেখছে। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আরও খবর
যবিপ্রবি ভিসির বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রুল
কামরান টি. রহমান এমপ্লয়ার ফেডারেশনের সভাপতি পুনর্নির্বাচিত
ডেঙ্গু সচেতনতা সৃষ্টি ও সড়কে শিক্ষার্থীদের মৃত্যু রোধে পরিপত্র জারি
বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে উন্নয়নে আগ্রহী ভারত
পরিচ্ছন্নতা অভিযানে সর্বস্তরের মানুষের অংশ নেয়ার আহ্বান কাদেরের
অভিযোগপত্রে সাবেক এমপি ও পুলিশের নাম না থাকায় বিক্ষোভ
ছাত্রের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট
ডেঙ্গু টেস্ট রিপোর্ট দিতে হিমশিমে সোহরাওয়ার্দী
সাড়ে তিন বছর পর কিলার সুবজ গ্রেফতার
গুজববিরোধী ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক র‌্যালি
দলীয় আয় বাড়ছে বিএনপির
ডেঙ্গু : মিনিস্টার মনিটরিং সেল গঠন
আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষ নিহত ২, আহত ৩০
সন্তানের জন্য দুধ কিনতে বলায় স্ত্রীর গায়ে আগুন
বাংলাদেশ এখন উদ্বৃত্ত খাদ্যের দেশ : কৃষিমন্ত্রী
ধর্ষণ মামলার আসামি বন্দুকযুদ্ধে নিহত
মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বামপন্থিরাই বাস্তবায়ন করবে

বুধবার, ৩১ জুলাই ২০১৯ , ১৬ শ্রাবন ১৪২৫, ২৭ জিলকদ ১৪৪০

হবিগঞ্জে

ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে হুমকির মুখে মা

১০ মাসেও মামলার অগ্রগতি নেই

প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মুড়াকরি গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম (২৬) হত্যা মামলার ১০ মাসেও কোন অগ্রগতি হয়নি। উল্টো আসামিদের হুমকি-ধামকি আর অব্যাহত হামলায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নিহতের মা ও মামলার বাদী মোছা. আছমা বেগম।

বাদীপক্ষের ওপর আসামিপক্ষের হামলার ব্যাপারে লাখাই থানায় নিরাপত্তা ও হামলার প্রতিকার চেয়ে চার দফায় পৃথক চারটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন মামলার বাদী আছমা বেগম। এরপরও পুলিশের কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ করছেন আছমা বেগম।

মামলা সূত্রে জানা যায়, লাখাই উপজেলার মুড়াকরি গ্রামের মৃত লাল মিয়ার নামীয় জমি নিয়ে তার ছেলে আলমগীর মিয়ার সঙ্গে বিরোধ চলছিল একই গ্রামের আশ্বব আলীর পুত্র তৌহিদ মিয়া ও তার ছেলে ইসমাইল গংদের। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে একাধিকবার বাক-বিত-া হয়। পরে স্থানীয় মাতবররা বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হন।

২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর সকালে আলমগীর মিয়ার ভাতিজা আবদুল হাকিমকে রাস্তায় একা পেয়ে তৌহিদসহ কয়েকজন অতর্কিত হামলা চালান। প্রতিপক্ষের লোকজন আবদুুল হাকিমের পেটে টেঁটাবিদ্ধ করে গুরুতর জখম করেন। পরে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর নিহতের মা মোছা. আছমা বেগম বাদী হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে লাখাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আছমা বেগমের অভিযোগ, মামলা দায়েরের পর আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেনি।

এদিকে, চলতি বছরের ১৯ মে মামলার আসামিরা হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। বর্তমানে সব আসামিই জামিনে রয়েছেন।

সূত্র জানায়, আসামিরা প্রথম থকেই বাদী পক্ষকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। এমনকি একাধিকবার বাদীপক্ষের ওপর হামলাও চালিয়েছে আসামিপক্ষের লোকজন। এ ব্যাপারে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লাখাই থানায় পৃথক তিনটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন বাদী আছমা বেগম। এর মধ্যে প্রথম জিডি করেন ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর, দ্বিতীয় জিডি করেন চলতি বছরের ২ মার্চ ও তৃতীয় জিডিটি করেন চলতি বছরের ৫ জুন।

এদিকে, এখনো বাদীপক্ষের আফরোজ, সুমন, রাজন লেমনকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে আসামিপক্ষের লোকজন। এ ব্যপারে নিরাপত্তা চেয়ে লাখাই থানায় গত ২২ জুলাই আরও একটি ডায়েরি করেন নিহতের ছেলে আওয়াল মিয়া।

আছমা বেগম জানান, জিডি করে জীবনের নিরাপত্তা চেয়েও পাচ্ছেন না। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কোন ধরনের কাজ করছে না। এমনকি থানায় গিয়ে অভিযোগ দিতে চাইলে উল্টো পুলিশ তাদেরকে গালিগালাজ করছে।’

তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন লাখাই থানার ওসি মো. এমরান হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাদীপক্ষের লোকজন নিরাপত্তা চেয়ে চারটি জিডি করেছে। পুলিশ জিডিগুলো তদন্ত করে দেখছে। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’