গত বুধবার ভোর রাতে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর ও রৌমারী উপজেলার সীমান্তে তাণ্ডব চালিয়েছে বন্যহাতি। এতে ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গভীর রাতে মাইকিং করে হাজারও মানুষ সমাগম হয়ে হাতির দলটিকে তাড়ানো হয়েছে। ফলে সীমান্তের ১০ গ্রামের মানুষ রাত কাটিয়েছে বন্যহাতির আতঙ্কে।
বুধবার রাত ২টা থেকে ভোর রাত ৪টা পর্যন্ত বন্যহাতির দলটি বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থান করছিল বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। এলাকাবাসী জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ১০৭১ ও ১০৭২ পর্যন্ত এলাকাজুড়ে বন্যহাতি তাণ্ডব চালায়। যাদুর চর ইউনিয়নের বাগান বাড়ি এলাকার মরহুম বক্ত জামানের বিধবা স্ত্রী নাছিমা বেওয়া (৪২)এর একমাত্র ঘরটির চারপাশের টিনের বেড়া, খুঁটি ভাঙচুর করে, ঘরের ভেতরের গোলা থেকে প্রায় ২০ মণ ধান খেয়ে ফেলেছে। এছাড়া ঘরের সকল আসবাবপত্র তছনছ, হাড়ি পাতিল ও বক্স ভেঙ্গে চুরমার করেছে। এতে প্রায় ওই অসহায় পরিবারের প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি করেছে বুনো হাতির দলটি। এছাড়া রৌমারী উপজেলার বকবান্ধা, খেওয়ারচর, আলগার চর, লাঠিয়াল ডাঙ্গা, পাহাড়তলী ও বাগান বাড়ি এবং রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারী বাজার পাড়া এলাকার সীমান্তে সরিষা,গম,বীজতলা ও মরিচের ফসলসহ প্রায় ২০ একর ফসলের ক্ষতি করেছে। উক্ত সীমান্তে মানুষ পটকা,ঢাকঢোল,আগুন জালিয়ে বন্য হাতি তাড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। বালিয়ামারী বাজার পাড়া কৃষক মাইদুল ইসলাম, বালিয়ামারী পশ্চিম পাড়ার ছক্কু মিয়া,আলম মিয়া, লাঠিয়াল ডাঙ্গা গ্রামের ক্বারী একাব্বর আলী, আলহাজ সেকান্দার আলী, সাত্তার, আমজাদ হোসেন জানান, ভারতের বলদান গীরি সীমান্তে কাটা তাড়ের বেড়া না থাকায়, আর্ন্তজাতিক মেইন পিলার ১০৭১ ও ১০৭২ এর মধ্যপথে আলগার গ্রামের দক্ষিণ পার্শ্ব দিয়ে ভারতের ৩০-৩৫টি বুনো হাতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। প্রায় ২ কিলোমিটার ভেতরে লোকালয়ে প্রবেশ করে এবং ফসলসহ বাড়িঘর ও স্যালো মেশিন ভাঙচুর করে। গত ৫ দিন পূর্বে উক্ত বাড়ির নিকট থেকে আব্দুস সামাদের ক্ষেতের পাকা ধান খেয়ে খেছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। এছাড়া গত বছর হাতির দলটি মরহুম বক্ত জামানের পার্শ্বের বাড়ির আব্দুস সামাদ এর বাড়ি থেকে একই স্টাইলে ঘরের গোলা থেকে ধান খেয়েছিল হাতির দলটি। কিন্তু এবার তার কোন ক্ষতি করেনি। বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে বিধবা নাসিমা তার শাশুড়ি জহুরা বেওয়া (৭০),জামাতা লিটনসহ ৮ সদস্যের পরিবারটি খোলা ঘরে বসে আহাজারি করছে। ঘটনাস্থলে চর রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ৩ বান্ডেল ঢেউটিন ও নগদ ৯ হাজার টাকা প্রদান করেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রতিবছর বুনো হাতির দলটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে শত শত একর ক্ষেতের ফসল পিষে নষ্ট করে ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে, মানুষকে নিঃস্ব করে। সীমান্তবাসীর প্রানের দাবি স্থায়ী কোন পদক্ষেপ নিয়ে মাননীয় সরকার প্রধান এর বিহিত ব্যবস্থা করবেন। এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করবেন।
শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ , ১৩ পৌষ ১৪২৬, ৩০ রবিউস সানি ১৪৪১
প্রতিনিধি, রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম)
গত বুধবার ভোর রাতে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর ও রৌমারী উপজেলার সীমান্তে তাণ্ডব চালিয়েছে বন্যহাতি। এতে ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গভীর রাতে মাইকিং করে হাজারও মানুষ সমাগম হয়ে হাতির দলটিকে তাড়ানো হয়েছে। ফলে সীমান্তের ১০ গ্রামের মানুষ রাত কাটিয়েছে বন্যহাতির আতঙ্কে।
বুধবার রাত ২টা থেকে ভোর রাত ৪টা পর্যন্ত বন্যহাতির দলটি বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থান করছিল বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। এলাকাবাসী জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ১০৭১ ও ১০৭২ পর্যন্ত এলাকাজুড়ে বন্যহাতি তাণ্ডব চালায়। যাদুর চর ইউনিয়নের বাগান বাড়ি এলাকার মরহুম বক্ত জামানের বিধবা স্ত্রী নাছিমা বেওয়া (৪২)এর একমাত্র ঘরটির চারপাশের টিনের বেড়া, খুঁটি ভাঙচুর করে, ঘরের ভেতরের গোলা থেকে প্রায় ২০ মণ ধান খেয়ে ফেলেছে। এছাড়া ঘরের সকল আসবাবপত্র তছনছ, হাড়ি পাতিল ও বক্স ভেঙ্গে চুরমার করেছে। এতে প্রায় ওই অসহায় পরিবারের প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি করেছে বুনো হাতির দলটি। এছাড়া রৌমারী উপজেলার বকবান্ধা, খেওয়ারচর, আলগার চর, লাঠিয়াল ডাঙ্গা, পাহাড়তলী ও বাগান বাড়ি এবং রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারী বাজার পাড়া এলাকার সীমান্তে সরিষা,গম,বীজতলা ও মরিচের ফসলসহ প্রায় ২০ একর ফসলের ক্ষতি করেছে। উক্ত সীমান্তে মানুষ পটকা,ঢাকঢোল,আগুন জালিয়ে বন্য হাতি তাড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। বালিয়ামারী বাজার পাড়া কৃষক মাইদুল ইসলাম, বালিয়ামারী পশ্চিম পাড়ার ছক্কু মিয়া,আলম মিয়া, লাঠিয়াল ডাঙ্গা গ্রামের ক্বারী একাব্বর আলী, আলহাজ সেকান্দার আলী, সাত্তার, আমজাদ হোসেন জানান, ভারতের বলদান গীরি সীমান্তে কাটা তাড়ের বেড়া না থাকায়, আর্ন্তজাতিক মেইন পিলার ১০৭১ ও ১০৭২ এর মধ্যপথে আলগার গ্রামের দক্ষিণ পার্শ্ব দিয়ে ভারতের ৩০-৩৫টি বুনো হাতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। প্রায় ২ কিলোমিটার ভেতরে লোকালয়ে প্রবেশ করে এবং ফসলসহ বাড়িঘর ও স্যালো মেশিন ভাঙচুর করে। গত ৫ দিন পূর্বে উক্ত বাড়ির নিকট থেকে আব্দুস সামাদের ক্ষেতের পাকা ধান খেয়ে খেছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। এছাড়া গত বছর হাতির দলটি মরহুম বক্ত জামানের পার্শ্বের বাড়ির আব্দুস সামাদ এর বাড়ি থেকে একই স্টাইলে ঘরের গোলা থেকে ধান খেয়েছিল হাতির দলটি। কিন্তু এবার তার কোন ক্ষতি করেনি। বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে বিধবা নাসিমা তার শাশুড়ি জহুরা বেওয়া (৭০),জামাতা লিটনসহ ৮ সদস্যের পরিবারটি খোলা ঘরে বসে আহাজারি করছে। ঘটনাস্থলে চর রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ৩ বান্ডেল ঢেউটিন ও নগদ ৯ হাজার টাকা প্রদান করেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রতিবছর বুনো হাতির দলটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে শত শত একর ক্ষেতের ফসল পিষে নষ্ট করে ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে, মানুষকে নিঃস্ব করে। সীমান্তবাসীর প্রানের দাবি স্থায়ী কোন পদক্ষেপ নিয়ে মাননীয় সরকার প্রধান এর বিহিত ব্যবস্থা করবেন। এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করবেন।