শীত জেঁকে বসেছে খুলনায়। সূর্যের দেখা মিললেও তাপমাত্রার তেমন হেরফের হয়নি। প্রচণ্ড শীতে খুলনায় রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছে শিশুরা। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ২৭০ শয্যা বিশিষ্ট খুলনা শিশু হাসপাতালে এখন আর কোন শয্যা খালি নেই। ওই হাসপাতালের বহির্বিভাগে শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ নিয়ে এখন প্রতিদিন গড়ে ২৫০ জনেরও বেশি শিশু চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে।
রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদেরও। এরইমধ্যে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মেডিসিন বিভাগ থেকে শয্যা সংখ্যা কমিয়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
খুলনা শিশু হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আল-আমিন বলেন, শীতের সময় ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে শিশুরা একটু বেশি আসে। কিন্তু এ বছর হঠাৎ করে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ায় রোগীর চাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। এর মধ্যে কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেশি। তাই ডায়রিয়া ওয়ার্ডটি নতুন করে বাড়ানো হয়েছে, যাতে শিশুরা প্রয়োজনীয় সেবা পায় ও অন্য শিশুরাও নিরাপদে থাকে।
দেড় বছরের মেয়ের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে নিয়ে খুলনা শিশু হাসপাতালে এসেছেন বাগেরহাটের মোল্লাহাট এলাকার আমিরুল ইসলাম। অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকরা অভিভাবকদের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করান। গত ২২ ডিসেম্বর থেকে মেয়েকে নিয়ে ওই হাসপাতালে আছেন তারা। আমিরুল বলেন, কোন ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই খুলনায় এসেছিলাম। পরে স্থানীয় আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে লেপ-কাঁথা নিয়ে চলছি।
খুলনা শিশু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার নূর-এ-আলম সিদ্দিক বলেন, ঠাণ্ডাজনিত ডায়রিয়ার ৯০ শতাংশ চিকিৎসাই বাড়িতে বসে করা যায়। রোটা ভাইরাস-জনিত ওই রোগে সাধারণত কোন ওষুধ ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। তিনি বলেন, ডায়রিয়ার একমাত্র ওষুধ হলো খাওয়ার স্যালাইন। তবে পানিশূন্যতা দেখা দিলে শিরায় স্যালইন পুশ করার প্রয়োজন হতে পারে। তিনি আরও বলেন, প্রস্র্রাব ঠিক থাকলে সাধারণত ধরে নেয়া যায় শিশু সুস্থ আছে। গত মঙ্গলবার নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের শীতে শিশু হাসপাতালের পাশাপাশি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালেও শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক মিঠুন দেবনাথ বলেন, হাসপাতালে যেসব রোগী আসছে তাদের বেশিরভাগের বয়স ছয় মাস থেকে তিন বছর। এদের মধ্যে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাই বেশি বলে জানান তিনি।
খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জনান, গত ১৯ ডিসেম্বর খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটাই ছিল এ বছরের খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ওই তাপমাত্রা চলে টানা তিন দিন। এরপর ২৩ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। গত মঙ্গলবার খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ , ১৩ পৌষ ১৪২৬, ৩০ রবিউস সানি ১৪৪১
শুভ্র শচীন, খুলনা
শীত জেঁকে বসেছে খুলনায়। সূর্যের দেখা মিললেও তাপমাত্রার তেমন হেরফের হয়নি। প্রচণ্ড শীতে খুলনায় রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছে শিশুরা। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ২৭০ শয্যা বিশিষ্ট খুলনা শিশু হাসপাতালে এখন আর কোন শয্যা খালি নেই। ওই হাসপাতালের বহির্বিভাগে শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ নিয়ে এখন প্রতিদিন গড়ে ২৫০ জনেরও বেশি শিশু চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে।
রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদেরও। এরইমধ্যে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মেডিসিন বিভাগ থেকে শয্যা সংখ্যা কমিয়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
খুলনা শিশু হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আল-আমিন বলেন, শীতের সময় ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে শিশুরা একটু বেশি আসে। কিন্তু এ বছর হঠাৎ করে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ায় রোগীর চাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। এর মধ্যে কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেশি। তাই ডায়রিয়া ওয়ার্ডটি নতুন করে বাড়ানো হয়েছে, যাতে শিশুরা প্রয়োজনীয় সেবা পায় ও অন্য শিশুরাও নিরাপদে থাকে।
দেড় বছরের মেয়ের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে নিয়ে খুলনা শিশু হাসপাতালে এসেছেন বাগেরহাটের মোল্লাহাট এলাকার আমিরুল ইসলাম। অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকরা অভিভাবকদের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করান। গত ২২ ডিসেম্বর থেকে মেয়েকে নিয়ে ওই হাসপাতালে আছেন তারা। আমিরুল বলেন, কোন ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই খুলনায় এসেছিলাম। পরে স্থানীয় আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে লেপ-কাঁথা নিয়ে চলছি।
খুলনা শিশু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার নূর-এ-আলম সিদ্দিক বলেন, ঠাণ্ডাজনিত ডায়রিয়ার ৯০ শতাংশ চিকিৎসাই বাড়িতে বসে করা যায়। রোটা ভাইরাস-জনিত ওই রোগে সাধারণত কোন ওষুধ ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। তিনি বলেন, ডায়রিয়ার একমাত্র ওষুধ হলো খাওয়ার স্যালাইন। তবে পানিশূন্যতা দেখা দিলে শিরায় স্যালইন পুশ করার প্রয়োজন হতে পারে। তিনি আরও বলেন, প্রস্র্রাব ঠিক থাকলে সাধারণত ধরে নেয়া যায় শিশু সুস্থ আছে। গত মঙ্গলবার নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের শীতে শিশু হাসপাতালের পাশাপাশি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালেও শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক মিঠুন দেবনাথ বলেন, হাসপাতালে যেসব রোগী আসছে তাদের বেশিরভাগের বয়স ছয় মাস থেকে তিন বছর। এদের মধ্যে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাই বেশি বলে জানান তিনি।
খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জনান, গত ১৯ ডিসেম্বর খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটাই ছিল এ বছরের খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ওই তাপমাত্রা চলে টানা তিন দিন। এরপর ২৩ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। গত মঙ্গলবার খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।