ডিজিটাল বাংলাদেশের গ্রামীণ চিত্র

মির্জাপুরে ১৫ গ্রামের ভরসা খেয়া নৌকা!

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের কোদালিয়া এলাকায় বংশাই নদে নেই কোন সেতু। ফলে খেয়া নৌকাই দু’পারের ১৫ গ্রামের মানুষের প্রধান ভরসা। এলাকাবাসী জানায়, ওই এলাকা দিয়ে মির্জাপুর উপজেলার কোদালিয়া, ছলিমনগর, ভরপাড়া, বান্দাচালা, লতিফপুর, টাকিয়াকদমা, তরফপুর, ছিটমামুদপুর ও লতিফপুর আশেপাশের অন্তত ১৫টি গ্রামের মানুষ চলাচল করে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী সখিপুর উপজেলার লোকজন এই রাস্তা দিয়ে জরুরী প্রয়োজনে চলাচল করেন। লোকজনের পারাপারের জন্য দুইটি নৌকা রয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীরা বর্ষায় ঝুঁকি নিয়ে নৌকাযোগে নদীটি পার হতে হয়। কোদালিয়া গ্রামের আব্দুস সামাদ (৭০) বলেন, আমাগো খুবই দুঃখ। একটা বিরিজ অইলে আমাগো দুই পারের মানুষের মধ্যে একটা মিলন অইতো। বিপদে পড়লে লোকজনরে আরও না অইলের ৬-৭ মাইল ঘুইর্যা হয় চাঁনপুর বিরিজ দিয়্যা নইলে মির্জাপুর বিরিজ দিয়ে মির্জাপুর য্যাইতো অয়। অসুখ রোগীগো কষ্ট আরও বেশি। যাত কইর্যা গাঙ পার অওনের জন্য নাও ও থাকে না। আব্দুল মান্নান নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, নদীর উত্তরপাড় থেকে স্কুল-কলেজের সহস্র্র শিক্ষার্থী দক্ষিণ পাড়ে আসে। এদের প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। অন্তত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীর কথা বিবেচনা করে এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা জরুরি। নৌকার মাঝি যতীন চন্দ্র বলেন, নদী পার হতে জনপ্রতি ২ টাকা, বাইসাইকেল ৫ টাকা ও মোটরসাইকেল ১০ টাকা দিতে হয়। গড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ২০০ মোটারসাইকেলসহ বাইসাইকেল ও রিক্সা মিলিয়ে ৫ শতাধিক যান পার করা হয়। তবে সেতু হলে এখান দিয়ে প্রচুর পরিমাণে যানবাহন চলবে। মানুষের সুবিধা বাড়বে। ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক শাহীন মিয়া জানান, নদীর উত্তর পারের মানুষ যারা মির্জাপুর উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করে থাকেন। তারা কাজ শেষে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ধেরুয়া কিংবা সোহাগপুর এলাকা থেকে বাড়ি যেতে ভাড়ায় মোটরসাইকেল, রিকশা, অটোরিকশা নিয়ে নদের দক্ষিণ পাড়ে নেমে নৌকায় নদী পাড়ি দেন। এতে তাদের খুবই কষ্ট হয়। বিশেষ করে রাতের বেলায় তারা দুর্ভোগে পড়েন। বর্ষায় কিংবা নদীতে পানি বেশি থাকলে নদী পাড়ি দিতে অনেক সময় নৌকা পাননা। ওই এলাকায় একটি সেতু হলে মানুষের কষ্ট কমে যেত। তাদের আয়ও বৃদ্ধি পেত। মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সামছুদ্দীন জানান, কোদালিয়া খেয়াঘাটে ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্য একটি সেতু নির্মাণের জন্য ঢাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদিত হলে দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেতু নির্মাণ করা হবে।

রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ , ১৪ পৌষ ১৪২৬, ১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

ডিজিটাল বাংলাদেশের গ্রামীণ চিত্র

মির্জাপুরে ১৫ গ্রামের ভরসা খেয়া নৌকা!

শামসুল ইসলাম সহিদ, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)

image

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) : সেতু না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পার হচ্ছেন এলাকাবাসী-সংবাদ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের কোদালিয়া এলাকায় বংশাই নদে নেই কোন সেতু। ফলে খেয়া নৌকাই দু’পারের ১৫ গ্রামের মানুষের প্রধান ভরসা। এলাকাবাসী জানায়, ওই এলাকা দিয়ে মির্জাপুর উপজেলার কোদালিয়া, ছলিমনগর, ভরপাড়া, বান্দাচালা, লতিফপুর, টাকিয়াকদমা, তরফপুর, ছিটমামুদপুর ও লতিফপুর আশেপাশের অন্তত ১৫টি গ্রামের মানুষ চলাচল করে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী সখিপুর উপজেলার লোকজন এই রাস্তা দিয়ে জরুরী প্রয়োজনে চলাচল করেন। লোকজনের পারাপারের জন্য দুইটি নৌকা রয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীরা বর্ষায় ঝুঁকি নিয়ে নৌকাযোগে নদীটি পার হতে হয়। কোদালিয়া গ্রামের আব্দুস সামাদ (৭০) বলেন, আমাগো খুবই দুঃখ। একটা বিরিজ অইলে আমাগো দুই পারের মানুষের মধ্যে একটা মিলন অইতো। বিপদে পড়লে লোকজনরে আরও না অইলের ৬-৭ মাইল ঘুইর্যা হয় চাঁনপুর বিরিজ দিয়্যা নইলে মির্জাপুর বিরিজ দিয়ে মির্জাপুর য্যাইতো অয়। অসুখ রোগীগো কষ্ট আরও বেশি। যাত কইর্যা গাঙ পার অওনের জন্য নাও ও থাকে না। আব্দুল মান্নান নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, নদীর উত্তরপাড় থেকে স্কুল-কলেজের সহস্র্র শিক্ষার্থী দক্ষিণ পাড়ে আসে। এদের প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। অন্তত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীর কথা বিবেচনা করে এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা জরুরি। নৌকার মাঝি যতীন চন্দ্র বলেন, নদী পার হতে জনপ্রতি ২ টাকা, বাইসাইকেল ৫ টাকা ও মোটরসাইকেল ১০ টাকা দিতে হয়। গড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ২০০ মোটারসাইকেলসহ বাইসাইকেল ও রিক্সা মিলিয়ে ৫ শতাধিক যান পার করা হয়। তবে সেতু হলে এখান দিয়ে প্রচুর পরিমাণে যানবাহন চলবে। মানুষের সুবিধা বাড়বে। ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক শাহীন মিয়া জানান, নদীর উত্তর পারের মানুষ যারা মির্জাপুর উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করে থাকেন। তারা কাজ শেষে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ধেরুয়া কিংবা সোহাগপুর এলাকা থেকে বাড়ি যেতে ভাড়ায় মোটরসাইকেল, রিকশা, অটোরিকশা নিয়ে নদের দক্ষিণ পাড়ে নেমে নৌকায় নদী পাড়ি দেন। এতে তাদের খুবই কষ্ট হয়। বিশেষ করে রাতের বেলায় তারা দুর্ভোগে পড়েন। বর্ষায় কিংবা নদীতে পানি বেশি থাকলে নদী পাড়ি দিতে অনেক সময় নৌকা পাননা। ওই এলাকায় একটি সেতু হলে মানুষের কষ্ট কমে যেত। তাদের আয়ও বৃদ্ধি পেত। মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সামছুদ্দীন জানান, কোদালিয়া খেয়াঘাটে ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্য একটি সেতু নির্মাণের জন্য ঢাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদিত হলে দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেতু নির্মাণ করা হবে।