ফেনীতে অনুমোদনহীন বাণিজ্য মেলার তোড়জোড় : বিক্ষোভ

ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের ওয়াপদা মাঠ দখল করে মাসব্যাপী শিল্পপণ্য ও বাণিজ্য মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের কোন ধরনের অনুমতি ছাড়াই মাঠে দোকানঘর ও সাজসজ্জার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষ।

এদিকে বরাবরের মতো এবারও মেলা আয়োজন নিয়ে ব্যবসায়ী নেতৃৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, নিম্নমানের পণ্যের এ মেলার কারণে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এদিকে অনুমতি ছাড়া মেলার আয়োজনের সাহস কোথায় পেল, এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।

মেলা আয়োজনে বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও মাঠে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশু-কিশোররা। এতে খেলোয়াড় ও সংগঠকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অপরদিকে একের পর এক মেলা আয়োজনে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির সম্মুখীন। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মাঝেও রয়েছে চরম অসন্তোষ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় পুরো মাঠ ইট বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। মাঠের চারপাশ টিন দিয়ে ঘিরে ৮০টি স্টল বানানো হয়েছে। মেলা উপলক্ষে মাঠের মধ্যে চরকি দোলনা, ট্রেন রাইডসহ নানা বিনোদনের আয়োজন করছে। কয়েকজন শ্রমিক মাঠের মূল প্রবেশপথে গেইট তৈরির কাজ করছে। মাঠের ঠিক মাঝখানে রয়েছে বড় একটি টাওয়ার।

স্থানীয়রা জানান, এই মাঠকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে ওয়াপদা স্পোর্টিং ক্লাব সহ কয়েকটি ক্রীড়া সংগঠনের সদস্যরা নিয়মিত অনুশীলন করে। এছাড়া আশপাশের বাসিন্দা ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজে পড়–য়া ছাত্ররা প্রতিদিন বিকেলে খেলাধুলা করে।

তারা আরো জানান, প্রতিবছর মেলাটি মার্চের শুরুতে একমাসের জন্য চালু হলেও চলে বাংলা নববর্ষ পর্যন্ত। এতে করে একমাসের অনুমতি নিয়ে প্রতিবারই দেড় মাস মেলা চলে। এবার আগেভাগেই মাঠে নেমেছে আয়োজকরা। জানুয়ারি থেকে মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত সাড়ে তিনমাস টার্গেট নিয়ে তারা জেঁকে বসছে।

ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী জানান, ফেনী বাণিজ্য মেলার বিরুদ্ধে আমরা সবসময় সোচ্চার। বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা। এর ওপর যদি আবার মেলা অনুষ্ঠিত হয় তাহলে ফেনীর সাধারণ ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হবে। মেলা বন্ধে আইনশৃঙ্খলা ও জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় প্রতিবাদ জানিয়েছি। ক্রেতারাও না বুঝে মেলা থেকে বেশি দামে মানহীন পণ্য কিনে ঠকছেন।

ফেনী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আয়নুল কবির শামীম জানান, বাণিজ্য মেলার কারণে ব্যবসায়ীররা ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

মেলা মাসব্যাপী আয়োজনের কথা বলে পরবর্তীতে তারা ২-৩ মাস পর্যন্ত করে থাকেন। মেলায় নিম্নমানের পণ্য কিনে ক্রেতারা প্রতারিত হন।

ফেনী বাণিজ্য মেলার মূল উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম পিন্টু জানান, ৫ জানুয়ারি থেকে ফেনী বাণিজ্য মেলা শুরু হবে। জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান বলেন, ফেনী বাণিজ্য মেলা এখনও অনুমোদন দেয়া হয়নি। তবে কর্তৃপক্ষ মেলা আয়োজনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন। পুলিশের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ , ১৪ পৌষ ১৪২৬, ১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

ফেনীতে অনুমোদনহীন বাণিজ্য মেলার তোড়জোড় : বিক্ষোভ

প্রতিনিধি, ফেনী

ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের ওয়াপদা মাঠ দখল করে মাসব্যাপী শিল্পপণ্য ও বাণিজ্য মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের কোন ধরনের অনুমতি ছাড়াই মাঠে দোকানঘর ও সাজসজ্জার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষ।

এদিকে বরাবরের মতো এবারও মেলা আয়োজন নিয়ে ব্যবসায়ী নেতৃৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, নিম্নমানের পণ্যের এ মেলার কারণে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এদিকে অনুমতি ছাড়া মেলার আয়োজনের সাহস কোথায় পেল, এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।

মেলা আয়োজনে বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও মাঠে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশু-কিশোররা। এতে খেলোয়াড় ও সংগঠকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অপরদিকে একের পর এক মেলা আয়োজনে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির সম্মুখীন। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মাঝেও রয়েছে চরম অসন্তোষ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় পুরো মাঠ ইট বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। মাঠের চারপাশ টিন দিয়ে ঘিরে ৮০টি স্টল বানানো হয়েছে। মেলা উপলক্ষে মাঠের মধ্যে চরকি দোলনা, ট্রেন রাইডসহ নানা বিনোদনের আয়োজন করছে। কয়েকজন শ্রমিক মাঠের মূল প্রবেশপথে গেইট তৈরির কাজ করছে। মাঠের ঠিক মাঝখানে রয়েছে বড় একটি টাওয়ার।

স্থানীয়রা জানান, এই মাঠকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে ওয়াপদা স্পোর্টিং ক্লাব সহ কয়েকটি ক্রীড়া সংগঠনের সদস্যরা নিয়মিত অনুশীলন করে। এছাড়া আশপাশের বাসিন্দা ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজে পড়–য়া ছাত্ররা প্রতিদিন বিকেলে খেলাধুলা করে।

তারা আরো জানান, প্রতিবছর মেলাটি মার্চের শুরুতে একমাসের জন্য চালু হলেও চলে বাংলা নববর্ষ পর্যন্ত। এতে করে একমাসের অনুমতি নিয়ে প্রতিবারই দেড় মাস মেলা চলে। এবার আগেভাগেই মাঠে নেমেছে আয়োজকরা। জানুয়ারি থেকে মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত সাড়ে তিনমাস টার্গেট নিয়ে তারা জেঁকে বসছে।

ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী জানান, ফেনী বাণিজ্য মেলার বিরুদ্ধে আমরা সবসময় সোচ্চার। বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা। এর ওপর যদি আবার মেলা অনুষ্ঠিত হয় তাহলে ফেনীর সাধারণ ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হবে। মেলা বন্ধে আইনশৃঙ্খলা ও জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় প্রতিবাদ জানিয়েছি। ক্রেতারাও না বুঝে মেলা থেকে বেশি দামে মানহীন পণ্য কিনে ঠকছেন।

ফেনী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আয়নুল কবির শামীম জানান, বাণিজ্য মেলার কারণে ব্যবসায়ীররা ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

মেলা মাসব্যাপী আয়োজনের কথা বলে পরবর্তীতে তারা ২-৩ মাস পর্যন্ত করে থাকেন। মেলায় নিম্নমানের পণ্য কিনে ক্রেতারা প্রতারিত হন।

ফেনী বাণিজ্য মেলার মূল উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম পিন্টু জানান, ৫ জানুয়ারি থেকে ফেনী বাণিজ্য মেলা শুরু হবে। জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান বলেন, ফেনী বাণিজ্য মেলা এখনও অনুমোদন দেয়া হয়নি। তবে কর্তৃপক্ষ মেলা আয়োজনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন। পুলিশের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।