পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহমান প্রধান খালের ওপর নির্মিত ব্রিজের নিচের স্তুপকৃত ময়লার ভাগাড় এখন সরানো হয়নি। ফলে ব্রিজের দুইপাশ সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। খালটি দীর্ঘ ৩৬ বছরের মধ্যে খনন কাজ না করায় স্রোত হারিয়ে শীর্ন খালে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ খালের মধ্যে ময়লা-আবর্জনা ফেলা এবং অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ দেয়ার কারণে অনেক খালই এখন অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব পরিবেশের ওপর পড়ায় উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক খালবিলীন হয়ে গেছে। অত্র উপজেলার কতিপয় খাল এখনও টিকে থাকলেও সেগুলো নানা কৌশলে দখলের পায়তারা চলছে।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বহমান খালগুলো এক সময়ে ভরা যৌবন থাকলেও এখন আর সেই অবস্থায় নেই। উপজেলার তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদী থেকে উৎপন্ন খালগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এর ফলে খালের ভেতর জোয়ার-ভাটায় পানি আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ধীরে ধীরে খালে স্রোত কমে যাবার কারণে এগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। খালগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন স্থানে দেয়া বাঁধগুলো খুলে দেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে। এছাড়া খালগুলোর দখল মুক্ত করতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উচ্ছেদ অভিযান করা হচ্ছে না। নদী ও খালের সংযোগস্থল এবং উৎস মুখ ভরাট হয়ে যাবার কারণে নৌপথে চরম সঙ্কটাপন্ন অবস্থা দেখা দিয়েছে। খালে পানি না থাকার কারণে কোন নৌযানই চলাচল করতে পারে না। ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য পণ্য বহনকারী নৌযানগুলোকে জোয়ারের পানির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ফলে এলাকার ব্যবসায়ীরা পণ্য সামগ্রী নির্ধারিত সময়ে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করতে না পেরে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে প্রবাহমান খালগুলোর অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের ইকোসিস্টেমে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। পরিবেশের এই বিরুপ প্রভাবে মাছের উৎপাদন কমে গেছে, সেচ কার্য ব্যাহত হওয়াসহ জীব বৈচিত্র বিলীন হচ্ছে।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া খালগুলো এক সময়ে নৌ যোগাযোগের ও সেচ কাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখলেও এখন আর কোন মূল্য নেই। ফসলি জমিতে পলি মাটি বয়ে আনার জন্য খালের অবদান থাকলেও বর্তমানে সেই অবদান চিরদিনের জন্য স্থবির হয়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খালে প্রয়োজন ছাড়াই যত্রতত্র বাঁধ তৈরি এবং খাল দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করায় পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অধিকাংশ খাল তাদের যৌবন হারিয়ে শীর্ণ খালে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে অনেক খাল ভরাট হয়ে যাবার কারণে নৌযানের চলাচল বন্ধ রয়েছে। এক সময়ে নদী পথে দশমিনা উপজেলার সঙ্গে জেলা সদর পটুয়াখালী, বাউফল ও গলাচিপা উপজেলার সঙ্গে নৌপথই ছিল যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। অত্র নৌপথে নৌকা, ট্রলারসহ ছোট-বড় নৌযান চলাচল করায় ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ছিল। নদীপথে পণ্য সামগ্রী পরিবহনে খরচ কম থাকায় এই পথেই ব্যবসায়ীরা পণ্য আনা-নেয়া করত। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে খালগুলো ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়ে ফেলায় এখন আর কেউ নৌপথে মালামাল পরিবহন করতে চায় না। বর্তমানে খালগুলোতে নাব্যতা কমে যাওয়ায় নৌযান চলাচল করতে পারে না।
ফলে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে মালামাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। মানুষের লোভের কারণে দুর্বল স্রোতের খালগুলো দখল, গতিপথের পরিবর্তনের পাশাপাশি নাব্যতা হ্রাসসহ বিভিন্ন কারণে সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলার মানচিত্র থেকে অনেক খালের অস্তিত্ব হারিয়ে যাচ্ছে।
সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ , ১৫ পৌষ ১৪২৬, ২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
প্রতিনিধি, দশমিনা (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহমান প্রধান খালের ওপর নির্মিত ব্রিজের নিচের স্তুপকৃত ময়লার ভাগাড় এখন সরানো হয়নি। ফলে ব্রিজের দুইপাশ সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। খালটি দীর্ঘ ৩৬ বছরের মধ্যে খনন কাজ না করায় স্রোত হারিয়ে শীর্ন খালে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ খালের মধ্যে ময়লা-আবর্জনা ফেলা এবং অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ দেয়ার কারণে অনেক খালই এখন অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব পরিবেশের ওপর পড়ায় উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক খালবিলীন হয়ে গেছে। অত্র উপজেলার কতিপয় খাল এখনও টিকে থাকলেও সেগুলো নানা কৌশলে দখলের পায়তারা চলছে।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বহমান খালগুলো এক সময়ে ভরা যৌবন থাকলেও এখন আর সেই অবস্থায় নেই। উপজেলার তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদী থেকে উৎপন্ন খালগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এর ফলে খালের ভেতর জোয়ার-ভাটায় পানি আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ধীরে ধীরে খালে স্রোত কমে যাবার কারণে এগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। খালগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন স্থানে দেয়া বাঁধগুলো খুলে দেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে। এছাড়া খালগুলোর দখল মুক্ত করতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উচ্ছেদ অভিযান করা হচ্ছে না। নদী ও খালের সংযোগস্থল এবং উৎস মুখ ভরাট হয়ে যাবার কারণে নৌপথে চরম সঙ্কটাপন্ন অবস্থা দেখা দিয়েছে। খালে পানি না থাকার কারণে কোন নৌযানই চলাচল করতে পারে না। ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য পণ্য বহনকারী নৌযানগুলোকে জোয়ারের পানির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ফলে এলাকার ব্যবসায়ীরা পণ্য সামগ্রী নির্ধারিত সময়ে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করতে না পেরে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে প্রবাহমান খালগুলোর অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের ইকোসিস্টেমে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। পরিবেশের এই বিরুপ প্রভাবে মাছের উৎপাদন কমে গেছে, সেচ কার্য ব্যাহত হওয়াসহ জীব বৈচিত্র বিলীন হচ্ছে।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া খালগুলো এক সময়ে নৌ যোগাযোগের ও সেচ কাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখলেও এখন আর কোন মূল্য নেই। ফসলি জমিতে পলি মাটি বয়ে আনার জন্য খালের অবদান থাকলেও বর্তমানে সেই অবদান চিরদিনের জন্য স্থবির হয়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খালে প্রয়োজন ছাড়াই যত্রতত্র বাঁধ তৈরি এবং খাল দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করায় পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অধিকাংশ খাল তাদের যৌবন হারিয়ে শীর্ণ খালে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে অনেক খাল ভরাট হয়ে যাবার কারণে নৌযানের চলাচল বন্ধ রয়েছে। এক সময়ে নদী পথে দশমিনা উপজেলার সঙ্গে জেলা সদর পটুয়াখালী, বাউফল ও গলাচিপা উপজেলার সঙ্গে নৌপথই ছিল যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। অত্র নৌপথে নৌকা, ট্রলারসহ ছোট-বড় নৌযান চলাচল করায় ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ছিল। নদীপথে পণ্য সামগ্রী পরিবহনে খরচ কম থাকায় এই পথেই ব্যবসায়ীরা পণ্য আনা-নেয়া করত। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে খালগুলো ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়ে ফেলায় এখন আর কেউ নৌপথে মালামাল পরিবহন করতে চায় না। বর্তমানে খালগুলোতে নাব্যতা কমে যাওয়ায় নৌযান চলাচল করতে পারে না।
ফলে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে মালামাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। মানুষের লোভের কারণে দুর্বল স্রোতের খালগুলো দখল, গতিপথের পরিবর্তনের পাশাপাশি নাব্যতা হ্রাসসহ বিভিন্ন কারণে সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলার মানচিত্র থেকে অনেক খালের অস্তিত্ব হারিয়ে যাচ্ছে।