পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দ, বকেয়া মজুরি ও বেতন পরিশোধসহ ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনায় চলছে রাষ্ট্রায়াত্ত পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি।
গত রোববার দুপুরের পর থেকে দ্বিতীয় দফায় স্ব স্ব মিলগেটের সামনের সড়কে অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন সোমবার খালিশপুরের দৌলতপুর জুটমিল ও দিঘলিয়ার স্টার জুটমিলের শ্রমিকরা বিআইডিসি রোডের প্লাটিনাম গেটের পূর্বপাশে এবং প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিকরা মিলের পশ্চিমগেটে প্যান্ডেল করে অনশনে যোগ দিয়েছেন।
এছাড়া ক্রিসেন্ট জুটমিল গেট, খালিশপুর জুটমিল গেট, আটরা শিল্পাঞ্চলের আলিম ও ইস্টার্ন জুটমিলের শ্রমিকরাও তাদের মিলগেটে অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন। মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে খালিশপুর বিআইডিসিরোড, আটরা ও রাজঘাট এলাকার খুলনা-যশোর মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছেন শ্রমিকরা । সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, খালিশপুর, ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার ও দৌলতপুর জুটমিলসহ কয়েকটি মিলের প্রধান গেটের সামনের বিআইডিসি সড়কে প্রথমদফা আমরণ অনশনের প্যান্ডেলেই আবার দ্বিতীয় দফায় কর্মসূচি শুরু করেছেন শ্রমিকরা।
আলীম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম লিটু বলেন, রোববার দুপুর থেকে অনশনে বসেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে মৃত্যু হলেও অনশন ভাঙবো না।
শাহানা শারমিন বলেন, ১৩ ডিসেম্বর রাতে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তিনদিনের জন্য আমরণ অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন শ্রমিকরা। রাত ১টার দিকে একে একে খুলনার বিভিন্ন পাটকলের শ্রমিকরা ঘরে ফিরে যান।
ওই রাতে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী। এ সময় তিনি ১৫ ডিসেম্বর শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়নে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা এবং বিকেলে বিজেএমসি সভাকক্ষে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সভার কথা জানান। ওই সভা থেকে ভালো ফলাফল আসতে পারে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী শ্রমিক নেতাদের অনশন তুলে নিয়ে ঘরে ফিরে যেতে বলেন।
এ আশ্বাসের প্রেক্ষিতে প্রথমদফায় ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনশন স্থগিত করেছিলেন শ্রমিকরা। রাতে তারা বাড়ি ফিরলেও অনশনস্থলের প্যান্ডেল সেভাবেই রাখা হয়।
শাহানা শারমিন বলেন, ১৪ ডিসেম্বর থেকে খুলনা অঞ্চলের সকল পাটকলের শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। কিন্তু ১৫ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠক ব্যর্থ হয়।
পরে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চাওয়া হয় শ্রমিক নেতাদের কাছে।
ওইদিন শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেও ভালো কোন ফল হয়নি। ওই বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চান। কিন্তু ২৬ ডিসেম্বরের বৈঠকে মজুরি কমিশনের বিষয়ে কোন সুরাহা না হওয়ায় ২৯ ডিসেম্বর থেকে আবারও আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা। এর আগে গত ২৩ নভেম্বর থেকে ১১ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা। খুলনা অঞ্চলে মোট রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকল রয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় রয়েছে সাতটি ও যশোরে দুটি। খুলনায় থাকা পাটকলগুলো হলো ক্রিসেন্ট জুটমিল, খালিশপুর জুটমিল, দৌলতপুর জুটমিল, প্লাটিনাম জুটমিল, স্টার জুটমিল, আলিম জুটমিল ও ইস্টার্ন জুটমিল। আর যশোরের দুটি জুটমিল হলো কার্পেটিং ও জেজেআই।
মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ , ১৬ পৌষ ১৪২৬, ৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, খুলনা
পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দ, বকেয়া মজুরি ও বেতন পরিশোধসহ ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনায় চলছে রাষ্ট্রায়াত্ত পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি।
গত রোববার দুপুরের পর থেকে দ্বিতীয় দফায় স্ব স্ব মিলগেটের সামনের সড়কে অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন সোমবার খালিশপুরের দৌলতপুর জুটমিল ও দিঘলিয়ার স্টার জুটমিলের শ্রমিকরা বিআইডিসি রোডের প্লাটিনাম গেটের পূর্বপাশে এবং প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিকরা মিলের পশ্চিমগেটে প্যান্ডেল করে অনশনে যোগ দিয়েছেন।
এছাড়া ক্রিসেন্ট জুটমিল গেট, খালিশপুর জুটমিল গেট, আটরা শিল্পাঞ্চলের আলিম ও ইস্টার্ন জুটমিলের শ্রমিকরাও তাদের মিলগেটে অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন। মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে খালিশপুর বিআইডিসিরোড, আটরা ও রাজঘাট এলাকার খুলনা-যশোর মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছেন শ্রমিকরা । সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, খালিশপুর, ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার ও দৌলতপুর জুটমিলসহ কয়েকটি মিলের প্রধান গেটের সামনের বিআইডিসি সড়কে প্রথমদফা আমরণ অনশনের প্যান্ডেলেই আবার দ্বিতীয় দফায় কর্মসূচি শুরু করেছেন শ্রমিকরা।
আলীম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম লিটু বলেন, রোববার দুপুর থেকে অনশনে বসেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে মৃত্যু হলেও অনশন ভাঙবো না।
শাহানা শারমিন বলেন, ১৩ ডিসেম্বর রাতে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তিনদিনের জন্য আমরণ অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন শ্রমিকরা। রাত ১টার দিকে একে একে খুলনার বিভিন্ন পাটকলের শ্রমিকরা ঘরে ফিরে যান।
ওই রাতে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী। এ সময় তিনি ১৫ ডিসেম্বর শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়নে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা এবং বিকেলে বিজেএমসি সভাকক্ষে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সভার কথা জানান। ওই সভা থেকে ভালো ফলাফল আসতে পারে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী শ্রমিক নেতাদের অনশন তুলে নিয়ে ঘরে ফিরে যেতে বলেন।
এ আশ্বাসের প্রেক্ষিতে প্রথমদফায় ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনশন স্থগিত করেছিলেন শ্রমিকরা। রাতে তারা বাড়ি ফিরলেও অনশনস্থলের প্যান্ডেল সেভাবেই রাখা হয়।
শাহানা শারমিন বলেন, ১৪ ডিসেম্বর থেকে খুলনা অঞ্চলের সকল পাটকলের শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। কিন্তু ১৫ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠক ব্যর্থ হয়।
পরে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চাওয়া হয় শ্রমিক নেতাদের কাছে।
ওইদিন শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেও ভালো কোন ফল হয়নি। ওই বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চান। কিন্তু ২৬ ডিসেম্বরের বৈঠকে মজুরি কমিশনের বিষয়ে কোন সুরাহা না হওয়ায় ২৯ ডিসেম্বর থেকে আবারও আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা। এর আগে গত ২৩ নভেম্বর থেকে ১১ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা। খুলনা অঞ্চলে মোট রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকল রয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় রয়েছে সাতটি ও যশোরে দুটি। খুলনায় থাকা পাটকলগুলো হলো ক্রিসেন্ট জুটমিল, খালিশপুর জুটমিল, দৌলতপুর জুটমিল, প্লাটিনাম জুটমিল, স্টার জুটমিল, আলিম জুটমিল ও ইস্টার্ন জুটমিল। আর যশোরের দুটি জুটমিল হলো কার্পেটিং ও জেজেআই।