চৌগাছায় খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শত একর জমির বোরো চাষ বন্ধ

জলাবদ্ধ আট গ্রামের মানুষ

যশোরের চৌগাছা উপজেলার পাশাপোল ইউনিয়নের কালিয়াকুন্ডি গ্রামে রাজারকাটা খাল থেকে বারো মাসের খাল পর্যন্ত পানি আটকিয়ে মাছ চাষ করছে ৩ ব্যক্তি। এমনকি খালের পানি বের হওয়ার পথও তারা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে খাল পাড়ের ৮ গ্রামের পানি বের হতে পারছে না। এতে কয়েকশ’ বিঘা জমিতে এই বছর বোরো আবাদ করতে পারছে না স্থানীয় মানুষ। তারা দ্রুত বাঁধ অপসারণের দাবি করেছেন। জানা গেছে, চৌগাছা উপজেলার কালিয়াকুন্ডি, রানিয়ালী, মালিগাতি, হাউলী, বাড়িয়ালীসহ ৮ গ্রামের পানি বের হয় রাজারকাটা খাল দিয়ে। পরে এই পানি যায় যশোর সদর উপজেলার বুকভরা বাওড়ে। সেখান থেকে খালের মাধ্যমে চলে যায় কপোতাক্ষ নদে। গত ২০১৩ সালে কালিয়াকুন্ডি গ্রামের জুল হোসেন, যশোর সদরের ইসলামপুরের সাদেক হোসেন ও শেখ পাড়ার আল আমিন সেখানে মাছ চাষ করছে। সারা বছর মাছ চাষ করার জন্য তারা কালিয়াকুন্ডির রাজারকাটা খালের মুখে ও বারো মাসের খালের মুখে ব্রিজের নিচে ইট দিয়ে বেঁধে দিয়েছে। এতে খালের পাড়ে আড়াইশ’ বিঘা জমিতে এখন পানি জমে আছে। ফলে ওই জমিতে বোরোসহ অন্যান্য ফসলের আবাদ করতে পারছে না স্থানীয় মানুষ। কালিয়াকুন্ডির সুলাইমান হোসেন জানান, খালের পাড়ে তার জমি আছে। আগে ওই জমিতে তিনি বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসল ফলাতে পারতেন। কিন্তু এখন তারা কোন আবাদ করতে পারছেন না। গ্রামের সাবেক মেম্বার আব্দুল মুজিদ বলেন, তার গ্রামের অনেক মানুষের জমি রয়েছে খালের পাশে। প্রভাবশালী মহল মাছ চাষ করায় তারা এখন ধান চাষ করতে পারছেন না। অথচ তাদের অন্য কোন পেশা নেই। চাষ করেই তাদের সংসার চলে। এখন তাদের অনেক সমস্যা। সংসার চলছে না। স্থানীয় পাশাপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ বলেন, তারা মাছ চাষের জন্য ব্রিজের নিচে বাঁধ দিয়েছে। ফলে এই খাল দিয়ে পানি বের হয়ে যেতে পারছে না। এতে এলাকার মানুষ সমস্যায় পড়েছে। আমার ইউনিয়ন পরিষদে কয়েক বার শালিস বিচার করেছি। কিন্তু যারা মাছ চাষ করছে, তারা কোন কথা শুনছে না। ওই খালের পাশে জমি রয়েছে কালিয়াকুন্ডি গ্রামের আয়ুব হোসেন, আনোয়ার হোসেন, ইসমাঈল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, অঞ্জলী রাণী, সলুয়া গ্রামের এখলাস উদ্দিন, মালিগাতি গ্রামের শংকরের। তাদের দাবী জমিগুলো জবরদখল করে ওই ব্যক্তি মাছ চাষ করছেন। তারা অভিযোগ করেন জমির কথা বলতে গেলে জুল হোসেন তার পোষ্য বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে খালে বাধ দিয়ে মাছ চাষকারী জুল হোসেন বলেন, আমি ১৫৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছি। সবটুকু ব্যক্তি মালিকানা জমি। ব্রিজের নিচে বাঁধ দিয়েছি, তবে কিছু ইট খোলা আছে, সেখান থেকে পানি বের হতে পারে। শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে গেলে চাষীরা সেখানে ধান চাষ করতে পারবে। তাদের কোন সমস্যা হবে না। গ্রামে আমার একটি প্রতিপক্ষ আছে। তারা আমার নিয়ে অপ্রচার চালাচ্ছে।

image

চৌগাছা (যশোর) : কালিয়াকুন্ডি গ্রামের রাজারকাটা খালে এভাবেই বাঁধ দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে পানি -সংবাদ

আরও খবর
২শ’বর্ষী কালীমন্দিরের পুকুর দখলে বালু ফেলে ভরাট জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি
রাজশাহীতে মাদক : ধৃত ২
ছাগলনাইয়ায় রাজাকারের নামে সড়কে তোরণ নির্মাণে বিক্ষোভ
বিভিন্ন স্থানে ইউপি নির্বাচন
বাগেরহাটে গোয়েন্দা পরিচয়ে ছিনতাই : গ্রেফতার ৪
সাপাহারে প্রতিবন্ধী ছেলেটি ফিরে পেল পরিবার
দশমিনায় মুগডালের ব্যাপক আবাদ
ফেনীতে ১ বছরে ১৮ কোটি টাকার মাদক জব্দ
আদালতকে অমান্য করায় দণ্ডিত সাব ইন্সপেক্টর
বোয়ালমারীতে ইউপি চেয়ারম্যানকে জীবননাশের হুমকি
পরিত্যক্ত পলিথিনে তেল বাঁচবে পরিবেশ
নতুন সিনেমায় শাহনূর

বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২০ , ১৮ পৌষ ১৪২৬, ৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

চৌগাছায় খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শত একর জমির বোরো চাষ বন্ধ

জলাবদ্ধ আট গ্রামের মানুষ

প্রতিনিধি, চৌগাছা (যশোর)

image

চৌগাছা (যশোর) : কালিয়াকুন্ডি গ্রামের রাজারকাটা খালে এভাবেই বাঁধ দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে পানি -সংবাদ

যশোরের চৌগাছা উপজেলার পাশাপোল ইউনিয়নের কালিয়াকুন্ডি গ্রামে রাজারকাটা খাল থেকে বারো মাসের খাল পর্যন্ত পানি আটকিয়ে মাছ চাষ করছে ৩ ব্যক্তি। এমনকি খালের পানি বের হওয়ার পথও তারা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে খাল পাড়ের ৮ গ্রামের পানি বের হতে পারছে না। এতে কয়েকশ’ বিঘা জমিতে এই বছর বোরো আবাদ করতে পারছে না স্থানীয় মানুষ। তারা দ্রুত বাঁধ অপসারণের দাবি করেছেন। জানা গেছে, চৌগাছা উপজেলার কালিয়াকুন্ডি, রানিয়ালী, মালিগাতি, হাউলী, বাড়িয়ালীসহ ৮ গ্রামের পানি বের হয় রাজারকাটা খাল দিয়ে। পরে এই পানি যায় যশোর সদর উপজেলার বুকভরা বাওড়ে। সেখান থেকে খালের মাধ্যমে চলে যায় কপোতাক্ষ নদে। গত ২০১৩ সালে কালিয়াকুন্ডি গ্রামের জুল হোসেন, যশোর সদরের ইসলামপুরের সাদেক হোসেন ও শেখ পাড়ার আল আমিন সেখানে মাছ চাষ করছে। সারা বছর মাছ চাষ করার জন্য তারা কালিয়াকুন্ডির রাজারকাটা খালের মুখে ও বারো মাসের খালের মুখে ব্রিজের নিচে ইট দিয়ে বেঁধে দিয়েছে। এতে খালের পাড়ে আড়াইশ’ বিঘা জমিতে এখন পানি জমে আছে। ফলে ওই জমিতে বোরোসহ অন্যান্য ফসলের আবাদ করতে পারছে না স্থানীয় মানুষ। কালিয়াকুন্ডির সুলাইমান হোসেন জানান, খালের পাড়ে তার জমি আছে। আগে ওই জমিতে তিনি বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসল ফলাতে পারতেন। কিন্তু এখন তারা কোন আবাদ করতে পারছেন না। গ্রামের সাবেক মেম্বার আব্দুল মুজিদ বলেন, তার গ্রামের অনেক মানুষের জমি রয়েছে খালের পাশে। প্রভাবশালী মহল মাছ চাষ করায় তারা এখন ধান চাষ করতে পারছেন না। অথচ তাদের অন্য কোন পেশা নেই। চাষ করেই তাদের সংসার চলে। এখন তাদের অনেক সমস্যা। সংসার চলছে না। স্থানীয় পাশাপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ বলেন, তারা মাছ চাষের জন্য ব্রিজের নিচে বাঁধ দিয়েছে। ফলে এই খাল দিয়ে পানি বের হয়ে যেতে পারছে না। এতে এলাকার মানুষ সমস্যায় পড়েছে। আমার ইউনিয়ন পরিষদে কয়েক বার শালিস বিচার করেছি। কিন্তু যারা মাছ চাষ করছে, তারা কোন কথা শুনছে না। ওই খালের পাশে জমি রয়েছে কালিয়াকুন্ডি গ্রামের আয়ুব হোসেন, আনোয়ার হোসেন, ইসমাঈল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, অঞ্জলী রাণী, সলুয়া গ্রামের এখলাস উদ্দিন, মালিগাতি গ্রামের শংকরের। তাদের দাবী জমিগুলো জবরদখল করে ওই ব্যক্তি মাছ চাষ করছেন। তারা অভিযোগ করেন জমির কথা বলতে গেলে জুল হোসেন তার পোষ্য বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে খালে বাধ দিয়ে মাছ চাষকারী জুল হোসেন বলেন, আমি ১৫৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছি। সবটুকু ব্যক্তি মালিকানা জমি। ব্রিজের নিচে বাঁধ দিয়েছি, তবে কিছু ইট খোলা আছে, সেখান থেকে পানি বের হতে পারে। শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে গেলে চাষীরা সেখানে ধান চাষ করতে পারবে। তাদের কোন সমস্যা হবে না। গ্রামে আমার একটি প্রতিপক্ষ আছে। তারা আমার নিয়ে অপ্রচার চালাচ্ছে।