২শ’বর্ষী কালীমন্দিরের পুকুর দখলে বালু ফেলে ভরাট জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি

ভোলা জেলা শহরের প্রায় দুইশ বছরের ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি খ্যাত কালীমন্দিরের মালিকানাধীন পুকুর বালু ফেলে ভরাট করে দখলের অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় হারুন গোলদার পরিবারের বিরুদ্ধে। গত সোমবার এ ঘটনায় প্রতিবাদ সভা শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ। অভিযোগ পেয়ে ভোলা থানা পুলিশ পুকুরবালু ভরাটের কাজ বন্ধ করে দেয়। ভোলা থানার ওসি এনায়েত হোসেন জানান, ঐতিহ্যবাহী কালীমন্দিরের নামে রেকর্ডীয় সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ওই পুকুর। ওই পুকুর শত বছরের অধিককাল পূজাঅর্চনায় কাজে ব্যবহার হচ্ছে। পুকুরটি দখল করতে বালু ভরাট করছিল, অভিযোগ পেয়েই তারা অভিযান শুরু করেন। কাজ বন্ধ করে দিয়ে দখলকারীদের কী প্রমানপত্র রয়েছে তা নিয়ে থানায় আসার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আতাহার মিয়া জানান, বালু দিয়ে মন্দিরের পুকুর দখল করা হচ্ছে এ মর্মে একটি অভিযোগপত্র পেয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রফেসর দুলাল চন্দ্র ঘোষ, সম্পাদক গৌরাঙ্গ চন্দ্র দে, মন্দিরকমিটির সভাপতি বিকাশ মজুমদার ও সম্পাদক ধ্রুব হাওলাদার জানান, দেড়শ বছরের আগ থেকে এ পুকুর দেবতার পূজার কাজে ব্যবহারসহ স্থানীয় মানুষ ব্যবহার করছে। কালীমাতার মন্দিরের নামে পাড়সহ পুকুরের ২৮ শতাংশ জমি রয়েছে। মূল মন্দিরের নামে রয়েছে আরো ১৭ শতাংশ জমি। ছোট আলগী মৌজার এসএ খতিয়ান নং ২২২ ও ২২৩, দাগ নং ৭৯০ ও ৭৯০১ দাগে ও দলিলে এই সব জমির উল্লেখ রয়েছে। প্রথমে পাড় পাইলিং করার নামে পাম্প মেশিন বসিয়ে পুকুরের পানি কিছুটা কমিয়ে রাতের অন্ধকারে বালু ফেলতে শুরু করে হারুন, সিরাজ, মোকাম্মেল নুরুলহুদা গোলদার গংরা। এমন কান্ড দেখে এলাকাবাসীও হতবাক। তবে অভিযুক্তরা ১৯৭২ সালের এক তরফা এক ডিগ্রির মাধ্যমে জমির মালিকানা শর্ত লাভ করেন বলে দাবি করেন। ওই ডিগ্রির আদেশ বাতিল করা হয়েছে এমনটা জানান মন্দির কমিটির নেতারা। এ ছাড়া স্থানীয় নাগরিক কমিটির নেতা ভোলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম হাবিবুর রহমান জানান, তার প্রায় ৮০ বছর জীবনে বুঝে ওঠা সময় থেকে দেখেছেন, এই পুকুর মন্দিরের পুকুর হিসেবে সর্বজন পরিচিত। অগ্নিকান্ডে পানির সুববিধাসহ পুকুরটি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য কোন ভাবেই ভরাট করা মেনে নেয়া যায় না। একই কথা জানান পরিবেশবাদীরাও।

বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২০ , ১৮ পৌষ ১৪২৬, ৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

২শ’বর্ষী কালীমন্দিরের পুকুর দখলে বালু ফেলে ভরাট জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি

প্রতিনিধি, ভোলা

ভোলা জেলা শহরের প্রায় দুইশ বছরের ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি খ্যাত কালীমন্দিরের মালিকানাধীন পুকুর বালু ফেলে ভরাট করে দখলের অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় হারুন গোলদার পরিবারের বিরুদ্ধে। গত সোমবার এ ঘটনায় প্রতিবাদ সভা শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ। অভিযোগ পেয়ে ভোলা থানা পুলিশ পুকুরবালু ভরাটের কাজ বন্ধ করে দেয়। ভোলা থানার ওসি এনায়েত হোসেন জানান, ঐতিহ্যবাহী কালীমন্দিরের নামে রেকর্ডীয় সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ওই পুকুর। ওই পুকুর শত বছরের অধিককাল পূজাঅর্চনায় কাজে ব্যবহার হচ্ছে। পুকুরটি দখল করতে বালু ভরাট করছিল, অভিযোগ পেয়েই তারা অভিযান শুরু করেন। কাজ বন্ধ করে দিয়ে দখলকারীদের কী প্রমানপত্র রয়েছে তা নিয়ে থানায় আসার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আতাহার মিয়া জানান, বালু দিয়ে মন্দিরের পুকুর দখল করা হচ্ছে এ মর্মে একটি অভিযোগপত্র পেয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রফেসর দুলাল চন্দ্র ঘোষ, সম্পাদক গৌরাঙ্গ চন্দ্র দে, মন্দিরকমিটির সভাপতি বিকাশ মজুমদার ও সম্পাদক ধ্রুব হাওলাদার জানান, দেড়শ বছরের আগ থেকে এ পুকুর দেবতার পূজার কাজে ব্যবহারসহ স্থানীয় মানুষ ব্যবহার করছে। কালীমাতার মন্দিরের নামে পাড়সহ পুকুরের ২৮ শতাংশ জমি রয়েছে। মূল মন্দিরের নামে রয়েছে আরো ১৭ শতাংশ জমি। ছোট আলগী মৌজার এসএ খতিয়ান নং ২২২ ও ২২৩, দাগ নং ৭৯০ ও ৭৯০১ দাগে ও দলিলে এই সব জমির উল্লেখ রয়েছে। প্রথমে পাড় পাইলিং করার নামে পাম্প মেশিন বসিয়ে পুকুরের পানি কিছুটা কমিয়ে রাতের অন্ধকারে বালু ফেলতে শুরু করে হারুন, সিরাজ, মোকাম্মেল নুরুলহুদা গোলদার গংরা। এমন কান্ড দেখে এলাকাবাসীও হতবাক। তবে অভিযুক্তরা ১৯৭২ সালের এক তরফা এক ডিগ্রির মাধ্যমে জমির মালিকানা শর্ত লাভ করেন বলে দাবি করেন। ওই ডিগ্রির আদেশ বাতিল করা হয়েছে এমনটা জানান মন্দির কমিটির নেতারা। এ ছাড়া স্থানীয় নাগরিক কমিটির নেতা ভোলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম হাবিবুর রহমান জানান, তার প্রায় ৮০ বছর জীবনে বুঝে ওঠা সময় থেকে দেখেছেন, এই পুকুর মন্দিরের পুকুর হিসেবে সর্বজন পরিচিত। অগ্নিকান্ডে পানির সুববিধাসহ পুকুরটি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য কোন ভাবেই ভরাট করা মেনে নেয়া যায় না। একই কথা জানান পরিবেশবাদীরাও।