সামাজিক অস্থিরতার আরেক রূপ গণপিটুনি

ইলিয়াছ হোসেন পাভেল

সামাজিক অস্থিরতার সবচেয়ে আশঙ্কাজনক ও ভয়াবহতম ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো গণপিটুনি। যদিও এটা অনেক পুরোনো ব্যাধি কিন্তু কিছুদিন আগে এ যেন সংক্রামক হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছিল। গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে গণপিটুনির ঘটনা ঘটানো হতো এবং ঘটানো হয়। গুজব হলো এক ধরনের মিথ্যা প্রচারণা, যার সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন গল্পের মাধ্যমে সমাজে গুজবের সৃষ্টি করা হয়। আর এর মাধ্যমেই ঘটানো হয় গণপিটুনির মতো নির্মমতা।

কিছুদিন আগে ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা লাগবে-এ জন্য ছেলেধরা মাঠে’- এমন এক গুজবের ডালপালা ছড়িয়েছিলো রাজধানীসহ সারা দেশে। কথিত ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেয়া হয়েছিল নিরীহ নারী-পুরুষকে। সমাজে বিরাজমান অস্থিরতার সুযোগে নিছক ঘটনায় বা পূর্বশত্রুতার জেরেও ছেলেধরা প্রচার করে গণপিটুনি দেয়া হচ্ছিল সে সময়। আগস্ট মাস পর্যন্ত ৮ জনকে একই পন্থায় হত্যার ঘটনায় ৩১টি মামলায় শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। এক মুখ থেকে আরেক মুখে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ছিলো বিভ্রান্তিকর তথ্য। কোনোরকম সত্যতা যাচাই-বাছাই ছাড়াই মানুষ হুজুগের পেছনে ছুটেছিল সে সময়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশ-বিদেশ থেকে ছড়ানো হচ্ছিল ভুল তথ্য। মূলত দেশের উন্নয়নমূলক প্রকল্পসমূহ বাধাগ্রস্ত করতে এবং দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করতে ‘গুজব’ ছড়ানো হচ্ছিল, যা গুজব ছড়ানোর পেছনে উল্লেখযোগ্য কারণ।

গণপিটুনিতে নির্মমতার এসব ঘটনায় এমন সাজা হওয়া দরকার, যা সব মানুষকে বার্তা দেবে মানুষ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়, যাতে সব ধরনের কুসংস্কার ও অন্ধকার থেকে মানুষ বের হয়ে আসতে পারে। বার্তা দেবে পশুত্বের বিরুদ্ধে জেগে উঠার।

এসব ঘটনাগুলোকে পুলিশ প্রশাসন যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে সে অনুযায়ী কার্যক্রম নিয়েছে। এ ধরনের প্রতিটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে গণপিটুনিতে হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট যারা তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। গুজব ছড়িয়ে যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলো, দেশের স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে যারা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছিলো, তাদের আইনের আওতায় এনে সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কাজে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক টিমগুলো সক্রিয় রয়েছে। গণপিটুনির ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতে আইনি তৎপরতা ছাড়াও জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং তার বাস্তবায়ন এখনো অব্যাহত রয়েছে।

গণসচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জনগণকে আহ্বান জানানো হয়েছে, কোনোভাবেই আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর কোনো খবরে কান না দিতে এবং কাউকে সন্দেহ হলে পুলিশের সহায়তা নিতে। জনগণকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞের মতে, এ ধরনের গুজব যেন ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে সাধারণ মানুষকে বিস্তারিত তথ্য জানানোই একমাত্র সঠিক পদ্ধতি। জনগণের কাছে তথ্যপ্রবাহ যতটা অবারিত হবে, সাধারণ মানুষকে যতবেশি ধোঁয়াশা থেকে মুক্ত রাখার প্রয়াস নেয়া হবে, গুজব তৈরি হওয়া ও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তত বেশি কমবে।

মনোরোগবিদগণ গণপিটুনির প্রবণতাকে ‘মব সাইকোলজি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তাদের মতে, সমাজে যখন নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে আতঙ্ক বা নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়, পুরো সমাজ তখন এক ধরনের মানসিক অবসাদে ভোগে। আর এ থেকেই মানুষের মধ্যে গণপিটুনির মতো ধরনের সহিংসতা দেখা দেয়। উদাহরণ হিসেবে কোনো বিষয়ে মানুষের মধ্যে যখন এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয় এবং এ ব্যাপারে যখন তারা আশানুরূপ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পায় তখন মানুষের মধ্যে মানসিক অবসাদ তৈরি হয়ে থাকে। তখন সন্দেহের বশবর্তী হয়ে মানুষকে পেটাতে দেখলে মানুষের ভেতরের সেই বেসিক ধারণা থেকে ক্রোধ বা রাগ প্রকাশ করতে আশেপাশের মানুষও সহিংস হয়ে ওঠে। মব সাইকোলজির আওতায় তাদের মধ্যে উচিত অনুচিত বোঝার মতো বিবেক আর কাজ করে না, কেউ সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করে না। তারা জানতেও চায় না কী কারণে মারামারি হচ্ছে। তারা তাৎক্ষণিক উত্তেজিত হয়ে ক্রোধের বহির্প্রকাশ ঘটায়।

সন্দেহজনক ঘটনা অথবা গুজবের ভিত্তিতে কোনো নিরীহ মানুষকে হত্যা করার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার। এ ধরনের ঘটনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ছেলেধরা সন্দেহে সাম্প্রতিক কয়েকটি হতাহতের ঘটনার প্ররিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে সতর্কতা উচ্চারণ করে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। কোনো বিষয়ে কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ৯৯৯-এ কল করে দ্রুত পুলিশের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। সম্প্রতি ফেসবুকে বিভিন্ন ধরণের গুজব ছড়ানো হচ্ছে, এতে বিভ্রান্ত না হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সরকার। দেশ ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের সকল সেবা প্রদানের অঙ্গীকার সবার আগে।

গণপিটুনি ও এর মাধ্যমে হত্যাকা- ঘটানো পৃথিবীজুড়ে নতুন নয়। দেশেও বিভিন্ন সময়ে জনগণ ছিনতাইকারী, চোর বা ডাকাত ধরে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করার মতো অনেক ঘটনা ঘটেছে। এ দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আজও হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই, আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া যাবে না।

ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে এ পর্যন্ত যতগুলো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, পুলিশ প্রতিটি ঘটনাই আমলে নিয়েছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের প্রায় সবখানেই আইনের আওতায় আনা হয়েছে। ছেলেধরা আতঙ্ক রোধে সরকারের বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কারণে গুজব এবং সামাজিক অস্থিরতা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।

(পিআইডি-শিশু ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক যোগাযোগ কার্যক্রম নিবন্ধ)

বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২০ , ১৯ পৌষ ১৪২৬, ৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

সামাজিক অস্থিরতার আরেক রূপ গণপিটুনি

ইলিয়াছ হোসেন পাভেল

সামাজিক অস্থিরতার সবচেয়ে আশঙ্কাজনক ও ভয়াবহতম ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো গণপিটুনি। যদিও এটা অনেক পুরোনো ব্যাধি কিন্তু কিছুদিন আগে এ যেন সংক্রামক হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছিল। গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে গণপিটুনির ঘটনা ঘটানো হতো এবং ঘটানো হয়। গুজব হলো এক ধরনের মিথ্যা প্রচারণা, যার সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন গল্পের মাধ্যমে সমাজে গুজবের সৃষ্টি করা হয়। আর এর মাধ্যমেই ঘটানো হয় গণপিটুনির মতো নির্মমতা।

কিছুদিন আগে ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা লাগবে-এ জন্য ছেলেধরা মাঠে’- এমন এক গুজবের ডালপালা ছড়িয়েছিলো রাজধানীসহ সারা দেশে। কথিত ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেয়া হয়েছিল নিরীহ নারী-পুরুষকে। সমাজে বিরাজমান অস্থিরতার সুযোগে নিছক ঘটনায় বা পূর্বশত্রুতার জেরেও ছেলেধরা প্রচার করে গণপিটুনি দেয়া হচ্ছিল সে সময়। আগস্ট মাস পর্যন্ত ৮ জনকে একই পন্থায় হত্যার ঘটনায় ৩১টি মামলায় শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। এক মুখ থেকে আরেক মুখে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ছিলো বিভ্রান্তিকর তথ্য। কোনোরকম সত্যতা যাচাই-বাছাই ছাড়াই মানুষ হুজুগের পেছনে ছুটেছিল সে সময়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশ-বিদেশ থেকে ছড়ানো হচ্ছিল ভুল তথ্য। মূলত দেশের উন্নয়নমূলক প্রকল্পসমূহ বাধাগ্রস্ত করতে এবং দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করতে ‘গুজব’ ছড়ানো হচ্ছিল, যা গুজব ছড়ানোর পেছনে উল্লেখযোগ্য কারণ।

গণপিটুনিতে নির্মমতার এসব ঘটনায় এমন সাজা হওয়া দরকার, যা সব মানুষকে বার্তা দেবে মানুষ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়, যাতে সব ধরনের কুসংস্কার ও অন্ধকার থেকে মানুষ বের হয়ে আসতে পারে। বার্তা দেবে পশুত্বের বিরুদ্ধে জেগে উঠার।

এসব ঘটনাগুলোকে পুলিশ প্রশাসন যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে সে অনুযায়ী কার্যক্রম নিয়েছে। এ ধরনের প্রতিটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে গণপিটুনিতে হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট যারা তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। গুজব ছড়িয়ে যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলো, দেশের স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে যারা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছিলো, তাদের আইনের আওতায় এনে সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কাজে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক টিমগুলো সক্রিয় রয়েছে। গণপিটুনির ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতে আইনি তৎপরতা ছাড়াও জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং তার বাস্তবায়ন এখনো অব্যাহত রয়েছে।

গণসচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জনগণকে আহ্বান জানানো হয়েছে, কোনোভাবেই আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর কোনো খবরে কান না দিতে এবং কাউকে সন্দেহ হলে পুলিশের সহায়তা নিতে। জনগণকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞের মতে, এ ধরনের গুজব যেন ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে সাধারণ মানুষকে বিস্তারিত তথ্য জানানোই একমাত্র সঠিক পদ্ধতি। জনগণের কাছে তথ্যপ্রবাহ যতটা অবারিত হবে, সাধারণ মানুষকে যতবেশি ধোঁয়াশা থেকে মুক্ত রাখার প্রয়াস নেয়া হবে, গুজব তৈরি হওয়া ও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তত বেশি কমবে।

মনোরোগবিদগণ গণপিটুনির প্রবণতাকে ‘মব সাইকোলজি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তাদের মতে, সমাজে যখন নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে আতঙ্ক বা নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়, পুরো সমাজ তখন এক ধরনের মানসিক অবসাদে ভোগে। আর এ থেকেই মানুষের মধ্যে গণপিটুনির মতো ধরনের সহিংসতা দেখা দেয়। উদাহরণ হিসেবে কোনো বিষয়ে মানুষের মধ্যে যখন এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয় এবং এ ব্যাপারে যখন তারা আশানুরূপ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পায় তখন মানুষের মধ্যে মানসিক অবসাদ তৈরি হয়ে থাকে। তখন সন্দেহের বশবর্তী হয়ে মানুষকে পেটাতে দেখলে মানুষের ভেতরের সেই বেসিক ধারণা থেকে ক্রোধ বা রাগ প্রকাশ করতে আশেপাশের মানুষও সহিংস হয়ে ওঠে। মব সাইকোলজির আওতায় তাদের মধ্যে উচিত অনুচিত বোঝার মতো বিবেক আর কাজ করে না, কেউ সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করে না। তারা জানতেও চায় না কী কারণে মারামারি হচ্ছে। তারা তাৎক্ষণিক উত্তেজিত হয়ে ক্রোধের বহির্প্রকাশ ঘটায়।

সন্দেহজনক ঘটনা অথবা গুজবের ভিত্তিতে কোনো নিরীহ মানুষকে হত্যা করার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার। এ ধরনের ঘটনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ছেলেধরা সন্দেহে সাম্প্রতিক কয়েকটি হতাহতের ঘটনার প্ররিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে সতর্কতা উচ্চারণ করে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। কোনো বিষয়ে কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ৯৯৯-এ কল করে দ্রুত পুলিশের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। সম্প্রতি ফেসবুকে বিভিন্ন ধরণের গুজব ছড়ানো হচ্ছে, এতে বিভ্রান্ত না হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সরকার। দেশ ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের সকল সেবা প্রদানের অঙ্গীকার সবার আগে।

গণপিটুনি ও এর মাধ্যমে হত্যাকা- ঘটানো পৃথিবীজুড়ে নতুন নয়। দেশেও বিভিন্ন সময়ে জনগণ ছিনতাইকারী, চোর বা ডাকাত ধরে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করার মতো অনেক ঘটনা ঘটেছে। এ দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আজও হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই, আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া যাবে না।

ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে এ পর্যন্ত যতগুলো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, পুলিশ প্রতিটি ঘটনাই আমলে নিয়েছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের প্রায় সবখানেই আইনের আওতায় আনা হয়েছে। ছেলেধরা আতঙ্ক রোধে সরকারের বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কারণে গুজব এবং সামাজিক অস্থিরতা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।

(পিআইডি-শিশু ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক যোগাযোগ কার্যক্রম নিবন্ধ)