পাইকগাছায় ভড়েঙ্গার চকের ২ কিমি. সড়ক বেহাল! দুর্ভোগ

খুলনার পাইকগাছার উন্নয়ন বঞ্চিত ও অবহেলিত এলাকার নাম খড়িয়া ভড়েঙ্গার চক। পাইকগাছা উপজেলার লস্কর ইউপির খড়িয়া গ্রামের মিস্ত্রি বাড়ি নামকস্থান হতে উত্তর খড়িয়া শিবসা নদীর ওয়াপদা বাঁধ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার ভড়েঙ্গার চক গ্রাম। গ্রামটির চলাচলের রাস্তাটি আজও কাচা, সরু ও জরাজীর্ণ। কাচা রাস্তাটি চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য। বর্ষা মৌসুমে কেউ ঘর থেকে বাইরে বেরুতে পারে না। সে ক্ষেত্রে বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।

ইতোপূর্বে সকল ইউপি ও জাগীয় নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে প্রার্থীরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচনের পর বেমালুম ভুলে যান অবহেলিত এ গ্রামের রাস্তাটির সংস্কার বা মেরামত কথা। ফলে ভড়েঙ্গার চক গ্রামের রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও কাদা মাটিতে পরিণত হলে চরম দুর্ভোগের স্বীকার হয় শিক্ষার্থীসহ অত্র এ এলাকার জনগণ।

সরেজমিনে তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলার লস্কর ইউপির খড়িয়া গ্রামের মিস্ত্রি বাড়ি নামকস্থান হতে উত্তর খড়িয়ার শিবসা নদীর বাধ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার ভড়েঙ্গার চকগামের রাস্তা কাঁচা, সরু ও জরাজীর্ণ। রাস্তাটির পাশ দিয়ে ভড়েঙ্গার চক খাল প্রবাহিত হওয়ায় রাস্তা ভেঙ্গে অনেকটা খালের সঙ্গে মিশে গেছে। উক্ত রাস্তাটি খালের দিকে এতই ঢালু হয়েছে বর্ষা মৌসুমে পানি জমে কর্দমাক্তে পরিণতসহ খালের দিকে ধাবিত হয়। গ্রামে মিলনবীথি নামক একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। গ্রাম হতে শত শত ছেলে মেয়ে বিদ্যালয় দুটিতে যাতায়াত করে। কিন্তু ভড়েঙ্গার চকগামটির রাস্তার বেহাল দশার কারণে কোন যানবাহন সহজে প্রবেশ করতে পারে না। বিশেষ করে প্রাইমারি বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় দুটি বর্ষা মৌসুমে প্রায় শিক্ষার্থী শূন্য থাকে। রাস্তা এতই খারাপ ও সরু যে, এ রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থীরা দূরে থাক সাধারণের চলাচলও অযোগ্য। আবার বর্ষা মৌসুমে উক্তগামের অল্পকিছু শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে গেলেও বই খাতা ভিজে কাদা মাটি মেখে আসা যাওয়া করতে হয়। এছাড়া উক্ত এলাকায় রয়েছে চিংড়ি চাষের একাধিক মৎস্য লিজ ঘের। ভাঙ্গাচুরা রাস্তার কারণে বাগদা, গলদা ও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সরবরাহের জন্য কোন যানবাহন ভড়েঙ্গার চকগামে প্রবেশ করতে না পারায় বাগে অথবা মাথায় করে মাছ বহন করতে হয় এলাকার জনগণের। যাতে এলাকার লোকজন অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। কিছু কিছু মোটরসাইকেল বর্ষা মৌসুম ছাড়া অন্য ঋতুতে মিস্ত্রি বাড়ির সামনে দিয়েগামে প্রবেশ করতে না পেরে উত্তর খড়িয়া ঘুরে ওয়াপদা রাস্তা দিয়ে ঢুকতে হয় এইগ্রামে। যা প্রতিনিয়ত তাদেরও দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। প্রতি ইউপি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সকল প্রার্থীরা রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বারংবার প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে রাস্তাটির কথা আর করোর খেয়াল থাকে না। জনৈক দুলাল চন্দ্র মণ্ডল (৭৫) বলেন, আমাদের এগামের রাস্তাটি সংস্কারসহ এলাকার কোন উন্নয়নে কেউ খেয়াল না করলেও আমরা আশা করছি বর্তমান সাংসদ আক্তারুজ্জামান বাবু তারুণ্যের অহঙ্কার হিসেবে কোন ভুল করবেন না। তিনি আপন পর বিবেচনা করে আমাদের দিকে তাকাবেন এবং উন্নয়ন বঞ্চিত রাস্তাটি সংস্কারের ব্যবস্থা করবেন।

কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল (৬০) বলেন, রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে আমাদের ছেলে-মেয়েরা বর্ষা মৌসুমে স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশে কোথাও এমন অবহেলিত এলাকা আছে বলে আমি মনে করি না। এলাকার শতশত লোকজন রাস্তাটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২০ , ২০ পৌষ ১৪২৬, ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

পাইকগাছায় ভড়েঙ্গার চকের ২ কিমি. সড়ক বেহাল! দুর্ভোগ

বাবুল আক্তার, প্রতিনিধি, পাইকগাছা (খুলনা)

image

পাইকগাছা (খুলনা): ভড়েঙ্গার চক গ্রামের কাঁচা রাস্তা -সংবাদ

খুলনার পাইকগাছার উন্নয়ন বঞ্চিত ও অবহেলিত এলাকার নাম খড়িয়া ভড়েঙ্গার চক। পাইকগাছা উপজেলার লস্কর ইউপির খড়িয়া গ্রামের মিস্ত্রি বাড়ি নামকস্থান হতে উত্তর খড়িয়া শিবসা নদীর ওয়াপদা বাঁধ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার ভড়েঙ্গার চক গ্রাম। গ্রামটির চলাচলের রাস্তাটি আজও কাচা, সরু ও জরাজীর্ণ। কাচা রাস্তাটি চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য। বর্ষা মৌসুমে কেউ ঘর থেকে বাইরে বেরুতে পারে না। সে ক্ষেত্রে বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।

ইতোপূর্বে সকল ইউপি ও জাগীয় নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে প্রার্থীরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচনের পর বেমালুম ভুলে যান অবহেলিত এ গ্রামের রাস্তাটির সংস্কার বা মেরামত কথা। ফলে ভড়েঙ্গার চক গ্রামের রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও কাদা মাটিতে পরিণত হলে চরম দুর্ভোগের স্বীকার হয় শিক্ষার্থীসহ অত্র এ এলাকার জনগণ।

সরেজমিনে তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলার লস্কর ইউপির খড়িয়া গ্রামের মিস্ত্রি বাড়ি নামকস্থান হতে উত্তর খড়িয়ার শিবসা নদীর বাধ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার ভড়েঙ্গার চকগামের রাস্তা কাঁচা, সরু ও জরাজীর্ণ। রাস্তাটির পাশ দিয়ে ভড়েঙ্গার চক খাল প্রবাহিত হওয়ায় রাস্তা ভেঙ্গে অনেকটা খালের সঙ্গে মিশে গেছে। উক্ত রাস্তাটি খালের দিকে এতই ঢালু হয়েছে বর্ষা মৌসুমে পানি জমে কর্দমাক্তে পরিণতসহ খালের দিকে ধাবিত হয়। গ্রামে মিলনবীথি নামক একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। গ্রাম হতে শত শত ছেলে মেয়ে বিদ্যালয় দুটিতে যাতায়াত করে। কিন্তু ভড়েঙ্গার চকগামটির রাস্তার বেহাল দশার কারণে কোন যানবাহন সহজে প্রবেশ করতে পারে না। বিশেষ করে প্রাইমারি বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় দুটি বর্ষা মৌসুমে প্রায় শিক্ষার্থী শূন্য থাকে। রাস্তা এতই খারাপ ও সরু যে, এ রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থীরা দূরে থাক সাধারণের চলাচলও অযোগ্য। আবার বর্ষা মৌসুমে উক্তগামের অল্পকিছু শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে গেলেও বই খাতা ভিজে কাদা মাটি মেখে আসা যাওয়া করতে হয়। এছাড়া উক্ত এলাকায় রয়েছে চিংড়ি চাষের একাধিক মৎস্য লিজ ঘের। ভাঙ্গাচুরা রাস্তার কারণে বাগদা, গলদা ও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সরবরাহের জন্য কোন যানবাহন ভড়েঙ্গার চকগামে প্রবেশ করতে না পারায় বাগে অথবা মাথায় করে মাছ বহন করতে হয় এলাকার জনগণের। যাতে এলাকার লোকজন অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। কিছু কিছু মোটরসাইকেল বর্ষা মৌসুম ছাড়া অন্য ঋতুতে মিস্ত্রি বাড়ির সামনে দিয়েগামে প্রবেশ করতে না পেরে উত্তর খড়িয়া ঘুরে ওয়াপদা রাস্তা দিয়ে ঢুকতে হয় এইগ্রামে। যা প্রতিনিয়ত তাদেরও দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। প্রতি ইউপি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সকল প্রার্থীরা রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বারংবার প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে রাস্তাটির কথা আর করোর খেয়াল থাকে না। জনৈক দুলাল চন্দ্র মণ্ডল (৭৫) বলেন, আমাদের এগামের রাস্তাটি সংস্কারসহ এলাকার কোন উন্নয়নে কেউ খেয়াল না করলেও আমরা আশা করছি বর্তমান সাংসদ আক্তারুজ্জামান বাবু তারুণ্যের অহঙ্কার হিসেবে কোন ভুল করবেন না। তিনি আপন পর বিবেচনা করে আমাদের দিকে তাকাবেন এবং উন্নয়ন বঞ্চিত রাস্তাটি সংস্কারের ব্যবস্থা করবেন।

কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল (৬০) বলেন, রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে আমাদের ছেলে-মেয়েরা বর্ষা মৌসুমে স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশে কোথাও এমন অবহেলিত এলাকা আছে বলে আমি মনে করি না। এলাকার শতশত লোকজন রাস্তাটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।