এক গাছে ৬২ কমলা দাম ১৪ হাজার

বগুড়া শহরের সাতমাথায় কমলাসহ একটি কমলার গাছের মূল্য হাকা হয়েছে ১৪ হাজার টাকা। শনিবার শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথা এলাকায় এক গাছের চারা বিক্রেতা ১টি কমলা গাছের চারা বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। গাছে টসটসে পাকা কমলা দেখে উৎসুক জনতার ভিড় জমে যায়। ছোট্ট একটি গাছে থরে থরে কমলা। পাতার চেয়ে কমলাই যেন বেশি দৃশ্যমান। গাছ জুড়ে ঝুলছে মনলোভা দারুণ কমলা। এমন একটি কমলা গাছ বিক্রি করতে এসে হৈচৈ ফেলে দেন বিক্রেতা। উৎসুক শত শত মানুষ এক নজর কমলাসহ গাছটি দেখতে ভিড় জমান। ছোট্ট এই গাছে রয়েছে ৬২টি কমলা। যা অনেককে বিষ্মিত করে। বাড়ির ছাদে শখের বসে ফলের গাছ লাগিয়ে এখন এই চারা বিক্রেতা বাণিজ্যিকভাবে ছাদে কমলার ব্যবসায় উদ্যোগী হয়েছেন। আর একটি কমলা গাছ নিয়ে লোকজনের এত উৎসাহ ও সাড়া দেখে তার আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ।

দেশি বিদেশি নানা ধরনের ফল চাষে দেশে সাফল্যর খবর অনেকেরই জানা। দেশের উত্তরের জেলায় কমলা চাষ নতুন কিছু নয়। কমলা চাষ করে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে সফল। দেশীয় কমলার চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। তবে বগুড়া সদরের মুনছুর আলীর একটি ছোট্ট কমলা গাছ সাড়া ফেলে দেয়। বাড়ির ছাদে ড্রামে লাগানো চারা থেকে গাছ হয়ে ওঠা কমলা গাছে ঝুলছে একটি দু’টি নয় ৬২টি টসটসে রসালো দৃষ্টিনন্দন কমলা। যা সবাইকে উৎসুক করে তোলে। রিক্সা ভ্যানের ওপর প্লাস্টিকের ড্রাম ভর্তি মাটিতে লাগানো এই কমলা গাছটি বিক্রি করতে এনেছিলেন বগুড়া সদর উপজেলার গোকুল ইউনিয়নের ছোট সরলপুর উত্তরপুর গ্রামের মো. মুনছুর আলী। সকালে রিক্সা ভ্যানটি শহরের সাতমাথা এলাকায় বিক্রির জন্য আনার পর তাকে ঘিরে ধরেন লোকজন দুপুর পর্যন্ত চলে দরদাম। ৭-৮ হাজার পর্যন্ত এর দাম উঠলেও বিক্রেতার কথা ১২-১৪ হাজারের কম তিনি শখের কমলা গাছটি বিক্রি করবেন না। মুনছুর আলী চারা বা নার্সারি ব্যবসায়ী ছিলেন না। সিমেন্টের তৈরি ছোট আকারের খুঁটির তৈরির ব্যবসা ছিল। কয়েক বছর আগে সে ব্যবসায় ১০ লাখ টাকা লোকসান হওয়া পর অবস্থা নাজুক হয়ে দাঁড়ায়। শুরু করেন ফলের চারা বিক্রির ব্যবসায়। তার এক প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম তাকে ফলের চারা কেনা বেচার আগ্রহী করেন। শফিকুলের নিজের জায়গা না থাকলে এক বিঘা জমি বছরের ২০ হাজার টাকা ভাড়া নিয়ে ছোট আকারে নার্সারি করেছেন। এছাড়া গোকুল এলাকার বড় বড় নার্সারি থেকে ফলের চারা কিনে ভ্যানে করে বিক্রি করতেন। মুনছুর আলী যুক্ত হওয়ার পর ফলের চারা কিনে দু’জন উত্তরের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও সহ বিভিন্ন জেলায় তা বিক্রির ব্যবসা করে আসছেন। এর মাঝেই মুনছুর আলী নিজের দ্বিতল বাড়ির ছাদে ফলের গাছের বাগান তৈরি শুরু করেন। শখের বসে তিনি ছাদে ফলের বাগান তৈরি করতে থাকেন। ১৭শ’ স্কোয়ার ফিটের ছাদে প্লাস্টিকের বালতি ও ড্রামে বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ লাগান। লেবু, বার মাসের আম, পেয়ারা, বেদেনা, বড়ই মাল্টা ও কমলাসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছের ছোট্ট বাগান তৈরি করেন। এরই একটি কমলা গাছ তিনি ব্যবসায়ীক অংশীদার শফিকুলের ভ্যানে বিক্রি করতে শহরে নিয়ে আসেন। এর আগে এমনভাবে ফলের গাছ তিনি কখনো বিক্রি করেননি। তবে ক্রেতাদের আগ্রহ দেখে তিনি অভিভূত। ছাতকি জাতের কমলার ছোট্ট গাছটিতে এত বেশিসংখ্যক কমলার ফলন দেখে লোকজনের আগ্রহ বেড়ে যায়। একটি গাছ কিনতে শত শত লোকজন ভিড় জমান। ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত ৬২টি কমলাসহ কমলা গাছের দাম উঠলেও বিক্রেতা মুনছুর আলী তা দুপুর পর্যন্ত বিক্রি করেনি। তার আশা এটি ১০ থেকে ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। কাক্সিক্ষত দামে বিক্রির জন্য ভ্যানে কমলার গাছটি নিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যান। আর সবখানেই গাছটি নিয়ে লোকজনের ভিড় পড়ে।

সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২০ , ২৩ পৌষ ১৪২৬, ৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

এক গাছে ৬২ কমলা দাম ১৪ হাজার

প্রতিনিধি, বগুড়া

image

বগুড়া শহরের সাতমাথায় কমলাসহ একটি কমলার গাছের মূল্য হাকা হয়েছে ১৪ হাজার টাকা। শনিবার শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথা এলাকায় এক গাছের চারা বিক্রেতা ১টি কমলা গাছের চারা বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। গাছে টসটসে পাকা কমলা দেখে উৎসুক জনতার ভিড় জমে যায়। ছোট্ট একটি গাছে থরে থরে কমলা। পাতার চেয়ে কমলাই যেন বেশি দৃশ্যমান। গাছ জুড়ে ঝুলছে মনলোভা দারুণ কমলা। এমন একটি কমলা গাছ বিক্রি করতে এসে হৈচৈ ফেলে দেন বিক্রেতা। উৎসুক শত শত মানুষ এক নজর কমলাসহ গাছটি দেখতে ভিড় জমান। ছোট্ট এই গাছে রয়েছে ৬২টি কমলা। যা অনেককে বিষ্মিত করে। বাড়ির ছাদে শখের বসে ফলের গাছ লাগিয়ে এখন এই চারা বিক্রেতা বাণিজ্যিকভাবে ছাদে কমলার ব্যবসায় উদ্যোগী হয়েছেন। আর একটি কমলা গাছ নিয়ে লোকজনের এত উৎসাহ ও সাড়া দেখে তার আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ।

দেশি বিদেশি নানা ধরনের ফল চাষে দেশে সাফল্যর খবর অনেকেরই জানা। দেশের উত্তরের জেলায় কমলা চাষ নতুন কিছু নয়। কমলা চাষ করে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে সফল। দেশীয় কমলার চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। তবে বগুড়া সদরের মুনছুর আলীর একটি ছোট্ট কমলা গাছ সাড়া ফেলে দেয়। বাড়ির ছাদে ড্রামে লাগানো চারা থেকে গাছ হয়ে ওঠা কমলা গাছে ঝুলছে একটি দু’টি নয় ৬২টি টসটসে রসালো দৃষ্টিনন্দন কমলা। যা সবাইকে উৎসুক করে তোলে। রিক্সা ভ্যানের ওপর প্লাস্টিকের ড্রাম ভর্তি মাটিতে লাগানো এই কমলা গাছটি বিক্রি করতে এনেছিলেন বগুড়া সদর উপজেলার গোকুল ইউনিয়নের ছোট সরলপুর উত্তরপুর গ্রামের মো. মুনছুর আলী। সকালে রিক্সা ভ্যানটি শহরের সাতমাথা এলাকায় বিক্রির জন্য আনার পর তাকে ঘিরে ধরেন লোকজন দুপুর পর্যন্ত চলে দরদাম। ৭-৮ হাজার পর্যন্ত এর দাম উঠলেও বিক্রেতার কথা ১২-১৪ হাজারের কম তিনি শখের কমলা গাছটি বিক্রি করবেন না। মুনছুর আলী চারা বা নার্সারি ব্যবসায়ী ছিলেন না। সিমেন্টের তৈরি ছোট আকারের খুঁটির তৈরির ব্যবসা ছিল। কয়েক বছর আগে সে ব্যবসায় ১০ লাখ টাকা লোকসান হওয়া পর অবস্থা নাজুক হয়ে দাঁড়ায়। শুরু করেন ফলের চারা বিক্রির ব্যবসায়। তার এক প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম তাকে ফলের চারা কেনা বেচার আগ্রহী করেন। শফিকুলের নিজের জায়গা না থাকলে এক বিঘা জমি বছরের ২০ হাজার টাকা ভাড়া নিয়ে ছোট আকারে নার্সারি করেছেন। এছাড়া গোকুল এলাকার বড় বড় নার্সারি থেকে ফলের চারা কিনে ভ্যানে করে বিক্রি করতেন। মুনছুর আলী যুক্ত হওয়ার পর ফলের চারা কিনে দু’জন উত্তরের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও সহ বিভিন্ন জেলায় তা বিক্রির ব্যবসা করে আসছেন। এর মাঝেই মুনছুর আলী নিজের দ্বিতল বাড়ির ছাদে ফলের গাছের বাগান তৈরি শুরু করেন। শখের বসে তিনি ছাদে ফলের বাগান তৈরি করতে থাকেন। ১৭শ’ স্কোয়ার ফিটের ছাদে প্লাস্টিকের বালতি ও ড্রামে বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ লাগান। লেবু, বার মাসের আম, পেয়ারা, বেদেনা, বড়ই মাল্টা ও কমলাসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছের ছোট্ট বাগান তৈরি করেন। এরই একটি কমলা গাছ তিনি ব্যবসায়ীক অংশীদার শফিকুলের ভ্যানে বিক্রি করতে শহরে নিয়ে আসেন। এর আগে এমনভাবে ফলের গাছ তিনি কখনো বিক্রি করেননি। তবে ক্রেতাদের আগ্রহ দেখে তিনি অভিভূত। ছাতকি জাতের কমলার ছোট্ট গাছটিতে এত বেশিসংখ্যক কমলার ফলন দেখে লোকজনের আগ্রহ বেড়ে যায়। একটি গাছ কিনতে শত শত লোকজন ভিড় জমান। ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত ৬২টি কমলাসহ কমলা গাছের দাম উঠলেও বিক্রেতা মুনছুর আলী তা দুপুর পর্যন্ত বিক্রি করেনি। তার আশা এটি ১০ থেকে ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। কাক্সিক্ষত দামে বিক্রির জন্য ভ্যানে কমলার গাছটি নিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যান। আর সবখানেই গাছটি নিয়ে লোকজনের ভিড় পড়ে।