নানা কারণে বাড়ছে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হার

রাজশাহীতে প্রাথমিকের গন্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পর শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বেড়েই চলেছে। প্রাথমিক শেষে একই ব্যাচের রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মাধ্যমিক পর্যায়ের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), এসএসসি এবং উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা বিশ্লেষণে এমনটাই দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার ঠেকাতে সংশ্লিষ্টদের কোন পরিকল্পনা নেই। জানা যায়, আড়ানী সরকারি মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আসন সরকারিভাবে ১২০ জন নির্ধারণ করায় স্থানীয় সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়েছে। এ বিদ্যালয়ের অধীনে ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ৫ম শ্রেণি পাশ করার পর অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা এ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতো। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যালয়টি সরকারি হওয়ার পর থেকে পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা তালিকায় ১২০ ভর্তির সুযোগ হয়েছে। কিন্তু এলাকায় প্রায় ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ শ্রেণি পান করেছে ৬ শতাধিত শিক্ষার্থী পাস এরমধ্যে ঐলাকায় একটি মাত্র বিদ্যালয় আড়ানী সরকারি মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আসন সরকারিভাবে ১২০ মেধাবীরাই শুধু বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু যারা সাধারণ দুর্বল শিক্ষার্থী তারা এ ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে অনেক শিক্ষার্থী ৫ম শ্রেণি পাশ করার পর ঝরে পড়ার আশঙ্কা করছে। ফলে এলাকার অভিভাবকরাও এ নিয়ে পড়েছে বেকায়দায়। এ নিয়ে এলাকাবাসী একটি উচ্চ বিদ্যালয় গড়ে তুলার জন্য দাবি তুলেছেন। আড়ানী পৌর এলাকার গোচর, কুশবাড়িয়া গ্রামের দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ বিদ্যালয়ের ফলাফল ভালো হচ্ছে। অনেক সময় ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় সুযোগ পাচ্ছে না। এলাকায় কোন উচ্চ বিদ্যালয় নেই। এ দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাধারণত আড়ানী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতো। কিন্তু বিদ্যালয়টি সরকারি হওয়ার পর থেকে ভর্তির আসন সরকারিভাবে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ফলে সাধারণ দুর্বল ছাত্ররা ভর্তির সুযোগ না পেয়ে এ দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়েছে। অপর দিকে আড়ানী, ঝিনা-১, ঝিনা-২, ঝিনা-৩, বেড়েরবাড়ি, চকসিংগা গ্রামে জয়গুননেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একই অবস্থা। এ বিদ্যালয়ের দুর্বল শিক্ষার্থী নিয়ে অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়েছে। ফলে তারা দূরের উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে ভর্তি হতে চাচ্ছে না। উচ্চ বিদ্যালয়ের অভাবে ৫ম শ্রেণি পাস করার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে অনেকই দূরের স্কুলে ভর্তি না হয়ে লেখাপড়া বন্ধ করে দিচ্ছে। এদিকে খোর্দ্দ বাউসা ও রুস্তমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আড়ানী সরকারি মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পেলেও তারা স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে। আড়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান শাহীদ সাংবাদিকদের বলেন, মেয়েরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সুযোগ না পেলেও পাশে বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে। কিন্তু ছেলেদের জন্য আলাদা কোন স্কুল না থাকায় এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বাঘা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, সুষ্ঠু পাঠদানের ক্ষেত্রে বিকল্প স্কুলের প্রয়োজন আছে। তবে এ বিষয়ে কোন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান গড়তে চাইলে সহযোগিতা থাকবে।

মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২০ , ২৪ পৌষ ১৪২৬, ১০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

নানা কারণে বাড়ছে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হার

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

রাজশাহীতে প্রাথমিকের গন্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পর শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বেড়েই চলেছে। প্রাথমিক শেষে একই ব্যাচের রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মাধ্যমিক পর্যায়ের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), এসএসসি এবং উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা বিশ্লেষণে এমনটাই দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার ঠেকাতে সংশ্লিষ্টদের কোন পরিকল্পনা নেই। জানা যায়, আড়ানী সরকারি মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আসন সরকারিভাবে ১২০ জন নির্ধারণ করায় স্থানীয় সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়েছে। এ বিদ্যালয়ের অধীনে ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ৫ম শ্রেণি পাশ করার পর অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা এ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতো। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যালয়টি সরকারি হওয়ার পর থেকে পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা তালিকায় ১২০ ভর্তির সুযোগ হয়েছে। কিন্তু এলাকায় প্রায় ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ শ্রেণি পান করেছে ৬ শতাধিত শিক্ষার্থী পাস এরমধ্যে ঐলাকায় একটি মাত্র বিদ্যালয় আড়ানী সরকারি মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আসন সরকারিভাবে ১২০ মেধাবীরাই শুধু বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু যারা সাধারণ দুর্বল শিক্ষার্থী তারা এ ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে অনেক শিক্ষার্থী ৫ম শ্রেণি পাশ করার পর ঝরে পড়ার আশঙ্কা করছে। ফলে এলাকার অভিভাবকরাও এ নিয়ে পড়েছে বেকায়দায়। এ নিয়ে এলাকাবাসী একটি উচ্চ বিদ্যালয় গড়ে তুলার জন্য দাবি তুলেছেন। আড়ানী পৌর এলাকার গোচর, কুশবাড়িয়া গ্রামের দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ বিদ্যালয়ের ফলাফল ভালো হচ্ছে। অনেক সময় ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় সুযোগ পাচ্ছে না। এলাকায় কোন উচ্চ বিদ্যালয় নেই। এ দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাধারণত আড়ানী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতো। কিন্তু বিদ্যালয়টি সরকারি হওয়ার পর থেকে ভর্তির আসন সরকারিভাবে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ফলে সাধারণ দুর্বল ছাত্ররা ভর্তির সুযোগ না পেয়ে এ দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়েছে। অপর দিকে আড়ানী, ঝিনা-১, ঝিনা-২, ঝিনা-৩, বেড়েরবাড়ি, চকসিংগা গ্রামে জয়গুননেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একই অবস্থা। এ বিদ্যালয়ের দুর্বল শিক্ষার্থী নিয়ে অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়েছে। ফলে তারা দূরের উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে ভর্তি হতে চাচ্ছে না। উচ্চ বিদ্যালয়ের অভাবে ৫ম শ্রেণি পাস করার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে অনেকই দূরের স্কুলে ভর্তি না হয়ে লেখাপড়া বন্ধ করে দিচ্ছে। এদিকে খোর্দ্দ বাউসা ও রুস্তমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আড়ানী সরকারি মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পেলেও তারা স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে। আড়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান শাহীদ সাংবাদিকদের বলেন, মেয়েরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সুযোগ না পেলেও পাশে বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে। কিন্তু ছেলেদের জন্য আলাদা কোন স্কুল না থাকায় এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বাঘা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, সুষ্ঠু পাঠদানের ক্ষেত্রে বিকল্প স্কুলের প্রয়োজন আছে। তবে এ বিষয়ে কোন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান গড়তে চাইলে সহযোগিতা থাকবে।