ছাত্র রাজনীতির সংস্কার প্রয়োজন

তানজিনা আক্তার জেবিন

শিক্ষাঙ্গনে পরিবেশ সুন্দর থাকে যদি সেখানে রাজনীতি চর্চার সুষ্ঠু পরিবেশ বিদ্যমান থাকে। উনিশ শতকের শুরুর দিকে রাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করে ছাত্র রাজনীতি। বিশ শতকের প্রথম দিকে স্বদেশী আন্দোলন ও বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ছাত্র রাজনীতি একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ গ্রহণ করে। সাধারণ শিক্ষার্থীর বিভিন্ন সমস্যা ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যে রাজনীতি কাজ করে সেটি ছাত্র রাজনীতি নামে পরিচিত। আমাদের দেশে ছাত্র রাজনীতি যে সব গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে তা বিশ্বের আর কোন দেশে এমন নেই। অতীতের দিকে তাকালে আমাদের দেশে ছাত্র রাজনীতিতে অনেক অর্জন দেখতে পাই। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধ, ২০১৮ সালের কোটা বিরোধী আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন সহ-গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আমরা বহির্বিশ্বের দিকে তাকালে ও ছাত্র সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেখতে পাব। ১৯৪৮ সালে জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার বিপ্লবের মূলশক্তি ছিল ছাত্রসমাজ। ১৯৬৪ সালে ভিয়েতনাম ও বলিভিয়ার ক্ষেত্রে এবং জাতীয় সংকটে ছাত্রসমাজের অবদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। অতীতের সেই আদর্শিক রাজনীতি পথভ্রষ্ট রূপ নিয়েছে বর্তমান ছাত্র রাজনীতি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সমালোচনার মধ্যে দিয়ে ছাত্র রাজনীতি তার গৌরব হারিয়ে ফেলছে। বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ছাত্রনেতারা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, হলের সিট নৈরাজ্য, ইভটিজিং, ধর্ষণ, শিক্ষার্থী খুন ও শিক্ষক লাঞ্ছিতসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে ছাত্রদের নৈতিকতা ও মনুষ্যত্ব মূল্যবোধের অবক্ষয় হচ্ছে। অথচ মেধাবী ছাত্ররাই নেতৃত্বের মাধ্যমে একটি দেশ ও জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা। ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে কাজ করছে বিভিন্ন গ্রুপিং, ব্যক্তি স্বার্থ ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকবে সেই দলের ছাত্র সংগঠনগুলো দ্বারা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠে এসেছে।

যেখানে একটি ভিন্নমত পোষণ করাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ডিরেক্ট অ্যাকশন, মতের অমিল হলেই ছাত্র সংগঠনগুলো দ্বারা শিক্ষার্থী নির্যাতিত হয়ে আসছে। সম্প্রতি ভিন্ন মতকে কেন্দ্র করেই বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয়েছে। তারাও কিন্তু বুয়েটের মেধাবী ছাত্র। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিবেকবর্জিত মনুষ্যত্বহীন মেধাবী ছাত্র। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থী ও দেশের মানুষ বুয়েটসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির নিষিদ্ধ করার জোরালো দাবি জানান। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে বিপক্ষে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন সমালোচনা উঠে এসেছে। বর্তমান বুয়েটের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে একজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় প্রশাসন থেকে সাময়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমান এ ছাত্র রাজনীতির প্রতি শিক্ষার্থীদের ও সাধারণ মানুষদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীরা ছাত্র সংগঠনগুলোর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতি দরকার তবে সেটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি চর্চা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিঃসন্দেহে আমাদের মূল্যবোধের অবক্ষয় নির্দেশ করে। তরুণদের মধ্যে মূল্যবোধের জাগ্রত করবে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক সংগঠন ও সামাজিক মানুষেরা। যতক্ষণ পর্যন্ত না এ মানবিক গুণ তাদের মধ্যে সঞ্চার করা যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কোন উন্নতির আশা করি না।

বর্তমান ছাত্র রাজনীতিতে যে ছাত্রনেতাদের সব শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা করার দায়িত্ব সেখানে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, ছাত্র নির্যাতন, বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব সংঘর্ষ সৃষ্টি হচ্ছে তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষতির দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্র নেতৃত্বের ওপর ভরসা পাচ্ছে না। কয়েক বছর আগে এসব ঘটনার ঘটলে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন। এতে ছাত্রদের ক্লাস, পরীক্ষা ও সেশনজটসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর বিভিন্ন গ্রুপের দ্বন্দ্ব সংঘর্ষ ও বিভিন্ন অনৈতিক কাজকর্মের জন্য মূল রাজনৈতিক দলগুলো সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছে। যেখানে সংগঠনগুলোর মূল নেতৃত্ব সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা হচ্ছে না।

যে বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার সর্বোচ্চ জ্ঞানকেন্দ্র। যেখানে একজন ছাত্র নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে নেতৃত্বের মাধ্যমের পরবর্তীতে মূল রাজনৈতিক দলগুলো কাজের মধ্যে দিয়ে দেশের জন্য কাজ করবে অথচ রাজনীতির কারণে অনেক ছাত্রের জীবন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর পরিবর্তন আনা ও সুষ্ঠু রাজনীতির পরিবেশ বাস্তবায়ন এখন সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত। যেহেতু বর্তমান ছাত্র রাজনীতিতে একটি শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ ক্রমশ খারাপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই জন্য আন্তরিকভাবে মূল রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। আলোচনা সাপেক্ষে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনগুলোর পরিবর্তন আনতে হবে। নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে যাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর স্বচ্ছতা আনা যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে কোন সহিংসতা পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ বাস্তবায়ন নীতি প্রয়োগ করতে হবে যাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতি কোন লেজুড়বৃত্তি না হয়ে সুষ্ঠু নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য কাজ করা হয়। অবশেষে অন্ধকার যত গভীর হোক না কেন আলো আসবেই। আজকের প্রজন্ম যেন সেই আশায় রয়েছে। অতীতের সেই সোনালি দিনগুলোর মতো একটি পরিবর্তনের মাধ্যমে ফিরে আসবে আজকের ছাত্র রাজনীতি।

[লেখক : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়]

মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২০ , ২৪ পৌষ ১৪২৬, ১০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

ছাত্র রাজনীতির সংস্কার প্রয়োজন

তানজিনা আক্তার জেবিন

শিক্ষাঙ্গনে পরিবেশ সুন্দর থাকে যদি সেখানে রাজনীতি চর্চার সুষ্ঠু পরিবেশ বিদ্যমান থাকে। উনিশ শতকের শুরুর দিকে রাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করে ছাত্র রাজনীতি। বিশ শতকের প্রথম দিকে স্বদেশী আন্দোলন ও বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ছাত্র রাজনীতি একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ গ্রহণ করে। সাধারণ শিক্ষার্থীর বিভিন্ন সমস্যা ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যে রাজনীতি কাজ করে সেটি ছাত্র রাজনীতি নামে পরিচিত। আমাদের দেশে ছাত্র রাজনীতি যে সব গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে তা বিশ্বের আর কোন দেশে এমন নেই। অতীতের দিকে তাকালে আমাদের দেশে ছাত্র রাজনীতিতে অনেক অর্জন দেখতে পাই। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধ, ২০১৮ সালের কোটা বিরোধী আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন সহ-গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আমরা বহির্বিশ্বের দিকে তাকালে ও ছাত্র সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেখতে পাব। ১৯৪৮ সালে জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার বিপ্লবের মূলশক্তি ছিল ছাত্রসমাজ। ১৯৬৪ সালে ভিয়েতনাম ও বলিভিয়ার ক্ষেত্রে এবং জাতীয় সংকটে ছাত্রসমাজের অবদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। অতীতের সেই আদর্শিক রাজনীতি পথভ্রষ্ট রূপ নিয়েছে বর্তমান ছাত্র রাজনীতি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সমালোচনার মধ্যে দিয়ে ছাত্র রাজনীতি তার গৌরব হারিয়ে ফেলছে। বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ছাত্রনেতারা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, হলের সিট নৈরাজ্য, ইভটিজিং, ধর্ষণ, শিক্ষার্থী খুন ও শিক্ষক লাঞ্ছিতসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে ছাত্রদের নৈতিকতা ও মনুষ্যত্ব মূল্যবোধের অবক্ষয় হচ্ছে। অথচ মেধাবী ছাত্ররাই নেতৃত্বের মাধ্যমে একটি দেশ ও জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা। ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে কাজ করছে বিভিন্ন গ্রুপিং, ব্যক্তি স্বার্থ ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকবে সেই দলের ছাত্র সংগঠনগুলো দ্বারা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠে এসেছে।

যেখানে একটি ভিন্নমত পোষণ করাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ডিরেক্ট অ্যাকশন, মতের অমিল হলেই ছাত্র সংগঠনগুলো দ্বারা শিক্ষার্থী নির্যাতিত হয়ে আসছে। সম্প্রতি ভিন্ন মতকে কেন্দ্র করেই বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয়েছে। তারাও কিন্তু বুয়েটের মেধাবী ছাত্র। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিবেকবর্জিত মনুষ্যত্বহীন মেধাবী ছাত্র। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থী ও দেশের মানুষ বুয়েটসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির নিষিদ্ধ করার জোরালো দাবি জানান। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে বিপক্ষে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন সমালোচনা উঠে এসেছে। বর্তমান বুয়েটের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে একজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় প্রশাসন থেকে সাময়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমান এ ছাত্র রাজনীতির প্রতি শিক্ষার্থীদের ও সাধারণ মানুষদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীরা ছাত্র সংগঠনগুলোর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতি দরকার তবে সেটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি চর্চা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিঃসন্দেহে আমাদের মূল্যবোধের অবক্ষয় নির্দেশ করে। তরুণদের মধ্যে মূল্যবোধের জাগ্রত করবে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক সংগঠন ও সামাজিক মানুষেরা। যতক্ষণ পর্যন্ত না এ মানবিক গুণ তাদের মধ্যে সঞ্চার করা যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কোন উন্নতির আশা করি না।

বর্তমান ছাত্র রাজনীতিতে যে ছাত্রনেতাদের সব শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা করার দায়িত্ব সেখানে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, ছাত্র নির্যাতন, বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব সংঘর্ষ সৃষ্টি হচ্ছে তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষতির দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্র নেতৃত্বের ওপর ভরসা পাচ্ছে না। কয়েক বছর আগে এসব ঘটনার ঘটলে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন। এতে ছাত্রদের ক্লাস, পরীক্ষা ও সেশনজটসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর বিভিন্ন গ্রুপের দ্বন্দ্ব সংঘর্ষ ও বিভিন্ন অনৈতিক কাজকর্মের জন্য মূল রাজনৈতিক দলগুলো সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছে। যেখানে সংগঠনগুলোর মূল নেতৃত্ব সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা হচ্ছে না।

যে বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার সর্বোচ্চ জ্ঞানকেন্দ্র। যেখানে একজন ছাত্র নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে নেতৃত্বের মাধ্যমের পরবর্তীতে মূল রাজনৈতিক দলগুলো কাজের মধ্যে দিয়ে দেশের জন্য কাজ করবে অথচ রাজনীতির কারণে অনেক ছাত্রের জীবন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর পরিবর্তন আনা ও সুষ্ঠু রাজনীতির পরিবেশ বাস্তবায়ন এখন সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত। যেহেতু বর্তমান ছাত্র রাজনীতিতে একটি শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ ক্রমশ খারাপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই জন্য আন্তরিকভাবে মূল রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। আলোচনা সাপেক্ষে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনগুলোর পরিবর্তন আনতে হবে। নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে যাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর স্বচ্ছতা আনা যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে কোন সহিংসতা পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ বাস্তবায়ন নীতি প্রয়োগ করতে হবে যাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতি কোন লেজুড়বৃত্তি না হয়ে সুষ্ঠু নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য কাজ করা হয়। অবশেষে অন্ধকার যত গভীর হোক না কেন আলো আসবেই। আজকের প্রজন্ম যেন সেই আশায় রয়েছে। অতীতের সেই সোনালি দিনগুলোর মতো একটি পরিবর্তনের মাধ্যমে ফিরে আসবে আজকের ছাত্র রাজনীতি।

[লেখক : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়]