মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

প্রতিনিধি, চাটখিল (নোয়াখালী)

নোয়াখালী জেলার চাটখিলের দক্ষিণ দেলিয়াই হাসেমিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার শফিকুল ইসলাম ও সভাপতি এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে মাদ্রাসা পরিচালনায় পকেট কমিটি গঠন, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ সুপারের পদত্যাগ ও কমিটি বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ও এলাকাবাসীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিজেকে রক্ষায় মাদ্রাসা সুপার অসুস্থতার অযুহাত দেখিয়ে বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্নস্থানে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতি দীর্ঘ ১৫ বছর থেকে দায়িত্বে রয়েছেন। মাদ্রাসা সুপার সরকারিভাবে কাগজপত্র ঠিক করে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচন না দিয়ে পকেট কমিটি করে মাদ্রাসা চালিয়ে আসছেন। তার অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতি ধরিয়ে দেয়ায় চাকরিচ্যুত করা হয় অফিস সহকারী আব্দুল খালেক ও নৈশপ্রহরী খলিলকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার একজন শিক্ষক জানান, মাদ্রাসা সুপারের দুর্নীতি অনিয়মের প্রতিবাদ করে কয়েকজন শিক্ষক তার রশানলে পড়ে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসা থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। প্রতি বছর দাখিল মাদ্রাসার ফরম পূরণের সময় সরকারিভাবে নির্ধারিত ফি’র চেয়ে ২-৩ গুণ বেশি আদায়, সেশন ফি, বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন খাতে আদায় করা লক্ষ লক্ষ টাকার কোন হিসেব নেই। সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ সাপেক্ষে এসব অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার আশপাশের লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় এবং কোর্টে একাধিক মামলাও করেছেন তিনি। কাগজে কলমে একটি এতিমখানা দেখিয়ে তার জন্য বিভিন্নস্থান থেকে অনুদান আসলেও এতিমখানার কোন অস্থিত্ব নেই। বিগত ১৫ বছরে বিভিন্নভাবে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। মাদ্রাসা সুপার এসব দুর্নীতি করার জন্য ঢাকায় বসবাস এনায়েত উল্লাহকে সভাপতি করে থাকেন। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কাজে সভাপতির স্বাক্ষরের জন্য মাদ্রাসার হাজার হাজার টাকা খরচ করে তিনি ঢাকায় আসেন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর অভিভাবক মহিন উদ্দিন জানান, মাদ্রাসা সুপার দুর্নীতিবাজ ও চরিত্রহীন লোক। তিনি প্রতিবার চুরি করে পকেট কমিটি করে থাকেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউপি চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিন জানান, দুর্নীতিবাজ সুপার ও পকেট কমিটিকে দিয়ে এই মাদ্রাসা পরিচালনা করা যাবে না। এছাড়া মাদ্রাসা সুপার শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুত্বর অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সমাজকর্মী মোশারফ হোসেন জানান, মাদ্রাসা সুপার বিভিন্ন সময় তার অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য তাকে অপদস্ত হতে হয়। এরা সবাই মাদ্রাসা সুপারের পদত্যাগ ও পকেট কমিটি বাতিলের দাবি জানান। মাদ্রাসা সুপার শফিকুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনীত গুরুত্বর অভিযোগসমূহ অস্বীকার করে জানান, তিনি নিয়মনীতি মেনে সবকিছু করছেন। সভাপতি এনায়েত উল্লাহ জানান, তিনি মাদ্রাসার অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। তিনি এবং তার পরিবার মাদ্রাসার উন্নয়নে প্রতিবছর অনেক অর্থ ব্যায় করে থাকেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহীম জানান, মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২০ , ২৬ পৌষ ১৪২৬, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

প্রতিনিধি, চাটখিল (নোয়াখালী)

নোয়াখালী জেলার চাটখিলের দক্ষিণ দেলিয়াই হাসেমিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার শফিকুল ইসলাম ও সভাপতি এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে মাদ্রাসা পরিচালনায় পকেট কমিটি গঠন, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ সুপারের পদত্যাগ ও কমিটি বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ও এলাকাবাসীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিজেকে রক্ষায় মাদ্রাসা সুপার অসুস্থতার অযুহাত দেখিয়ে বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্নস্থানে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতি দীর্ঘ ১৫ বছর থেকে দায়িত্বে রয়েছেন। মাদ্রাসা সুপার সরকারিভাবে কাগজপত্র ঠিক করে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচন না দিয়ে পকেট কমিটি করে মাদ্রাসা চালিয়ে আসছেন। তার অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতি ধরিয়ে দেয়ায় চাকরিচ্যুত করা হয় অফিস সহকারী আব্দুল খালেক ও নৈশপ্রহরী খলিলকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার একজন শিক্ষক জানান, মাদ্রাসা সুপারের দুর্নীতি অনিয়মের প্রতিবাদ করে কয়েকজন শিক্ষক তার রশানলে পড়ে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসা থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। প্রতি বছর দাখিল মাদ্রাসার ফরম পূরণের সময় সরকারিভাবে নির্ধারিত ফি’র চেয়ে ২-৩ গুণ বেশি আদায়, সেশন ফি, বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন খাতে আদায় করা লক্ষ লক্ষ টাকার কোন হিসেব নেই। সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ সাপেক্ষে এসব অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার আশপাশের লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় এবং কোর্টে একাধিক মামলাও করেছেন তিনি। কাগজে কলমে একটি এতিমখানা দেখিয়ে তার জন্য বিভিন্নস্থান থেকে অনুদান আসলেও এতিমখানার কোন অস্থিত্ব নেই। বিগত ১৫ বছরে বিভিন্নভাবে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। মাদ্রাসা সুপার এসব দুর্নীতি করার জন্য ঢাকায় বসবাস এনায়েত উল্লাহকে সভাপতি করে থাকেন। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কাজে সভাপতির স্বাক্ষরের জন্য মাদ্রাসার হাজার হাজার টাকা খরচ করে তিনি ঢাকায় আসেন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর অভিভাবক মহিন উদ্দিন জানান, মাদ্রাসা সুপার দুর্নীতিবাজ ও চরিত্রহীন লোক। তিনি প্রতিবার চুরি করে পকেট কমিটি করে থাকেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউপি চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিন জানান, দুর্নীতিবাজ সুপার ও পকেট কমিটিকে দিয়ে এই মাদ্রাসা পরিচালনা করা যাবে না। এছাড়া মাদ্রাসা সুপার শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুত্বর অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সমাজকর্মী মোশারফ হোসেন জানান, মাদ্রাসা সুপার বিভিন্ন সময় তার অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য তাকে অপদস্ত হতে হয়। এরা সবাই মাদ্রাসা সুপারের পদত্যাগ ও পকেট কমিটি বাতিলের দাবি জানান। মাদ্রাসা সুপার শফিকুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনীত গুরুত্বর অভিযোগসমূহ অস্বীকার করে জানান, তিনি নিয়মনীতি মেনে সবকিছু করছেন। সভাপতি এনায়েত উল্লাহ জানান, তিনি মাদ্রাসার অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। তিনি এবং তার পরিবার মাদ্রাসার উন্নয়নে প্রতিবছর অনেক অর্থ ব্যায় করে থাকেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহীম জানান, মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।