প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে সর. জলাশয় থেকে মাছ লুট

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে প্রশাসনকে অমান্য করে সরকারি জলাশয় থেকে কয়েক লাখ টাকার মাছ লুট হলেও এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ঘটনাটি ঘটেছে জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের মোজাহিদপুর (বুধরপুর) গ্রাম এলাকায়।

স্থানীয়রা জানান, কুবাজপুর মৌজার জেল এল নং ২০০ দাগ নং ২৪২১ এর ২ একর ৬২ শতক বোরো জমি ও জলাশয় রকম সরকারি ভূমি রয়েছে। প্রথমে এ ভূমি বন্দোবস্ত নেন স্থানীয় মোজাহিদপুর (বুধরপুর) গ্রামের মৃত ফারুক মিয়ার ছেলে শফিকুল মিয়া গং। পরে বন্দোবস্ত ভূমিকে মালিকানা দাবি করে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে একই গ্রামের তাহিদ উল্লার ছেলে প্রবাসী আক্কাছ মিয়ার কাছে বিক্রি করে দেন শফিকুল মিয়ার লোকজন। এ সময় প্রবাসী আক্কাছ মিয়া উক্ত ভূমি ক্রয় করে আবার প্রবাসে চলে যান। এ সুযোগে শফিকুল মিয়া আবারো উক্ত ভূমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন। আশ্রয় নেন মিথ্যাচার ও ছলচাতুরির। বিষয়টি জানতে পেরে জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শফিকুল মিয়া গংদের বন্দোবস্ত বাতিল করে নতুন করে প্রবাসী আক্কাছ মিয়াকে উক্ত ভূমি বন্দোবস্ত দেন। বন্দোবস্ত পেয়ে প্রবাসী আক্কাছ মিয়ার পক্ষে জগন্নাথপুর পৌর এলাকার ইকড়ছই গ্রামের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ উক্ত জলাশয়ে মাছের ফিসারি করে মাছ চাষ করেন। এর মধ্যে শফিকুল মিয়া গং আবারও আপিল করেন। উক্ত আপিলের কারণে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রশাসন উক্ত জলাশয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন। এক্ষেত্রে প্রবাসী আক্কাছ মিয়া পক্ষ প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা মানলেও শফিকুল মিয়ার লোকজন মানেননি। তারা সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দফায় দফায় উক্ত জলাশয় থেকে কয়েক লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়েছেন। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ ২ বার অভিযান চালিয়ে শফিকুল মিয়ার লোকজনের জাল জব্ধ করলেও কাজ হয়নি।

এ ঘটনায় জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে প্রবাসী আক্কাছ মিয়ার পক্ষে নুর মোহাম্মদ বাদী হয়ে শফিকুল মিয়া গংদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি তফসিলদার প্রথমে মাছ লুট হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দিয়েছেন। পরে আবার মাছ লুট হয়েছে মর্মে পৃথক প্রতিবেদন দেন। এসব প্রতিবেদনের আলোকে অবৈধভাবে মাছ আহরণকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে জগন্নাথপুর থানা পুলিশকে লিখিতভাবে জানান জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা। তবে এখন পর্যন্ত লুটেরাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

গত বৃহস্পতিবার জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসির আরাফাত বলেন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে থানা পুলিশকে লিখিতভাবে বলেছি। এরপরও মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। জগন্নাথপুর থানার এসআই অনুজ কুমার দাশ বলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার লিখিত কাগজ পেয়েছি। তবে মামলা হলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও খবর
অর্থাভাবে বন্ধ হতে পারে বিলের পানি নিষ্কাশন
ইউপি চেয়ারম্যানের মামলায় আরেক চেয়ারম্যান জেলে
নোয়াখালীতে কারেন্ট জাল ধ্বংস অর্থদণ্ড
কসবায় নিখোঁজ যুবকের মরদেহ উদ্ধার
চট্টগ্রামে ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার ১
পাবনায় হোসিয়ারী শ্রমিককে হত্যা
মির্জাপুরে ১১ জুয়ারি গ্রেফতার
নোয়াখালীতে অস্ত্রসহ ২ জলদস্যু আটক
মিছিল মিটিংয়ে সরগরম দুপচাঁচিয়ার জনপদ
শেরপুরে নিখোঁজ যুবকের দেহ উদ্ধার স্ত্রী আটক
কলাপাড়ায় প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের ভ্যাকসিনে মারা গেছে খামারির ৬শ’ হাঁস
দোহার সড়কে স্কুল ছাত্র হত
মরদেহের খোঁজে পুকুরে পানি সেচ দিচ্ছে পুলিশ
লক্ষ্মীপুরে এক বছরে ৪১ ধর্ষণ!
কাজের চেয়ে প্রকল্প বাড়ানোর দিকে ঝোঁক কর্মকর্তাদের!

শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২০ , ২৭ পৌষ ১৪২৬, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে সর. জলাশয় থেকে মাছ লুট

প্রতিনিধি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ)

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে প্রশাসনকে অমান্য করে সরকারি জলাশয় থেকে কয়েক লাখ টাকার মাছ লুট হলেও এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ঘটনাটি ঘটেছে জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের মোজাহিদপুর (বুধরপুর) গ্রাম এলাকায়।

স্থানীয়রা জানান, কুবাজপুর মৌজার জেল এল নং ২০০ দাগ নং ২৪২১ এর ২ একর ৬২ শতক বোরো জমি ও জলাশয় রকম সরকারি ভূমি রয়েছে। প্রথমে এ ভূমি বন্দোবস্ত নেন স্থানীয় মোজাহিদপুর (বুধরপুর) গ্রামের মৃত ফারুক মিয়ার ছেলে শফিকুল মিয়া গং। পরে বন্দোবস্ত ভূমিকে মালিকানা দাবি করে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে একই গ্রামের তাহিদ উল্লার ছেলে প্রবাসী আক্কাছ মিয়ার কাছে বিক্রি করে দেন শফিকুল মিয়ার লোকজন। এ সময় প্রবাসী আক্কাছ মিয়া উক্ত ভূমি ক্রয় করে আবার প্রবাসে চলে যান। এ সুযোগে শফিকুল মিয়া আবারো উক্ত ভূমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন। আশ্রয় নেন মিথ্যাচার ও ছলচাতুরির। বিষয়টি জানতে পেরে জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শফিকুল মিয়া গংদের বন্দোবস্ত বাতিল করে নতুন করে প্রবাসী আক্কাছ মিয়াকে উক্ত ভূমি বন্দোবস্ত দেন। বন্দোবস্ত পেয়ে প্রবাসী আক্কাছ মিয়ার পক্ষে জগন্নাথপুর পৌর এলাকার ইকড়ছই গ্রামের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ উক্ত জলাশয়ে মাছের ফিসারি করে মাছ চাষ করেন। এর মধ্যে শফিকুল মিয়া গং আবারও আপিল করেন। উক্ত আপিলের কারণে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রশাসন উক্ত জলাশয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন। এক্ষেত্রে প্রবাসী আক্কাছ মিয়া পক্ষ প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা মানলেও শফিকুল মিয়ার লোকজন মানেননি। তারা সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দফায় দফায় উক্ত জলাশয় থেকে কয়েক লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়েছেন। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ ২ বার অভিযান চালিয়ে শফিকুল মিয়ার লোকজনের জাল জব্ধ করলেও কাজ হয়নি।

এ ঘটনায় জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে প্রবাসী আক্কাছ মিয়ার পক্ষে নুর মোহাম্মদ বাদী হয়ে শফিকুল মিয়া গংদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি তফসিলদার প্রথমে মাছ লুট হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দিয়েছেন। পরে আবার মাছ লুট হয়েছে মর্মে পৃথক প্রতিবেদন দেন। এসব প্রতিবেদনের আলোকে অবৈধভাবে মাছ আহরণকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে জগন্নাথপুর থানা পুলিশকে লিখিতভাবে জানান জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা। তবে এখন পর্যন্ত লুটেরাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

গত বৃহস্পতিবার জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসির আরাফাত বলেন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে থানা পুলিশকে লিখিতভাবে বলেছি। এরপরও মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। জগন্নাথপুর থানার এসআই অনুজ কুমার দাশ বলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার লিখিত কাগজ পেয়েছি। তবে মামলা হলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।