শীতাচ্ছন্ন নগরীতে নির্বাচনী উত্তাপ

প্রচারণার সময় হামলার অভিযোগ তাপস ও তাবিথের

শীতাচ্ছন্ন নগরীতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে নির্বাচনী প্রচারণা। শীতের দাপট উপেক্ষা করেই ভোটারের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন প্রার্থীরা। এদিকে, প্রচারণায় হামলার অভিযোগ করেছেন একাধিক মেয়র প্রার্থী। প্রতিপক্ষের সমর্থকরাই হামলা করেছে বলে অভিযোগ তাদের। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তারা বলছেন, তারা কোন অভিযোগ পাননি। পেলেই ব্যবস্থা নেবেন। আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। প্রচারণার সময় হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন উত্তরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপস। অপর দুই প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ও ইশরাক হোসেন অবশ্য নির্বিঘে্নই প্রচারণা চালিয়েছেন। তারা নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে ইশরাক তার কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ করেছেন। গতকাল ঢাকায় তীব্র শীত অনুভূত হলেও প্রচারণা ঠিকই চালিয়েছেন প্রার্থীরা।

তাবিথ : গতকাল মিরপুর-১ নম্বরের উত্তর বিশিলে শাহ আলী মাজারের সামনে পুলিশের সামনেই মিছিলে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা হামলা করেছে। শাহ আলী মাজারের সামনে প্রচারের সময় জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা চালানো হয়। আক্রান্ত হলেও শান্তিপূর্ণভাবে প্রচার চালিয়ে যাব।

এদিকে, নির্বাচনে প্রচারণায় থাকা দারুস সালাম থানা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় প্রচারণাকালে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদ মিষ্টির সমর্থকদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী দেওয়ান সোলাইমানের সমর্থকদের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে এক প্রচারকর্মীর মাথায় আঘাত লেগে ফেটে যায়। তবে তিনি কোন পক্ষের সমর্থক তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাবিথ জানান, পুলিশ তার পাঁচ কর্মীকে আটক করেছে।

আতিকুল : উত্তরে নৌকার প্রার্থী আতিকুল ইসলাম উন্নয়নের ফুলঝুড়ি নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন। সকালে উত্তরার রাজলক্ষ্মী এলাকায় গণসংযোগ শুরু করার পর সেখান থেকেই বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন আতিকুল ইসলাম। এরপর উত্তরা সংলগ্ন কসাইবাড়ি রেলগেট, কাঁচপুরা, উত্তরখান, দক্ষিণখান, ময়নারটেক, ফায়দাবাদ এলাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করেন তিনি। এছাড়াও আবদুল্লাহপুর, কামারপাড়া, নয়ানগর মাদরাসা এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি। প্রচারণার সময় আতিকুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন নতুন ওয়ার্ডগুলো উন্নয়নের মাধ্যমে ভালোভাবে সাজানোর জন্য। আমরা বলতে চাই, নৌকা উন্নয়ের মার্কা, এ নৌকায় ভোট দেয়ার মাধ্যমে আমাকে যদি নির্বাচিত করেন তাহলে প্রথমেই এসব এলাকায় যেন জলাবদ্ধতা না হয়, রাস্তা উন্নয়ন হয় আর এলইডি বাতিতে যেন আলোকিত হয় সেই কাজ করব। এছাড়া নতুন ওয়ার্ডগুলোর উন্নয়নের জন্য অনেক বড় বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। উন্নয়ন চলছে, চলবে। এ শহরের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা এবার গন্তব্যে নেয়ার পালা। সবাই মিলে সবার ঢাকা, সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে চাই।

তাপস : দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপস শান্তিনগর কাঁচাবাজার থেকে তৃতীয় দিনের নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু করেন। এ সময় তিনি বলেন, গতকাল আরকে মিশন রোডে নির্বাচনী প্রচারের এক পর্যায়ে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইশরাক হোসেনের বাসাতেও আমি গিয়েছি। সেখানে সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি, ভোট প্রার্থনা করেছি। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আমরা সেখান থেকে চলে আসার পর সন্ধ্যার দিকে তারা অতর্কিত আমাদের ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীসহ গণসংযোগে যারা ছিল তাদের ওপর আক্রমণ করেছে। এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।

তাপস বলেন, আমরা চাই সম্প্রীতির রাজনীতি, পরিবর্তনের রাজনীতি। আমরা এই রাজনীতির সূচনা করতে চাই। আমরা আশা করব সবাই আমার সঙ্গে সেই সূচনায় অংশগ্রহণ করবে। আমরা একটা সুন্দর, সম্প্রীতির রাজনীতি ঢাকাবাসীকে উপহার দেব। যে পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি, আমাদের প্রাণের ঢাকা, ভালোবাসার ঢাকাকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঐতিহ্যের ঢাকা, সুন্দর ঢাকা, সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা এবং সর্বোপরি উন্নত ঢাকা গড়ে তোলার জন্য, ঢাকাবাসী সেটা সাদরে গ্রহণ করেছে।

গতকাল পল্টন, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা, মতিঝিল, শাহজাহানপুর, সিদ্ধেশ্বরী, বেইলি রোড এলাকায় প্রচার চালান তিনি।

ইশরাক : বিএনপি মনোনীত ইশরাক হোসেন গতকাল জজকোর্ট এলাকা থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এদিন তিনি তাঁতীবাজার, শাঁখারিবাজার ও নয়াবাজারসহ আশপাশের এলাকায় প্রচারণা চালান। প্রচারণার সময় তিনি বলেন, দুর্নীতি আর দুঃশাসনের কবলে পড়ে ঢাকা এখন একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত শহরের চেয়েও খারাপ শহরে পরিণত হয়েছে। গত ১৩ বছর বড় বড় প্রকল্পের নামে শুধু লুট করা হয়েছে। আবারও তারা লুট করতে চায়। এ অবস্থা থেকে ঢাকাকে মুক্ত করতে হবে। ঢাকার মানুষকে বাঁচাতে হবে। তিনি আরও বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় আমার গোপীবাগের বাসার সামনে সরকারদলীয় লোকজন গিয়ে আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর চড়াও হয়েছে, হামলা করেছে। এটা কি সুষ্ঠু নির্বাচনের আচরণ? বাসার সামনে থাকা কয়েকটি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করা হয়েছে।

আয়াতুল্লাহ : দক্ষিণে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মেয়র প্রার্থী মো. আকতারুজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লাহ তার নির্বাচনী পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ করেছেন। গতকাল ডিএসসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, গত ১০ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পর আমি আমার প্রচারণা শুরু করি। যার অংশ হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় আমার পোস্টার ও ব্যানার টাঙানো হয়। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তি সেসব পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে। রোববার সকালে মৎস্য ভবন সংলগ্ন রমনা পার্কের গেটে পোস্টার ও লিফলেট বিতরণের সময় বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হোসেনের উপস্থিতিতে কতিপয় ব্যক্তি পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা : উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাসেম বলেন, মিরপুরের একটি ঘটনার কথা আমরা শুনেছি। দু’পক্ষই পাশাপাশি প্রচারণা চালাচ্ছিল, এ সময় হয়তো একটু হৈ চৈ হয়েছে। তবে হামলার কথা আমরা শুনিনি। এ পর্যন্ত কোন মেয়রপ্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি। তারা অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারণা চালাচ্ছেন। কেউ যদি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে, আমরা তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। কোন প্রার্থী আমাদের কাছে অভিযোগ করলে তা তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন পেছাতে ইসির কাছে চিঠি দিয়েছেন দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন। চিঠিতে তিনি বলেন, আগামী ৩০ জানুয়ারি সনাতন ধর্মালম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ওই পূজা লগ্ন বা তিথির মধ্যে সম্পন্ন করতে হয়। তাই পূজার তারিখ পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। সার্বিক বিবেচনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় কাজ সূচারুভাবে পালন করার স্বার্থে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করার সুপারিশের যৌক্তিকতা বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আবেদনপত্রটি মহোদয়ের কাছে পাঠানো হলো।

সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২০ , ২৯ পৌষ ১৪২৬, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

শীতাচ্ছন্ন নগরীতে নির্বাচনী উত্তাপ

প্রচারণার সময় হামলার অভিযোগ তাপস ও তাবিথের

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

শীতাচ্ছন্ন নগরীতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে নির্বাচনী প্রচারণা। শীতের দাপট উপেক্ষা করেই ভোটারের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন প্রার্থীরা। এদিকে, প্রচারণায় হামলার অভিযোগ করেছেন একাধিক মেয়র প্রার্থী। প্রতিপক্ষের সমর্থকরাই হামলা করেছে বলে অভিযোগ তাদের। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তারা বলছেন, তারা কোন অভিযোগ পাননি। পেলেই ব্যবস্থা নেবেন। আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। প্রচারণার সময় হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন উত্তরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপস। অপর দুই প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ও ইশরাক হোসেন অবশ্য নির্বিঘে্নই প্রচারণা চালিয়েছেন। তারা নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে ইশরাক তার কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ করেছেন। গতকাল ঢাকায় তীব্র শীত অনুভূত হলেও প্রচারণা ঠিকই চালিয়েছেন প্রার্থীরা।

তাবিথ : গতকাল মিরপুর-১ নম্বরের উত্তর বিশিলে শাহ আলী মাজারের সামনে পুলিশের সামনেই মিছিলে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা হামলা করেছে। শাহ আলী মাজারের সামনে প্রচারের সময় জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা চালানো হয়। আক্রান্ত হলেও শান্তিপূর্ণভাবে প্রচার চালিয়ে যাব।

এদিকে, নির্বাচনে প্রচারণায় থাকা দারুস সালাম থানা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় প্রচারণাকালে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদ মিষ্টির সমর্থকদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী দেওয়ান সোলাইমানের সমর্থকদের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে এক প্রচারকর্মীর মাথায় আঘাত লেগে ফেটে যায়। তবে তিনি কোন পক্ষের সমর্থক তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাবিথ জানান, পুলিশ তার পাঁচ কর্মীকে আটক করেছে।

আতিকুল : উত্তরে নৌকার প্রার্থী আতিকুল ইসলাম উন্নয়নের ফুলঝুড়ি নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন। সকালে উত্তরার রাজলক্ষ্মী এলাকায় গণসংযোগ শুরু করার পর সেখান থেকেই বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন আতিকুল ইসলাম। এরপর উত্তরা সংলগ্ন কসাইবাড়ি রেলগেট, কাঁচপুরা, উত্তরখান, দক্ষিণখান, ময়নারটেক, ফায়দাবাদ এলাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করেন তিনি। এছাড়াও আবদুল্লাহপুর, কামারপাড়া, নয়ানগর মাদরাসা এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি। প্রচারণার সময় আতিকুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন নতুন ওয়ার্ডগুলো উন্নয়নের মাধ্যমে ভালোভাবে সাজানোর জন্য। আমরা বলতে চাই, নৌকা উন্নয়ের মার্কা, এ নৌকায় ভোট দেয়ার মাধ্যমে আমাকে যদি নির্বাচিত করেন তাহলে প্রথমেই এসব এলাকায় যেন জলাবদ্ধতা না হয়, রাস্তা উন্নয়ন হয় আর এলইডি বাতিতে যেন আলোকিত হয় সেই কাজ করব। এছাড়া নতুন ওয়ার্ডগুলোর উন্নয়নের জন্য অনেক বড় বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। উন্নয়ন চলছে, চলবে। এ শহরের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা এবার গন্তব্যে নেয়ার পালা। সবাই মিলে সবার ঢাকা, সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে চাই।

তাপস : দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপস শান্তিনগর কাঁচাবাজার থেকে তৃতীয় দিনের নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু করেন। এ সময় তিনি বলেন, গতকাল আরকে মিশন রোডে নির্বাচনী প্রচারের এক পর্যায়ে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইশরাক হোসেনের বাসাতেও আমি গিয়েছি। সেখানে সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি, ভোট প্রার্থনা করেছি। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আমরা সেখান থেকে চলে আসার পর সন্ধ্যার দিকে তারা অতর্কিত আমাদের ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীসহ গণসংযোগে যারা ছিল তাদের ওপর আক্রমণ করেছে। এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।

তাপস বলেন, আমরা চাই সম্প্রীতির রাজনীতি, পরিবর্তনের রাজনীতি। আমরা এই রাজনীতির সূচনা করতে চাই। আমরা আশা করব সবাই আমার সঙ্গে সেই সূচনায় অংশগ্রহণ করবে। আমরা একটা সুন্দর, সম্প্রীতির রাজনীতি ঢাকাবাসীকে উপহার দেব। যে পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি, আমাদের প্রাণের ঢাকা, ভালোবাসার ঢাকাকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঐতিহ্যের ঢাকা, সুন্দর ঢাকা, সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা এবং সর্বোপরি উন্নত ঢাকা গড়ে তোলার জন্য, ঢাকাবাসী সেটা সাদরে গ্রহণ করেছে।

গতকাল পল্টন, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা, মতিঝিল, শাহজাহানপুর, সিদ্ধেশ্বরী, বেইলি রোড এলাকায় প্রচার চালান তিনি।

ইশরাক : বিএনপি মনোনীত ইশরাক হোসেন গতকাল জজকোর্ট এলাকা থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এদিন তিনি তাঁতীবাজার, শাঁখারিবাজার ও নয়াবাজারসহ আশপাশের এলাকায় প্রচারণা চালান। প্রচারণার সময় তিনি বলেন, দুর্নীতি আর দুঃশাসনের কবলে পড়ে ঢাকা এখন একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত শহরের চেয়েও খারাপ শহরে পরিণত হয়েছে। গত ১৩ বছর বড় বড় প্রকল্পের নামে শুধু লুট করা হয়েছে। আবারও তারা লুট করতে চায়। এ অবস্থা থেকে ঢাকাকে মুক্ত করতে হবে। ঢাকার মানুষকে বাঁচাতে হবে। তিনি আরও বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় আমার গোপীবাগের বাসার সামনে সরকারদলীয় লোকজন গিয়ে আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর চড়াও হয়েছে, হামলা করেছে। এটা কি সুষ্ঠু নির্বাচনের আচরণ? বাসার সামনে থাকা কয়েকটি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করা হয়েছে।

আয়াতুল্লাহ : দক্ষিণে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মেয়র প্রার্থী মো. আকতারুজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লাহ তার নির্বাচনী পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ করেছেন। গতকাল ডিএসসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, গত ১০ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পর আমি আমার প্রচারণা শুরু করি। যার অংশ হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় আমার পোস্টার ও ব্যানার টাঙানো হয়। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তি সেসব পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে। রোববার সকালে মৎস্য ভবন সংলগ্ন রমনা পার্কের গেটে পোস্টার ও লিফলেট বিতরণের সময় বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হোসেনের উপস্থিতিতে কতিপয় ব্যক্তি পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা : উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাসেম বলেন, মিরপুরের একটি ঘটনার কথা আমরা শুনেছি। দু’পক্ষই পাশাপাশি প্রচারণা চালাচ্ছিল, এ সময় হয়তো একটু হৈ চৈ হয়েছে। তবে হামলার কথা আমরা শুনিনি। এ পর্যন্ত কোন মেয়রপ্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি। তারা অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারণা চালাচ্ছেন। কেউ যদি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে, আমরা তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। কোন প্রার্থী আমাদের কাছে অভিযোগ করলে তা তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন পেছাতে ইসির কাছে চিঠি দিয়েছেন দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন। চিঠিতে তিনি বলেন, আগামী ৩০ জানুয়ারি সনাতন ধর্মালম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ওই পূজা লগ্ন বা তিথির মধ্যে সম্পন্ন করতে হয়। তাই পূজার তারিখ পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। সার্বিক বিবেচনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় কাজ সূচারুভাবে পালন করার স্বার্থে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করার সুপারিশের যৌক্তিকতা বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আবেদনপত্রটি মহোদয়ের কাছে পাঠানো হলো।