স্বাধীনতার ৪৯ বছর পার হলেও কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেছি টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বালিয়া গ্রামে। এই গ্রামে নেই কোন রাস্তাঘাট। বাসাইল সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত গ্রামীণ জনপদের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের গ্রাম ‘বালিয়া’। গ্রামের দুই পাশে বিল আর দুই পাশে ফসলি জমি। বছরে ৬ মাস পানি বন্দি থাকে গ্রামের মানুষ। আর এই বর্ষা মৌসুমে গ্রামের একমাত্র ভরসা হয় নৌকা। রাস্তাঘাট, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবাসহ সব ধরণের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত এই গ্রামের মানুষ।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার কাউজানি ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড বালিয়া গ্রাম বিগত ২০১১ সালের আদম শুমারি অনুযায়ী এ গ্রামের জনসংখ্যা এক হাজার ৩৩৯ জন। পরিবার রয়েছে ৩৩৯টি। উপজেলা সদর থেকে এ গ্রামের দূরত্ব ৫ কিলোমিটার হলেও প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে তাদের আসতে হয় সদরে। ভাঙাচুরা যেটুকু রাস্তা রয়েছে তা প্রতিবছর বর্ষার পানিতে তলিয়ে যায়। শুকনো মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তাই শুকনো মৌসুমে অনেকে জমির আইল ধরে চলাচল করলেও বর্ষায় তা সম্ভব হয় না। কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় শিক্ষার হার একেবারে নি¤œ পর্যায়ে। নেই কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রও। ফলে গর্ভবতী মায়েদের সম্ভাব্য বিপদ এড়াতে এক মাস পূর্বেই উপজেলা বা জেলা হাসপাতালে ভর্তি রাখতে হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা এতটাই অনুন্নত হওয়ায় এই গ্রামে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে বিয়ে দিতে চায় না অন্য গ্রামের লোকজন। সব সময় প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে আছে গ্রামের মানুষগুলো। উপজেলার সবচেয়ে বেশি শ্রমজীবী মানুষ দেশের বাইরে রয়েছেন এ গ্রাম থেকে। প্রচুর বৈদেশিক রেমিটেন্সও আসে এই গ্রামের মানুষগুলোর মাধ্যমে। অথচ তারা বঞ্চিত সকল প্রকার সরকারি সুবিধা থেকে। এ অবস্থার অবসান হবে দ্রুতই এমনটা প্রত্যাশা সকলের।
স্থানীয় হযরত আলী নামের এক বৃদ্ধ বলেন, প্রায় ৬০ বছর ধরে আমাদের গ্রামে কোন রাস্তাঘাট নেই। দু’পাশে বিল রয়েছে। এমনকি এ গ্রামে কোন স্কুল ও মাদ্রাসা নেই। আমাদের গ্রামে একটি প্রাইমারি স্কুল দরকার। শেখ হাসিনার কাছে আমাদের দাবিÑ এখানে রাস্তা চাই। বাইরে থেকে কোন লোকজন এ গ্রামে আসতে চায় না। স্থানীয় স্কুল ছাত্রী মনিরা খাতুন বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমরা স্কুলে যেতে পারি না। ৬ মাস ভালভাবে যেতে পারি না। স্কুলে যাওয়ার সময় বৃষ্টি নামলে বই খাতা ভিজে যায়। অনেক সময় স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয়।
এ ব্যাপারে বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম বলেন, বালিয়া গ্রামটি উন্নয়নের দিক দিয়ে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। বালিয়া গ্রামকে কিভাবে উন্নয়ন করা যায় সে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। তার মধ্যে ব্রিজ, রাস্তা এবং স্কুল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। আশাবাদি আগামী জুনের মধ্যে এর আংশিক কাজ বাস্তবায়ন হবে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের বলেন, টেন্ডারের মাধ্যমে অচিরেই বালিয়া গ্রামে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। একইসঙ্গে অতিদ্রুতই ওই গ্রামের দুইদিক থেকে রাস্তাও নির্মাণ করা হবে। আশা করছি এক থেকে দুই মাসের মধ্যে এই রাস্তাগুলোর অনুমোদন হবে।
মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২০ , ৩০ পৌষ ১৪২৬, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
জেলা বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পার হলেও কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেছি টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বালিয়া গ্রামে। এই গ্রামে নেই কোন রাস্তাঘাট। বাসাইল সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত গ্রামীণ জনপদের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের গ্রাম ‘বালিয়া’। গ্রামের দুই পাশে বিল আর দুই পাশে ফসলি জমি। বছরে ৬ মাস পানি বন্দি থাকে গ্রামের মানুষ। আর এই বর্ষা মৌসুমে গ্রামের একমাত্র ভরসা হয় নৌকা। রাস্তাঘাট, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবাসহ সব ধরণের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত এই গ্রামের মানুষ।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার কাউজানি ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড বালিয়া গ্রাম বিগত ২০১১ সালের আদম শুমারি অনুযায়ী এ গ্রামের জনসংখ্যা এক হাজার ৩৩৯ জন। পরিবার রয়েছে ৩৩৯টি। উপজেলা সদর থেকে এ গ্রামের দূরত্ব ৫ কিলোমিটার হলেও প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে তাদের আসতে হয় সদরে। ভাঙাচুরা যেটুকু রাস্তা রয়েছে তা প্রতিবছর বর্ষার পানিতে তলিয়ে যায়। শুকনো মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তাই শুকনো মৌসুমে অনেকে জমির আইল ধরে চলাচল করলেও বর্ষায় তা সম্ভব হয় না। কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় শিক্ষার হার একেবারে নি¤œ পর্যায়ে। নেই কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রও। ফলে গর্ভবতী মায়েদের সম্ভাব্য বিপদ এড়াতে এক মাস পূর্বেই উপজেলা বা জেলা হাসপাতালে ভর্তি রাখতে হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা এতটাই অনুন্নত হওয়ায় এই গ্রামে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে বিয়ে দিতে চায় না অন্য গ্রামের লোকজন। সব সময় প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে আছে গ্রামের মানুষগুলো। উপজেলার সবচেয়ে বেশি শ্রমজীবী মানুষ দেশের বাইরে রয়েছেন এ গ্রাম থেকে। প্রচুর বৈদেশিক রেমিটেন্সও আসে এই গ্রামের মানুষগুলোর মাধ্যমে। অথচ তারা বঞ্চিত সকল প্রকার সরকারি সুবিধা থেকে। এ অবস্থার অবসান হবে দ্রুতই এমনটা প্রত্যাশা সকলের।
স্থানীয় হযরত আলী নামের এক বৃদ্ধ বলেন, প্রায় ৬০ বছর ধরে আমাদের গ্রামে কোন রাস্তাঘাট নেই। দু’পাশে বিল রয়েছে। এমনকি এ গ্রামে কোন স্কুল ও মাদ্রাসা নেই। আমাদের গ্রামে একটি প্রাইমারি স্কুল দরকার। শেখ হাসিনার কাছে আমাদের দাবিÑ এখানে রাস্তা চাই। বাইরে থেকে কোন লোকজন এ গ্রামে আসতে চায় না। স্থানীয় স্কুল ছাত্রী মনিরা খাতুন বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমরা স্কুলে যেতে পারি না। ৬ মাস ভালভাবে যেতে পারি না। স্কুলে যাওয়ার সময় বৃষ্টি নামলে বই খাতা ভিজে যায়। অনেক সময় স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয়।
এ ব্যাপারে বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম বলেন, বালিয়া গ্রামটি উন্নয়নের দিক দিয়ে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। বালিয়া গ্রামকে কিভাবে উন্নয়ন করা যায় সে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। তার মধ্যে ব্রিজ, রাস্তা এবং স্কুল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। আশাবাদি আগামী জুনের মধ্যে এর আংশিক কাজ বাস্তবায়ন হবে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের বলেন, টেন্ডারের মাধ্যমে অচিরেই বালিয়া গ্রামে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। একইসঙ্গে অতিদ্রুতই ওই গ্রামের দুইদিক থেকে রাস্তাও নির্মাণ করা হবে। আশা করছি এক থেকে দুই মাসের মধ্যে এই রাস্তাগুলোর অনুমোদন হবে।