সীতাকুণ্ড সড়কে ১৭ দিনে নিহত ১৩

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের কয়েকটি স্থান মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত ১৭ দিনের ব্যবধানে উপজেলার কালুশাহ নগর, ফকিরহাট, ফৌজদারহাট, ভাটিয়ারী ও বাঁশবাড়ীয়া এলাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও পুলিশসহ ১৩ জন নিহত হয়। এ সকল ঘটনায় আহত হয় অন্তত ২০ জন। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করার প্রতিবাদে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। স্থানীয় এলাকাবাসী, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কন্টেনিয়ার ডিপো, ট্রাক ডিপো ও লরির ডিপো রয়েছে। এসব গাড়ী হঠাৎ করে মহাসড়কে চলে আসে। আবার বিভিন্ন ধরনের পন্যবাহী গাড়ী চট্টগ্রামের প্রবেশমুখ হইতে বাহির হয়ে মহাসড়কে বেপরোয়া হয়ে পড়ে। এতে বেড়েই চলেছে দুর্ঘটনা। পাশাপাশি বেপরোয়া গতিতে ওভারট্র্যাকিং, আইন না মানা, ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার না করা। অনেক জায়গায় রাস্তার উপর দোকান চলে আসায় বৃদ্ধি পেয়েছে দুর্ঘটনা।

হাইওয়ে সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ শে ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা সাইফুজ্জামান মিন্টু বান্দরবনে পরিবার নিয়ে ভ্রমণ শেষে ঢাকায় ফিরছিলেন। কালুশাহ নগর বাইপাস এলাকা অতিক্রমকালে একটি লরি তাদের বহনকারী প্রাইভেটকারকে চাপা দিলে দুই মেয়ে তাসফিয়া (১৪) ও তাসরিন (১২)সহ তিনি নিহত হন। এঘটনায় তার স্ত্রী ও পুত্র গুরুত্বর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরের দিন ২৯ শে ডিসেম্বর রবিবার রাত ৮টার সময় লরি চাপায় পিষ্ঠ হয়ে আম্বিয়া খাতুন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ মহিলা নিহত হয়। এরপর ৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার সলিমপুর ফৌজদারহাট পোর্টলিংক এলাকায় মিল্ক ভিটা দুধের মিনি কাভার্ডভ্যানকে লরি সজোরে ধাক্কা দিলে কাভার্ডভ্যান চালক বাবলু ফকির (৩২) মৃত্যুবরণ করেন। এরপর দিন বুধবার রাতে ফকিরহাট এলাকায় ভিক্ষুক মহিলা তার ছেলেকে নিয়ে মহাসড়ক পারাপারের সময় একটি কাভার্ডভ্যান চাপা দিলে ঘটনাস্থলে মহিলার মৃত্যু হয়। এঘটনায় আহত হয় তার ছেলে সাইফুল। একইদিন অপর একটি দুর্ঘটনায় মহাসড়ক পার হতে গিয়ে মো: আবদুল্লাহ (৩৩) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। সে উপজেলার জঙ্গল লতিফপুরের মো: রফিক আহাম্মদের পুত্র।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার গুল আহম্মদ এলাকায় প্রাইভেটকার একটি ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মহাসড়কের ঢাকামুখি লেইন থেকে চট্টগ্রামমুখি লেইন গিয়ে দ্রুত গতির একটি ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ ঘটে। এতে প্রাইভেটকারে থাকা তিন আরোহিসহ চালক গুরুতর আহত হয়। পরে হাইওয়ে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে মীরশ^রাই সমিতির বাজার এলাকার প্রবাসি আবু নাছের এর পুত্র মেজবা উদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন। একই ঘটনায় প্রাইভেটকার চালকও নিহত হয়।

গত ১১ জানুয়ারী শনিবার ভোরে ফৌজদারহাটের বন্দর সংযোগ সড়কের মুখে মোটরসাইকেল ও কাভার্ড ভ্যানের সংঘর্ষে চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজির গানম্যান পুলিশ সদস্য মো: আলমগীর হোসেন (২৪) ও তার বন্ধু শহিদুল ইসলাম (২৮) নিহত হন। গত ১২ জানুয়ারী রবিবার তসলিম উদ্দিন (৩০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এতে যুবলীগ নেতাসহ আরো ২জন গুরুতর আহত হয়। রোববার দুপুর সাড়ে ১২ টায় উপজেলার ঢাকাণ্ডচট্টগ্রাম মহাসড়কের বাঁশবাড়িয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত তসলিম একই এলাকার মজিধন বাড়ির বশর ড্রাইভারের পুত্র। সর্বশেষ গতকাল সোমবার ভোরে বাড়বকুন্ড এলাকায় ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে হেলপার মো: হাবেল নিহত হয়। ফিলিং স্টেশন থেকে ট্রাক বের করার আগে হেলপার গাড়ির পিছনের চাকা চেক করার সময় হঠাৎ ড্রাইভার গাড়ি পিছনের দিকে ব্রেক দিলে হেলপার চাকায় পিষ্ট হয়। তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন। হাবেল টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী থানার রুপশান্তি গ্রামের ইদ্রিস আলীর পুত্র।

আরও খবর
বাসাইলের বালিয়া গ্রামে ৪৯ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি
সুবর্ণচরে মামলার সাক্ষীকে রাষ্ট্রপক্ষের বৈরী ঘোষণা
বেকারি শিল্পের কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ
মাছ-পুঁজি সংকটে কমছে শুঁটকি
পাবনায় প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণ ধর্ষক গ্রেফতার
পটুয়াখালী শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ৩ কিমি. নালা
প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত ১ আহত ৬ গ্রেফতার ২
যে চা-বাগানে প্রা. স্কুল নেই, সেখানে স্কুল হবে : বনমন্ত্রী
নলছিটিতে যুবকের মরদেহ উদ্ধার
যানজটের প্রধান কারণ রাস্তায় নির্মাণসামগ্রী
ফরিদপুরে বাস কাউন্টারের শৌচাগারে নারী নিগ্রহ শ্রমিকের দণ্ড
বগুড়ায় টায়ার গুদাম ছাই
খুলনায় সোনালী ব্যাংক কর্তার জামিন নামঞ্জুর

মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২০ , ৩০ পৌষ ১৪২৬, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

সীতাকুণ্ড সড়কে ১৭ দিনে নিহত ১৩

দেলোয়ার হোসেন, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের কয়েকটি স্থান মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত ১৭ দিনের ব্যবধানে উপজেলার কালুশাহ নগর, ফকিরহাট, ফৌজদারহাট, ভাটিয়ারী ও বাঁশবাড়ীয়া এলাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও পুলিশসহ ১৩ জন নিহত হয়। এ সকল ঘটনায় আহত হয় অন্তত ২০ জন। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করার প্রতিবাদে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। স্থানীয় এলাকাবাসী, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কন্টেনিয়ার ডিপো, ট্রাক ডিপো ও লরির ডিপো রয়েছে। এসব গাড়ী হঠাৎ করে মহাসড়কে চলে আসে। আবার বিভিন্ন ধরনের পন্যবাহী গাড়ী চট্টগ্রামের প্রবেশমুখ হইতে বাহির হয়ে মহাসড়কে বেপরোয়া হয়ে পড়ে। এতে বেড়েই চলেছে দুর্ঘটনা। পাশাপাশি বেপরোয়া গতিতে ওভারট্র্যাকিং, আইন না মানা, ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার না করা। অনেক জায়গায় রাস্তার উপর দোকান চলে আসায় বৃদ্ধি পেয়েছে দুর্ঘটনা।

হাইওয়ে সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ শে ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা সাইফুজ্জামান মিন্টু বান্দরবনে পরিবার নিয়ে ভ্রমণ শেষে ঢাকায় ফিরছিলেন। কালুশাহ নগর বাইপাস এলাকা অতিক্রমকালে একটি লরি তাদের বহনকারী প্রাইভেটকারকে চাপা দিলে দুই মেয়ে তাসফিয়া (১৪) ও তাসরিন (১২)সহ তিনি নিহত হন। এঘটনায় তার স্ত্রী ও পুত্র গুরুত্বর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরের দিন ২৯ শে ডিসেম্বর রবিবার রাত ৮টার সময় লরি চাপায় পিষ্ঠ হয়ে আম্বিয়া খাতুন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ মহিলা নিহত হয়। এরপর ৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার সলিমপুর ফৌজদারহাট পোর্টলিংক এলাকায় মিল্ক ভিটা দুধের মিনি কাভার্ডভ্যানকে লরি সজোরে ধাক্কা দিলে কাভার্ডভ্যান চালক বাবলু ফকির (৩২) মৃত্যুবরণ করেন। এরপর দিন বুধবার রাতে ফকিরহাট এলাকায় ভিক্ষুক মহিলা তার ছেলেকে নিয়ে মহাসড়ক পারাপারের সময় একটি কাভার্ডভ্যান চাপা দিলে ঘটনাস্থলে মহিলার মৃত্যু হয়। এঘটনায় আহত হয় তার ছেলে সাইফুল। একইদিন অপর একটি দুর্ঘটনায় মহাসড়ক পার হতে গিয়ে মো: আবদুল্লাহ (৩৩) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। সে উপজেলার জঙ্গল লতিফপুরের মো: রফিক আহাম্মদের পুত্র।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার গুল আহম্মদ এলাকায় প্রাইভেটকার একটি ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মহাসড়কের ঢাকামুখি লেইন থেকে চট্টগ্রামমুখি লেইন গিয়ে দ্রুত গতির একটি ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ ঘটে। এতে প্রাইভেটকারে থাকা তিন আরোহিসহ চালক গুরুতর আহত হয়। পরে হাইওয়ে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে মীরশ^রাই সমিতির বাজার এলাকার প্রবাসি আবু নাছের এর পুত্র মেজবা উদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন। একই ঘটনায় প্রাইভেটকার চালকও নিহত হয়।

গত ১১ জানুয়ারী শনিবার ভোরে ফৌজদারহাটের বন্দর সংযোগ সড়কের মুখে মোটরসাইকেল ও কাভার্ড ভ্যানের সংঘর্ষে চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজির গানম্যান পুলিশ সদস্য মো: আলমগীর হোসেন (২৪) ও তার বন্ধু শহিদুল ইসলাম (২৮) নিহত হন। গত ১২ জানুয়ারী রবিবার তসলিম উদ্দিন (৩০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এতে যুবলীগ নেতাসহ আরো ২জন গুরুতর আহত হয়। রোববার দুপুর সাড়ে ১২ টায় উপজেলার ঢাকাণ্ডচট্টগ্রাম মহাসড়কের বাঁশবাড়িয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত তসলিম একই এলাকার মজিধন বাড়ির বশর ড্রাইভারের পুত্র। সর্বশেষ গতকাল সোমবার ভোরে বাড়বকুন্ড এলাকায় ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে হেলপার মো: হাবেল নিহত হয়। ফিলিং স্টেশন থেকে ট্রাক বের করার আগে হেলপার গাড়ির পিছনের চাকা চেক করার সময় হঠাৎ ড্রাইভার গাড়ি পিছনের দিকে ব্রেক দিলে হেলপার চাকায় পিষ্ট হয়। তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন। হাবেল টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী থানার রুপশান্তি গ্রামের ইদ্রিস আলীর পুত্র।