খেলবেন ২টি টেস্ট, ১টি ওডিআই ও ৩টি টি-২০

অনেক নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সিরিজই খেলবে টাইগাররা। পাকিস্তানের মাটিতে দুটো টেস্ট, তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ এবং একটি ওডিআই ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। তবে সফর হবে তিন দফায়। আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত লাহোরে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলে দেশে ফিরবে টাইগাররা। এরপর রাওয়ালপিন্ডিতে ৭-১১ ফেব্রুয়ারি সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলার জন্য দ্বিতীয় দফায় আবার পাকিস্তানে যাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তান সুপার লীগের পূর্ব নির্ধারিত সূচি থাকার কারণে প্রথম টেস্ট খেলে দেশে ফিরে করাচিতে আয়োজিত একমাত্র ওডিআই ও সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট খেলার জন্য এপ্রিলে তৃতীয় দফায় পাকিস্তানের উদ্দেশে উড়াল দিতে হবে টাইগারদের। করাচির একমাত্র ওডিআই ম্যাচের নির্ধারিত তারিখ ৩ এপ্রিল। শেষ টেস্টের জন্য নির্ধারিত সময় ৫-৯ এপ্রিল।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডর (পিসিবি) পক্ষ থেকে বাংলাদেশ দলের সফর সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হলেও গতকাল রাত পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোন বক্তব্য দেয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

পিসিবি চেয়ারম্যান এহসান মানি বলেছেন, দুটো গর্বিত ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ এবং খেলাটির বৃহত্তর স্বার্থে সমঝোতার ভিত্তিতে সমাধানে পৌঁছাসহ সিরিজের সময়সূচি নির্ধারন করতে পেরে আমি খুব খুশি। আমি এর জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)-এর চেয়ারম্যান শশাংক মনোহরকে। মূলত তার যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই ক্রিকেট পাগল দুটো দেশে ক্রিকেটের অগ্রযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ হলো।

বলে রাখা ভালো, গতকাল দুবাইয়ে আইসিসির যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে বৈঠকের ফাঁকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ড প্রধানরা আলোচনায় বসতে পারেন বলে আগে থেকেই ধারণা করা হয়েছিল। ঠিক তেমনটাই হয়েছে। পিসিবির প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান বলেন, দুই বোর্ডের জন্যই দারুণ একটা সমাধান। সিরিজ নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যাওয়াতে আমি আনন্দিত। আমরা এখন সবগুলো ম্যাচ যাতে ঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারি সেদিকে নজর দিতে পারব। বাংলাদেশ দল তিনবারে পাকিস্তান সফর শেষ করবে। নিঃসন্দেহে এটা ভালো খবর। এতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যেমন স্বস্তি পাবে, তেমনি ক্রিকেট বিশ্বও জানবে যে, পাকিস্তান সফর এখন কতটা নিরাপদ।

শেষমেশ সফরসূচি চূড়ান্ত হলেও গত রোববার বলতে গেলে এই সিরিজের সম্ভাবনা শেষ হয়ে গিয়েছিলো। বিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবেই গত রোববার জানায় যে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ৬-৭ দিনের বেশি পাকিস্তানে না থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এই সময়কালে কেবলমাত্র টি-২০ সিরিজই খেলা সম্ভব ছিল। পিসিবি অবশ্য আশা ছাড়েনি। তারা আইসিসির গভার্নেন্স কমিটির সভার ফাঁকে একটা সন্তোষজনক সমাধানের জন্য আলোচনার প্রস্তাব দেয়। আইসিসির চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর আলোচনা এগিয়ে নিতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন এবং মূলত তার নেতৃত্বেই অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই চূড়ান্ত হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফরের সূচি।

উল্লেখ করা যেতে পারে, বিসিবি বরাবরই পাকিস্তানের মাটিতে সীমিত ওভারের সিরিজ খেলতে রাজি থাকার কথা বলে আসছিল। কিন্তু দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে নাছোড়বান্দা ছিল পিসিবি। কেননা আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম তো বটেই চলমান আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেরও অংশ এই টেস্ট সিরিজ।

পিসিবির এই অনড় অবস্থানের কারণও ছিল। গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাসেই পাকিস্তান সফরে তিনটা টি-২০ ও দুটো ওডিআই ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের প্রমীলা ক্রিকেট দল। কোন ধরনের অঘটন ছাড়াই শেষ হয় সফর। ২০০৯ সালে যে শ্রীলঙ্কান দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার কারণে পাকিস্তানের মাটিতে বন্ধ হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, সেই শ্রীলঙ্কান দলই করাচিতে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ খেলার পর লাহোরে খেলে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ। এরপর ডিসেম্বরে লাহোরেই দুই টেস্টের সিরিজ খেলে শ্রীলঙ্কা।

বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২০ , ১ মাঘ ১৪২৬, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

পূর্ণাঙ্গ সফরে পাকিস্তান যাচ্ছেন টাইগাররা

খেলবেন ২টি টেস্ট, ১টি ওডিআই ও ৩টি টি-২০

বিশেষ প্রতিনিধি

অনেক নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সিরিজই খেলবে টাইগাররা। পাকিস্তানের মাটিতে দুটো টেস্ট, তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ এবং একটি ওডিআই ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। তবে সফর হবে তিন দফায়। আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত লাহোরে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলে দেশে ফিরবে টাইগাররা। এরপর রাওয়ালপিন্ডিতে ৭-১১ ফেব্রুয়ারি সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলার জন্য দ্বিতীয় দফায় আবার পাকিস্তানে যাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তান সুপার লীগের পূর্ব নির্ধারিত সূচি থাকার কারণে প্রথম টেস্ট খেলে দেশে ফিরে করাচিতে আয়োজিত একমাত্র ওডিআই ও সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট খেলার জন্য এপ্রিলে তৃতীয় দফায় পাকিস্তানের উদ্দেশে উড়াল দিতে হবে টাইগারদের। করাচির একমাত্র ওডিআই ম্যাচের নির্ধারিত তারিখ ৩ এপ্রিল। শেষ টেস্টের জন্য নির্ধারিত সময় ৫-৯ এপ্রিল।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডর (পিসিবি) পক্ষ থেকে বাংলাদেশ দলের সফর সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হলেও গতকাল রাত পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোন বক্তব্য দেয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

পিসিবি চেয়ারম্যান এহসান মানি বলেছেন, দুটো গর্বিত ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ এবং খেলাটির বৃহত্তর স্বার্থে সমঝোতার ভিত্তিতে সমাধানে পৌঁছাসহ সিরিজের সময়সূচি নির্ধারন করতে পেরে আমি খুব খুশি। আমি এর জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)-এর চেয়ারম্যান শশাংক মনোহরকে। মূলত তার যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই ক্রিকেট পাগল দুটো দেশে ক্রিকেটের অগ্রযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ হলো।

বলে রাখা ভালো, গতকাল দুবাইয়ে আইসিসির যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে বৈঠকের ফাঁকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ড প্রধানরা আলোচনায় বসতে পারেন বলে আগে থেকেই ধারণা করা হয়েছিল। ঠিক তেমনটাই হয়েছে। পিসিবির প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান বলেন, দুই বোর্ডের জন্যই দারুণ একটা সমাধান। সিরিজ নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যাওয়াতে আমি আনন্দিত। আমরা এখন সবগুলো ম্যাচ যাতে ঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারি সেদিকে নজর দিতে পারব। বাংলাদেশ দল তিনবারে পাকিস্তান সফর শেষ করবে। নিঃসন্দেহে এটা ভালো খবর। এতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যেমন স্বস্তি পাবে, তেমনি ক্রিকেট বিশ্বও জানবে যে, পাকিস্তান সফর এখন কতটা নিরাপদ।

শেষমেশ সফরসূচি চূড়ান্ত হলেও গত রোববার বলতে গেলে এই সিরিজের সম্ভাবনা শেষ হয়ে গিয়েছিলো। বিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবেই গত রোববার জানায় যে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ৬-৭ দিনের বেশি পাকিস্তানে না থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এই সময়কালে কেবলমাত্র টি-২০ সিরিজই খেলা সম্ভব ছিল। পিসিবি অবশ্য আশা ছাড়েনি। তারা আইসিসির গভার্নেন্স কমিটির সভার ফাঁকে একটা সন্তোষজনক সমাধানের জন্য আলোচনার প্রস্তাব দেয়। আইসিসির চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর আলোচনা এগিয়ে নিতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন এবং মূলত তার নেতৃত্বেই অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই চূড়ান্ত হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফরের সূচি।

উল্লেখ করা যেতে পারে, বিসিবি বরাবরই পাকিস্তানের মাটিতে সীমিত ওভারের সিরিজ খেলতে রাজি থাকার কথা বলে আসছিল। কিন্তু দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে নাছোড়বান্দা ছিল পিসিবি। কেননা আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম তো বটেই চলমান আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেরও অংশ এই টেস্ট সিরিজ।

পিসিবির এই অনড় অবস্থানের কারণও ছিল। গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাসেই পাকিস্তান সফরে তিনটা টি-২০ ও দুটো ওডিআই ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের প্রমীলা ক্রিকেট দল। কোন ধরনের অঘটন ছাড়াই শেষ হয় সফর। ২০০৯ সালে যে শ্রীলঙ্কান দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার কারণে পাকিস্তানের মাটিতে বন্ধ হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, সেই শ্রীলঙ্কান দলই করাচিতে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ খেলার পর লাহোরে খেলে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ। এরপর ডিসেম্বরে লাহোরেই দুই টেস্টের সিরিজ খেলে শ্রীলঙ্কা।