গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু

রংপুরে আওয়ামী লীগের সভা

বৈরাতি হাট (রংপুর) ২৫ জানুয়ারি। সম্প্রতি এখানে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন জনাব মজিবর রহমান। বর্তমান

রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বক্তৃতাদান করেন সদর মহকুমা আওয়ামী লীগ অফিসের সম্পাদক জনাব নূরুল ইসলাম এবং অন্যান্য বক্তা। সভায় জাতিসংঘের মাধ্যমে কাশ্মীরে নিরপেক্ষ গণভোট ও সকল প্রকার সামরিক চুক্তি বর্জন করিয়া পাকিস্তানের স্বাধীন বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ : ২৮ জানুয়ারি ১৯৫৭

কাগমারী সম্মেলনে শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষকের যোগদান

সম্মেলনে ভারতের সাংস্কৃতিক মিশনের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা

জানা গিয়াছে যে, কাগমারীতে আওয়ামী লীগের আগামী কাউন্সিল অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য, ভারত ইত্যাদি দেশ হইতে শতাধিক প্রতিনিধি দর্শক যোগদান করিবেন। ভারত হইতে একটি সাংস্কৃতিক দল সম্ভবত কাগমারীর সাংস্কৃতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করিবেন বলিয়া আশা করা যাইতেছে। আওয়ামী লীগ প্রধান জনাব সোহরাওয়ার্দী করাচি হইতে ঢাকাস্থ আওয়ামী কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্মেলনের অগ্রগতি সম্বন্ধে যোগাযোগ রক্ষা করিতেছেন। প্রাদেশিক আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি শেখ মুজিবুর রহমান গতকল্য (বুধবার) অপরাহ্ণে জিপযোগে কাগমারী গিয়াছেন। তিনি সম্মেলনের প্রতিনিধিদের বাসস্থান যোগাযোগ সম্পর্কে ব্যবস্থা অবলম্বন করিবেন। শেখ মুজিবর গতকল্য বলেন যে, সম্মেলনের পূর্বে ঢাকা ও টাঙ্গাইলের মধ্যে নিয়মিত বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হইবে। কর্মীদের কাগমারী যাতায়াতের এই শ্রেণীর ব্যবস্থা ছাড়াও সংবাদ পরিবেশনের উদ্দেশ্যে কাগমারীতে একটি পূর্ণাঙ্গ পোস্ট অফিস সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠিত হইবে। ১ ফেব্রুয়ারি প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের অফিস কাগমারীতে স্থানান্তরিত হইয়া কার্য পরিচালনা করিবেন।

সংবাদ : ৩১ জানুয়ারি ১৯৫৭

আওয়ামী কাউন্সিল অধিবেশন

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি শেখ মুজিবুরের উপদেশ

গতকল্য (বৃহস্পতিবার) এক বিবৃতি প্রসঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান বলেন যে, আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের কার্যক্রম সম্পর্কে কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দকে যে পত্র প্রেরণ করা হইয়াছে, বলিয়াছে সম্ভবত তাহা সদস্যবৃন্দের হস্তগত হইয়াছে। এই প্রসঙ্গে তিনি কাউন্সিল অধিবেশনে পাঠের জন্য আওয়ামী লীগের প্রত্যেক জেলা সম্পাদককে প্রতিষ্ঠানের সদর দফতরে তাহাদের রিপোর্ট প্রেরণের অনুরোধ জানান। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি কিংবা তাহার পূর্বেই পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সদর দফতর টাঙ্গাইলের কাগমারীতে স্থানান্তরিত করা হইবে।

সংবাদ : ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৭

আওয়ামী লীগের কাগমারী সম্মেলনের সর্বপ্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন

আওয়ামী লীগের কাগমারী সম্মেলনের সর্বপ্রকার ব্যবস্থা সমাপ্ত হইয়াছে বলিয়া জানা। গিয়াছে। আশা করা যাইতেছে, পাকিস্তানের দুই অংশ হইতে প্রায় তিন লক্ষ সাধারণ। লোক, কর্মী, রাজনৈতিক নেতা ও সংস্কৃতি সেবী অংশগ্রহণ করিবেন। তদুপরি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ-যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, মিসর, ভারত ইত্যাদির বেশ হইতে শতাধিক প্রতিনিধি যোগদান করিবেন। সম্মেলন প্রধানত চার ভাগে বিভক্ত- এই কর্মী সম্মেলন, ৭ ও ৮ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল অধিবেশন ও ৮ হইতে ১০ ফেব্রুয়ারি। পর্যন্ত চার দিন সাংস্কৃতিক সম্মেলন। ৭০ হইতে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কৃষি, শিল্প ও স্বাস্থ্য প্রদর্শনী চালু থাকিবে। মওলানা ভাসানী মূল সম্মেলনের সভাপতিত্ব করবেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জনাব সোহরাওয়ার্দী এই রাত্রিতে সাংস্কৃতিক সম্মেলন এবং ড. কাজী মোতাহার হােসেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদিতে সভাপতিত্ব করিবেন বলিয়া স্থির হইয়াছে। ঢাকা ও প্রদেশের অন্যান্য স্থান হইতে কাগমারীতে সম্মেলনে যোগদানকারীদের বহনের জন্য বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হইয়াছে।

অদ্য (মঙ্গলবার) হইতে ঢাকা কাগমারীর সঙ্গে নিয়মিত বাস চলাচল শুরু হইবে। পল্টন ময়দানের নিকট হইতে কাগমারীর বাসে ৬৪ মাইল পথের জন্য তিন টাকা ভাড়া ধার্য করা হইয়াছে। এই হইতে ৭ পর্যন্ত প্রত্যহ সকাল ৮টা, ১০টা, ১২টা ও ২টায় এবং ৮ হইতে ১০ পর্যন্ত সকাল ৬টা, ৮টা, ১০টা, ১২টা ও ২টার বাস ছাড়িবে। সম্মেলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে যাহারা কাগমারী যাইবেন, তাহাদের জন্য ঢাকায়ও যাওয়ার ব্যবস্থা করা হইয়াছে। কিন্তু সকলেই বিছানা ও মশারি লইয়া যাইতে হইবে। ইতিমধ্যে রাজধানী হইতে কতিপয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং কয়েকশত কর্মী ও কাউন্সিলর কাগমারীতে পৌঁছিয়াছেন। শিল্পমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান এবং ঢাকা আর্ট কলেজের ছাত্র শিল্পীদের একটি বৃহৎ গ্রুপ অদ্য সকালে কাগমারী যাত্রা করিতেছেন। ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কেন্দ্রীয় প্রধানমন্ত্রী জনাব সোহরাওয়ার্দী ও প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রী জনাব সোহরাওয়ার্দী ও প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রী জনাব আতাউর রহমানসহ বিদেশি অতিথিগণ কাগমারীতে পৌঁছিতেছেন।

কাগমারীতে সমাগত বিদেশি অতিথি ও সাংবাদিকদের থাকার জন্য সন্তোষ রাজবাড়ী নির্দিষ্ট করা হইয়াছে। উহা ছাড়া বহু তাবু ও নয়া গৃহ নির্মিত হইতেছে। সাংস্কৃতিক সম্মেলনের অভিনয়াদির জন্য চারটি উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরি হইয়াছে। উহাতে বিভিন্ন বিষয়। যথা- শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, অর্থনীতি, ভাষা, লোকনৃত্য ও লোকগীতির উপর প্রবন্ধ পাঠ ও আলোচনা হইবে। পশ্চিম পাকিস্তানের পশ্চিমি ম্যাডাম আজুরীর পরিচালনায় ১৫ সদস্যের একটি নৃত্যশিল্পীর দল সম্ভবত ৭ কাগমারী পৌঁছবে। এই দলটির পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক জীবন প্রতিফলিত হইবে। সম্মেলনে পূর্ব বাংলার কবি জারি সারি, তরজা বিচার ভাটিয়ালী পরিবেশিত হইবে। বিখ্যাত কবিয়াল শ্রী রমেশ শীল সম্প্রদায় কবিগান এবং তসর আলী সম্প্রদায় জারিগানে অংশ গ্রহণ করিবেন। ঢাকা হইতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও যুবলীগ নৃত্যগীত পরিবেশনের জন্য শিল্পী প্রেরণ করিতেছে। সম্মেলনে প্রধানত লোকনৃত্য ও লোকনাট্যের ওপর অনুষ্ঠান করা হইবে।

সম্মেলনে প্রবন্ধ পাঠ নিম্নরূপ হইবে শিক্ষা- ডা. কুদরতই খুদা, ডা. ওসমান গনি, ডা. হেদায়েতউল্লাহ, ডা. শামসুদ্দীন। অর্থনীতি- ডা. এম এন হুদা ও ডা. আবদুর রেজ্জাক। সাহিত্য ভাষা ও সংস্কৃতি- ফয়েজ আহমেদ সাহেব (উর্দু কবি), ডা. শহীদুল্লাহ, ডা. এনামুল হক, বেগম জেবুন্নেসা হামিদুল্লাহ, ডা. মোহাম্মদ হোসেন প্রমুখ। শিল্প- করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ডা. এবিএ হালিম এবং কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ডা. এম আহমেদ। নৃত্য- ম্যাডাম আজুরী (সামাজিক জীবনে নৃত্যের প্রভাব)। মিসরের ডা. হাসান হাবিসি তাহার দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন যুক্তরাজ্য চীন ও জাপানের প্রতিনিধিগণ স্ব স্ব দেশের সাংস্কৃতিক জীবনের উপর আলোচনামূলক প্রবন্ধ পাঠ করিবেন। কুষ্টিয়ার লালনশাহর দলটিও কাগমারীর পথে রহিয়াছে। তাছাড়া ময়মনসিংহ ও কুমিল্লার গায়ক সম্প্রদায় স্ব স্ব দল লইয়া যোগদান করিবেন।

সংবাদ : ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৭

বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২০ , ১ মাঘ ১৪২৬, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু

রংপুরে আওয়ামী লীগের সভা

বৈরাতি হাট (রংপুর) ২৫ জানুয়ারি। সম্প্রতি এখানে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন জনাব মজিবর রহমান। বর্তমান

রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বক্তৃতাদান করেন সদর মহকুমা আওয়ামী লীগ অফিসের সম্পাদক জনাব নূরুল ইসলাম এবং অন্যান্য বক্তা। সভায় জাতিসংঘের মাধ্যমে কাশ্মীরে নিরপেক্ষ গণভোট ও সকল প্রকার সামরিক চুক্তি বর্জন করিয়া পাকিস্তানের স্বাধীন বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ : ২৮ জানুয়ারি ১৯৫৭

কাগমারী সম্মেলনে শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষকের যোগদান

সম্মেলনে ভারতের সাংস্কৃতিক মিশনের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা

জানা গিয়াছে যে, কাগমারীতে আওয়ামী লীগের আগামী কাউন্সিল অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য, ভারত ইত্যাদি দেশ হইতে শতাধিক প্রতিনিধি দর্শক যোগদান করিবেন। ভারত হইতে একটি সাংস্কৃতিক দল সম্ভবত কাগমারীর সাংস্কৃতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করিবেন বলিয়া আশা করা যাইতেছে। আওয়ামী লীগ প্রধান জনাব সোহরাওয়ার্দী করাচি হইতে ঢাকাস্থ আওয়ামী কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্মেলনের অগ্রগতি সম্বন্ধে যোগাযোগ রক্ষা করিতেছেন। প্রাদেশিক আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি শেখ মুজিবুর রহমান গতকল্য (বুধবার) অপরাহ্ণে জিপযোগে কাগমারী গিয়াছেন। তিনি সম্মেলনের প্রতিনিধিদের বাসস্থান যোগাযোগ সম্পর্কে ব্যবস্থা অবলম্বন করিবেন। শেখ মুজিবর গতকল্য বলেন যে, সম্মেলনের পূর্বে ঢাকা ও টাঙ্গাইলের মধ্যে নিয়মিত বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হইবে। কর্মীদের কাগমারী যাতায়াতের এই শ্রেণীর ব্যবস্থা ছাড়াও সংবাদ পরিবেশনের উদ্দেশ্যে কাগমারীতে একটি পূর্ণাঙ্গ পোস্ট অফিস সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠিত হইবে। ১ ফেব্রুয়ারি প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের অফিস কাগমারীতে স্থানান্তরিত হইয়া কার্য পরিচালনা করিবেন।

সংবাদ : ৩১ জানুয়ারি ১৯৫৭

আওয়ামী কাউন্সিল অধিবেশন

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি শেখ মুজিবুরের উপদেশ

গতকল্য (বৃহস্পতিবার) এক বিবৃতি প্রসঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান বলেন যে, আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের কার্যক্রম সম্পর্কে কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দকে যে পত্র প্রেরণ করা হইয়াছে, বলিয়াছে সম্ভবত তাহা সদস্যবৃন্দের হস্তগত হইয়াছে। এই প্রসঙ্গে তিনি কাউন্সিল অধিবেশনে পাঠের জন্য আওয়ামী লীগের প্রত্যেক জেলা সম্পাদককে প্রতিষ্ঠানের সদর দফতরে তাহাদের রিপোর্ট প্রেরণের অনুরোধ জানান। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি কিংবা তাহার পূর্বেই পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সদর দফতর টাঙ্গাইলের কাগমারীতে স্থানান্তরিত করা হইবে।

সংবাদ : ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৭

আওয়ামী লীগের কাগমারী সম্মেলনের সর্বপ্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন

আওয়ামী লীগের কাগমারী সম্মেলনের সর্বপ্রকার ব্যবস্থা সমাপ্ত হইয়াছে বলিয়া জানা। গিয়াছে। আশা করা যাইতেছে, পাকিস্তানের দুই অংশ হইতে প্রায় তিন লক্ষ সাধারণ। লোক, কর্মী, রাজনৈতিক নেতা ও সংস্কৃতি সেবী অংশগ্রহণ করিবেন। তদুপরি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ-যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, মিসর, ভারত ইত্যাদির বেশ হইতে শতাধিক প্রতিনিধি যোগদান করিবেন। সম্মেলন প্রধানত চার ভাগে বিভক্ত- এই কর্মী সম্মেলন, ৭ ও ৮ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল অধিবেশন ও ৮ হইতে ১০ ফেব্রুয়ারি। পর্যন্ত চার দিন সাংস্কৃতিক সম্মেলন। ৭০ হইতে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কৃষি, শিল্প ও স্বাস্থ্য প্রদর্শনী চালু থাকিবে। মওলানা ভাসানী মূল সম্মেলনের সভাপতিত্ব করবেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জনাব সোহরাওয়ার্দী এই রাত্রিতে সাংস্কৃতিক সম্মেলন এবং ড. কাজী মোতাহার হােসেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদিতে সভাপতিত্ব করিবেন বলিয়া স্থির হইয়াছে। ঢাকা ও প্রদেশের অন্যান্য স্থান হইতে কাগমারীতে সম্মেলনে যোগদানকারীদের বহনের জন্য বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হইয়াছে।

অদ্য (মঙ্গলবার) হইতে ঢাকা কাগমারীর সঙ্গে নিয়মিত বাস চলাচল শুরু হইবে। পল্টন ময়দানের নিকট হইতে কাগমারীর বাসে ৬৪ মাইল পথের জন্য তিন টাকা ভাড়া ধার্য করা হইয়াছে। এই হইতে ৭ পর্যন্ত প্রত্যহ সকাল ৮টা, ১০টা, ১২টা ও ২টায় এবং ৮ হইতে ১০ পর্যন্ত সকাল ৬টা, ৮টা, ১০টা, ১২টা ও ২টার বাস ছাড়িবে। সম্মেলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে যাহারা কাগমারী যাইবেন, তাহাদের জন্য ঢাকায়ও যাওয়ার ব্যবস্থা করা হইয়াছে। কিন্তু সকলেই বিছানা ও মশারি লইয়া যাইতে হইবে। ইতিমধ্যে রাজধানী হইতে কতিপয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং কয়েকশত কর্মী ও কাউন্সিলর কাগমারীতে পৌঁছিয়াছেন। শিল্পমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান এবং ঢাকা আর্ট কলেজের ছাত্র শিল্পীদের একটি বৃহৎ গ্রুপ অদ্য সকালে কাগমারী যাত্রা করিতেছেন। ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কেন্দ্রীয় প্রধানমন্ত্রী জনাব সোহরাওয়ার্দী ও প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রী জনাব সোহরাওয়ার্দী ও প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রী জনাব আতাউর রহমানসহ বিদেশি অতিথিগণ কাগমারীতে পৌঁছিতেছেন।

কাগমারীতে সমাগত বিদেশি অতিথি ও সাংবাদিকদের থাকার জন্য সন্তোষ রাজবাড়ী নির্দিষ্ট করা হইয়াছে। উহা ছাড়া বহু তাবু ও নয়া গৃহ নির্মিত হইতেছে। সাংস্কৃতিক সম্মেলনের অভিনয়াদির জন্য চারটি উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরি হইয়াছে। উহাতে বিভিন্ন বিষয়। যথা- শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, অর্থনীতি, ভাষা, লোকনৃত্য ও লোকগীতির উপর প্রবন্ধ পাঠ ও আলোচনা হইবে। পশ্চিম পাকিস্তানের পশ্চিমি ম্যাডাম আজুরীর পরিচালনায় ১৫ সদস্যের একটি নৃত্যশিল্পীর দল সম্ভবত ৭ কাগমারী পৌঁছবে। এই দলটির পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক জীবন প্রতিফলিত হইবে। সম্মেলনে পূর্ব বাংলার কবি জারি সারি, তরজা বিচার ভাটিয়ালী পরিবেশিত হইবে। বিখ্যাত কবিয়াল শ্রী রমেশ শীল সম্প্রদায় কবিগান এবং তসর আলী সম্প্রদায় জারিগানে অংশ গ্রহণ করিবেন। ঢাকা হইতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও যুবলীগ নৃত্যগীত পরিবেশনের জন্য শিল্পী প্রেরণ করিতেছে। সম্মেলনে প্রধানত লোকনৃত্য ও লোকনাট্যের ওপর অনুষ্ঠান করা হইবে।

সম্মেলনে প্রবন্ধ পাঠ নিম্নরূপ হইবে শিক্ষা- ডা. কুদরতই খুদা, ডা. ওসমান গনি, ডা. হেদায়েতউল্লাহ, ডা. শামসুদ্দীন। অর্থনীতি- ডা. এম এন হুদা ও ডা. আবদুর রেজ্জাক। সাহিত্য ভাষা ও সংস্কৃতি- ফয়েজ আহমেদ সাহেব (উর্দু কবি), ডা. শহীদুল্লাহ, ডা. এনামুল হক, বেগম জেবুন্নেসা হামিদুল্লাহ, ডা. মোহাম্মদ হোসেন প্রমুখ। শিল্প- করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ডা. এবিএ হালিম এবং কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ডা. এম আহমেদ। নৃত্য- ম্যাডাম আজুরী (সামাজিক জীবনে নৃত্যের প্রভাব)। মিসরের ডা. হাসান হাবিসি তাহার দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন যুক্তরাজ্য চীন ও জাপানের প্রতিনিধিগণ স্ব স্ব দেশের সাংস্কৃতিক জীবনের উপর আলোচনামূলক প্রবন্ধ পাঠ করিবেন। কুষ্টিয়ার লালনশাহর দলটিও কাগমারীর পথে রহিয়াছে। তাছাড়া ময়মনসিংহ ও কুমিল্লার গায়ক সম্প্রদায় স্ব স্ব দল লইয়া যোগদান করিবেন।

সংবাদ : ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৭